নিউইয়র্ক ১০:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

সরকারের লাফালাফি কমে এসেছে : ফখরুল

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:৩২:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩
  • / ৫২ বার পঠিত

বাংলাদেশ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ কয়দিন আগেও কত লাফালাফি করেছে, এখন লাফালাফি কমে এসেছে। তিনি বলেন, এখন তারা বলছে, আওয়ামী লীগ সংঘাত চায় না, আলাপ-আলোচনা চায়, অথচ কয়েকদিন আগেও আমাদের বিএনপি নেতাকর্মীদের মারধর, হামলা করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, এখন আমরা লড়াই করছি, লড়াই চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেছে। অগ্নি-সন্ত্রাস করবে তারা, দোষ দেবে আমাদের। তাই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে হবে। বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স না কি বাড়তে শুরু করেছে, বেশি আসছে ! কি এমন জাদু তৈরি হলো? বাংলাদেশ থেকে যারা আমেরিকায় যান, তাদের বেশির ভাগই ঘরবাড়ি বিক্রি করে যান। কেউ রেমিট্যান্স পাঠান না, রেমিট্যান্স আসে মূলত মধ্যপ্রাচ্য থেকে। তিনি আরও বলেন, এ টাকা পাচারের টাকা, তাদের সবদিক থেকেই চুরি, এখন এসব টাকা ২ দশমিক ৫ শতাংশ ইনসেন্টিভ পাবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকের পরিপ্রেক্ষিতে জিয়াউর রহমান অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক, ১৯৭৫ সালে তথাকথিত সমাজতান্ত্রিক দুর্নীতির অর্থনীতি ব্যবস্থা থেকে দেশকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে গেছেন। তলাবিহীন ঝুড়িকে জিয়াউর রহমান এক বছরে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে গেছেন। ফখরুল বলেন, আপনাকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচন সুস্থ হবে না, ২০১৪ ও ২০১৮ সাল তার নজির।

সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সরকারের পরিবর্তন চাই। দেশের সব মানুষকে, সব দলকে ঐক্যবদ্ধ করে এ সরকারের পতন ঘটানো হবে। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশকে এ সংকট থেকে উদ্ধার করতে হলে স্বৈরাচারের পতন করতে হবে। পতনের বিকল্প নেই। এরশাদের পতন হয়েছে ছাত্র জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে, আইয়ুব খানেরও পতন হয়েছে ছাত্র জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে- এ সরকারেরও সেভাবে পতন হবে। নজরুল ইসলাম খান বলেন, ক্ষমতাসীনদের লুটপাট ও দুর্নীতিতে দেশের অর্থনীতি আজ ধ্বংস হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের একজন জেলা নেতা পাচার করেছে ২ হাজার কোটি টাকা।

গণতন্ত্রহীনতা, গুম, মানবাধিকার লঙ্ঘন বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থা বলে বিশ্বের মানুষ জানে উল্লেখ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, মার্কিন ভিসানীতির মাধ্যমে ক্ষমতাসীনদের কঠিন বার্তা দেয়া হয়েছে। এ বার্তা মূলত তিন ভাগে দেয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে র‌্যাব’র ওপর স্যাংশন দিয়ে, দ্বিতীয় ধাপে বাংলাদেশকে আমেরিকার গণতান্ত্রিক সম্মেলনে দাওয়াত না দিয়ে এবং তৃতীয় ধাপে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা দিয়ে। বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ওমর, এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ বক্তব্য দেন।

আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স নয় বরং চুরির টাকা দেশে আসছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (২৯শে মে) বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল (রোববার) সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) একটি সেমিনার করেছে। সেখানে তারা বলেছে- এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতি যতটা খারাপ, তা আগে কখনও হয়নি। আর সরকার উন্নয়নের গলাবাজি করে, সবাই নাকি ভালো আছে। সবই নাকি ভালো। এখন হঠাৎ করে বলছে আমেরিকা থেকে নাকি রেমিট্যান্স বাড়তে শুরু করেছে। এটা তো আমাদের কাছে বিস্ময়ের ব্যাপার।

