ঢাকা: বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে দারিদ্রমুক্ত করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গার্ডিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাতকারে তিনি বলেন বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে উন্নত দেশ ও দাতাদের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মহাজোট সরকারের রূপকল্প ২০২১ অনুযায়ী এই সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশকে দারিদ্রমুক্ত দেশ হিসেবে দেখতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদায় নিয়ে যাওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমি আমার কাজে দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে নিয়ে যাওয়াকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি। আমাদের অনেক দূর যেতে হবে, অনেক কিছু বাকি। যখন আমি দেশকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব, সম্ভবত তখনই আমি বলতে পারব আমি গর্বিত।
সাক্ষাৎকারে তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনেও তিনি উন্নত দেশগুলোকে তাদের প্রতিশ্রুতি রাখার আহ্বান জানাবেন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে রয়েছেন শেখ হাসিনা। এর আগে ঢাকায় গার্ডিয়ানকে এই সাক্ষাৎকার দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ২১ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারভিত্তিক দ্বিতীয় প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্রিটিশ এই দৈনিক।
ওই প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে আনা দমন-পীড়নের অভিযোগ নাকচ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি শাসন নয়, জনগণের সেবা করছেন। এসডিজি লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যখন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ছিলেন, সেই মুহূর্তেই সাক্ষাৎকারভিত্তিক প্রতিবেদনের তৃতীয় কিস্তি প্রকাশ করল গার্ডিয়ান। এরই মধ্যে দারিদ্র্য, অসাম্য ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলাসহ ১৭টি ক্ষেত্রে বিশ্বকে এগিয়ে নিতে ১৫ বছর মেয়াদি এসডিজি জাতিসংঘে গৃহিত হয়েছে।
শেখ হাসিনা গার্ডিয়ানকে বলেন, জাতিসংঘে এসডিজি গৃহিত হলে, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এটি আমাদের জন্য একটি সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে। কিন্তু আমি বলতে চাই, উন্নয়নশীল দেশকে নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। মাঝে মাঝে আমরা যখন এই বৈঠকগুলোতে অংশ নিই, অনেক প্রতিশ্রুতি আমরা পাই। কিন্তু বাস্তবে এসব প্রতিশ্রুতির খুব সামান্য অংশ আমরা কার্যকর হতে দেখি। এ কারণে আমি অবশ্যই বিশ্ব নেতাদের তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে বলব। বিশ্ব নেতাদের উচিত তাদের প্রতিশ্রুতি রাখা, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ব্যাপারে দেওয়া প্রতিশ্রুতিসমূহ।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য নিরাপত্তাসহ আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। আমাদের জনগণ দিনে অন্তত দুই বেলা খেতে পারছে। কিন্তু সুষম পুষ্টি নিশ্চিত করা আরেকটি চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে শিশুদের জন্য।
বিভিন্ন সমস্যার কথা অস্বীকার না করে ২০০০ সাল থেকে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যের সামগ্রিক অর্জনের ওপর জোর দেন হাসিনা। প্রতিটি লক্ষ্যে, আমরা অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছি। এজন্য বাংলাদেশ জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার স্বীকৃতি পেয়েছে। এখন আমাদের পরের পদক্ষেপ হবে এসডিজি গ্রহণ করা এবং জাতিসংঘের পরবর্তী অধিবেশনেই আমরা উদ্যোগ নেব। বাংলাদেশ এই বিষয়ে খুবই আন্তরিক।
সাক্ষাৎকার ভিত্তিক ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এমডিজি) নির্ধারিত সময়ের আগেই বাংলাদেশের বিভিন্ন লক্ষ্য পূরণের বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ২০০০ সালে এমডিজি গ্রহণের সময়ও আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এমডিজিতে সাফল্যের দিকে ইঙ্গিত করে হাসিনা বলেন, আমাদের অনেক অর্জন রয়েছে, তাই আমরা অন্যদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারি।