জাপা এখন জাতীয় আওয়ামী পার্টিতে পরিণত হয়েছে: রিজভী
- প্রকাশের সময় : ১২:৪০:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৪
- / ১২৮ বার পঠিত
সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের গড়া দল জাতীয় পার্টি এখন জাতীয় আওয়ামী পার্টিতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এই পার্টি তাদের অস্তিত্ব আওয়ামী লীগে বিলীন করে দিয়েছিল। পোস্টারে শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত এই পার্টি এখন জাতীয় আওয়ামী পার্টিতে পরিণত হয়েছে।’ মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘একদলীয় ডামি সংসদ হতে যাচ্ছে আরেক আজব রঙ্গমঞ্চ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঠিক করে দিচ্ছেন কে হবে বিরোধী দল। তিনি গতকাল বলেছেন, জাতীয় পার্টিই হচ্ছে নতুন সংসদের প্রধান বিরোধী দল। সম্ভবত পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে প্রধানমন্ত্রী বাছাই করেন বিরোধীদল কে হবে।’ যশোর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বিজিবি সদস্য নিহত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে রিজভী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ক্ষমতাসীন সরকারের আচরণ এখন আর ‘বন্ধুপ্রতিম’ নয় ‘বন্দুকপ্রতিম’।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘দেশের অভ্যন্তরে মানুষের যেমন নিরাপত্তা নেই সীমান্তে কি বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা রয়েছে? এতদিন দেখেছি, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে সাধারণ বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। আর এখন দেখছি, সীমান্তে এখন বিজিবিরও নিরাপত্তা নেই। যশোর সীমান্তের ধান্যখোলা বিওপির জেলেপাড়া পোস্ট-সংলগ্ন এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মোহাম্মদ রইশুদ্দীন নামে এক বিজিবি সদস্য নিহত হয়েছেন। অন্য দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে আরেকটা স্বাধীন দেশের সীমান্তরক্ষীবাহিনী হত্যা কোনো সাধারণ ঘটনা নয়, বরং এটির সঙ্গে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন জড়িত।
রিজভী বলেন, আমরা উদ্বেগের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতা লোভের ফলশ্রুতিতে নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে বাংলাদেশ তাবেদার রাষ্ট্র। অবৈধ সরকার আজ দেশবিরোধী ঘৃণ্যচক্রান্তের ক্রীড়নক। সীমান্তরক্ষিবাহিনী বিজিবি পর্যন্ত নিরাপত্তাহীনতায়। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ক্ষমতাসীন সরকারের আচরণ এখন আর ‘বন্ধুপ্রতিম’ নয় ‘বন্দুকপ্রতিম’। আর রাজনীতিতে চলছে সর্বনাশা একনায়কতন্ত্র, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একচ্ছত্র আধিপত্যে পর্যবসিত বাংলাদেশ। সামাজিক সংহতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। নিজস্ব স্বার্থে বাংলাদেশকে করা হয়েছে কর্তৃত্ববাদী দেশগুলোর তাবেদার। এই শতকে সভ্যতার সবচেয়ে বড় সংকট কতৃর্ত্ববাদী শাসন।
দেশের অর্থনীতি ভয়াবহ সংকটে এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, সবগুলো ব্যাংক বন্ধের দশা হয়েছে। দেশের ১০-১৫টি ব্যাংক যেকোন সময় দেউলিয়া ঘোষণা হতে পারে। টাকা নেই সরকারের কাছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ছাপিয়ে ছাপিয়ে টাকা দিচ্ছে। তারপর বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, এভাবে টাকা ছাপালে এই টাকা কাগজ হয়ে যাবে। দেশের অর্থনীতি তলানিতে। দেশে ভয়াবহ ডলার সংকট চলছে। এই সংকটে বৈদেশিক মুদ্রা আসার অন্যতম উৎস বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআই বাড়েনি। ৯ মাসে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ২৪ শতাংশ! ইউরোপ-আমেরিকায় পোশাক রপ্তানিতে ধস নেমেছে। ১১ মাসে আমেরিকায় পোশাক রফতানি ২৫ শতাংশ কমেছে। নজীরবিহীনভাবে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ডামি ভোটের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘৭ জানুয়ারির নির্বাচন নতুন ইতিহাস তৈরি করেছে। ভোটে জনগণের মতের প্রতিফলন ঘটেছে। কিন্তু কিছু আঁতেল নির্বাচন নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টির চেষ্টা করছে।’ তার এই বক্তব্য বেতালমার্কা নির্লজ্জতা। তিনি যে ইতিহাস গড়েছেন তাহলো ভোট ডাকাতির এক নজিরবিহীন অভিনব দৃশ্য। এই আমি-ডামির পাতানো ভোটারবিহীন নির্বাচনকে শেখ হাসিনা বলছেন, ভোটে জনগণের মতের প্রতিফলন ঘটেছে। বাস্তবতা হলো জনগণের মতের প্রতিফলন নয়, সেটা হলো এক ক্ষমতার নেশায় আচ্ছন্ন একটি অপরাধপ্রবণ অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীদের ভোট নিয়ে তেলেসমাতি। আর যে কারণে জনগণ একযোগে ভোট বর্জন করেছেন। সূত্র : ঢাকা মেইল।