নিউইয়র্ক ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি করতে বাংলাদেশ-জাপান আলোচনা শিগগির

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:১৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ১৩৯ বার পঠিত

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ ডেস্ক : বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে জাপান। টোকিওর বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে জাপানি সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে চলতি জানুয়ারি মাসের শেষ দিকেই এই আলোচনা শুরু হবে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে দুই দেশ এ বিষয়ে চূড়ান্ত চুক্তিতে উপনীত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের অন্যতম ক্রেতা জাপান। বিপরীতে বাংলাদেশে অন্যতম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী ও সহায়তা দানকারী দেশ হলো জাপান। যাই হোক, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে জাতিসংঘের স্বল্প উন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে। এর ফলে বাংলাদেশ উন্নত দেশগুলোতে আর শুল্কমুক্ত রপ্তানির সুযোগ পাবে না। কিন্তু অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তির মাধ্যমে জাপানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এই বিষয়টির প্রভাব মোকাবিলা করতে পারে।

টোকিওর আশা, বাংলাদেশকে এই সুবিধা দেওয়ার বিপরীতে তারাও বেশ কিছু সুবিধা পাবে। বিশেষ করে স্টিল ও বিভিন্ন ধরনে গাড়ির আমদানির ওপর শুল্ক কমাবে বলে আশা করছে টোকিও। বর্তমানে জাপানি স্টিল ও গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে যথাক্রমে ১০ শতাংশ ও ২৫ শতাংশ শুল্ক আছে। দেশটির প্রত্যাশা, যেহেতু বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বিকশিত হচ্ছে তাই আগামী দিনে দেশে অবকাঠামোগত বিকাশের প্রয়োজন পড়বে। যেখানে জাপান অবদান রাখতে চায়।

এ ছাড়া দুই দেশ জাপানি চাল ও মাংসের ওপর শুল্ক কমানোর বিষয়টি নিয়েও আলোচন করে বলে জানিয়েছে নিক্কেই এশিয়া। এর বাইরে, টোকিও আশা করছে—জাপান বাংলাদেশে কৃষিপণ্য রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব হবে।

নিক্কেইয়ের দেওয়া তথ্যানুসারে, জাপান ২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে ১৭২ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। যার ৯০ শতাংশই পোশাক এবং অন্যান্য অ্যাপারেল সামগ্রী। একই বছরে জাপানা বাংলাদেশে ২৫৭ কোটি ডলার রপ্তানি করেছে। যার ৩০ শতাংশই লোহা ও স্টিল।

জাপানের বহির্বাণিজ্য সংস্থার হিসাব অনুসারে, ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত ৩৩৮টি জাপানি কোম্পানির অফিস বা শাখা বাংলাদেশে আছে। যা বিগত এক দশকে দ্বিগুণ হয়ে এই পর্যায়ে পৌঁছেছে। সংস্থাটির আশঙ্কা, বাংলাদেশ স্বল্প উন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর হঠাৎ শুল্ক বেড়ে যাওয়ার কারণে এসব প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিশেষ করে, টেক্সটাইল খাতে রপ্তানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ বা তার বেশি শুল্ক আরোপ করা হলে অনেক জাপানি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এই বিষয়গুলো আগে থেকেই প্রশমিত করতে বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি এগিয়ে নিতে আগ্রহী জাপান। এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে বাংলাদেশই হবে প্রথম দেশ যারা স্বল্প উন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে যাওয়ার আগেই একটি জাপানের সঙ্গে এমন চুক্তি করছে।

বাংলাদেশ ও জাপান সরকার ২০২২ সালের ডিসেম্বরে একটি সম্ভাব্য অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তির বিষয়টি নিয়ে গবেষণা শুরু করে। গবেষণার পর তৈরি প্রতিবেদনে দুই দেশকে দ্রুত আলোচনা শুরু করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, এমন একটি চুক্তি দুই দেশের মধ্যে কেবল বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রই বড় করবে না পাশাপাশি রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ককেও শক্তিশালী করবে।

বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আর তাই জাপানও শুল্ক ও বাণিজ্য বিধিতে একটি মান প্রতিষ্ঠার আশা করছে। এ ছাড়া, শুরু হতে যাওয়া আলোচনায় আমদানি ও রপ্তানির জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য পদ্ধতির মধ্যে কাগজপত্রের বোঝা কমানোর বিষয়টি নিয়েই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার চেষ্টা করা হবে। সূত্র : আজকের পত্রিকা

