নিউইয়র্ক ০২:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি

বাংলাদেশিদের করণীয় নিয়ে পরামর্শ দিলেন অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:৪১:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৯৮ বার পঠিত

যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে বাংলাদেশিরা সেখানে নানা ধরনের জটিলতায় পড়ছেন বলে মন্তব্য করেছেন ইমিগ্র্যান্টস ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, আইন মেনে চলার বিকল্প নাই। কাগজপত্র সবসময় আপডেট রাখুন, দীর্ঘকাল বিদেশে (অন্য দেশে) থাকবেন না এবং পরিবর্তিত নিয়মাবলী বুঝতে অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নিন। রোববার ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব পরার্শদ দেন।

মঈন চৌধুরী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছে, যার মাধ্যমে অননুমোদিত অভিবাসীদের প্রেরণ এবং সকল ভিসা ক্যাটাগরিতে কড়া তদন্ত কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো-সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করা এবং বিদ্যমান অভিবাসন আইন কার্যকর করা। তিনি বলেন, কেবল রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটটরা নয়, সবাই মিলে এই আইনটা করেছে। এই আইনের অধীনে বর্তমানে যারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক না, তারা যদি ছোটো অপরাধও করে, ছ্যাচড়া চুরির জন্য ভিসাও বাতিল হতে পারে। অনেক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়েছে। ছোট অপরাধ করে জরিমানাও গুনেছে। আগে এমন ছোট অপরাধের জন্য দোষ স্বীকার করে জরিমানা গুনে মাফ পাওয়ার সুযোগ থাকলেও এখন তেমনটা নেই।

এখনও কোনো বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো না হলেও এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের যে তদারকি প্রক্রিয়া, তার মধ্যে বাংলাদেশিরা রয়েছে জানিয়ে মঈন চৌধুরী বলেন, ইউএস ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) বাংলাদেশি অননুমোদিত অভিবাসীদের শনাক্ত করে ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি নেবে। নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি এবং কানেকটিকাটে অননুমোদিত বাংলাদেশিদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় কূটনৈতিক পর্যায়ে মর্যাদাপূর্ণ ফেরত নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

তিনি বলেন, যদি আপনি বছরে ১০ মাসের বেশি সময় বিদেশে থাকেন, তাহলে আপনার গ্রিন কার্ড বাতিলের ঝুঁকি আছে। এ বিষয়ে উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে দুই বছর পর যাওয়ার পরও সমস্যা হয় নাই। এখন দুই মাস পর গেলেও অনেক প্রশ্ন করা হয়। যথাযথ কারণ বা অনুমতি ছাড়া যদি এক বছরের বেশি আমেরিকার বাইরে থাকেন, তাহলে আপনাকে কিন্তু ঢুকতে দিতে বাধ্য না।

শিক্ষার্থী ভিসা প্রসেসিংয়ের ক্ষেত্রে বিলম্ব হওয়ার কথা তুলে ধরে মঈন চৌধুরী বলেন, ঢাকাতে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে এফ-১ ভিসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট ওয়ার্ক লোড বৃদ্ধির কারণে অপেক্ষার সময় দিন দিন বাড়ছে। অতিরিক্ত প্রশাসনিক যাচাই প্রক্রিয়া চালু হওয়ায় ভবিষ্যতে আরও দীর্ঘ বিলম্বের সম্ভাবনা রয়েছে, তাই সময় মতো আবেদন ও আইনগত সহায়তা নেয়া জরুরি। কঠোর তদন্ত আর সীমিত আকারে সাক্ষাৎকার চালু থাকায় পারিবারিক পুনর্মিলন, এইচ-১বি, এইচ-২বি কাজের ভিসারও জট তৈরি হয়েছে বলে জানান তিনি। মঈন চৌধুরী বলেন, আবেদনকারীদের দীর্ঘ সময় ধরে প্রতীক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকতে এবং সম্পূর্ণ কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

প্রত্যাবাসন এড়ানোর জন্য সরকার কী করতে পারে, এমন প্রশ্নে মঈন বলেন, যারা অ্যাসাইলাম চেয়ে আবেদন করেছে, তারা আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। এখন তো আওয়ামী লীগ নাই। তাদের আগের অবস্থা তো এখন না থাকার কথা। এ কারণে এই সরকার বলতে পারবে না, তাদেরকে আনব না। আগে যারা আবেদন করেছিল, এখন তো ড. ইউনূসের সময়ে তাদের জন্য শান্তির দেশ হওয়ার কথা। এদিকে ভিসা ও নাগরিকত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে ফেইসবুক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান মঈন চৌধুরী। সূত্র : মানবজমিন।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি

