নিউইয়র্ক ১২:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

স্বাগতম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৩৫:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুন ২০১৫
  • / ৯৯৭ বার পঠিত

ঢাকা: একগুচ্ছ প্রত্যাশা বুকে নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বাংলাদেশের জনগণ। এই সফরে ভারতের জনগণের বিশেষ করে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এসব কারণে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এ সফর দু’দেশের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ। আজ সকালে বিশেষ বিমানে ৩৬ ঘণ্টার সফরে ঢাকায় আসছেন মোদি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন। বাংলাদেশে অবস্থানকালে এ অতিথি ব্যস্ত সময় কাটাবেন।
ভারতের পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধনী বিল পাসের পর থেকেই শুরু হয় ক্ষণগণনা। কবে আসবেন মোদি। অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এলো। ভারতে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরের মধ্যেই সীমান্ত চুক্তি বিল পাসের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করায় এ নেতার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশার পারদ ক্রমশ উপরে উঠছে। বিশেষ করে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে মোদির দিকনির্দেশনার প্রতি সবাই তাকিয়ে আছে। এর পাশাপাশি, সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা বন্ধ, অশুল্ক বাণিজ্য বাধা অপসারণ, তিন বিঘা করিডোরের ওপর ফ্লাইওভার নির্মাণ, কানেকটিভিটির জন্যে অবকাঠামো উন্নয়নে সহজ শর্তে নতুন ঋণের ঘোষণা আসবে এ ধরনের প্রত্যাশা করছে মানুষ। এছাড়া টিপাইমুখে বাঁধের ফলে বাংলাদেশে পরিবেশগত বিপর্যয় প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ, প্রস্তাবিত আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প নিয়ে অগ্রসর না হওয়া, কানেকটিভিটি তথা ট্রানজিটের জন্য বাংলাদেশকে মাশুল দেয়াসহ যাবতীয় উদ্বেগ নিরসনে নরেন্দ্র মোদির সুনির্দিষ্ট ঘোষণা প্রত্যাশা করছেন দেশবাসী। এ নেতা তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে দক্ষিণ এশীয় নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রতিবেশীবান্ধব নীতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। এখন সেটা কাজে রূপাšন্তর করবেন এমন প্রত্যাশা নিয়েই অপেক্ষা করছেন বাংলাদেশের মানুষ।
PM Modiমোদি সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এর আগে বাংলাদেশ সফরকালে স্পষ্ট করেছেন যে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারত নাক গলাবে না। মোদির সফরকালেও একই ইঙ্গিত পাওয়া যাবে বলে অনেকেই মনে করেন। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে অনেক কিছুই এ সফরে পূরণ হতে পারে। বাংলাদেশের ওপর দিয়ে কানেকটিভিটি তথা ট্রানজিট সুবিধা নিয়ে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে দেশটির অবশিষ্ট অংশের যোগাযোগ বৃদ্ধি করবে। ওই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে শেখ হাসিনার সরকার আগে থেকেই ভারত সরকারকে নিরাপত্তা সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
মোদির আগমন উপলক্ষে ঢাকাকে সাজানো হয়েছে নানাভাবে। রাষ্ট্রীয় অতিথি রাজধানীর যেসব সড়ক দিয়ে যাতায়াত করবেন ওই সড়কগুলোতে বাংলাদেশ ও ভারতের পতাকা দিয়ে মনোরমভাবে সাজানো হয়েছে। ঢাকার রাস্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি শোভা পাচ্ছে। মোদির সফর নির্বিঘœ করতে নেয়া হয়েছে নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মোদির সফরের আগেই ঢাকায় পৌঁছেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে শুক্রবার (৫ জুন) পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেছেন, মোদির সফরের প্রধান উপজীব্য কানেকটিভিটি। তবে সফরকালে বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশিত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি হচ্ছে না বলে জানান তিনি। ফলে তিস্তা পারের মানুষের মধ্যে বেশ হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এ সফরে তিস্তা চুক্তি না হলেও এ নিয়ে কাজ চলছে। তিস্তা চুক্তির জন্যে তিনি সবাইকে ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছেন। মন্ত্রী এ ইস্যুতে ‘চোখের আড়ালে’ কাজ চলছে বলে জানিয়ে তিনবার বলেছেন ‘ধৈর্য ধরুন’। তিনি বলেন, ‘রাতারাতি কোনো কিছু করা সম্ভব নয়। যখন সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে যাবে, তখন সবাই অবশ্যই জানতে পারবেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাম্প্রতিককালে এ চুক্তির বিরোধিতাকারী মমতা ব্যানার্জির ঘন ঘন বাংলাদেশ সফরকে চুক্তি সইয়ের পক্ষে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির সহায়ক বলে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘তিস্তার ওপর আলোচনা চলছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। যে চুক্তি হয়নি- তা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরে তি¯স্তা চুক্তি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা না থাকলেও হতাশ নন বলে জানান তিনি। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, এজেন্ডায় না থাকলেও মোদি ও মমতার সামনে তিস্তা ইস্যুতে খোলামেলা আলোচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ লক্ষ্যেই ক্যারিশমেটিক মোদি ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তার বিপক্ষের মমতা ব্যানার্জিকে ঢাকায় হাজির করেছেন। মমতাও তিস্তার ব্যাপারে অনেকখানি রাজি হয়েছেন। তবে এখনই চুক্তি সই করতে চান না তিনি।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের জনগণের যোগাযোগের দুর্ভোগ নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা বাস সার্ভিস ও ঢাকা-শিলং-গুয়াহাটি বাস সার্ভিস সূচনা করবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বেলা ৩টা ৪৫ মিনিট থেকে ৪টা ১০ মিনিট পর্যন্ত চলবে এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের উদ্যোগকে ‘আঞ্চলিক বাণিজ্য করিডোর’ হিসেবে অভিহিত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, কানেকটিভিটি স্থাপনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক একীভূত করা হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ঢাকা সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে উভয় দেশের মধ্যে অনুষ্ঠেয় আনুষ্ঠানিক বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হবে। বৈঠকের পর উভয় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে স্থল সীমানা নির্ধারণসংক্রান্ত চুক্তির অনুসমর্থনের দলিল বিনিময় হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে নতুন করে ঋণ দেয়ার ঘোষণা দিতে পারেন। এছাড়া দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বেশ কয়েকটি চুক্তি, প্রটোকল ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি, অভ্যন্তরীণ নৌ প্রটোকল, উপকূলীয় নৌ চলাচল চুক্তি, পণ্যের মান স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন-সংক্রান্ত সহযোগিতা চুক্তি এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় সহযোগিতা চুক্তি। এছাড়া উভয় দেশের উপকূলীয় অঞ্চল নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা, মানব পাচার প্রতিরোধ, জাল নোট পাচার প্রতিরোধ, সমুদ্রভিত্তিক ব-ইকোনমির ক্ষেত্রে সহযোগিতাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এছাড়া ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতাসংক্রান্ত বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেছেন, এ চুক্তিগুলো স্বাক্ষরের ফলে আঞ্চলিক আন্তঃসংযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার হবে।
প্রধানমন্ত্রী মোদির সফরের সময়ে বেশ কয়েকটি কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা বাস সার্ভিস ও ঢাকা-শিলং-গুয়াহাটি বাস সার্ভিসের সূচনা। এছাড়া খুলনা-মংলা রেলওয়ে লাইন এবং কুলাউড়া-শাহাবাজপুর রেলসংযোগ পুনর্বহাল, শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে রবীন্দ্র ভবন, সারদা পুলিশ একাডেমিতে একটি মৈত্রী ভবন, ফেনী নদীর উপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশনের একটি পরীক্ষাগার এবং একটি বর্ডার হাট উদ্বোধন করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে একটি সুধী সমাবেশে বক্তব্য প্রদান করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন: মোদির সফর উপলক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন মাত্রায় উন্নীত হয়েছে। ২০১০ সালে শেখ হাসিনার ভারত সফর এবং ২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে এ সম্পর্ক আরও সুসংহত হয়। ফলে দু’দেশের মধ্যে পণ্য বাণিজ্য ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ভারতের সহযোগিতার মাত্রা সম্প্রসারিত হয়েছে। এছাড়া দেশের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। উভয় দেশের মধ্যে জনযোগাযোগ বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এ সফর এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন দু’দেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক উচ্চতায় উপনীত। এ সফরের সময়ে বহু দিনের অমীংমাসিত স্থল সীমানা চুক্তির দলিল বিনিময় করা হবে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সমুদ্রসীমা নির্ধারণের বিষয়টি শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়।