তিনি বলেন, যারা আমেরিকা যায়, তারা ঘর-বাড়ি সবকিছু বিক্রি করে যায়… তাই নয়? সাধারণ মানুষ মধ্যপ্রাচ্যের কুয়েত ও সৌদি আরব এসব দেশে যায়। সেখান থেকে তারা রেমিট্যান্স নিয়ে আসে। এখন কী এক জাদু তৈরি হলো যে আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স আসছে! বলেন তো কী? তখন দর্শক সারি থেকে নেতাকর্মীরা বলেন, ‘চোর, চোর’। তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চোর, চোর’। আরও বলেন, চোরেরা যে চুরি করে পাচার করেছে এখন সেগুলো ফেরত আনছে। কারণ কি জানেন? আড়াই শতাংশ প্রণোদনা পাবে। সবদিক দিয়ে চুরি। চুরি, চুরি, চুরি। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে সরকার খুব লাফালাফি করেছিল। এখন কিন্তু থেমে গেছে। এখন বলে, আমরা সংঘাত চাই না। আলোচনায় বসতে চাই।

বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার পরিবর্তন চায় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। জনগণ যেন ভোট দিতে পারে সেই ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে চাই। আমরা বিগত কয়েক বছর ধরে আন্দোলন করে এসেছি। এ আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে এসেছে। আমাদের ১০ দফার আন্দোলনের প্রথম দফা হলো সরকারের পদত্যাগ। আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবর্তন চাই, আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। তিনি সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, মনে রাখতে হবে, তারা (সরকার) আমাদের ফাঁদে ফেলতে চাইবে। গাড়ি পুড়বে, তারা অগ্নিসংযোগ করবে, আর দায় দেবে আমাদের।

জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, তার মৃত্যুর সংবাদে সারা দেশ ছিল বাকরুদ্ধ। যে জিয়া মানুষের হৃদয়ে অবস্থান করছেন, তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে কোনো লাভ নেই। তিনি দেশের কঠিন সময়ে এই জাতির সামনে ত্রাণকর্তা হিসেবে হাজির হয়েছেন। যতই মিথ্যাচার করেন না কেন, তাকে কারও মন থেকে মুছে ফেলা যাবে না। যেখানে ভবিষ্যৎ নেই সেখানে তিনি আশার আলো তৈরি করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, যে গণতন্ত্রের জন্য আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম, সেই গণতন্ত্র আজ ১৫ ধরে ভূলুণ্ঠিত। সেই গণতন্ত্র উদ্ধার করতে হলে জিয়াউর রহমানকে জানতে হবে। জানতে হবে কীভাবে তিনি একটি অন্ধকার জাতিকে আলোর পথ দেখিয়েছিলেন। জানতে হবে কীভাবে প্রতিটি জাতীয় সংকটে ত্রাণকর্তার ভূমিকা রেখেছেন। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, জিয়াউর রহমান রাজনীতিবিদ হিসেবে সফল, রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবেও সফল। সৈনিক হিসেবেও সফল। তিনি সেক্টর কমান্ডার হিসেবে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশে মৌলিক পরিবর্তন এনেছিলেন। ৭২ থেকে ৭৫ সালে অর্থনীতি লুটপাট হয়েছিল। অর্থনীতিকে ভঙ্গুর করে ফেলেছিল। সেখান থেকে দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলেন জিয়াউর রহমান।

তিনি বলেন, আজকে যারা ক্ষমতায় তারা শহীদ জিয়াকে ভয় পায়। তাই তার সম্পর্কে অবান্তর কথা ছড়ানো হচ্ছে। আজকে তারা (সরকার) বলে, জিয়াউর রহমান নাকি মুক্তিযোদ্ধাই ছিলেন না। মিথ্যাচার করে নতুন প্রজন্মের কাছে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। দেশকে চলমান সংকট থেকে মুক্ত করতে শহীদ জিয়ার আদর্শিত সৈনিকদেরকেই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু রাজনৈতিক নেতাই ছিলেন না, তিনি সৈনিকদেরও নেতা ছিলেন। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক ছিলেন। কিন্তু আজকের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আজকে বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্ব কী চিন্তা করছে তা সবাই জানে। আমেরিকায় গণতন্ত্র সম্মেলনে পৃথিবীর ১০৭ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে আমন্ত্রণ জানালেও বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আমেরিকার ভিসা নীতি তো আগেই ছিল, তবে কেন বাংলাদেশের জন্য আলাদা ভিসা নীতি করতে হলো? কারণ…দেশের গণতন্ত্র যে আজ ভূলুণ্ঠিত আজ সে সম্পর্কে বিশ্ব অবগত। বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ডা. জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান ও আব্দুস সালামসহ আরও অনেকে। সূত্র : মানবজমিন
সুমি/হককথা

