নিউইয়র্ক ০৭:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834
সামাজিক মাধ্যমে বীরের সম্মাননা

নিজে মরে গিয়ে জাওয়াদ বাঁচিয়ে গেলেন অনেককে

হককথা ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১২:০৯:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪
  • / ২১৭ বার পঠিত

স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ

হাসতে হাসতে দেশের জন্য জীবন দিতে পারে ক’জনই! বেঁচে থাকার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তা কাজে না লাগিয়ে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য আত্মত্যাগ করতে পারে ক’জনই! বর্তমান সময়ে এসে দেশপ্রেমের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এক তরুণ। তার নাম স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ। সম্প্রতি একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধ বিমান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনায় পড়ে এবং এ ঘটনায় ৩১ বছর বয়সী এই তরুণের মৃত্যু হয়। তার এই আত্মত্যাগকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে বীরের সঙ্গে তুলনা করছেন, কেউ কেউ বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সঙ্গে তুলনা করছেন, আবার কেউ বা বলছেন দেশপ্রেমের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর চট্টগ্রামের জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকাল ১০ টা ২৫ মিনিটে উড্ডয়ন করেছিল ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমান। নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার মো. সোহান হাসান খাঁন এবং স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানটি নিয়ে আকাশে উড়ছিলেন।

হঠাৎ প্রশিক্ষণের শেষ প্রান্তে উড্ডয়নরত বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। এ অবস্থায় চট্টগ্রামের জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকা তথা সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে দূরে জনশূন্য কোথাও অবতরণ করাটাই ছিল পাইলটদের প্রধান লক্ষ্য। সে লক্ষেই কর্ণফুলী মোহনায় বিমানটি নিয়ে জরুরি প্যারাসুটে নদীতে অবতরণ করেন ওই দুই পাইলট। বিমানটিও নদীতে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। এরপর ওই দুজন পাইলটকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলেও তাদের মধ্যে বাঁচানো যায়নি বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদকে (৩১)।

ক্যাডেটদের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ ‘সোর্ড অব অনার’ অর্জনকারী স্কোয়াড্রন লিডার জাওয়াদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের এ ঘটনাকেও নজির হিসেবে দেখছেন সামরিক বিশ্লেষকসহ সাধারণ মানুষ। স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদের মৃত্যুতে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নানও মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবাররের প্রতি সমবেদনা জানান।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর প্রশিক্ষণ শেষে ফেরার সময় কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছে প্রশিক্ষণ বিমানটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়। দুর্ঘটনার পর বৈমানিকরা (উইং কমান্ডার মো. সোহান হাসান খাঁন এবং স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ) জরুরি প্যারাসুট দিয়ে বিমান থেকে নদীতে অবতরণ করেন। এসময় ওই দুই বৈমানিককে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী দল এবং স্থানীয় জেলেদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উদ্ধার করা হয়। বৈমানিকদের মধ্যে স্কোয়াড্রন লীডার জাওয়াদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দ্রুত চিকিৎসার জন্য ‘বিএনএস’ পতেঙ্গাতে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সর্বাত্মক প্রচেষ্টার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক কন্যা, এক পুত্র, বাবা-মা এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

আইএসপিআর জানিয়েছে, বিমানটিতে আগুন ধরে যাওয়ার পর বড় ধরনের ক্ষতি এড়াতে ওই বৈমানিকরা অত্যন্ত সাহসিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে বিমানটিকে বিমানবন্দরের কাছে অবস্থিত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এড়িয়ে জনশূন্য এলাকায় নিয়ে যেতে সক্ষম হন।

এদিকে দুর্ঘটনার পর কয়েক মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে। ভিডিওতে দেখা যায় চলন্ত প্রশিক্ষণ বিমানটির পেছনে জ্বলছে আগুন। এর কিছুক্ষণ পরই সামনের অংশ নিচের দিকে সোজা নামতে থাকে। এরপর প্রচন্ড শব্দে বিধ্বস্ত হয়। এছাড়া পাইলট জাওয়াদের ছবিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। একটি ছবিতে দেখা যায়, স্ত্রী দুই সন্তানসহ দাঁড়িয়ে আছেন। অনেকেই আবার জাওয়াদের ছবিসহ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাকে তুলনা করছেন বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সঙ্গে, বলছেন বর্তমান সমেয়ের বীর জাওয়াদ।

আব্দুল আওয়াল ডোস নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী আসিম জাওয়াদের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘বীরদের কখনও মৃত্যু হয়না৷ লাখো শহীদের এই মাটিতে বীরেরা বার বার জন্মায়। কখনও ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান হয়ে আবার কখনও বা স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ হয়ে। বীনম্র শ্রদ্ধা।’ আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী আব্দুল হাকিম বলেন, আমাদের একজন বীর ছিলেন স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ। ‘আপনাকে ভুলব না আমরা, দেশের মানুষের জন্য শহীদ হয়েছেন’, বলেন ইয়ামিন ইসলাম।