বাংলাদেশিদের করণীয় নিয়ে পরামর্শ দিলেন অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী

প্রকাশের সময় : ০১:৪১:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে বাংলাদেশিরা সেখানে নানা ধরনের জটিলতায় পড়ছেন বলে মন্তব্য করেছেন ইমিগ্র্যান্টস ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, আইন মেনে চলার বিকল্প নাই। কাগজপত্র সবসময় আপডেট রাখুন, দীর্ঘকাল বিদেশে (অন্য দেশে) থাকবেন না এবং পরিবর্তিত নিয়মাবলী বুঝতে অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নিন। রোববার ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব পরার্শদ দেন।

মঈন চৌধুরী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছে, যার মাধ্যমে অননুমোদিত অভিবাসীদের প্রেরণ এবং সকল ভিসা ক্যাটাগরিতে কড়া তদন্ত কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো-সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করা এবং বিদ্যমান অভিবাসন আইন কার্যকর করা। তিনি বলেন, কেবল রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটটরা নয়, সবাই মিলে এই আইনটা করেছে। এই আইনের অধীনে বর্তমানে যারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক না, তারা যদি ছোটো অপরাধও করে, ছ্যাচড়া চুরির জন্য ভিসাও বাতিল হতে পারে। অনেক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়েছে। ছোট অপরাধ করে জরিমানাও গুনেছে। আগে এমন ছোট অপরাধের জন্য দোষ স্বীকার করে জরিমানা গুনে মাফ পাওয়ার সুযোগ থাকলেও এখন তেমনটা নেই।

এখনও কোনো বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো না হলেও এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের যে তদারকি প্রক্রিয়া, তার মধ্যে বাংলাদেশিরা রয়েছে জানিয়ে মঈন চৌধুরী বলেন, ইউএস ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) বাংলাদেশি অননুমোদিত অভিবাসীদের শনাক্ত করে ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি নেবে। নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি এবং কানেকটিকাটে অননুমোদিত বাংলাদেশিদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় কূটনৈতিক পর্যায়ে মর্যাদাপূর্ণ ফেরত নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

তিনি বলেন, যদি আপনি বছরে ১০ মাসের বেশি সময় বিদেশে থাকেন, তাহলে আপনার গ্রিন কার্ড বাতিলের ঝুঁকি আছে। এ বিষয়ে উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে দুই বছর পর যাওয়ার পরও সমস্যা হয় নাই। এখন দুই মাস পর গেলেও অনেক প্রশ্ন করা হয়। যথাযথ কারণ বা অনুমতি ছাড়া যদি এক বছরের বেশি আমেরিকার বাইরে থাকেন, তাহলে আপনাকে কিন্তু ঢুকতে দিতে বাধ্য না।

শিক্ষার্থী ভিসা প্রসেসিংয়ের ক্ষেত্রে বিলম্ব হওয়ার কথা তুলে ধরে মঈন চৌধুরী বলেন, ঢাকাতে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে এফ-১ ভিসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট ওয়ার্ক লোড বৃদ্ধির কারণে অপেক্ষার সময় দিন দিন বাড়ছে। অতিরিক্ত প্রশাসনিক যাচাই প্রক্রিয়া চালু হওয়ায় ভবিষ্যতে আরও দীর্ঘ বিলম্বের সম্ভাবনা রয়েছে, তাই সময় মতো আবেদন ও আইনগত সহায়তা নেয়া জরুরি। কঠোর তদন্ত আর সীমিত আকারে সাক্ষাৎকার চালু থাকায় পারিবারিক পুনর্মিলন, এইচ-১বি, এইচ-২বি কাজের ভিসারও জট তৈরি হয়েছে বলে জানান তিনি। মঈন চৌধুরী বলেন, আবেদনকারীদের দীর্ঘ সময় ধরে প্রতীক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকতে এবং সম্পূর্ণ কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

প্রত্যাবাসন এড়ানোর জন্য সরকার কী করতে পারে, এমন প্রশ্নে মঈন বলেন, যারা অ্যাসাইলাম চেয়ে আবেদন করেছে, তারা আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। এখন তো আওয়ামী লীগ নাই। তাদের আগের অবস্থা তো এখন না থাকার কথা। এ কারণে এই সরকার বলতে পারবে না, তাদেরকে আনব না। আগে যারা আবেদন করেছিল, এখন তো ড. ইউনূসের সময়ে তাদের জন্য শান্তির দেশ হওয়ার কথা। এদিকে ভিসা ও নাগরিকত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে ফেইসবুক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান মঈন চৌধুরী। সূত্র : মানবজমিন।