নিউইয়র্ক ০৭:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834
সোমবার রাত থেকেই ব্রডব্যান্ড পরিষেবা চালু করা যাবে বলে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে। মোবাইল ইন্টারনেটও শীঘ্রই চালুর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবারেও কার্ফু থাকছে

আন্দবাজার পত্রিকা’র খবর : ছন্দে ফিরছে বাংলাদেশ

হককথা ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১২:৫৪:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ জুলাই ২০২৪
  • / ৩৪২ বার পঠিত

সুপ্রিম কোর্ট রবিবারের রায়ে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কারের নির্দেশ দেওয়ার পরে বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। সংরক্ষণ-বিরোধী আন্দোলনের যৌথ মঞ্চ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম আপাতত মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) পর্যন্ত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত রাখার ঘোষণা করেছেন। মঙ্গলবার সরকার নতুন কোটা ব্যবস্থার প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে বলে আইনমন্ত্রী আনিসুর রহমান আগে জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সোমবার বাংলাদেশ সময়ে রাত ৯টার কিছু পরে এই প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন দফতর। আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ জানিয়েছেন, প্রজ্ঞাপন খতিয়ে দেখার পরে তাঁরা আন্দোলন প্রত্যাহারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। সরকারি ছুটিও মঙ্গলবার পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানিয়েছেন, “দু’এক দিনেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।” সোমবার রাত থেকেই ব্রডব্যান্ড পরিষেবা চালু করা যাবে বলে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে। মোবাইল ইন্টারনেটও শীঘ্রই চালুর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবারেও কার্ফু থাকছে।

গত কয়েক দিনের কোটা-বিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার বলেন, “ছাত্রদের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে অপশক্তি দেশজুড়ে ভয়ানক নাশকতা চালিয়েছে। দেশের উন্নয়ন ব্যাহত করাই ছিল এদের লক্ষ্য। বিএনপি এবং তাদের শরিক জামাতে ইসলামি পরিকল্পিত ভাবে এই সব করেছে। জ্বালাও পোড়াও আগেও করেছে তারা। ফের এক বার তার মহড়া দিল।” দেশের রফতানিকারী ও ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলি এ দিন প্রধানমন্ত্রীর দফতর গণভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন। হাসিনা তাঁদের বলেন, “এই অপশক্তি ভয়ঙ্কর হিংসা ছড়িয়েছে, বিপুল পরিমাণ সরকারি সম্পত্তিতে আগুন দিয়েছে ও ভাঙচুর করেছে। অর্থনীতির গুরুতর ক্ষতি করেছে। আর কখনও তারা যাতে এই কাজ করতে না-পারে, এদের আমরা খুঁজে বার করে কঠোর হাতে দমন করব।”

সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মহম্মদ আলি আরাফত এই অনুষ্ঠানে বলেন, “সরকারের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বক্তব্যের কোনও ফারাক নেই। ২০১৮-য় ছাত্ররা রাস্তায় নেমে দাবি জানানোর পরে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ জারি করে কোটা উচ্ছেদ করেছিলেন। তার পরে যে নিয়োগ হয়েছে, তা তো কোটা মেনে হয়নি। হাই কোর্ট সরকারি নির্দেশ খারিজ করার পরে সরকার তা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে কেন, কোটা সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করে বলেই তো! তা হলে ছাত্রদের কেন সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া?” আরাফতের মতে- আগুন ও ভাঙচুরের ধরণ দেখলেই পরিষ্কার, পরিকল্পনা নিয়েই সে সব করা। তিনি বলেন, “কোটা সংস্কারের সঙ্গে সেতু মন্ত্রকের কী যোগ? দেশের অহঙ্কার পদ্মা সেতু নির্মাণের পরে দেখাশোনা করে এই মন্ত্রক। এই মন্ত্রকে আগুন দেওয়া হয়েছে, দফতরের ১১৯টি গাড়ি দফায় দফায় পোড়ানো হয়েছে। বিটিভি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইন্টারনেট কেবল-এর গুরুতর ক্ষতি করা হয়েছে। অর্থনীতিকে থমকে দেওয়া হয়েছে। এখন বলছে, নেট বন্ধ কেন, সরকার জবাব দাও!”

এ দিন থেকেই পুলিশ ধরপাকড় শুরু করেছে। বিএনপি এবং জামাতের বেশ কিছু নেতা কর্মীকে হিংসায় উস্কানি দেওয়ার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। কোটা আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, গোয়েন্দা পুলিশ তাঁকে মধ্যরাতে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে গিয়ে ২৪ ঘণ্টা আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছে। জ্ঞান ফেরার পরে তিনি দেখেন, একটি সেতুর নীচে পড়ে আছেন। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে শরীরে চোট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পুলিশ যদিও নাহিদকে গ্রেফতারের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। এ দিন রাতে কোটা আন্দোলনের নেতারা অভিযোগ করেন, তাঁদের আরও চার জন সমন্বয়ককে পুলিশ গুম করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোয় ৫৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শরিয়তে নিজের দেশের সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন গুরুতর অপরাধ। সেই অপরাধের ধারায় বিচার করা হবে এঁদের।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

