পিলখানা হত্যাকাণ্ড
পলাতকদের অবস্থান শনাক্ত হচ্ছে

- প্রকাশের সময় : ০১:৫৯:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৪২ বার পঠিত
- ‘সেনা আইনভঙ্গ’র বিষয়ে পর্যালোচনা
- প্রতিবেদন জমা দিতে বাড়তি সময় লাগতে পারে
- ৩৭ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে তদন্ত কমিশন
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তথ্যগত সহায়তা ও ঘটনায় জড়িত পলাতক আসামিদের অবস্থান জানতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি দূতাবাসে চিঠি দিয়েছে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন। তদন্ত কমিশন বলছে, গত জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর অনেকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। কে কোথায় আছেন, সে বিষয়ে কমিশন নিশ্চিত নয়। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের তদন্তের স্বার্থে তাদের অনেককে প্রয়োজন। এই ব্যক্তিদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চেষ্টা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরির বিআরআইসিএম ভবনে ‘বিডিআর বিদ্রোহে হত্যাকাণ্ড’ সম্পর্কিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন কমিশন সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান।
কমিশন সভাপতি বলেন, রাজধানীর পিলখানায় ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সেনাসদস্যসহ ৩৭ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে তদন্ত কমিশন। নিহতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন, ‘এ ঘটনার তদন্তে আমরা যাদের প্রয়োজন মনে করছি, তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। কারণ যেকোনো সময় যে কাউকে জিজ্ঞাসার প্রয়োজন হতে পারে। সময়মতো তাদের যেন কাছে পাই। তবে তাদের সংখ্যা বলছি না।’ কোনো কোনো দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের কথা বলছেন- জানতে চাইলে আ ল ম ফজলুর রহমান বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থে সুনির্দিষ্ট দূতাবাসের নাম বলা যাচ্ছে না। কোনো ব্যক্তি যদি বিদেশে লুকিয়ে থাকেন, তার অবস্থান শনাক্ত এবং যোগাযোগ করা কঠিন বিষয়। এটা সময়সাপেক্ষ। এ ছাড়া আমরা দূতাবাসগুলোর কাছ থেকে অনেক ধরনের সহযোগিতা ও তথ্য চাই। আমরা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছি, আমাদের তদন্তের স্বার্থে যাদের প্রয়োজন তাদের যেন ফেরত আনতে পারি।’
উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, ‘যেমন জেনারেল মইন ঘটনার সময় চিফ অব আর্মি ছিলেন। তার স্টেটমেন্ট আমাদের খুব দরকার। কারণ অপারেশনটা সেখানে কেন ফেল করল। কেন এত সেনা অফিসারকে হত্যা করা হলো। আবার গণমাধ্যমের সূত্রে জেনেছি, শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছেন। আমাদের কাছে অন্য কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। এই লোকগুলোকে কানেক্ট করা চ্যালেঞ্জ।’ এখানে সেনা আইনভঙ্গের বিষয়টিও দেখতে বলে তিনি উল্লেখ করেন। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের কয়টি প্রতিবেদন পেয়েছেন, সেগুলো আমলে নিচ্ছেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা দুটি প্রতিবেদনের মধ্যে একটি পেয়েছি। লে. কর্নেল জাহাঙ্গীর চৌধুরীর (বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা) তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেয়েছি। সচিব আনিসুজ্জামানের তদন্ত রিপোর্ট পাইনি, তবে সামারি পেয়েছি।’ কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করবেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা মামলা-সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত করব না। তবে যারা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন, তারা চাইলে আমাদের তথ্য দিতে পারেন, অথবা ওয়েবসাইটেও জানাতে পারেন।’
৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিতে পারবেন কি না- উত্তরে তিনি বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিপোর্ট দিতে চেষ্টা করছি। তবে দুটি বাধার মধ্যে একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়, অন্যটি বিদেশে পলাতকদের কানেক্ট (সংযোগ) করা, জিজ্ঞাসাবাদ করা। অভ্যন্তরীণটা সহজেই সম্ভব, কিন্তু বিদেশ পলাতকদের বিষয়টি কঠিন। সেজন্য বাড়তি সময় লাগতে পারে।’ জেনারেল মইন বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন কি না- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি যা বলেছেন, তাই কেন বিশ্বাস করব? আসুক আমাদের সামনে বলুক। তখন জানার চেষ্টা করব। তাকে ফেরানোর জন্য দূতাবাসকে চিঠি দিয়েছি। কোনো উত্তর এখনো পাইনি।’ সূত্র : দেশ রুপান্তর।