লাইসেন্স ছাড়া ব্যাংকিং চ্যানেলে মাদক আমদানি

- প্রকাশের সময় : ০৭:২৩:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২২
- / ৫৩ বার পঠিত
বাংলাদেশ ডেস্ক : কিছু অসাধু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের লাইসেন্স ছাড়াই বিভিন্ন ব্যাংক থেকে এলসির (লেটার অব ক্রেডিট) মাধ্যমে বিদেশ থেকে মাদকদ্রব্য আমদানি করে বাজারজাত করছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা ওই প্রতিবেদন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদনে এই ধরণের এলসি যাতে কোনও ব্যাংক না খোলে সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
বুধবার (১২ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে। বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনে নিয়োজিত ডিলার ব্যাংকগুলোকে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের লাইসেন্স, পারমিট, অনাপত্তি বা পূর্বানুমতি ছাড়া মাদকদ্রব্য আমদানির জন্য এলসি ইস্যু না করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গত ২১ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ, মাদক-১ শাখা হতে ইস্যু করা চিঠি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত-২০২০) এর ১ম তফশিলে ‘ক’ ‘খ’ ও ‘গ’ শ্রেণির মাদকদ্রব্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আইনের ৯, ১০ ও ১১ ধারা অনুযায়ী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের লাইসেন্স ছাড়া তফসিলে বর্ণিত মাদকদ্রব্য আমদানি, সংরক্ষণ, ব্যবহার, গুদামজাতকরণ, সরবরাহ, বিপণন, ক্রয়, বিক্রয়, উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ, বহন, পরিবহন ও স্থানান্তরের কোনও সুযোগ নেই।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কিছু অসাধু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের লাইসেন্স ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংক থেকে এলসির মাধ্যমে আইনের তফসিলভুক্ত মাদকদ্রব্য বিদেশ থেকে আমদানি করে বাজারজাত করছে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অপরদিকে আমদানিকৃত মাদকদ্রব্য অপব্যবহার করা হচ্ছে।
এ অবস্থায়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) এর ৯, ১০ ও ১১ ধারা অনুযায়ী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের লাইসেন্স বা পারমিট বা অনাপত্তি বা অনুমতি ছাড়া আইনে অন্তর্ভুক্ত ‘ক’ ‘খ’ ও ‘গ’ শ্রেণির মাদকদ্রব্য স্থল, আকাশ বা সমুদ্রপথে আমদানির জন্য কোনও ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে তফসিলি ব্যাংক থেকে এলসি ইস্যু না করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকের মাধ্যমে দেশের সব ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়। চিঠিতে সই করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপসচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব ) মুহাম্মদ আবদুর রউফ মিয়া।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই চিঠির প্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গত ২৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারকে একটি চিঠি পাঠায়। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব জিহাদ উদ্দিন সই করা চিঠিতে বিধি মোতাবেক পরবর্তী প্রয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গভর্নরকে অনুরোধ করা হয়। চিঠি পাওয়ার পর বুধবার দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়। অর্থাৎ লাইসেন্স ছাড়া মাদকদ্রব্যের আমদানি এলসি না খোলার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
হককথা/এমউএ