সোমবার রাত থেকেই ব্রডব্যান্ড পরিষেবা চালু করা যাবে বলে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে। মোবাইল ইন্টারনেটও শীঘ্রই চালুর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবারেও কার্ফু থাকছে

আন্দবাজার পত্রিকা’র খবর : ছন্দে ফিরছে বাংলাদেশ

প্রকাশের সময় : ১২:৫৪:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ জুলাই ২০২৪

সুপ্রিম কোর্ট রবিবারের রায়ে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কারের নির্দেশ দেওয়ার পরে বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। সংরক্ষণ-বিরোধী আন্দোলনের যৌথ মঞ্চ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম আপাতত মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) পর্যন্ত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত রাখার ঘোষণা করেছেন। মঙ্গলবার সরকার নতুন কোটা ব্যবস্থার প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে বলে আইনমন্ত্রী আনিসুর রহমান আগে জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সোমবার বাংলাদেশ সময়ে রাত ৯টার কিছু পরে এই প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন দফতর। আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ জানিয়েছেন, প্রজ্ঞাপন খতিয়ে দেখার পরে তাঁরা আন্দোলন প্রত্যাহারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। সরকারি ছুটিও মঙ্গলবার পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানিয়েছেন, “দু’এক দিনেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।” সোমবার রাত থেকেই ব্রডব্যান্ড পরিষেবা চালু করা যাবে বলে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে। মোবাইল ইন্টারনেটও শীঘ্রই চালুর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবারেও কার্ফু থাকছে।

গত কয়েক দিনের কোটা-বিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার বলেন, “ছাত্রদের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে অপশক্তি দেশজুড়ে ভয়ানক নাশকতা চালিয়েছে। দেশের উন্নয়ন ব্যাহত করাই ছিল এদের লক্ষ্য। বিএনপি এবং তাদের শরিক জামাতে ইসলামি পরিকল্পিত ভাবে এই সব করেছে। জ্বালাও পোড়াও আগেও করেছে তারা। ফের এক বার তার মহড়া দিল।” দেশের রফতানিকারী ও ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলি এ দিন প্রধানমন্ত্রীর দফতর গণভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন। হাসিনা তাঁদের বলেন, “এই অপশক্তি ভয়ঙ্কর হিংসা ছড়িয়েছে, বিপুল পরিমাণ সরকারি সম্পত্তিতে আগুন দিয়েছে ও ভাঙচুর করেছে। অর্থনীতির গুরুতর ক্ষতি করেছে। আর কখনও তারা যাতে এই কাজ করতে না-পারে, এদের আমরা খুঁজে বার করে কঠোর হাতে দমন করব।”

সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মহম্মদ আলি আরাফত এই অনুষ্ঠানে বলেন, “সরকারের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বক্তব্যের কোনও ফারাক নেই। ২০১৮-য় ছাত্ররা রাস্তায় নেমে দাবি জানানোর পরে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ জারি করে কোটা উচ্ছেদ করেছিলেন। তার পরে যে নিয়োগ হয়েছে, তা তো কোটা মেনে হয়নি। হাই কোর্ট সরকারি নির্দেশ খারিজ করার পরে সরকার তা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে কেন, কোটা সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করে বলেই তো! তা হলে ছাত্রদের কেন সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া?” আরাফতের মতে- আগুন ও ভাঙচুরের ধরণ দেখলেই পরিষ্কার, পরিকল্পনা নিয়েই সে সব করা। তিনি বলেন, “কোটা সংস্কারের সঙ্গে সেতু মন্ত্রকের কী যোগ? দেশের অহঙ্কার পদ্মা সেতু নির্মাণের পরে দেখাশোনা করে এই মন্ত্রক। এই মন্ত্রকে আগুন দেওয়া হয়েছে, দফতরের ১১৯টি গাড়ি দফায় দফায় পোড়ানো হয়েছে। বিটিভি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইন্টারনেট কেবল-এর গুরুতর ক্ষতি করা হয়েছে। অর্থনীতিকে থমকে দেওয়া হয়েছে। এখন বলছে, নেট বন্ধ কেন, সরকার জবাব দাও!”

এ দিন থেকেই পুলিশ ধরপাকড় শুরু করেছে। বিএনপি এবং জামাতের বেশ কিছু নেতা কর্মীকে হিংসায় উস্কানি দেওয়ার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। কোটা আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, গোয়েন্দা পুলিশ তাঁকে মধ্যরাতে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে গিয়ে ২৪ ঘণ্টা আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছে। জ্ঞান ফেরার পরে তিনি দেখেন, একটি সেতুর নীচে পড়ে আছেন। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে শরীরে চোট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পুলিশ যদিও নাহিদকে গ্রেফতারের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। এ দিন রাতে কোটা আন্দোলনের নেতারা অভিযোগ করেন, তাঁদের আরও চার জন সমন্বয়ককে পুলিশ গুম করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোয় ৫৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শরিয়তে নিজের দেশের সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন গুরুতর অপরাধ। সেই অপরাধের ধারায় বিচার করা হবে এঁদের।