কর্মসূচি: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শনিবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে বিশেষ বিমানে ঢাকা পৌঁঁছলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন। সেখান থেকে মোদি সরাসরি হেলিকপ্টারে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অমর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। বেলা সাড়ে ৩টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি করমর্দন করে ঢাকা-কলকাতা-আগরতলা এবং ঢাকা-শিলং-গোয়াহাটির মধ্যে বাস সার্ভিস উদ্বোধন করবেন। বিকাল ৪টা ১৫ থেকে ৪টা ৩৫ পর্যন্ত দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বিকাল ৪টা ৪০ থেকে ৪টা ৪৫ পর্যন্ত সীমান্ত চুক্তির অনুসমর্থনের দলিল বিনিময় হবে। বিকাল ৪টা ৫০ থেকে ৫টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত রেস্ট্রিকটেড মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। বিকাল ৫টা ৪০ থেকে ৬টা ২৫ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। ৬টা ৩০ মিনিটে ফলক উন্মোচন। তারপর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বিভিন্ন চুক্তি, প্রটোকল ও সমঝোতা স্মারক সই হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী পরিদর্শক বইয়ে সই করবেন। রাতে সোনারগাঁও হোটেলে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানও হবে। সফরের দ্বিতীয় দিনে রোববার সকাল ৭টায় ধানমন্ডিতে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। তারপর ৮টা ৪০ থেকে ৯টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত ঢাকেশ্বরী মন্দির ও ৯টা ৩০ থেকে ১০টা পর্যন্ত রামকৃষ্ণ মিশনে যাবেন মোদি। তারপর ১০টা ১০ মিনিট থেকে ১০টা ৩৫ পর্যন্ত ঢাকায় বারিধারায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের নতুন চ্যান্সারি ভবনের উদ্বোধন করবেন। দুপুর ১টায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন মোদি। সেখানেই ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়িকে দেয়া সম্মাননা তারপর পর্যায়ক্রমে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সোনারগাঁও হোটেলে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ওয়ার্কার্স পার্টি, শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন এফবিসিসিআই। সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জনসমক্ষে ভাষণ দেবেন মোদি। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের সহায়তায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তারপর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিদায় জানাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। (দৈনিক যুগান্তর)

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

স্বাগতম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

প্রকাশের সময় : ০৭:৩৫:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুন ২০১৫

ঢাকা: একগুচ্ছ প্রত্যাশা বুকে নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বাংলাদেশের জনগণ। এই সফরে ভারতের জনগণের বিশেষ করে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এসব কারণে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এ সফর দু’দেশের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ। আজ সকালে বিশেষ বিমানে ৩৬ ঘণ্টার সফরে ঢাকায় আসছেন মোদি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন। বাংলাদেশে অবস্থানকালে এ অতিথি ব্যস্ত সময় কাটাবেন।
ভারতের পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধনী বিল পাসের পর থেকেই শুরু হয় ক্ষণগণনা। কবে আসবেন মোদি। অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এলো। ভারতে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরের মধ্যেই সীমান্ত চুক্তি বিল পাসের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করায় এ নেতার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশার পারদ ক্রমশ উপরে উঠছে। বিশেষ করে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে মোদির দিকনির্দেশনার প্রতি সবাই তাকিয়ে আছে। এর পাশাপাশি, সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা বন্ধ, অশুল্ক বাণিজ্য বাধা অপসারণ, তিন বিঘা করিডোরের ওপর ফ্লাইওভার নির্মাণ, কানেকটিভিটির জন্যে অবকাঠামো উন্নয়নে সহজ শর্তে নতুন ঋণের ঘোষণা আসবে এ ধরনের প্রত্যাশা করছে মানুষ। এছাড়া টিপাইমুখে বাঁধের ফলে বাংলাদেশে পরিবেশগত বিপর্যয় প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ, প্রস্তাবিত আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প নিয়ে অগ্রসর না হওয়া, কানেকটিভিটি তথা ট্রানজিটের জন্য বাংলাদেশকে মাশুল দেয়াসহ যাবতীয় উদ্বেগ নিরসনে নরেন্দ্র মোদির সুনির্দিষ্ট ঘোষণা প্রত্যাশা করছেন দেশবাসী। এ নেতা তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে দক্ষিণ এশীয় নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রতিবেশীবান্ধব নীতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। এখন সেটা কাজে রূপাšন্তর করবেন এমন প্রত্যাশা নিয়েই অপেক্ষা করছেন বাংলাদেশের মানুষ।
