নিউইয়র্ক ০২:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

সাড়ে তিন মাস আগে লন্ডনে মারা গেছেন হারিছ চৌধুরী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:০৫:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জানুয়ারী ২০২২
  • / ৯১ বার পঠিত

ঢাকা ডেস্ক : বিএনপির দাপুটে নেতা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব আবুল হারিছ চৌধুরী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মারা যাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে তার পরিবারের লোকদের কাছ থেকে। প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে তিনি মারা গেলেও পরিবারের সদস্যরা এতদিন বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন। তবে মঙ্গলবার তার চাচাত ভাই আশিক চৌধুরী ফেসবুকে ইঙ্গিতপূর্ণ একটি স্ট্যাটাস দেয়ার পর হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়টি চাউর হয়।

আশিক চৌধুরী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন- ‘ভাই বড় ধন, রক্তের বাঁধন’। নিজের ছবির সাথে হারিছ চৌধুরীর একটি ছবি যুক্ত করে তিনি এই স্ট্যাটাস দেন। এরপর স্ট্যাটাসের নিচে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন লিখে কমেন্ট করতে থাকেন।খবর সাম্প্রতিক দেশকাল

করোনায় ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ায় আবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। তিনি আগে থেকেই ব্লাড ক্যান্সার ও অন্যান্য জটিলতায় ভুগছিলেন।

উল্লেখ্য, ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলাসহ একাধিক মামলার অভিযুক্ত আসামি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রভাবশালী নেতা সিলেটের হারিছ চৌধুরীর কোনো খোঁজ আজও বের করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রায় ১০ বছর ধরে বিদেশে গা ঢাকা দিয়ে থাকা এই হারিছ চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনতেও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই। শুধু তাই নয়, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার চার্জশিটেও অভিযুক্ত আসামি হারিছ চৌধুরীকে লাপাত্তা দেখানো হয়েছে। হারিছ চৌধুরী তাই সিলেটবাসীর কাছে এক রহস্য।

জানা গেছে, হারিছ চৌধুরী সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকা কানাইঘাটের বাসিন্দা। তার নানাবাড়ি ভারতের করিমগঞ্জে। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার আসামি হারিছ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরেই লাপাত্তা।

স্থানীয় বিএনপিকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭৯ ও ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৫ (কানাইঘাট-জকিগঞ্জ) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন হারিছ। পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হওয়ার পরই তিনি গড়তে শুরু করেন সম্পদের পাহাড়। বিএনপি সরকারে থাকার সময়ে হওয়া ভবনের সাথেও তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিলো বলেও জানা যায়।

সিলেট বিএনপির দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতা জানান, হারিছ চৌধুরী বেশ কয়েকবার দেশে ফেরার চেষ্টা করেন। কিন্তু মামলার ভয়ে তিনি আর দেশে ফিরে আসেননি। জানা গেছে, হারিছ চৌধুরী পরিবারের সাথে লন্ডনে আছেন। তবে রাজনীতিতে তিনি নিষ্ক্রিয়। সিলেটের কয়েকজন নেতার সাথে তার যোগাযোগ রয়েছে। তারাই তাকে দেশে না ফিরতে পরামর্শ দিয়েছেন।

সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজদের তালিকায় নাম ছিলো হারিছ চৌধুরীর। ২০০৮ সালে একাধিক মামলায় তার ৬৫ বছরের কারাদণ্ড হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিদেশে পলাতক অনেক বিএনপি নেতা দেশে ফিরলেও হারিছ চৌধুরী ফেরেননি। তিনি কোথায় আছেন, কেমন আছেন- তা আজও অজানা। দেশে থাকা তার আত্মীয়-স্বজনরাও এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে রাজি নন।

এদিকে, আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলা, ঢাকায় ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা মামলার তদন্তে হারিছ চৌধুরী জড়িত থাকার প্রমাণ পায় তদন্তকারী সংস্থা।

