নিউইয়র্ক ০৫:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ড. ইউনূসের মামলা : গ্রামীণ টেলিকমের লভ্যাংশ নিয়ে চেম্বারে স্থিতাবস্থা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:২৩:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ১১৪ বার পঠিত

নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ ডেস্ক : নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ কল্যাণের ১০৬ শ্রমিককে মুনাফা দিতে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল করা হাইকোর্টের রায়ের বিষয়বস্তুর ওপর স্থিতাবস্থা জারি করা হয়েছে। হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে শ্রমিকদের আবেদনে শুনানির পর আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত আজ রবিবার এ আদেশ দেন। এ আদেশের ফলে হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা থেমে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের আপাতত শ্রম আদালতে যেতে হচ্ছে না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

গ্রামীণ কল্যাণের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন। পরে আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, আবেদনটি চেম্বার আদালতে উপস্থাপন করে বলেছি, মজুরি আর মুনাফা এক বিষয় না। শ্রমিকরা যদি মজুরি দাবি করতেন তাহলে তাদের শ্রম আদালতে যেতে হত। কিন্তু তারা তা দাবি করেনি।

তারা দাবি করেছে মুনাফার অংশ। চেম্বার আদালত উভয় পক্ষকে শুনে হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য রাখা হয়েছে। ওইদিন কার্যতালিকায় ২০ ক্রমিকের পরে আবেদনটি থাকবে বলে জানিয়েছেন চেম্বার আদালত।

ফলে সে পর্যন্ত শ্রমিকদের আর আর শ্রম আদালতে যেতে হচ্ছে না। কাজেই বিষয়টি এখন নির্ভর করছে আপিল বিভাগের ওপর। সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
হাইকোর্টের রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লিভটু আপিল করা হবে বলেও জানান এই আইনজীবী।

গ্রামীণ কল্যাণের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন কালের কণ্ঠকে বলেন, হাইকোর্টের রায়ের বিষয়বস্তুর ওপর স্টেটাসকো (স্থিতাবস্থা) দেওয়ার মানে হচ্ছে শ্রমকিদের আপাতত শ্রম আদালতে যেতে হচ্ছে না।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ কল্যাণের ১০৬ শ্রমিককে বিধি অনুযায়ী মুনাফা দিতে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় এখতিয়ারবহির্ভূত ঘোষণা করে তা বাতিল করেন হাইকোর্ট। রায়ে আদালত বলেছেন, গ্রামীণ কল্যাণের শ্রমিকরা মুনাফার অংশ পাবে কি না, শ্রম আইন অনুসারে সে সিদ্ধান্ত দেওয়ার এখতিয়ার শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের নেই।

গ্রামীণ কল্যাণ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ কম্পানিভুক্ত একটি অলাভজনক সামাজিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ১০৬ জন শ্রমিক ২০০৬ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত বিভিন্ন পদে এই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। তাদের মধ্যে কেউ অবসরে গেছেন। আবার কাউকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। কিন্তু চাকরির পর প্রতিষ্ঠানটির মুনাফার কোনো অংশ তাদের দেওয়া হয়নি। অথচ ২০২১ সাল থেকে গ্রামীণ কল্যাণের মুনাফার অংশ শ্রমিকদের দেওয়া হচ্ছে। যে কারণে এই শ্রমিকরা ভূতাপেক্ষভাবে মুনাফার অংশ দাবি করেন। এর জন্য প্রথমে তারা গ্রামীণ কল্যাণ কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ দেন। নোটিশে সাড়া না পেয়ে পরে তারা শ্রম আইনের ২৩১ ধারায় মামলা করেন। গত ৩ এপ্রিল এ মামলার রায় দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। রায়ে ট্রাইব্যুনাল শ্রম আইন অনুসারে ২০০৬ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত সময়ের মুনাফার অংশ শ্রমিকদের দিতে গ্রামীণ কল্যাণকে নির্দেশ দেন।

এ রায় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করে গ্রামীণ কল্যাণ কর্তৃপক্ষ। সে রিটের প্রাথমিক শুনানির পর গত ৩০ মে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। শ্রমিকদের মুনাফার অংশ দিতে নির্দেশ দেওয়া শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়। আর অন্তর্বর্তী আদেশে ট্রাইব্যুনালের রায়ে স্থিতাবস্থা (স্টেটাসকো) দেওয়া হয়। ফলে ১০৬ শ্রমিকের মুনাফাপ্রাপ্তির প্রক্রিয়া আটকে যায়।

গত ২১ জুন এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন শ্রমকিরা। পরদিন আবেদনে শুনানির পর চেম্বার আদালত শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ে হাইকোর্টের দেওয়া স্থিতাবস্থা স্থগিত করেন। সেই সঙ্গে আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন। সে ধারাবাহিকতায় গত ১০ জুলাই আবেদনটিতে শুনানির পর তা নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। ট্রাইব্যুনালের রায়ে হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ বহাল রেখে দুই মাসের মধ্যে রুল নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়। সে ধারাবাহিকতায় রুল শুনানির রুলটি যথাযথ ঘোষণা করে রায় দিলেন উচ্চ আদালত। সূত্র :কালের কণ্ঠে

