নিউইয়র্ক ১১:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

হত্যা মামলার তদন্তে অন্ধকারে সিআইডি

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৪৬:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ জুন ২০২৩
  • / ৩৪ বার পঠিত

বাংলাদেশ ডেস্ক : রাজধানীর পল্লবীর কালশীতে রহস্যজনক আগুনে পুড়ে একই পরিবারের ১০ জনের মৃত্যুর ঘটনার এখনো কূলকিনারা হয়নি। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলাটির ৯ বছর ধরে চলছে তদন্ত। ২০১৪ সালের ১৪ জুন কালশীতে বিহারি ক্যাম্পে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। পরে পুলিশ আসে। তখন ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ বাঁধে। এক পর্যায়ে ক্যাম্পের কয়েকটি ঘরে আগুন দেওয়া হয়। সংঘর্ষের সময় গুলিতে নিহত হয় একজন। অন্যদিকে আগুনে পুড়ে মারা যান ইয়াসিনের পরিবারের ৯ জন। এরা হলেন, ইয়াসিন আলীর স্ত্রী বেবী আক্তার (৪৫), ছেলে আশিক (২৫), তিন মেয়ে শাহানি (২০), আফসানা (১৮), রুখসানা (১৪), যমজ ছেলে লালু (১২) ও ভুলু (১২), পুত্রবধূ শিখা (১৯) ও শাহানির ছেলে মারুফ (৩)। এছাড়া এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন শ্রমিক আজাদ। এ ঘটনায় ইয়াসিন বাদী হয়ে পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার বছর দুয়েক পর পল্লবীতে এক রহস্যজনক সড়ক দুর্ঘটনায় ইয়াসিন নিহত হন।

এ বিষয়ে উর্দু স্পিকিং ইয়ুথ পিপলস রিহ্যাবিলিটেশন মুভমেন্টের দপ্তর সম্পাদক ইমরান খান বলেন, বিহারি ক্যাম্পের জায়গা দখল করতেই ঐ হামলা চালানো হয়। আগুনে পুড়ে ও গুলিতে মারা গেছে বিহারিরা, অথচ মামলায় আসামি করা হয়েছে বিহারিদেরই। তবে ঘটনার সময়ে ঐ সময় পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া গিয়েছিল। পুলিশ বলেছিল, বিহারিদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে আগুনের ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছিল, আতশবাজি পোড়ানোকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাঙালিদের সঙ্গে বিহারিদের সংঘর্ষ বাধে। এছাড়া বিদ্যুত্ সংযোগ নিয়েও এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে আগে থেকে বিরোধ ছিল। এ ঘটনায় পল্লবী থানায় মোট ছয়টি মামলা হয়। মামলাগুলো শুরুতে পল্ল­বী থানা পুলিশ তদন্ত করে। পরে ডিবি, সিআইডি ও পিবিআই মামলার তদন্ত করে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এর মধ্যে হত্যা মামলা তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

অন্য আরেকটি মামলায় বিহারি ক্যাম্পের বাসিন্দা. মো. বদরুল, সাব্বির, আজাদ, আরজু, আরিফ ও জুয়েলকে এজাহারভুক্ত করে অজ্ঞাত পরিচয় প্রায় ৩ হাজার জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। মামলাটি এখন অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। এই মামলাটি এক সময় তদন্ত করেন সিআইডির পরিদর্শক নুরল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মামলাটি বেশ কিছুদিন আমি তদন্ত করি। অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও পাই। তবে এখন আমি তদন্ত করছি না। আমি সিআইডি থেকে বদলি হয়েছি। মামলাটি এখন অন্য কর্মকর্তা দেখছেন।’

আরোও পড়ুন । নিবিড় পর্যবেক্ষণে খালেদা জিয়া

সিআইডির মামলা তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঐ ঘটনায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজনের মৃত্যু, এক যুবককে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা, গাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট, মারধর, চুরি, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে চারটি মামলা করেন বিহারি ক্যাম্পের বাসিন্দারা। এসব মামলায় ৩২ জনের নাম উলে­খ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরো অন্তত ৩ হাজার ২২০ জনকে আসামি করা হয়। এরমধ্যে পাঁচ মামলার এজাহারে বর্ণিত আসামি ও তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে, তাদের বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে অভিযোগপত্র। তবে এ ঘটনায় আলোচনার কেন্দ্রে থাকা ইয়াসিনের দায়ের করা হত্যা মামলাটির তদন্তে গতি আসেনি।

ইয়াসিনের এক মেয়ে ফারজানা বেঁচে আছেন। তিনি বলেন, ‘আমাকেও ওরা মারতে চায়। ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এখন খালার বাসায় থাকি।’ উর্দু স্পিকিংস পিপলস ইয়ুথ রিহ্যাবিলিটিশন মুভমেন্টের (ইউএসপিওয়াইআরএম) সাধারণ সম্পাদক মইন উদ্দিন মুন্না বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে ক্যাম্পে আগুন দিয়ে নিরাপরাধ বিহারিদের পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার নেপথ্যে অনেক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক

