সুষ্ঠু ভোট নিয়ে সংশয় বিএনপিপন্থিদের
- প্রকাশের সময় : ১১:০৫:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ মার্চ ২০২৪
- / ৩৮ বার পঠিত
জমে উঠেছে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন। আগামী ৬ ও ৭ মার্চ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীরা আইনজীবীদের চেম্বার ও আদালতে ঘুরে ঘুরে ভোটারদের কাছে ভোট চাইছেন। সাধারণ আইনজীবী ভোটাররাও এ ভোট নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করছেন। সব মিলিয়ে সুপ্রিমকোর্ট এলাকায় নির্বাচন ঘিরে বইছে উৎসবের আমেজ। এদিকে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক ‘প্রভাবে’ সুষ্ঠু ভোট নিয়ে বিএনপিপন্থিদের মধ্যে সংশয় থাকলেও সরকারদলীয় সমর্থিত প্রার্থীরা বলছেন, পরাজিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখলে নির্বাচন বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয়। অন্যদিকে নির্বাচন পরিচালনায় দায়িত্বে থাকা কমিটিও নির্বাচন সুষ্ঠু করতে স্বপক্ষের সহযোগিতা চেয়েছেন।
নির্বাচনে বরাবরের মতো এবারও বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ ‘সাদা প্যানেল’ এবং বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের ফোরাম জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য ‘নীল প্যানেল’ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এ ছাড়াও সভাপতি-সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছেন নির্বাচনে। ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন জানিয়ে দুই প্যানেলের প্রার্থীদের প্রত্যেকেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪টি পদের বিপরীতে ২০২৪-২৫ বছরের মেয়াদে ৩৪ জন প্রার্থী লড়ছেন। এবারের নির্বাচনে ভোটার ৭ হাজার ৮৮৩। আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল থেকে সভাপতি পদে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবু সাঈদ সাগর ও সম্পাদক পদে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক, সহসভাপতি পদে রমজান আলী শিকদার ও ড. দেওয়ান মোহাম্মদ আবু ওবায়েদ হোসেন সেতু, কোষাধ্যক্ষ পদে মোহাম্মদ নুরুল হুদা আনসারী, সহ-সম্পাদক পদে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও হুমায়ুন কবির এবং সদস্য পদে সৌমিত্র সরদার রনী, মো. খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া, রাশেদুল হক খোকন, মাহমুদা আফরোজ, বেলাল হোসেন শাহীন, অ খালেদ মোশাররফ রিপন ও রায়হান রনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল থেকে সভাপতি পদে ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও সম্পাদক পদে ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, সহসভাপতি পদে হুমায়ুন কবির মঞ্জু ও সরকার তাহমিনা বেগম সন্ধ্যা, কোষাধ্যক্ষ পদে রেজাউল করিম, সহ-সম্পাদক পদে মাহফুজুর রহমান মিলন ও আব্দুল করিম এবং সদস্য পদে ফাতিমা আক্তার, সৈয়দ ফজলে এলাহি অভি, মো. শফিকুল ইসলাম শফিক, মো. রাসেল আহমেদ, মো. আশিকুজ্জামান নজরুল, ব্যারিস্টার মহিউদ্দিন হানিফ এবং মো. ইব্রাহিম খলিল নির্বাচনে রয়েছেন।
এ ছাড়া স্বতন্ত্র হিসেবে সভাপতি পদে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কে রহমান ও ইউনুছ আলী আকন্দ এবং সম্পাদক পদে নাহিদ সুলতানা যুথী ও ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূইয়া এবং কোষাধ্যক্ষ পদে সাইফুল ইসলাম প্রার্থী হয়েছেন। সমিতির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়েরের নেতৃত্বে সাত সদস্যের উপকমিটি নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করছেন। ভোটের প্রসঙ্গে আবুল খায়ের বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে বদ্ধপরিকর। এ জন্য সমিতির বর্তমান কমিটিসহ প্রধান বিচারপতি, প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থীর সহযোগিতা চাই।
গত বছর নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত উপকমিটি নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত দুপক্ষে আইনজীবীরা মুখোমুখি অবস্থান নেন। তখন ব্যাপক হাঙ্গামা, হট্টগোল, পুলিশের লাঠিপেটার মধ্যে নির্বাচনে ভোটদানে বিরত থাকেন বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত পূর্ণ প্যানেলে জয় পায়। গতবারের পরিস্থিতি এবার পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনা রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে আবুল খায়ের বলেন, আগেরবার কোনো ব্যর্থতা থাকলে তার আলোকে বর্তমান প্রস্তুতির মধ্যে সম্পূর্ণতা আনার চেষ্টা করব।
সাদা প্যানেলের বিরুদ্ধে ‘ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ তুলে নীল প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও তারা ভোট ডাকাতি করবে। বাংলাদেশের নির্বাচন যে নির্বাসনে গেছে তার আরেকটি উদাহরণ হচ্ছে পেশাজীবী সংগঠনেও সরকারি দল ও তাদের দোসরদের থাবা। তবে আমরা মনে করি, দুবছর তারা যে কলঙ্কিত অধ্যায় তৈরি করেছে, সেখান থেকে তাদের সুমতি হবে এবং আইনজীবীরা তাদের নেতা নির্বাচনে সক্ষম হবে।
সাদা প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, সব দলের লোকজনই ভোট সুষ্ঠু করার চেষ্টা করছেন। যে ঘটনা ঘটেছে সেটাও একটি পজিটিভ নির্বাচন হচ্ছিল, এ নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্য নীল প্যানেল সবসময় চেষ্টা করে। নির্বাচনে কোনো প্রকার কারচুপি হবে না। শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। সূত্র : আমাদের সময়।