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

ড. ইউনূসের মামলা : গ্রামীণ টেলিকমের লভ্যাংশ নিয়ে চেম্বারে স্থিতাবস্থা

প্রকাশের সময় : ০৮:২৩:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৩

বাংলাদেশ ডেস্ক : নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ কল্যাণের ১০৬ শ্রমিককে মুনাফা দিতে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল করা হাইকোর্টের রায়ের বিষয়বস্তুর ওপর স্থিতাবস্থা জারি করা হয়েছে। হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে শ্রমিকদের আবেদনে শুনানির পর আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত আজ রবিবার এ আদেশ দেন। এ আদেশের ফলে হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা থেমে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের আপাতত শ্রম আদালতে যেতে হচ্ছে না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

গ্রামীণ কল্যাণের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন। পরে আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, আবেদনটি চেম্বার আদালতে উপস্থাপন করে বলেছি, মজুরি আর মুনাফা এক বিষয় না। শ্রমিকরা যদি মজুরি দাবি করতেন তাহলে তাদের শ্রম আদালতে যেতে হত। কিন্তু তারা তা দাবি করেনি।

তারা দাবি করেছে মুনাফার অংশ। চেম্বার আদালত উভয় পক্ষকে শুনে হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য রাখা হয়েছে। ওইদিন কার্যতালিকায় ২০ ক্রমিকের পরে আবেদনটি থাকবে বলে জানিয়েছেন চেম্বার আদালত।

ফলে সে পর্যন্ত শ্রমিকদের আর আর শ্রম আদালতে যেতে হচ্ছে না। কাজেই বিষয়টি এখন নির্ভর করছে আপিল বিভাগের ওপর। সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
হাইকোর্টের রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লিভটু আপিল করা হবে বলেও জানান এই আইনজীবী।

গ্রামীণ কল্যাণের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন কালের কণ্ঠকে বলেন, হাইকোর্টের রায়ের বিষয়বস্তুর ওপর স্টেটাসকো (স্থিতাবস্থা) দেওয়ার মানে হচ্ছে শ্রমকিদের আপাতত শ্রম আদালতে যেতে হচ্ছে না।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ কল্যাণের ১০৬ শ্রমিককে বিধি অনুযায়ী মুনাফা দিতে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় এখতিয়ারবহির্ভূত ঘোষণা করে তা বাতিল করেন হাইকোর্ট। রায়ে আদালত বলেছেন, গ্রামীণ কল্যাণের শ্রমিকরা মুনাফার অংশ পাবে কি না, শ্রম আইন অনুসারে সে সিদ্ধান্ত দেওয়ার এখতিয়ার শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের নেই।

গ্রামীণ কল্যাণ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ কম্পানিভুক্ত একটি অলাভজনক সামাজিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ১০৬ জন শ্রমিক ২০০৬ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত বিভিন্ন পদে এই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। তাদের মধ্যে কেউ অবসরে গেছেন। আবার কাউকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। কিন্তু চাকরির পর প্রতিষ্ঠানটির মুনাফার কোনো অংশ তাদের দেওয়া হয়নি। অথচ ২০২১ সাল থেকে গ্রামীণ কল্যাণের মুনাফার অংশ শ্রমিকদের দেওয়া হচ্ছে। যে কারণে এই শ্রমিকরা ভূতাপেক্ষভাবে মুনাফার অংশ দাবি করেন। এর জন্য প্রথমে তারা গ্রামীণ কল্যাণ কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ দেন। নোটিশে সাড়া না পেয়ে পরে তারা শ্রম আইনের ২৩১ ধারায় মামলা করেন। গত ৩ এপ্রিল এ মামলার রায় দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। রায়ে ট্রাইব্যুনাল শ্রম আইন অনুসারে ২০০৬ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত সময়ের মুনাফার অংশ শ্রমিকদের দিতে গ্রামীণ কল্যাণকে নির্দেশ দেন।

এ রায় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করে গ্রামীণ কল্যাণ কর্তৃপক্ষ। সে রিটের প্রাথমিক শুনানির পর গত ৩০ মে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। শ্রমিকদের মুনাফার অংশ দিতে নির্দেশ দেওয়া শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়। আর অন্তর্বর্তী আদেশে ট্রাইব্যুনালের রায়ে স্থিতাবস্থা (স্টেটাসকো) দেওয়া হয়। ফলে ১০৬ শ্রমিকের মুনাফাপ্রাপ্তির প্রক্রিয়া আটকে যায়।

গত ২১ জুন এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন শ্রমকিরা। পরদিন আবেদনে শুনানির পর চেম্বার আদালত শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ে হাইকোর্টের দেওয়া স্থিতাবস্থা স্থগিত করেন। সেই সঙ্গে আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন। সে ধারাবাহিকতায় গত ১০ জুলাই আবেদনটিতে শুনানির পর তা নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। ট্রাইব্যুনালের রায়ে হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ বহাল রেখে দুই মাসের মধ্যে রুল নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়। সে ধারাবাহিকতায় রুল শুনানির রুলটি যথাযথ ঘোষণা করে রায় দিলেন উচ্চ আদালত। সূত্র :কালের কণ্ঠে

হককথা/নাছরিন