নির্বাচন নিয়ে কে কী বলল দেখার বিষয় নয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- প্রকাশের সময় : ০৬:০১:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪
- / ১১৬ বার পঠিত
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বক্তব্য সরকার প্রত্যাখান করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।পাশাপাশি নির্বাচন নিয়ে কে কী বলল সেটা বিবেচ্য বিষয় নয় বলেও জানান তিনি। আজ শনিবার ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’ উপলক্ষে রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ক্রমাগতভাবে এ দেশ নিয়ে তারা মিথ্যাচার করছে। কয়েকটি দেশ ছাড়া সব দেশ নির্বাচন নিয়ে ভালো তথ্য দিয়েছে। তবে কে কী বলল তা আমাদের দেখার বিষয় নয়, প্রধানমন্ত্রী সাংবিধানিকভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছেন।’
বিএনপির সমালোচনা করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের চক্রান্তের কারণে কিছু আন্তর্জাতিক মহল আমাদের নির্বাচন বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। তবে তারা এতে সফল হবে না।’
কারাগারে নেতাকর্মী বন্দী হওয়া নিয়ে বিএনপির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কারাগারে কোনো রাজবন্দী নেই। রাজনৈতিকভাবে কাউকে আটক রাখা হয়নি। বিভিন্ন ফৌজদারি অপরাধে বিএনপির সক্রিয় নেতাকর্মীরা জেলে গেছেন। তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) বলছে যে, হাজার হাজার রাজবন্দী। আমি বলব রাজবন্দী বলতে আমাদের এখানে কেউ নেই৷ আমাদের কাছে বন্দী আছে বিএনপির অ্যাক্টিভিস্ট।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যারা প্রধান বিচারপতির বাসায় ভাঙচুর করেছে, যারা আমার পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করেছে, যারা আমার আনসার পিটিয়ে হত্যা করেছে, যারা আমাদের মেয়েদের গায়ে হাত দিয়েছে। আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি…যেটা পুলিশ করছে।’
অন্যায়ভাবে বা রাজনৈতিকভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা যে অপপ্রচার চালাচ্ছে তার কোনো ভিত্তি নেই। তবে তারা নির্বাচনের পরে মনগড়া তথ্য প্রচার করে বিদেশিদের আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে। অথচ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসা বিদেশি সাংবাদিকরা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বলেছেন যে, বাংলাদেশের নির্বাচনের সুষ্ঠু হয়েছে। আমেরিকারও দুই একটি সংগঠন বলেছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।’ ‘তবে কে কী বলল সেটা আমাদের বিবেচ্য বিষয় না। আমাদের দেশে একটি সুন্দর নির্বাচন হয়েছে। আগামীতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ আরও এগিয়ে যাবে’, প্রত্যাশা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন জানান, একটি চক্র দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার জন্য চক্রান্ত শুরু করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী তা জীবন দিয়ে নস্যাৎ করে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে শুক্রবার ইইউর নির্বাচন বিশেষজ্ঞ মিশন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক নির্বাচনের কিছু মানদণ্ড পূরণ করতে পারেনি। নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার যেমন সমাবেশ, সমিতি, আন্দোলন ও বক্তৃতা প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও বাংলাদেশের নির্বাচনের ক্ষেত্রে সেটি সীমাবদ্ধ ছিল।
বিচারিক কার্যক্রম ও গণগ্রেপ্তারের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা মারাত্মকভাবে সীমিত হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক দলগুলোর আসন ভাগাভাগির চুক্তি এবং আওয়ামী লীগের নিজস্ব প্রার্থী ও দলের সঙ্গে যুক্ত ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীদের’ মধ্যে প্রতিযোগিতা ভোটারদের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়নি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের জন্য বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করার মতো পরিবেশ ছিল না। নির্বাচনের কোনো স্বাধীন মূল্যায়ন নির্দলীয় নাগরিক সমাজ দ্বারা পরিচালিত হয়নি।
৭ জানুয়ারির নির্বাচন একটি অত্যন্ত মেরুকরণ করা রাজনৈতিক পরিবেশে পরিচালিত নির্বাচন ছিল উল্লেখ করে ইইউ বলে, বিএনপি ও তার জোট শরিকরা নির্বাচন বয়কট করায় এতে সত্যিকারের প্রতিযোগিতার অভাব ছিল। ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় দেশের নাগরিক ও রাজনৈতিক পরিবেশের উল্লেখযোগ্য অবনতি হয়। সূত্র : আমাদের সময়।