খেজুর, বরই এবং..
- প্রকাশের সময় : ০২:৫২:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪
- / ৫৩ বার পঠিত
রোজার আগে টক অব দ্য কান্ট্রি ছিল ‘বরই দিয়ে ইফতার করেন না কেন?’ শিরোনামটি। শুরু হয়েছে আত্মশুদ্ধির মাস রমজান। সংযমী হতে হবে আমাদের। জানতে হবে খেজুর দিয়ে কেন ইফতার করতে হয়। তার আগে ‘বরই’ শিরোনামটার পেছনের কথা বলি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন গত ৪ঠা মার্চ সোমবার রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের একটি পর্ব শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেছিলেন, ‘বরই দিয়ে ইফতার করেন না কেন? আঙ্গুর লাগবে কেন, আপেল লাগবে কেন? আর কিছু নাই আমাদের দেশে। পেয়ারা দেন না, সবকিছু দেন। প্লেটটা (ইফতারির) ওইভাবে সাজান।’ তিনি এর আগে রমজান মাসে দ্রব্যমূল্যের বিষয়টি তদারকির জন্য জেলা প্রশাসকেরা কাজ করবেন বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন।
ইফতারে খেজুর :
সারাদিন সিয়াম পালনের পর খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করার অভ্যাস প্রায় সবারই আছে। বিশেষ করে বিষয়টি সুন্নত হিসেবেই পালন করে থাকেন রোজাদাররা। হাদিসেও খেজুর দিয়ে ইফতার করার কথা বলা আছে।
হযরত সালমান ইবনে আমির (রাঃ) আনহু সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ ইফতার করে, সে যেন খেজুর দ্বারা ইফতার করে। কেন না, তাতে বরকত ও কল্যাণ রয়েছে।’ (মিশকাত ১৮৯৩)
ক্লান্তি দূর করে খেজুর-
রোজা রাখলে শরীর ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়ে।
খেজুর শারীরিক ক্লান্তি দূর করে এনার্জি জোগাতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতানুসারে, খেজুরে প্রচুর পরিমাণে শর্করা যেমন গ্লুকোজ, ফ্লুক্টোজ এবং সুক্রোজ রয়েছে। এতে সুগারের পরিমাণ এতটাই বেশি, যে এক কামড়েই অনেকটা এনার্জি পাওয়া যায়। ফলে দীর্ঘক্ষণ উপবাসের পর শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া খেজুরে থাকা ডায়েটারি ফাইবারও আমাদের শরীরে দীর্ঘ সময় এনার্জি বজায় রাখে।
খেজুর ইফতারের বিশেষ অনুষঙ্গ-
খেজুরের পুষ্টিগুণের কারণে এ ফলটি অনেক জনপ্রিয়। এটি স্বাস্থ্যসম্মত ভিটামিন সমৃদ্ধ একটি খাবার।
হযরত আনাস বিন মালিক (রাঃ) আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজের আগে কয়েকটি কাঁচা খেজুর খেয়ে ইফতার করতেন। যদি কাঁচা খেজুর না থাকতো, তাহলে শুকনো খেজুর দিয়ে। যদি শুকনো খেজুরও না থাকতো, তাহলে কয়েক ঢোক পানি দিয়ে তিনি ইফতার করতেন।’ (তিরমিজি ৬৩২)
খেজুর খাওয়া বরকতের কারণ-
আল্লাহর রাসূলের সুন্নতের অনুসরণে ইফতারে খেজুর খাওয়া বরকতের কারণ। তবে কেউ বিশেষ কোনো অসুস্থতা বা দাম বৃদ্ধি এবং এ জাতীয় কারণে খেজুর খেতে না পারলে কোনো সমস্যা নেই।
সত্যবাদী ও আমানতদার ব্যবসায়ী-
মাহে রমজানকে কেন্দ্র করে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি একটি জাতীয় সমস্যা। এ কারণে পবিত্র মাসে ইবাদত পালনের আগে খাবার-দাবার নিয়ে আলাদা করে ভাবতে হয়। অনেকে খাবারের তালিকা কাটছাট করার চেষ্টা করেন। ব্যবসায়ীদের উচিত অধিক মূনাফা লাভের আশা না করে রমজানে মানুষের ইবাদত পালনের বিষয়টি সহজিকরণে সহযোগিতা করা।
আল্লাহর রাসূল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সত্যবাদী ও আমানতদার ব্যবসায়ীদের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। অকারণে নিত্যপণ্য ও খাবার, খেজুরের দাম না বাড়িয়ে ব্যবসায়ীদের উচিত আল্লাহর রাসূলের বর্ণিত পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য প্রতিযোগিতা করা। সূত্র : মানবজমিন
হককথা/নাছরিন