বেলী/হককথা

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

হত্যা মামলার তদন্তে অন্ধকারে সিআইডি

প্রকাশের সময় : ১০:৪৬:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ জুন ২০২৩

বাংলাদেশ ডেস্ক : রাজধানীর পল্লবীর কালশীতে রহস্যজনক আগুনে পুড়ে একই পরিবারের ১০ জনের মৃত্যুর ঘটনার এখনো কূলকিনারা হয়নি। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলাটির ৯ বছর ধরে চলছে তদন্ত। ২০১৪ সালের ১৪ জুন কালশীতে বিহারি ক্যাম্পে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। পরে পুলিশ আসে। তখন ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ বাঁধে। এক পর্যায়ে ক্যাম্পের কয়েকটি ঘরে আগুন দেওয়া হয়। সংঘর্ষের সময় গুলিতে নিহত হয় একজন। অন্যদিকে আগুনে পুড়ে মারা যান ইয়াসিনের পরিবারের ৯ জন। এরা হলেন, ইয়াসিন আলীর স্ত্রী বেবী আক্তার (৪৫), ছেলে আশিক (২৫), তিন মেয়ে শাহানি (২০), আফসানা (১৮), রুখসানা (১৪), যমজ ছেলে লালু (১২) ও ভুলু (১২), পুত্রবধূ শিখা (১৯) ও শাহানির ছেলে মারুফ (৩)। এছাড়া এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন শ্রমিক আজাদ। এ ঘটনায় ইয়াসিন বাদী হয়ে পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার বছর দুয়েক পর পল্লবীতে এক রহস্যজনক সড়ক দুর্ঘটনায় ইয়াসিন নিহত হন।

এ বিষয়ে উর্দু স্পিকিং ইয়ুথ পিপলস রিহ্যাবিলিটেশন মুভমেন্টের দপ্তর সম্পাদক ইমরান খান বলেন, বিহারি ক্যাম্পের জায়গা দখল করতেই ঐ হামলা চালানো হয়। আগুনে পুড়ে ও গুলিতে মারা গেছে বিহারিরা, অথচ মামলায় আসামি করা হয়েছে বিহারিদেরই। তবে ঘটনার সময়ে ঐ সময় পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া গিয়েছিল। পুলিশ বলেছিল, বিহারিদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে আগুনের ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছিল, আতশবাজি পোড়ানোকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাঙালিদের সঙ্গে বিহারিদের সংঘর্ষ বাধে। এছাড়া বিদ্যুত্ সংযোগ নিয়েও এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে আগে থেকে বিরোধ ছিল। এ ঘটনায় পল্লবী থানায় মোট ছয়টি মামলা হয়। মামলাগুলো শুরুতে পল্ল­বী থানা পুলিশ তদন্ত করে। পরে ডিবি, সিআইডি ও পিবিআই মামলার তদন্ত করে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এর মধ্যে হত্যা মামলা তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

অন্য আরেকটি মামলায় বিহারি ক্যাম্পের বাসিন্দা. মো. বদরুল, সাব্বির, আজাদ, আরজু, আরিফ ও জুয়েলকে এজাহারভুক্ত করে অজ্ঞাত পরিচয় প্রায় ৩ হাজার জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। মামলাটি এখন অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। এই মামলাটি এক সময় তদন্ত করেন সিআইডির পরিদর্শক নুরল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মামলাটি বেশ কিছুদিন আমি তদন্ত করি। অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও পাই। তবে এখন আমি তদন্ত করছি না। আমি সিআইডি থেকে বদলি হয়েছি। মামলাটি এখন অন্য কর্মকর্তা দেখছেন।’

আরোও পড়ুন । নিবিড় পর্যবেক্ষণে খালেদা জিয়া

সিআইডির মামলা তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঐ ঘটনায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজনের মৃত্যু, এক যুবককে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা, গাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট, মারধর, চুরি, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে চারটি মামলা করেন বিহারি ক্যাম্পের বাসিন্দারা। এসব মামলায় ৩২ জনের নাম উলে­খ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরো অন্তত ৩ হাজার ২২০ জনকে আসামি করা হয়। এরমধ্যে পাঁচ মামলার এজাহারে বর্ণিত আসামি ও তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে, তাদের বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে অভিযোগপত্র। তবে এ ঘটনায় আলোচনার কেন্দ্রে থাকা ইয়াসিনের দায়ের করা হত্যা মামলাটির তদন্তে গতি আসেনি।

ইয়াসিনের এক মেয়ে ফারজানা বেঁচে আছেন। তিনি বলেন, ‘আমাকেও ওরা মারতে চায়। ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এখন খালার বাসায় থাকি।’ উর্দু স্পিকিংস পিপলস ইয়ুথ রিহ্যাবিলিটিশন মুভমেন্টের (ইউএসপিওয়াইআরএম) সাধারণ সম্পাদক মইন উদ্দিন মুন্না বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে ক্যাম্পে আগুন দিয়ে নিরাপরাধ বিহারিদের পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার নেপথ্যে অনেক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক

বেলী/হককথা