PM Modiমোদি সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এর আগে বাংলাদেশ সফরকালে স্পষ্ট করেছেন যে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারত নাক গলাবে না। মোদির সফরকালেও একই ইঙ্গিত পাওয়া যাবে বলে অনেকেই মনে করেন। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে অনেক কিছুই এ সফরে পূরণ হতে পারে। বাংলাদেশের ওপর দিয়ে কানেকটিভিটি তথা ট্রানজিট সুবিধা নিয়ে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে দেশটির অবশিষ্ট অংশের যোগাযোগ বৃদ্ধি করবে। ওই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে শেখ হাসিনার সরকার আগে থেকেই ভারত সরকারকে নিরাপত্তা সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
মোদির আগমন উপলক্ষে ঢাকাকে সাজানো হয়েছে নানাভাবে। রাষ্ট্রীয় অতিথি রাজধানীর যেসব সড়ক দিয়ে যাতায়াত করবেন ওই সড়কগুলোতে বাংলাদেশ ও ভারতের পতাকা দিয়ে মনোরমভাবে সাজানো হয়েছে। ঢাকার রাস্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি শোভা পাচ্ছে। মোদির সফর নির্বিঘœ করতে নেয়া হয়েছে নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মোদির সফরের আগেই ঢাকায় পৌঁছেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে শুক্রবার (৫ জুন) পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেছেন, মোদির সফরের প্রধান উপজীব্য কানেকটিভিটি। তবে সফরকালে বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশিত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি হচ্ছে না বলে জানান তিনি। ফলে তিস্তা পারের মানুষের মধ্যে বেশ হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এ সফরে তিস্তা চুক্তি না হলেও এ নিয়ে কাজ চলছে। তিস্তা চুক্তির জন্যে তিনি সবাইকে ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছেন। মন্ত্রী এ ইস্যুতে ‘চোখের আড়ালে’ কাজ চলছে বলে জানিয়ে তিনবার বলেছেন ‘ধৈর্য ধরুন’। তিনি বলেন, ‘রাতারাতি কোনো কিছু করা সম্ভব নয়। যখন সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে যাবে, তখন সবাই অবশ্যই জানতে পারবেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাম্প্রতিককালে এ চুক্তির বিরোধিতাকারী মমতা ব্যানার্জির ঘন ঘন বাংলাদেশ সফরকে চুক্তি সইয়ের পক্ষে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির সহায়ক বলে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘তিস্তার ওপর আলোচনা চলছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। যে চুক্তি হয়নি- তা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরে তি¯স্তা চুক্তি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা না থাকলেও হতাশ নন বলে জানান তিনি। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, এজেন্ডায় না থাকলেও মোদি ও মমতার সামনে তিস্তা ইস্যুতে খোলামেলা আলোচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ লক্ষ্যেই ক্যারিশমেটিক মোদি ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তার বিপক্ষের মমতা ব্যানার্জিকে ঢাকায় হাজির করেছেন। মমতাও তিস্তার ব্যাপারে অনেকখানি রাজি হয়েছেন। তবে এখনই চুক্তি সই করতে চান না তিনি।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের জনগণের যোগাযোগের দুর্ভোগ নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা বাস সার্ভিস ও ঢাকা-শিলং-গুয়াহাটি বাস সার্ভিস সূচনা করবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বেলা ৩টা ৪৫ মিনিট থেকে ৪টা ১০ মিনিট পর্যন্ত চলবে এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের উদ্যোগকে ‘আঞ্চলিক বাণিজ্য করিডোর’ হিসেবে অভিহিত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, কানেকটিভিটি স্থাপনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক একীভূত করা হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ঢাকা সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে উভয় দেশের মধ্যে অনুষ্ঠেয় আনুষ্ঠানিক বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হবে। বৈঠকের পর উভয় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে স্থল সীমানা নির্ধারণসংক্রান্ত চুক্তির অনুসমর্থনের দলিল বিনিময় হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে নতুন করে ঋণ দেয়ার ঘোষণা দিতে পারেন। এছাড়া দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বেশ কয়েকটি চুক্তি, প্রটোকল ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি, অভ্যন্তরীণ নৌ প্রটোকল, উপকূলীয় নৌ চলাচল চুক্তি, পণ্যের মান স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন-সংক্রান্ত সহযোগিতা চুক্তি এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় সহযোগিতা চুক্তি। এছাড়া উভয় দেশের উপকূলীয় অঞ্চল নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা, মানব পাচার প্রতিরোধ, জাল নোট পাচার প্রতিরোধ, সমুদ্রভিত্তিক ব-ইকোনমির ক্ষেত্রে সহযোগিতাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এছাড়া ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতাসংক্রান্ত বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেছেন, এ চুক্তিগুলো স্বাক্ষরের ফলে আঞ্চলিক আন্তঃসংযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার হবে।
