ভারতীয় ভিসা বন্ধে গত বছর কমেছে প্রায় আড়াই লাখ পাসপোর্টধারী যাত্রী
- প্রকাশের সময় : ০৪:২১:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫
- / ২৩ বার পঠিত
ভারতীয় দূতাবাস বাংলাদেশিদের ভিসা বন্ধ করে দেওয়ায় একেবারে কমে এসেছে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত। এর মধ্যে ভারত কিছু ভিসা দিলেও নানান শর্তের বেড়াজালে বেনাপোল বন্দরেই আগের বছরের চেয়ে গত বছর যাতায়াত কমেছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ১৩ জন।
সর্বশেষ মঙ্গলবার বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে গেছে ১ হাজার ২২ জন পাসপোর্টধারী। এঁদের মধ্যে ৭০৮ জন বাংলাদেশি, ৩১৩ জন ভারতীয় ও অন্য দেশের ছিল ২ জন।
এদিকে ভিসা প্রতিবন্ধকতায় ক্ষতির মুখে পড়েছে দুই দেশেরই ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটনশিল্প। এ পরিস্থিতি উত্তরণে দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান ভুক্তভোগীদের।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জানান, বেনাপোল বন্দর থেকে ভারতের কলকাতা শহরের দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। চিকিৎসা ব্যবসা বা অন্যান্য কাজে যাঁরা ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করেন, তাঁদের বড় একটি অংশ বেনাপোল-পেট্রাপোল রুট ব্যবহার করে থাকেন। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন গড়ে বেনাপোল রুটে ৮ থেকে ১০ হাজার পাসপোর্টধারী যাতায়াত করতেন। বছরে ভিসা ফি বাবদ ভারত সরকারের আয় হয়েছে ২০০ কোটি টাকা।
তবে জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মধ্যে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ভারতীয় দূতাবাস বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে। পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণে দেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে স্থিতিশীলতা ফিরলেও এখন পর্যন্ত ভিসা স্বাভাবিক করেনি দেশটি। এ অবস্থা দীর্ঘ স্থায়ী হলে চরমভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে দুই দেশেরই ব্যবসা, বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা ও পর্যটনশিল্প। যাত্রী কমে আসায় সকালে বন্দর এলাকায় কিছুটা ব্যস্ততা থাকলেও দিনভর অলস সময় পার করছেন কর্মকর্তা।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ আহসানুল কাদের ভূঁইয়া জানান, ভিসা বন্ধে যাতায়াত কমেছে পাসপোর্টধারীদের। গেল বছর ২০২৪ সালে বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করে দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করেছে ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৩ জন পাসপোর্টধারী। এর মধ্যে বাংলাদেশি ছিল ১৫ লাখ ৬৫ হাজার ১১০ জন; ভারতীয় ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৪১৩ জন এবং অন্যান্য দেশের যাত্রী ২ হাজার ৪৯০ জন। এর আগে ২০২৩ সালে মোট যাতায়াত করেছে ২২ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩১ জন। এর মধ্যে বাংলাদেশি ছিল ১৮ লাখ ৮৪ হাজার ২১৫ জন; ভারতীয় ৩ লাখ ৮০ হাজার ৬০০ জন এবং অন্যান্য দেশের যাত্রী ২ হাজার ৭১৬ জন। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে এসে পাসপোর্টধারী যাতায়াত কমেছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ১৩ জন। ভারতগামী পাসপোর্টধারী কবির হোসেন জানান, দেশে স্থিতিশীলতা ফিরেছে তাই ভিসা ছাড়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে পারে ভারত সরকার। এতে দুই দেশই উপকৃত হবে।
ভারতীয় পাসপোর্টধারী রবিন সরকার জানান, ভিসা বন্ধে দুই দেশেরই ক্ষতি হচ্ছে। বাংলাদেশিরা আসতে না পারায় তাদের পশ্চিম বঙ্গের ব্যবসা, বাণিজ্য ও পর্যটন খাত বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছে। বেনাপোল বন্দরের সহকারী পরিচালক ফয়সাল আহসান সজীব জানান, যাত্রী কমায় ভ্রমণ খাত অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। তবে আশাবাদী এ পরিস্থিতি দ্রুত কাটিয়ে উঠবে। সূত্র : আজকের পত্রিকা।