হককথা / এমউএ

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

সাড়ে তিন মাস আগে লন্ডনে মারা গেছেন হারিছ চৌধুরী

প্রকাশের সময় : ১২:০৫:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জানুয়ারী ২০২২

ঢাকা ডেস্ক : বিএনপির দাপুটে নেতা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব আবুল হারিছ চৌধুরী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মারা যাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে তার পরিবারের লোকদের কাছ থেকে। প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে তিনি মারা গেলেও পরিবারের সদস্যরা এতদিন বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন। তবে মঙ্গলবার তার চাচাত ভাই আশিক চৌধুরী ফেসবুকে ইঙ্গিতপূর্ণ একটি স্ট্যাটাস দেয়ার পর হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়টি চাউর হয়।

আশিক চৌধুরী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন- ‘ভাই বড় ধন, রক্তের বাঁধন’। নিজের ছবির সাথে হারিছ চৌধুরীর একটি ছবি যুক্ত করে তিনি এই স্ট্যাটাস দেন। এরপর স্ট্যাটাসের নিচে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন লিখে কমেন্ট করতে থাকেন।খবর সাম্প্রতিক দেশকাল

করোনায় ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ায় আবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। তিনি আগে থেকেই ব্লাড ক্যান্সার ও অন্যান্য জটিলতায় ভুগছিলেন।

উল্লেখ্য, ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলাসহ একাধিক মামলার অভিযুক্ত আসামি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রভাবশালী নেতা সিলেটের হারিছ চৌধুরীর কোনো খোঁজ আজও বের করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রায় ১০ বছর ধরে বিদেশে গা ঢাকা দিয়ে থাকা এই হারিছ চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনতেও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই। শুধু তাই নয়, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার চার্জশিটেও অভিযুক্ত আসামি হারিছ চৌধুরীকে লাপাত্তা দেখানো হয়েছে। হারিছ চৌধুরী তাই সিলেটবাসীর কাছে এক রহস্য।

জানা গেছে, হারিছ চৌধুরী সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকা কানাইঘাটের বাসিন্দা। তার নানাবাড়ি ভারতের করিমগঞ্জে। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার আসামি হারিছ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরেই লাপাত্তা।

স্থানীয় বিএনপিকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭৯ ও ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৫ (কানাইঘাট-জকিগঞ্জ) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন হারিছ। পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হওয়ার পরই তিনি গড়তে শুরু করেন সম্পদের পাহাড়। বিএনপি সরকারে থাকার সময়ে হওয়া ভবনের সাথেও তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিলো বলেও জানা যায়।

সিলেট বিএনপির দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতা জানান, হারিছ চৌধুরী বেশ কয়েকবার দেশে ফেরার চেষ্টা করেন। কিন্তু মামলার ভয়ে তিনি আর দেশে ফিরে আসেননি। জানা গেছে, হারিছ চৌধুরী পরিবারের সাথে লন্ডনে আছেন। তবে রাজনীতিতে তিনি নিষ্ক্রিয়। সিলেটের কয়েকজন নেতার সাথে তার যোগাযোগ রয়েছে। তারাই তাকে দেশে না ফিরতে পরামর্শ দিয়েছেন।

সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজদের তালিকায় নাম ছিলো হারিছ চৌধুরীর। ২০০৮ সালে একাধিক মামলায় তার ৬৫ বছরের কারাদণ্ড হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিদেশে পলাতক অনেক বিএনপি নেতা দেশে ফিরলেও হারিছ চৌধুরী ফেরেননি। তিনি কোথায় আছেন, কেমন আছেন- তা আজও অজানা। দেশে থাকা তার আত্মীয়-স্বজনরাও এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে রাজি নন।

এদিকে, আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলা, ঢাকায় ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা মামলার তদন্তে হারিছ চৌধুরী জড়িত থাকার প্রমাণ পায় তদন্তকারী সংস্থা।

হককথা / এমউএ