প্রধানমন্ত্রী মোদির সফরের সময়ে বেশ কয়েকটি কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা বাস সার্ভিস ও ঢাকা-শিলং-গুয়াহাটি বাস সার্ভিসের সূচনা। এছাড়া খুলনা-মংলা রেলওয়ে লাইন এবং কুলাউড়া-শাহাবাজপুর রেলসংযোগ পুনর্বহাল, শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে রবীন্দ্র ভবন, সারদা পুলিশ একাডেমিতে একটি মৈত্রী ভবন, ফেনী নদীর উপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশনের একটি পরীক্ষাগার এবং একটি বর্ডার হাট উদ্বোধন করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে একটি সুধী সমাবেশে বক্তব্য প্রদান করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন: মোদির সফর উপলক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন মাত্রায় উন্নীত হয়েছে। ২০১০ সালে শেখ হাসিনার ভারত সফর এবং ২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে এ সম্পর্ক আরও সুসংহত হয়। ফলে দু’দেশের মধ্যে পণ্য বাণিজ্য ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ভারতের সহযোগিতার মাত্রা সম্প্রসারিত হয়েছে। এছাড়া দেশের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। উভয় দেশের মধ্যে জনযোগাযোগ বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এ সফর এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন দু’দেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক উচ্চতায় উপনীত। এ সফরের সময়ে বহু দিনের অমীংমাসিত স্থল সীমানা চুক্তির দলিল বিনিময় করা হবে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সমুদ্রসীমা নির্ধারণের বিষয়টি শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়।
কর্মসূচি: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শনিবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে বিশেষ বিমানে ঢাকা পৌঁঁছলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন। সেখান থেকে মোদি সরাসরি হেলিকপ্টারে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অমর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। বেলা সাড়ে ৩টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি করমর্দন করে ঢাকা-কলকাতা-আগরতলা এবং ঢাকা-শিলং-গোয়াহাটির মধ্যে বাস সার্ভিস উদ্বোধন করবেন। বিকাল ৪টা ১৫ থেকে ৪টা ৩৫ পর্যন্ত দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বিকাল ৪টা ৪০ থেকে ৪টা ৪৫ পর্যন্ত সীমান্ত চুক্তির অনুসমর্থনের দলিল বিনিময় হবে। বিকাল ৪টা ৫০ থেকে ৫টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত রেস্ট্রিকটেড মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। বিকাল ৫টা ৪০ থেকে ৬টা ২৫ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। ৬টা ৩০ মিনিটে ফলক উন্মোচন। তারপর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বিভিন্ন চুক্তি, প্রটোকল ও সমঝোতা স্মারক সই হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী পরিদর্শক বইয়ে সই করবেন। রাতে সোনারগাঁও হোটেলে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানও হবে। সফরের দ্বিতীয় দিনে রোববার সকাল ৭টায় ধানমন্ডিতে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। তারপর ৮টা ৪০ থেকে ৯টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত ঢাকেশ্বরী মন্দির ও ৯টা ৩০ থেকে ১০টা পর্যন্ত রামকৃষ্ণ মিশনে যাবেন মোদি। তারপর ১০টা ১০ মিনিট থেকে ১০টা ৩৫ পর্যন্ত ঢাকায় বারিধারায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের নতুন চ্যান্সারি ভবনের উদ্বোধন করবেন। দুপুর ১টায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন মোদি। সেখানেই ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়িকে দেয়া সম্মাননা তারপর পর্যায়ক্রমে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সোনারগাঁও হোটেলে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ওয়ার্কার্স পার্টি, শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন এফবিসিসিআই। সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জনসমক্ষে ভাষণ দেবেন মোদি। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের সহায়তায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তারপর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিদায় জানাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। (দৈনিক যুগান্তর)