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

সরকারের লাফালাফি কমে এসেছে : ফখরুল

প্রকাশের সময় : ১২:৩২:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩

বাংলাদেশ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ কয়দিন আগেও কত লাফালাফি করেছে, এখন লাফালাফি কমে এসেছে। তিনি বলেন, এখন তারা বলছে, আওয়ামী লীগ সংঘাত চায় না, আলাপ-আলোচনা চায়, অথচ কয়েকদিন আগেও আমাদের বিএনপি নেতাকর্মীদের মারধর, হামলা করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, এখন আমরা লড়াই করছি, লড়াই চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেছে। অগ্নি-সন্ত্রাস করবে তারা, দোষ দেবে আমাদের। তাই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে হবে। বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স না কি বাড়তে শুরু করেছে, বেশি আসছে ! কি এমন জাদু তৈরি হলো? বাংলাদেশ থেকে যারা আমেরিকায় যান, তাদের বেশির ভাগই ঘরবাড়ি বিক্রি করে যান। কেউ রেমিট্যান্স পাঠান না, রেমিট্যান্স আসে মূলত মধ্যপ্রাচ্য থেকে। তিনি আরও বলেন, এ টাকা পাচারের টাকা, তাদের সবদিক থেকেই চুরি, এখন এসব টাকা ২ দশমিক ৫ শতাংশ ইনসেন্টিভ পাবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকের পরিপ্রেক্ষিতে জিয়াউর রহমান অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক, ১৯৭৫ সালে তথাকথিত সমাজতান্ত্রিক দুর্নীতির অর্থনীতি ব্যবস্থা থেকে দেশকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে গেছেন। তলাবিহীন ঝুড়িকে জিয়াউর রহমান এক বছরে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে গেছেন। ফখরুল বলেন, আপনাকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচন সুস্থ হবে না, ২০১৪ ও ২০১৮ সাল তার নজির।

সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সরকারের পরিবর্তন চাই। দেশের সব মানুষকে, সব দলকে ঐক্যবদ্ধ করে এ সরকারের পতন ঘটানো হবে। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশকে এ সংকট থেকে উদ্ধার করতে হলে স্বৈরাচারের পতন করতে হবে। পতনের বিকল্প নেই। এরশাদের পতন হয়েছে ছাত্র জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে, আইয়ুব খানেরও পতন হয়েছে ছাত্র জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে- এ সরকারেরও সেভাবে পতন হবে। নজরুল ইসলাম খান বলেন, ক্ষমতাসীনদের লুটপাট ও দুর্নীতিতে দেশের অর্থনীতি আজ ধ্বংস হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের একজন জেলা নেতা পাচার করেছে ২ হাজার কোটি টাকা।

গণতন্ত্রহীনতা, গুম, মানবাধিকার লঙ্ঘন বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থা বলে বিশ্বের মানুষ জানে উল্লেখ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, মার্কিন ভিসানীতির মাধ্যমে ক্ষমতাসীনদের কঠিন বার্তা দেয়া হয়েছে। এ বার্তা মূলত তিন ভাগে দেয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে র‌্যাব’র ওপর স্যাংশন দিয়ে, দ্বিতীয় ধাপে বাংলাদেশকে আমেরিকার গণতান্ত্রিক সম্মেলনে দাওয়াত না দিয়ে এবং তৃতীয় ধাপে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা দিয়ে। বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ওমর, এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ বক্তব্য দেন।

আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স নয় বরং চুরির টাকা দেশে আসছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (২৯শে মে) বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল (রোববার) সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) একটি সেমিনার করেছে। সেখানে তারা বলেছে- এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতি যতটা খারাপ, তা আগে কখনও হয়নি। আর সরকার উন্নয়নের গলাবাজি করে, সবাই নাকি ভালো আছে। সবই নাকি ভালো। এখন হঠাৎ করে বলছে আমেরিকা থেকে নাকি রেমিট্যান্স বাড়তে শুরু করেছে। এটা তো আমাদের কাছে বিস্ময়ের ব্যাপার।

