ঢাকা ডেস্ক : জাতীয় সংসদে রাজাকার সন্তানের প্রতিনিধিত্ব করা রাষ্ট্রের জন্য অমর্যাদাকর বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, রাজাকারের সন্তানদের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া দুঃখজনক এবং বিব্রতকর।খবর বার্তা ২৪
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে বরগুনার সার্কিট হাউস মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। বিষয়টি দলকে অবগত করা হবে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে রাজাকারের সন্তানরা যখন নির্বাচিত হয় তখন তাদের প্রতিহত করার সুযোগ থাকে না সরকারের। তাই সাধারণ মানুষকে রাজাকারের সন্তানদের ভোটপ্রদান থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতেও রাজাকারের তালিকা প্রকাশ না হওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ সরকার মাত্র ২১ বছর ক্ষমতায় ছিল। আওয়ামী লীগের থেকে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন না করা দলগুলো। এর ফলে দেশের সকল সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান করা ব্যক্তিরা খুঁটি গেড়ে বসে ছিল। তারা রাজাকারের তালিকা তৈরিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে রাজাকারের তালিকা তৈরির জন্য সংসদে একটি আইন প্রস্তাব করা আছে। এটি অনুমোদিত হলে রাজাকারের তালিকা তৈরি করা হবে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে তিনদিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে বরগুনা জেলা প্রশাসন। অনুষ্ঠানের শেষ দিন বরগুনার সার্কিট হাউস মাঠে ১২ শ’ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারকে সংবর্ধনা প্রদান করে জেলা প্রশাসন।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরা, বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আলহাজ্ব মো. জাহাঙ্গীর কবীর প্রমুখ।
মন্ত্রী জিয়াউর রহমান ও বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে জিয়াউর রহমান ইতিহাস থেকে মুছে দিতে শিশুপার্ক করেছিলেন, যেখানে মিত্রবাহিনীর কাছে পাক সেনারা আত্মসমর্পণ করেছিল, যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। শিশুপার্ক করার সময় জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, ইসলামের পরাজয় হয়েছে যেখানে সেটা ইতিহাস থেকে মুছে দিতে হবে। অর্থাৎ, পাকিস্তানের পরাজয় মানে ইসলামের পরাজয়। এমন চিন্তা চেতনা লালন করে বিএনপি রাজনীতি করে। কিন্তু তাদের এসব চিন্তা বুমেরাং হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে তিনি বলেন, একাত্তরে লাখ লাখ নিরস্ত্র বাঙালিকে যখন পাকিস্তানি হানাদার ও দোসররা নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছিল তখন তাদের মানবতা কোথায় ছিল। তখন যারা হত্যাকারীদের পক্ষ নিয়েছিল এখন তাদের মুখে মানবতা মানায় না। মন্ত্রী জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের জেলা হাসপাতালসহ উন্নত চিকিৎসায় ফ্রি করতে শিগগিরই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে চুক্তি করবে সরকার। এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকারের গৃহিত নানা পদক্ষেপ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রজন্ম গড়ে তুলতে সরকার নানা পরিকল্পনার কথা জানান।