নিউইয়র্ক ১০:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

৫ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:১৮:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ মে ২০২৩
  • / ৪৯ বার পঠিত

বাংলাদেশ ডেস্ক : আসছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে কর আদায়ে বাড়তি চাপ থাকছে। ৭ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা হচ্ছে ৫ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর জন্য ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্য দেওয়া হচ্ছে। এটি চলতি অর্থবছরের লক্ষ্য থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকা বেশি। গত অর্থবছরে শুল্ক-কর আদায়ে ৩০ হাজার কোটি টাকার মতো ঘাটতি হয়েছিল। চলতি বছরেও যদি এমন ঘাটতি হয়, তাহলে আগামী অর্থবছরে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার বাড়তি রাজস্ব আদায়ের চাপে থাকবে এনবিআর। এ অবস্থায় কর অব্যাহতি ও রাজস্বনীতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে। আগামী ১ জুন জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ইতিমধ্যে বাজেটের রূপরেখা প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিভিন্ন শর্তের মধ্যে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর শর্ত উল্লেখযোগ্য। শর্তের মধ্যে রয়েছে, আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের স্বাভাবিক প্রবণতার বাইরে জিডিপির অতিরিক্ত দশমিক ৫ শতাংশ রাজস্ব আদায় করতে হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেওয়া করছাড়ও যৌক্তিক করতে হবে। সম্প্রতি পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক হিসাবে বলা হয়েছে, এনবিআর যে গতিতে রাজস্ব আদায় করছে, তাতে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি হতে পারে ৫৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। সরকার আগামী অর্থবছর ১৬ শতাংশ হারে রাজস্ব আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। কিন্তু আইএমএফের শর্ত মানতে হলে অন্তত ৩৬ শতাংশ রাজস্ব আদায় বাড়াতে হবে। আর এসব কারণেই বাড়তি রাজস্ব আদায়ের চাপ থাকবে।

ইতিমধ্যে এনবিআর বাড়তি কর আদায়ে একগুচ্ছ উদ্যোগ নিয়েছে। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গত ৫০ বছরে দুই শতাধিক প্রজ্ঞাপন জারি করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। এখন এগুলো পর্যালোচনা করছে এনবিআর। যেসব করছাড়ের আর প্রয়োজন নেই, সেগুলো বাদ দেওয়া হবে। আগামী বাজেটে ২০০০ সিসির বেশি গাড়িতে সম্পূরক শুল্ক বাড়তে পারে। একাধিক ব্যক্তিগত গাড়ি থাকলে বাড়তি আয়কর আরোপের প্রস্তাব থাকতে পারে। আগামী অর্থবছরে করপোরেট কর কমানো বা বাড়ানোর কোনো প্রস্তাব রাখছে না এনবিআর।

করপোরেট কর অপরিবর্তিত থাকছে। টানা গত দুই বছর করপোরেট কর কমানো হয়েছে। এ ছাড়া পাচার করা টাকা দেশে ফেরত আনার যে সুযোগ চলতি অর্থবছরে দেওয়া হয়েছে, এর মেয়াদ আর বাড়ানো হচ্ছে না বলে জানা গেছে। আগামী ৩০ জুন ৭ শতাংশ কর দিয়ে বিনা প্রশ্নে বিদেশে পাচার করা টাকা দেশে আনার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এ পর্যন্ত কেউ এই সুযোগ নেয়নি। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, কর আদায় বাড়াতে সিগারেটের মূল্যস্তর ও শুল্ক দুটি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হতে পারে আগামী বাজেটে। বাড়তে পারে ভ্রমণ কর। তাছাড়া রপ্তানির উৎস কর কমানোর দাবি থাকলেও এখন পর্যন্ত এটি অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, রাজস্ব আদায় বাড়াতে আমদানি করা গাড়ি, ফ্রিজ ও এসির মতো পণ্যের সম্পূরক শুল্ক ও করের হার বাড়ানো হতে পারে।

তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে সাধারণ করদাতাদের জন্য কিছুটা ছাড়ের চিন্তাভাবনা চলছে। করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে কিছুটা বাড়িয়ে সাড়ে তিন লাখ করা হতে পারে। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ৮৭ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএনধারী) আছেন। তাদের মধ্যে ২৯ লাখের মতো রিটার্ন দাখিল করছেন। বাজেটে উচ্চ আয়ের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সারচার্জ ৫ থেকে ১০ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। ফলে ধনীদের দিতে হতে পারে আরো উচ্চ কর। সারচার্জ হচ্ছে একধরনের ‘অতিরিক্ত’ কর। ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের ক্ষেত্রে কারো নির্দিষ্ট সীমার বেশি সম্পদ থাকলে নিয়মিত কর দেওয়ার সঙ্গে ‘বাড়তি’ এই সারচার্জও পরিশোধ করতে হয়। নিট সম্পদের ওপর ভিত্তি করে এটি ধার্য করা হয়। আগামী বাজেটে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রার পাশাপাশি এনবিআরবহির্ভূত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা আর করবহির্ভূত রাজস্ব (এনটিআর) আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক
সুমি/হককথা

