নিউইয়র্ক ০৬:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

শেখ হাসিনার বিচার শুরু হতে পারে এপ্রিলে

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৩৬:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৫৯ বার পঠিত

বাংলাদেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া আগামী এপ্রিল মাসে শুরু হতে পারে। মঙ্গলবার বিবিসি বাংলাকে এ কথা জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

এ লক্ষ্যে দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলার তদন্তকাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে বলেও জানান এই আইনজীবী। “আমরা আশা করি, আগামী (মার্চ) মাসের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হওয়া মামলার তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা সম্ভব হবে। যদি মার্চ মাসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট আমরা পেয়ে যায়, তাহলে এপ্রিল মাস থেকে বিচার প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিক পর্বটা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মি. ইসলাম।

গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত পাঁচই অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, গুম, অপহরণসহ বিভিন্ন অভিযোগে আড়াইশ’টিরও বেশি মামলা হয়েছে। বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। এর মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে যে তদন্ত চলছে, তা আগামী ২০শে এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

তবে ওই সময়ের আগেই তদন্ত শেষ করে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু করতে চান ট্রাইব্যুনালের কৌঁসুলিরা। চলতি বছরের মধ্যে বেশ কিছু মামলার বিচারকাজ শেষ করার লক্ষ্যও রয়েছে তাদের। “সবগুলো মামলার বিচার শেষ করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে সিলেক্টেড কিছু মামলাকে হয়তো এবছরের মধ্যে শেষ করা যাবে,” বলছিলেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর। “সেক্ষেত্রে প্রধান আসামি যিনি (শেখ হাসিনা), তার অন্তত একটা মামলার বিচার আমরা এবছর শেষ করার চেষ্টা করবো,” বিবিসি বাংলাকে বলেন মি. ইসলাম।

ফেরানোর প্রক্রিয়া কতদূর?
শেখ হাসিনার উপস্থিতিতেই মামলাগুলোর বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কৌঁসুলিরা। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু গণআন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগে সভাপতিকে গত ছয় মাসেও দেশে ফেরানো সম্ভব হয়নি। “সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের কাছে এ ব্যাপারে রিকোয়েস্ট করা হয়েছে। ভারত কোনো রিপ্লাই দেয়নি” বলেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

তারপরও শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা থেমে নেই বলে জানিয়েছেন এই কৌঁসুলি। “নানাভাবেই চেষ্টা অব্যাহত আছে। যদি উনাকে আনা যায়, ভালো। আর যদি না আনা যায়, তাহলে আইনে যে প্রক্রিয়া আছে ‘ইন অ্যাবসেন্সিয়া ট্রায়াল’, সেটি অনুসরণ করে আমরা অগ্রসর হবো,” বিবিসি বাংলাকে বলেন মি. ইসলাম।

জাতিসংঘের সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে :
গতবছর জুলাই-অগাস্টে বিক্ষোভ দমনে শেখ হাসিনা সরকার ও আওয়ামী লীগের নেতারা যেভাবে বলপ্রয়োগ করেছে, সেখানে “গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের” প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল।দমন-পীড়নের ওইসব ঘটনা “মানবতাবিরোধী অপরাধে”র কাতারে পড়তে পারে বলেও জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তখনকার ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে দলটি যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছে, সেগুলো কাজে লাগাতে চায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। “ইতোমধ্যেই আমরা যোগাযোগ শুরু করেছি। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাদের কাছ থেকে গণহত্যাসহ যাবতীয় মানবতাবিরোধী অপরাধের তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করা হবে,” চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

শেখ হাসিনাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্তদের বিচার করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের তথ্য-প্রমাণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন এই আইনজীবী। “জাতিসংঘের মতো একটা সংস্থা বলছে যে, এটা ওয়াইড স্প্রেড সিস্টেমেটিক ওয়েতে কিলিং হয়েছে এবং সেটা হাসিনার নির্দেশে হয়েছে। কী কী অস্ত্র ব্যবহার করে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেটাও বলা হয়েছে। এটা একটা শক্ত প্রমাণ, যা অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে,” বলেন মি. ইসলাম।

উল্লেখ্য যে, জুলাই-অগাস্টে বিক্ষোভ দমন ও হত্যার ঘটনা তদন্ত শেষে গত ১২ই ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর)। সেখানে বলা হয়েছে, “এটা বিশ্বাস করার ভিত্তি আছে যে, ১৫ জুলাই থেকে পাঁচই অগাস্ট পর্যন্ত সাবেক সরকার এবং এর নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কাঠামো, আওয়ামী লীগের সহিংস গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে একত্রিত হয়ে মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে পদ্ধতিগতভাবে জড়িয়ে পড়েছিলো।” জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশের প্রায় ১৪০০ জনের মতো মানুষ নিহত হন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগের মৃত্যু হয়েছে রাইফেল ও শটগানের গুলিতে। এক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সমন্বয়কাজে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান নেতৃত্ব দেন বলে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। “তখনকার প্রধানমন্ত্রী নিজেই নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বিক্ষোভ দমনের জন্য বিক্ষোভকারীদের হত্যা করতে বলেছিলেন এবং বিশেষভাবে বিক্ষোভের মূল হোতা, সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের গ্রেফতার, হত্যা এবং হত্যার পর লাশ লুকিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন,” প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাক্ষ্যকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়।

প্রতিবেদন প্রকাশের পর জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের প্রধান রোরি মুনগোভেন বিবিসিকে বলেন, ” প্রতিবেদনটিতে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে যা আন্তর্জাতিক অপরাধের পর্যায়ে পড়ে এবং সেসবের সুবিচার হওয়া প্রয়োজন।” সূত্র: বিবিসি