আরেকজন সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারী স্ট্যাটাসে বলেন, ‘বাঁচার সুযোগ থাকলেও জীবন উৎসর্গ করেন পাইলট আসিম জাওয়াদ। নিজে মরে গিয়ে বাঁচিয়ে গেলেন অনেককে।’ বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সঙ্গে জাওয়াদকে তুলনা করে ইমরান আহমেদ ফেসবুকে লিখেন, আসিম জাওয়াদ অনেকগুলো জীবন বাঁচিয়ে প্রমাণ করেছেন, বীরশ্রেষ্ট মতিউররা এখনও এদেশে জন্ম নেয়।

এদিকে বলিউড সিনেমা রঙ দে বাসান্তি সিনেমার নায়কের সঙ্গে তুলনা করে ফাবিহা আনবার রইস নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী বলেন, ‘মানিকগঞ্জের কৃতি সন্তান, শহীদ লিডার আসিম জাওয়াদ। আমির খানের রঙ দে বাসান্তি সিনেমায় একটা চরিত্র ছিল ফ্লাইট লে: আজয় সিং রাঠোড়! ঘনবসতি লোকালয়ে যেন প্লেন বিধ্বস্থ না হয় সেটা নিশ্চিত করতে শেষ পর্যন্ত প্লেনের ভিতরে থাকার জন্য জীবন দিতে হয় তাকে!’

‘সিনেমার গল্পটা বাস্তবে মঞ্চায়ন করলেন স্কোয়াড্রেন লিডার আসিম জাওয়াদ, সাথে ছিলেন উইং কমান্ডার সোহান হাসান খান! প্লেনে আগুন ধরলে জীবন বাজি রেখে লোকালয় থেকে দূরে নদীর উপর নিয়ে যান! শেষ মুহূর্তে প্যারাসুট দিয়ে প্লেন থেকে বের হতে পারলেও শেষ রক্ষা হয়নি জাওয়াদের! হয়তো আরও আগে বেরিয়ে যেতে পারতেন! কিন্তু বীরের মত নিজের জীবনের বিনিময়ে অনেকগুলো জীবন বাঁচিয়ে প্রমাণ করেছেন, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউররা এখনও এদেশে জন্ম নেয়!’ আসিম জাওয়াদের মতো বাংলাদেশের আরও অনেক সূর্য সন্তান তাদের প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ বছরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রায় ৮০টি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে প্রাণ হারিয়েছেন আসিম জাওয়াদের মতো অনেকেই। সূত্র : সমকাল

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

সামাজিক মাধ্যমে বীরের সম্মাননা

নিজে মরে গিয়ে জাওয়াদ বাঁচিয়ে গেলেন অনেককে

প্রকাশের সময় : ১২:০৯:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪

হাসতে হাসতে দেশের জন্য জীবন দিতে পারে ক’জনই! বেঁচে থাকার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তা কাজে না লাগিয়ে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য আত্মত্যাগ করতে পারে ক’জনই! বর্তমান সময়ে এসে দেশপ্রেমের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এক তরুণ। তার নাম স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ। সম্প্রতি একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধ বিমান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনায় পড়ে এবং এ ঘটনায় ৩১ বছর বয়সী এই তরুণের মৃত্যু হয়। তার এই আত্মত্যাগকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে বীরের সঙ্গে তুলনা করছেন, কেউ কেউ বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সঙ্গে তুলনা করছেন, আবার কেউ বা বলছেন দেশপ্রেমের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর চট্টগ্রামের জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকাল ১০ টা ২৫ মিনিটে উড্ডয়ন করেছিল ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমান। নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার মো. সোহান হাসান খাঁন এবং স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানটি নিয়ে আকাশে উড়ছিলেন।

হঠাৎ প্রশিক্ষণের শেষ প্রান্তে উড্ডয়নরত বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। এ অবস্থায় চট্টগ্রামের জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকা তথা সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে দূরে জনশূন্য কোথাও অবতরণ করাটাই ছিল পাইলটদের প্রধান লক্ষ্য। সে লক্ষেই কর্ণফুলী মোহনায় বিমানটি নিয়ে জরুরি প্যারাসুটে নদীতে অবতরণ করেন ওই দুই পাইলট। বিমানটিও নদীতে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। এরপর ওই দুজন পাইলটকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলেও তাদের মধ্যে বাঁচানো যায়নি বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদকে (৩১)।