তিনি বলেন, যারা আমেরিকা যায়, তারা ঘর-বাড়ি সবকিছু বিক্রি করে যায়… তাই নয়? সাধারণ মানুষ মধ্যপ্রাচ্যের কুয়েত ও সৌদি আরব এসব দেশে যায়। সেখান থেকে তারা রেমিট্যান্স নিয়ে আসে। এখন কী এক জাদু তৈরি হলো যে আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স আসছে! বলেন তো কী? তখন দর্শক সারি থেকে নেতাকর্মীরা বলেন, ‘চোর, চোর’। তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চোর, চোর’। আরও বলেন, চোরেরা যে চুরি করে পাচার করেছে এখন সেগুলো ফেরত আনছে। কারণ কি জানেন? আড়াই শতাংশ প্রণোদনা পাবে। সবদিক দিয়ে চুরি। চুরি, চুরি, চুরি। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে সরকার খুব লাফালাফি করেছিল। এখন কিন্তু থেমে গেছে। এখন বলে, আমরা সংঘাত চাই না। আলোচনায় বসতে চাই।

বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার পরিবর্তন চায় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। জনগণ যেন ভোট দিতে পারে সেই ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে চাই। আমরা বিগত কয়েক বছর ধরে আন্দোলন করে এসেছি। এ আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে এসেছে। আমাদের ১০ দফার আন্দোলনের প্রথম দফা হলো সরকারের পদত্যাগ। আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবর্তন চাই, আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। তিনি সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, মনে রাখতে হবে, তারা (সরকার) আমাদের ফাঁদে ফেলতে চাইবে। গাড়ি পুড়বে, তারা অগ্নিসংযোগ করবে, আর দায় দেবে আমাদের।

জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, তার মৃত্যুর সংবাদে সারা দেশ ছিল বাকরুদ্ধ। যে জিয়া মানুষের হৃদয়ে অবস্থান করছেন, তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে কোনো লাভ নেই। তিনি দেশের কঠিন সময়ে এই জাতির সামনে ত্রাণকর্তা হিসেবে হাজির হয়েছেন। যতই মিথ্যাচার করেন না কেন, তাকে কারও মন থেকে মুছে ফেলা যাবে না। যেখানে ভবিষ্যৎ নেই সেখানে তিনি আশার আলো তৈরি করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, যে গণতন্ত্রের জন্য আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম, সেই গণতন্ত্র আজ ১৫ ধরে ভূলুণ্ঠিত। সেই গণতন্ত্র উদ্ধার করতে হলে জিয়াউর রহমানকে জানতে হবে। জানতে হবে কীভাবে তিনি একটি অন্ধকার জাতিকে আলোর পথ দেখিয়েছিলেন। জানতে হবে কীভাবে প্রতিটি জাতীয় সংকটে ত্রাণকর্তার ভূমিকা রেখেছেন। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, জিয়াউর রহমান রাজনীতিবিদ হিসেবে সফল, রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবেও সফল। সৈনিক হিসেবেও সফল। তিনি সেক্টর কমান্ডার হিসেবে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশে মৌলিক পরিবর্তন এনেছিলেন। ৭২ থেকে ৭৫ সালে অর্থনীতি লুটপাট হয়েছিল। অর্থনীতিকে ভঙ্গুর করে ফেলেছিল। সেখান থেকে দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলেন জিয়াউর রহমান।

তিনি বলেন, আজকে যারা ক্ষমতায় তারা শহীদ জিয়াকে ভয় পায়। তাই তার সম্পর্কে অবান্তর কথা ছড়ানো হচ্ছে। আজকে তারা (সরকার) বলে, জিয়াউর রহমান নাকি মুক্তিযোদ্ধাই ছিলেন না। মিথ্যাচার করে নতুন প্রজন্মের কাছে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। দেশকে চলমান সংকট থেকে মুক্ত করতে শহীদ জিয়ার আদর্শিত সৈনিকদেরকেই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু রাজনৈতিক নেতাই ছিলেন না, তিনি সৈনিকদেরও নেতা ছিলেন। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক ছিলেন। কিন্তু আজকের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আজকে বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্ব কী চিন্তা করছে তা সবাই জানে। আমেরিকায় গণতন্ত্র সম্মেলনে পৃথিবীর ১০৭ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে আমন্ত্রণ জানালেও বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আমেরিকার ভিসা নীতি তো আগেই ছিল, তবে কেন বাংলাদেশের জন্য আলাদা ভিসা নীতি করতে হলো? কারণ…দেশের গণতন্ত্র যে আজ ভূলুণ্ঠিত আজ সে সম্পর্কে বিশ্ব অবগত। বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ডা. জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান ও আব্দুস সালামসহ আরও অনেকে। সূত্র : মানবজমিন
সুমি/হককথা