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি করতে বাংলাদেশ-জাপান আলোচনা শিগগির

প্রকাশের সময় : ০৮:১৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৪

বাংলাদেশ ডেস্ক : বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে জাপান। টোকিওর বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে জাপানি সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে চলতি জানুয়ারি মাসের শেষ দিকেই এই আলোচনা শুরু হবে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে দুই দেশ এ বিষয়ে চূড়ান্ত চুক্তিতে উপনীত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের অন্যতম ক্রেতা জাপান। বিপরীতে বাংলাদেশে অন্যতম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী ও সহায়তা দানকারী দেশ হলো জাপান। যাই হোক, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে জাতিসংঘের স্বল্প উন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে। এর ফলে বাংলাদেশ উন্নত দেশগুলোতে আর শুল্কমুক্ত রপ্তানির সুযোগ পাবে না। কিন্তু অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তির মাধ্যমে জাপানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এই বিষয়টির প্রভাব মোকাবিলা করতে পারে।

টোকিওর আশা, বাংলাদেশকে এই সুবিধা দেওয়ার বিপরীতে তারাও বেশ কিছু সুবিধা পাবে। বিশেষ করে স্টিল ও বিভিন্ন ধরনে গাড়ির আমদানির ওপর শুল্ক কমাবে বলে আশা করছে টোকিও। বর্তমানে জাপানি স্টিল ও গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে যথাক্রমে ১০ শতাংশ ও ২৫ শতাংশ শুল্ক আছে। দেশটির প্রত্যাশা, যেহেতু বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বিকশিত হচ্ছে তাই আগামী দিনে দেশে অবকাঠামোগত বিকাশের প্রয়োজন পড়বে। যেখানে জাপান অবদান রাখতে চায়।

এ ছাড়া দুই দেশ জাপানি চাল ও মাংসের ওপর শুল্ক কমানোর বিষয়টি নিয়েও আলোচন করে বলে জানিয়েছে নিক্কেই এশিয়া। এর বাইরে, টোকিও আশা করছে—জাপান বাংলাদেশে কৃষিপণ্য রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব হবে।

নিক্কেইয়ের দেওয়া তথ্যানুসারে, জাপান ২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে ১৭২ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। যার ৯০ শতাংশই পোশাক এবং অন্যান্য অ্যাপারেল সামগ্রী। একই বছরে জাপানা বাংলাদেশে ২৫৭ কোটি ডলার রপ্তানি করেছে। যার ৩০ শতাংশই লোহা ও স্টিল।

জাপানের বহির্বাণিজ্য সংস্থার হিসাব অনুসারে, ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত ৩৩৮টি জাপানি কোম্পানির অফিস বা শাখা বাংলাদেশে আছে। যা বিগত এক দশকে দ্বিগুণ হয়ে এই পর্যায়ে পৌঁছেছে। সংস্থাটির আশঙ্কা, বাংলাদেশ স্বল্প উন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর হঠাৎ শুল্ক বেড়ে যাওয়ার কারণে এসব প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিশেষ করে, টেক্সটাইল খাতে রপ্তানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ বা তার বেশি শুল্ক আরোপ করা হলে অনেক জাপানি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এই বিষয়গুলো আগে থেকেই প্রশমিত করতে বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি এগিয়ে নিতে আগ্রহী জাপান। এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে বাংলাদেশই হবে প্রথম দেশ যারা স্বল্প উন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে যাওয়ার আগেই একটি জাপানের সঙ্গে এমন চুক্তি করছে।

বাংলাদেশ ও জাপান সরকার ২০২২ সালের ডিসেম্বরে একটি সম্ভাব্য অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তির বিষয়টি নিয়ে গবেষণা শুরু করে। গবেষণার পর তৈরি প্রতিবেদনে দুই দেশকে দ্রুত আলোচনা শুরু করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, এমন একটি চুক্তি দুই দেশের মধ্যে কেবল বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রই বড় করবে না পাশাপাশি রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ককেও শক্তিশালী করবে।

বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আর তাই জাপানও শুল্ক ও বাণিজ্য বিধিতে একটি মান প্রতিষ্ঠার আশা করছে। এ ছাড়া, শুরু হতে যাওয়া আলোচনায় আমদানি ও রপ্তানির জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য পদ্ধতির মধ্যে কাগজপত্রের বোঝা কমানোর বিষয়টি নিয়েই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার চেষ্টা করা হবে। সূত্র : আজকের পত্রিকা

হককথা/নাছরিন