ক্যাডেটদের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ ‘সোর্ড অব অনার’ অর্জনকারী স্কোয়াড্রন লিডার জাওয়াদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের এ ঘটনাকেও নজির হিসেবে দেখছেন সামরিক বিশ্লেষকসহ সাধারণ মানুষ। স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদের মৃত্যুতে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নানও মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবাররের প্রতি সমবেদনা জানান।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর প্রশিক্ষণ শেষে ফেরার সময় কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছে প্রশিক্ষণ বিমানটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়। দুর্ঘটনার পর বৈমানিকরা (উইং কমান্ডার মো. সোহান হাসান খাঁন এবং স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ) জরুরি প্যারাসুট দিয়ে বিমান থেকে নদীতে অবতরণ করেন। এসময় ওই দুই বৈমানিককে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী দল এবং স্থানীয় জেলেদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উদ্ধার করা হয়। বৈমানিকদের মধ্যে স্কোয়াড্রন লীডার জাওয়াদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দ্রুত চিকিৎসার জন্য ‘বিএনএস’ পতেঙ্গাতে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সর্বাত্মক প্রচেষ্টার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক কন্যা, এক পুত্র, বাবা-মা এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

আইএসপিআর জানিয়েছে, বিমানটিতে আগুন ধরে যাওয়ার পর বড় ধরনের ক্ষতি এড়াতে ওই বৈমানিকরা অত্যন্ত সাহসিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে বিমানটিকে বিমানবন্দরের কাছে অবস্থিত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এড়িয়ে জনশূন্য এলাকায় নিয়ে যেতে সক্ষম হন।

এদিকে দুর্ঘটনার পর কয়েক মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে। ভিডিওতে দেখা যায় চলন্ত প্রশিক্ষণ বিমানটির পেছনে জ্বলছে আগুন। এর কিছুক্ষণ পরই সামনের অংশ নিচের দিকে সোজা নামতে থাকে। এরপর প্রচন্ড শব্দে বিধ্বস্ত হয়। এছাড়া পাইলট জাওয়াদের ছবিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। একটি ছবিতে দেখা যায়, স্ত্রী দুই সন্তানসহ দাঁড়িয়ে আছেন। অনেকেই আবার জাওয়াদের ছবিসহ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাকে তুলনা করছেন বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সঙ্গে, বলছেন বর্তমান সমেয়ের বীর জাওয়াদ।

আব্দুল আওয়াল ডোস নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী আসিম জাওয়াদের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘বীরদের কখনও মৃত্যু হয়না৷ লাখো শহীদের এই মাটিতে বীরেরা বার বার জন্মায়। কখনও ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান হয়ে আবার কখনও বা স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ হয়ে। বীনম্র শ্রদ্ধা।’ আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী আব্দুল হাকিম বলেন, আমাদের একজন বীর ছিলেন স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ। ‘আপনাকে ভুলব না আমরা, দেশের মানুষের জন্য শহীদ হয়েছেন’, বলেন ইয়ামিন ইসলাম।

আরেকজন সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারী স্ট্যাটাসে বলেন, ‘বাঁচার সুযোগ থাকলেও জীবন উৎসর্গ করেন পাইলট আসিম জাওয়াদ। নিজে মরে গিয়ে বাঁচিয়ে গেলেন অনেককে।’ বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সঙ্গে জাওয়াদকে তুলনা করে ইমরান আহমেদ ফেসবুকে লিখেন, আসিম জাওয়াদ অনেকগুলো জীবন বাঁচিয়ে প্রমাণ করেছেন, বীরশ্রেষ্ট মতিউররা এখনও এদেশে জন্ম নেয়।

এদিকে বলিউড সিনেমা রঙ দে বাসান্তি সিনেমার নায়কের সঙ্গে তুলনা করে ফাবিহা আনবার রইস নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী বলেন, ‘মানিকগঞ্জের কৃতি সন্তান, শহীদ লিডার আসিম জাওয়াদ। আমির খানের রঙ দে বাসান্তি সিনেমায় একটা চরিত্র ছিল ফ্লাইট লে: আজয় সিং রাঠোড়! ঘনবসতি লোকালয়ে যেন প্লেন বিধ্বস্থ না হয় সেটা নিশ্চিত করতে শেষ পর্যন্ত প্লেনের ভিতরে থাকার জন্য জীবন দিতে হয় তাকে!’

‘সিনেমার গল্পটা বাস্তবে মঞ্চায়ন করলেন স্কোয়াড্রেন লিডার আসিম জাওয়াদ, সাথে ছিলেন উইং কমান্ডার সোহান হাসান খান! প্লেনে আগুন ধরলে জীবন বাজি রেখে লোকালয় থেকে দূরে নদীর উপর নিয়ে যান! শেষ মুহূর্তে প্যারাসুট দিয়ে প্লেন থেকে বের হতে পারলেও শেষ রক্ষা হয়নি জাওয়াদের! হয়তো আরও আগে বেরিয়ে যেতে পারতেন! কিন্তু বীরের মত নিজের জীবনের বিনিময়ে অনেকগুলো জীবন বাঁচিয়ে প্রমাণ করেছেন, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউররা এখনও এদেশে জন্ম নেয়!’ আসিম জাওয়াদের মতো বাংলাদেশের আরও অনেক সূর্য সন্তান তাদের প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ বছরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রায় ৮০টি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে প্রাণ হারিয়েছেন আসিম জাওয়াদের মতো অনেকেই। সূত্র : সমকাল