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

৫ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য

প্রকাশের সময় : ১১:১৮:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ মে ২০২৩

বাংলাদেশ ডেস্ক : আসছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে কর আদায়ে বাড়তি চাপ থাকছে। ৭ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা হচ্ছে ৫ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর জন্য ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্য দেওয়া হচ্ছে। এটি চলতি অর্থবছরের লক্ষ্য থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকা বেশি। গত অর্থবছরে শুল্ক-কর আদায়ে ৩০ হাজার কোটি টাকার মতো ঘাটতি হয়েছিল। চলতি বছরেও যদি এমন ঘাটতি হয়, তাহলে আগামী অর্থবছরে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার বাড়তি রাজস্ব আদায়ের চাপে থাকবে এনবিআর। এ অবস্থায় কর অব্যাহতি ও রাজস্বনীতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে। আগামী ১ জুন জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ইতিমধ্যে বাজেটের রূপরেখা প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিভিন্ন শর্তের মধ্যে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর শর্ত উল্লেখযোগ্য। শর্তের মধ্যে রয়েছে, আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের স্বাভাবিক প্রবণতার বাইরে জিডিপির অতিরিক্ত দশমিক ৫ শতাংশ রাজস্ব আদায় করতে হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেওয়া করছাড়ও যৌক্তিক করতে হবে। সম্প্রতি পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক হিসাবে বলা হয়েছে, এনবিআর যে গতিতে রাজস্ব আদায় করছে, তাতে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি হতে পারে ৫৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। সরকার আগামী অর্থবছর ১৬ শতাংশ হারে রাজস্ব আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। কিন্তু আইএমএফের শর্ত মানতে হলে অন্তত ৩৬ শতাংশ রাজস্ব আদায় বাড়াতে হবে। আর এসব কারণেই বাড়তি রাজস্ব আদায়ের চাপ থাকবে।

ইতিমধ্যে এনবিআর বাড়তি কর আদায়ে একগুচ্ছ উদ্যোগ নিয়েছে। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গত ৫০ বছরে দুই শতাধিক প্রজ্ঞাপন জারি করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। এখন এগুলো পর্যালোচনা করছে এনবিআর। যেসব করছাড়ের আর প্রয়োজন নেই, সেগুলো বাদ দেওয়া হবে। আগামী বাজেটে ২০০০ সিসির বেশি গাড়িতে সম্পূরক শুল্ক বাড়তে পারে। একাধিক ব্যক্তিগত গাড়ি থাকলে বাড়তি আয়কর আরোপের প্রস্তাব থাকতে পারে। আগামী অর্থবছরে করপোরেট কর কমানো বা বাড়ানোর কোনো প্রস্তাব রাখছে না এনবিআর।

করপোরেট কর অপরিবর্তিত থাকছে। টানা গত দুই বছর করপোরেট কর কমানো হয়েছে। এ ছাড়া পাচার করা টাকা দেশে ফেরত আনার যে সুযোগ চলতি অর্থবছরে দেওয়া হয়েছে, এর মেয়াদ আর বাড়ানো হচ্ছে না বলে জানা গেছে। আগামী ৩০ জুন ৭ শতাংশ কর দিয়ে বিনা প্রশ্নে বিদেশে পাচার করা টাকা দেশে আনার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এ পর্যন্ত কেউ এই সুযোগ নেয়নি। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, কর আদায় বাড়াতে সিগারেটের মূল্যস্তর ও শুল্ক দুটি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হতে পারে আগামী বাজেটে। বাড়তে পারে ভ্রমণ কর। তাছাড়া রপ্তানির উৎস কর কমানোর দাবি থাকলেও এখন পর্যন্ত এটি অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, রাজস্ব আদায় বাড়াতে আমদানি করা গাড়ি, ফ্রিজ ও এসির মতো পণ্যের সম্পূরক শুল্ক ও করের হার বাড়ানো হতে পারে।

তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে সাধারণ করদাতাদের জন্য কিছুটা ছাড়ের চিন্তাভাবনা চলছে। করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে কিছুটা বাড়িয়ে সাড়ে তিন লাখ করা হতে পারে। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ৮৭ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএনধারী) আছেন। তাদের মধ্যে ২৯ লাখের মতো রিটার্ন দাখিল করছেন। বাজেটে উচ্চ আয়ের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সারচার্জ ৫ থেকে ১০ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। ফলে ধনীদের দিতে হতে পারে আরো উচ্চ কর। সারচার্জ হচ্ছে একধরনের ‘অতিরিক্ত’ কর। ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের ক্ষেত্রে কারো নির্দিষ্ট সীমার বেশি সম্পদ থাকলে নিয়মিত কর দেওয়ার সঙ্গে ‘বাড়তি’ এই সারচার্জও পরিশোধ করতে হয়। নিট সম্পদের ওপর ভিত্তি করে এটি ধার্য করা হয়। আগামী বাজেটে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রার পাশাপাশি এনবিআরবহির্ভূত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা আর করবহির্ভূত রাজস্ব (এনটিআর) আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক
সুমি/হককথা