হককথা রিপোর্ট: শনিবার ১৭ নভেম্বর আফ্রো-এশিয়া ল্যাতিন অমেরিকার অবিংবাদিত মজলুম জননেতা, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৬ সালের এই দিনে তিনি ঢাকার পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মরদেহ টাঙ্গাইলের সন্তোষে সমাহিত করা হয়।
ঢাকা থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সন্তোষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় টেকনিক্যাল কলেজ, মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশন, টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
মজলুম জননেতা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মাজারে শ্রদ্ধার্ঘ জানাতে শনিবার ভোর থেকেই সন্তোষে মওলানার মাজারে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামবে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাপাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে মরহুম এই নেতার মাজারে। ক’দিন আগে থেকেই মওলানা ভাসানীর ভক্ত অনুসারী ও মুরিদানবৃন্দ সন্তোষে আসতে শুরু করেছেন।
১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে মওলানা ভাসানীর জন্ম। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তার জীবনের সিংহভাগই কাটিয়েছেন টাঙ্গাইলের সন্তোষে। সন্তোষের মাটিতেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তার কৈশোর-যৌবন থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি তৎকালীন বাংলা-আসাম প্রদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি ছিলেন। লাইন-প্রথা উচ্ছেদ, জমিদারদের নির্যাতন বিরোধী আন্দোলনে সারাজীবনই তিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। তার উদ্যোগে ১৯৫৭ সালে কাগমারীতে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন বাংলাদেশের রাজনীতিতে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি সর্বদলীয় ওয়ার কাউন্সিলের উপদেষ্টা ছিলেন। স্বাধীনতার পর তার সর্বশেষ কীর্তি ছিলেন ফারাক্কা লং মার্চ।
‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। বঙ্গবন্ধুও তাকে শ্রদ্ধা করতেন পিতার মতো। তাদের মধ্যকার সম্পর্ক ছিলো ‘‘পিতা-পুত্রে’র।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল সাড়ে ৭টায় মওলানা ভাসানীর মাজারে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন-এর নেতৃত্বে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ পুস্পস্তবক অর্পণ করবেন। এর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও ক্যাম্পাসের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের পক্ষ থেকেও পুস্পস্তবক অর্পণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। পরে সকাল ৮টার দিকে শিরণী বিরতরণ করা হবে এবং বাদ যোহর বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।