চমক নিয়ে আসছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার
- প্রকাশের সময় : ০৪:১০:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪৬ বার পঠিত
বাংলাদেশ ডেস্ক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ইশতেহার প্রায় চূড়ান্ত। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ঘোষণা দেবেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। এবারের ইশতেহারে থাকছে বেশকিছু চমক। ১৫ বছর আগের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ থেকে এবার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয় দলটির। প্রাধান্য পাবে সর্বত্র প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকরণ। পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বিনিয়োগ আকৃষ্টের জন্য শিল্পায়নেও গুরুত্ব দেওয়া হবে। থাকবে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ বিনির্মাণের রোডম্যাপও।
২০০৮ সালে ‘দিন বদলের সনদ’ শিরোনামে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এরপর ২০১৪ সালেও ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ শিরোনামে ১০টি মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ক্ষমতারোহণ করে দলটি। একইভাবে ২০১৮ সালে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ও ২১০০ সালের মধ্যে নিরাপদ ব-দ্বীপ গড়ে তোলার পরিকল্পনা দেওয়া হয়।
এবারের লক্ষ্য ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ’। এজন্য চারটি মৌলিক স্তম্ভ ঠিক করা হয়েছে- স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট সরকার প্রতিষ্ঠা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রণীত আওয়ামী লীগের ইশতেহারে এ নিয়ে বিশদ কর্মসূচি ও প্রতিশ্রুতি থাকছে।
পাশাপাশি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী জনবল গড়ে তোলায় গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ এবং সেটা ঘিরে অর্থনীতির শক্ত ভিতের ওপর দেশকে দাঁড় করানোর উচ্চবিলাসী লক্ষ্য নির্ধারণ করে কর্মসূচি নিচ্ছে দলটি। এর বাইরে কৃষি, শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুতের উৎপাদন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, তরুণ, মাদকসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাদের সুস্পষ্ট কর্মসূচি ও প্রতিশ্রুতি থাকছে। আওয়ামী লীগের ইশতেহারে এবার আরও থাকছে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ গঠন, বিদেশনির্ভরতা কমানো এবং বিদেশি ষড়যন্ত্র মুক্ত থাকতে নানা কর্মসূচি।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ও দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা এবারের ইশতেহারে সাধারণ জনগণ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মতামত নিয়েছি। তারা অর্থনীতির অবকাঠামো, কৃষি, শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুতের উৎপাদন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য, মুদ্রাস্ফীতির ফলে সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে- এসব বিষয়ে বলেছেন। আমরা এগুলো কীভাবে মোকাবিলা করতে যাচ্ছি, এগুলো সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরতে বলেছেন।’
তিনি বলেন, ‘ইশতেহারে প্রথমে পটভূমি থাকবে; বাংলাদেশের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি, বিদেশি শক্তি ও বিদেশি ষড়যন্ত্র এবং দেশের মধ্যে যারা বিদেশিদের পা চাটা এদের বিষয়ে কী কর্মসূচি নেবো, কী কৌশল অবলম্বন করবো, কীভাবে মোকাবিলা করবো- এগুলো থাকবে। ইশতেহারে আমাদের কিছু অগ্রাধিকার থাকবে- যেমন কৃষি, তরুণ, মাদকসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের সুস্পষ্ট কর্মসূচি ও প্রতিশ্রুতি থাকবে।’
‘সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা ইশতেহার প্রণয়ন করেছি। এটি চূড়ান্ত পর্যায়ে। আশা করি, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের পরে ঘোষণা দেওয়া হবে।’ যোগ করেন ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক।
ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে দুটো অংশ থাকবে। প্রথাংশে থাকবে গত নির্বাচনের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের চিত্র। দ্বিতীয়াংশে আগামী পাঁচ বছরের প্রতিশ্রুতি। পাশাপাশি তারপরের পাঁচ বছর/সময়ের জন্য রূপরেখা থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘এবারের ইশতেহারে যুব ও নারীদের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকবে। দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে নানা পরিকল্পনা- যেমন কর্মসংস্থান, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতাসহ শিল্পায়নের ওপর জোর দেওয়া হবে।
ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আরেক সদস্য ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘কীভাবে সুশাসন নিশ্চিত করা যায়, তার জন্য বিভিন্ন নীতির কথা আমাদের ইশতেহার গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরা হবে। এর বাইরে প্রতিটি কাজে প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করা, প্রযুক্তি সহজলভ্য করা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, কৃষিখাতে ফলন বৃদ্ধি, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা যাতে কর্মসংস্থানের পথ সুগম হয়। ব্যাংকিংখাতে আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল, এবারের ইশতেহারে ব্যাংকিংখাতসহ অন্য ইস্যুতে কীভাবে প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা আনা যায়, সেটি আমরা প্রস্তাব করবো। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র আরও কীভাবে সুদৃঢ় করা যায়, তার সুনির্দিষ্ট সুপারিশ সেখানে থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী ইশতেহার ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের পরে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি জাতির সামনে উপস্থাপন করবেন।’
এরই মধ্যে তিনবার বৈঠক করে ইশতেহারের খসড়া চূড়ান্ত করেছে কমিটি। দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা সেটি দেখে কিছু সংযোজন-বিয়োজনও করেছেন। এটি এরই মধ্যে চূড়ান্ত পর্যায়ে। ঘোষণা অপেক্ষা মাত্র। সূত্র : জাগোনিউজ
হককথা/নাছরিন