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

শেখ হাসিনার বিচার শুরু হতে পারে এপ্রিলে

প্রকাশের সময় : ১০:৩৬:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া আগামী এপ্রিল মাসে শুরু হতে পারে। মঙ্গলবার বিবিসি বাংলাকে এ কথা জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

এ লক্ষ্যে দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলার তদন্তকাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে বলেও জানান এই আইনজীবী। “আমরা আশা করি, আগামী (মার্চ) মাসের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হওয়া মামলার তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা সম্ভব হবে। যদি মার্চ মাসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট আমরা পেয়ে যায়, তাহলে এপ্রিল মাস থেকে বিচার প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিক পর্বটা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মি. ইসলাম।

গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত পাঁচই অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, গুম, অপহরণসহ বিভিন্ন অভিযোগে আড়াইশ’টিরও বেশি মামলা হয়েছে। বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। এর মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে যে তদন্ত চলছে, তা আগামী ২০শে এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

তবে ওই সময়ের আগেই তদন্ত শেষ করে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু করতে চান ট্রাইব্যুনালের কৌঁসুলিরা। চলতি বছরের মধ্যে বেশ কিছু মামলার বিচারকাজ শেষ করার লক্ষ্যও রয়েছে তাদের। “সবগুলো মামলার বিচার শেষ করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে সিলেক্টেড কিছু মামলাকে হয়তো এবছরের মধ্যে শেষ করা যাবে,” বলছিলেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর। “সেক্ষেত্রে প্রধান আসামি যিনি (শেখ হাসিনা), তার অন্তত একটা মামলার বিচার আমরা এবছর শেষ করার চেষ্টা করবো,” বিবিসি বাংলাকে বলেন মি. ইসলাম।

ফেরানোর প্রক্রিয়া কতদূর?
শেখ হাসিনার উপস্থিতিতেই মামলাগুলোর বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কৌঁসুলিরা। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু গণআন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগে সভাপতিকে গত ছয় মাসেও দেশে ফেরানো সম্ভব হয়নি। “সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের কাছে এ ব্যাপারে রিকোয়েস্ট করা হয়েছে। ভারত কোনো রিপ্লাই দেয়নি” বলেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

তারপরও শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা থেমে নেই বলে জানিয়েছেন এই কৌঁসুলি। “নানাভাবেই চেষ্টা অব্যাহত আছে। যদি উনাকে আনা যায়, ভালো। আর যদি না আনা যায়, তাহলে আইনে যে প্রক্রিয়া আছে ‘ইন অ্যাবসেন্সিয়া ট্রায়াল’, সেটি অনুসরণ করে আমরা অগ্রসর হবো,” বিবিসি বাংলাকে বলেন মি. ইসলাম।

জাতিসংঘের সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে :
গতবছর জুলাই-অগাস্টে বিক্ষোভ দমনে শেখ হাসিনা সরকার ও আওয়ামী লীগের নেতারা যেভাবে বলপ্রয়োগ করেছে, সেখানে “গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের” প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল।দমন-পীড়নের ওইসব ঘটনা “মানবতাবিরোধী অপরাধে”র কাতারে পড়তে পারে বলেও জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তখনকার ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে দলটি যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছে, সেগুলো কাজে লাগাতে চায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। “ইতোমধ্যেই আমরা যোগাযোগ শুরু করেছি। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাদের কাছ থেকে গণহত্যাসহ যাবতীয় মানবতাবিরোধী অপরাধের তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করা হবে,” চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

শেখ হাসিনাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্তদের বিচার করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের তথ্য-প্রমাণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন এই আইনজীবী। “জাতিসংঘের মতো একটা সংস্থা বলছে যে, এটা ওয়াইড স্প্রেড সিস্টেমেটিক ওয়েতে কিলিং হয়েছে এবং সেটা হাসিনার নির্দেশে হয়েছে। কী কী অস্ত্র ব্যবহার করে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেটাও বলা হয়েছে। এটা একটা শক্ত প্রমাণ, যা অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে,” বলেন মি. ইসলাম।

উল্লেখ্য যে, জুলাই-অগাস্টে বিক্ষোভ দমন ও হত্যার ঘটনা তদন্ত শেষে গত ১২ই ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর)। সেখানে বলা হয়েছে, “এটা বিশ্বাস করার ভিত্তি আছে যে, ১৫ জুলাই থেকে পাঁচই অগাস্ট পর্যন্ত সাবেক সরকার এবং এর নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কাঠামো, আওয়ামী লীগের সহিংস গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে একত্রিত হয়ে মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে পদ্ধতিগতভাবে জড়িয়ে পড়েছিলো।” জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশের প্রায় ১৪০০ জনের মতো মানুষ নিহত হন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগের মৃত্যু হয়েছে রাইফেল ও শটগানের গুলিতে। এক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সমন্বয়কাজে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান নেতৃত্ব দেন বলে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। “তখনকার প্রধানমন্ত্রী নিজেই নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বিক্ষোভ দমনের জন্য বিক্ষোভকারীদের হত্যা করতে বলেছিলেন এবং বিশেষভাবে বিক্ষোভের মূল হোতা, সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের গ্রেফতার, হত্যা এবং হত্যার পর লাশ লুকিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন,” প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাক্ষ্যকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়।

প্রতিবেদন প্রকাশের পর জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের প্রধান রোরি মুনগোভেন বিবিসিকে বলেন, ” প্রতিবেদনটিতে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে যা আন্তর্জাতিক অপরাধের পর্যায়ে পড়ে এবং সেসবের সুবিচার হওয়া প্রয়োজন।” সূত্র: বিবিসি