সাতক্ষীরায় সাবেক এমপি হাবিবসহ ৪ আসামির যাবজ্জীবন
- প্রকাশের সময় : ১২:৪৬:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৩
- / ৩৭ বার পঠিত
বাংলাদেশ ডেস্ক : সাবেক বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় দায়ের করা অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের দুটি মামলার রায়ে সাবেক সংসদ-সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব (৫৫), বিএনপি নেতা আব্দুল কাদের বাচ্চু (৫০), রিপন (৩৭) ও রনজুকে (৪২) যাবজ্জীবন এবং ৪৪ জনকে সাত বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মন্ডলের আদালতে মঙ্গলবার সকালে এ রায় ঘোষণা করা হয়। এ সময় জেলা কারাগারে থাকা হাবিবসহ ৩৮ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। সাত বছর সাজাপ্রাপ্তরা হলেন কলারোয়া উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আশরাফ হোসেন, উপজেলা মৎস্য দলের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ তামিম আজাদ মেরিন,
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল রকিব মোল্যা, কলারোয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা গাজী আক্তারুল ইসলাম, বিএনপি নেতা মফিজুল ইসলাম, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল মজিদ, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ, হাসান আলী, উপজেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন আলী, বিএনপি নেতা ময়না, শিক্ষক আব্দুস সাত্তার, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি খালেদ মঞ্জুর রোমেল, বিএনপি নেতা কলেজ শিক্ষক তোফাজ্জেল হোসেন সেন্টু, যুবনেতা মাজাহারুল ইসলাম, বিএনপি নেতা আব্দুল মালেক, আব্দুর রব, উপজেলা কেরালকাতা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, যুগীখালী ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রসুল, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার, যুবদল নেতা রিংকু, আব্দুস সামাদ, বিএনপি নেতা আলাউদ্দীন, যুবদল নেতা আলতাফ হোসেন, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি তৌফিকুর রহমান সনজু, সহসভাপতি নাজমুল হোসেন, বিএনপি নেতা সাহাবুদ্দিন,
সাহেব আলী, সিরাজুল ইসলাম, যুবনেতা টাইগার খোকন, ট্রলি সহিদুল, বিএনপি নেতা কনক, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ কামরুল হোসেন, যুবদল নেতা মনিরুল ইসলাম, ইয়াছিন আলী, পৌর বিএনপির সহসভাপতি আখলাকুর রহমান শেলী, বিএনপি নেতা শাহিনুর রহমান, বিদার মোড়ল, যুবদল নেতা সোহাগ হোসেন, বিএনপি সমর্থক মাহাফুজার রহমান মোল্যা, জামায়াতকর্মী গফ্ফার গাজী, উপজেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মাহাফুজুর রহমান সাবু। মামলা চলাকালে মাহাফুজুর রহমান সাবু ও লাকি কারাগারে মারা যান।এদিন আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার আমিনুল ইসলাম। তার সঙ্গে আরও যুক্ত ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ (২), মিজানুর রহমান পিন্টু, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী শাহানারা পারভীন বকুল প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন, জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল লতিফ, অতিরিক্ত পিপি ফাহিমুল হক কিসলু, অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ প্রমুখ।
পিপি আব্দুল লতিফ জানান, এ মামলায় ২৫ সাক্ষীর সাক্ষ্য, ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা ও কাগজপত্র পর্যালোচনা করে আদালত এ রায় দিয়েছেন। দুই আসামি বিচারকার্য চলাকালে মারা গেছেন। ১৩ আসামি পলাতক রয়েছেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আমিনুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট শাহানারা আক্তার বকুল জানান, সম্পূর্ণ সাজানো ও মিথ্যা মামলায় এ রায় দেওয়া হয়েছে। ঘটনার দিন মামলার প্রধান আসামি সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। অথচ আদালত তাকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব। রায় ঘোষণার সময় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তারা আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে আসামিদের পক্ষে, বিপক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। আদালতে আরও উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ-সদস্য (এমপি) জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এসএম জগলুল হায়দার এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম।
আদালত চত্বরে থেকে ছাত্রদল নেতা আটক : মামলার রায় ঘোষণার পর আদালত চত্বর বিক্ষোভ মিছিল ও বিশৃঙ্খলা করায় জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল ইসলাম চন্দনসহ দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান জানান, আটক চন্দনের নামে সদর ও কলারোয়া থানায় পৃথক দুটি মামলা রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট বিএনপির নেতাকর্মীরা কলারোয়ার দলীয় অফিসের সামনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা চালান। হামলায় আওয়ামী লীগের এক ডজন নেতাকর্মী আহত হন। সূত্র : যুগান্তর
বেলী / হককথা