আবু সাঈদ হত্যা চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ শুরু সম্ভব :চিফ প্রসিকিউটর
দেড় মাসের মাথায় হাসিনার বিচার

- প্রকাশের সময় : ১০:৩৬:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫
- / ৪৭ বার পঠিত
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদ রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় চার আসামিকে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো: গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ নির্দেশ দেন। আসামিদেরকে আগামী ৯ এপ্রিল হাজির করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। এ বিষয়ে চীফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই-আগস্ট গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চলতি মাসেই পাওয়া যাবে।
ট্রাইব্যুনালকে প্রসিকিউশন জানিয়েছে, এই ঘটনায় সরাসরি যুক্ত ছিলেন সাবেক এ এস আই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়। আর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, ছাত্রলীগ কর্মী এমরান চৌধুরী আকাশসহ আরো অনেকে ইন্ধন দিয়ে ছিলেন। অন্য মামলায় গ্রেফতার থাকা ওই আসামিদের এই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর জন্য আবেদন জানিয়েছে প্রসিকিউশন। এর আগে চীফ প্রসিকিউটর চলতি মাসেই শেখ হাসিনাসহ প্রধান প্রধান কয়েকটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার যাবেÑ মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, প্রতিবেদন হাতে পেলে এক থেকে দেড় মাসের মাথায় বিচার কাজ শুরু করা সম্ভব। ওইদিন বিকালে প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার, পরিবেশগত সমস্যা ও আইন প্রয়োগের গুরুত্ব শীর্ষক এক কর্মশালায় যোগদান শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
চীফ প্রসিকিউটর আরো বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দী বিনিময় চুক্তি রয়েছে, যা আওয়ামী লীগ সরকার স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির আওতায় ভারত শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ সময় ইন্টারপোলের সাহায্যে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, বিচার প্রক্রিয়া শুরুর পর বলা যাবে, কত দিন সময় লাগবে। কারণ যে নথিগুলো আছে, ডিজিটাল এভিডেন্স, লাইভ এভিডেন্স, ডকুমেন্টারি এভিডেন্স আছে এবং দুই পক্ষের সাক্ষীর ব্যাপার আছে, আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন কত দিন সময় তারা নেবেন। ট্রাইব্যুনালের বিচার বিরতি ছাড়া চলবে, আমাদের দিক থেকে চাইব যত দ্রুত সম্ভব। আন্তর্জাতিক মানদ- ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেই সেটা করতে হবে। বিস্তৃত ৫৬ হাজার বর্গমাইলজুড়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এটা সাধারণ একটা খুনের মামলা নয়, একটা গুলি বর্ষণের মামলা নয়। এটা মানবতাবিরোধী অপরাধ। এটার বিস্তৃতি ৫৬ হাজার বর্গমাইল। দুই হাজারের মতো মানুষ শহীদ হয়েছেন। ২৫ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
সাক্ষ্য গ্রহণ প্রসঙ্গে চীফ প্রসিকিউটর বলেন, সব আহত ও শহীদ পরিবার কিন্তু ট্রাইব্যুনালে আসছেন না। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আমরা গণশুনানির আয়োজন করেছি। আহতদের কাছে যাচ্ছি, তাদের বোঝাচ্ছি, আপনাদের কাছে যে তথ্য আছে সেগুলো দিন। এই যে বিস্তৃত কাজ, এগুলো সংকলন করে একটি নিখুঁত তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া এ পর্যায়ের চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হবে, ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করার জন্য পরাজিত দোসররা নানাভাবে চেষ্টা করবে। সূত্র : দৈনিক ইনকিলাব।