নিউইয়র্ক ১০:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

রূপপুর যেন এক টুকরো রাশিয়া

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:০৫:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ মে ২০২৩
  • / ২০ বার পঠিত

বাংলাদেশ ডেস্ক : পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত রাশিয়ানদের পদচারণায় বদলে গেছে ঈশ্বরদী উপজেলার প্রত্যন্ত রূপপুর গ্রাম। ‘বন্ধু’ হয়েছে কমন ভাষা। বাঙালি ও রাশিয়ানরা এখন একে অপরকে ‘বন্ধু’ বলেই সম্বোধন করছে। রূপপুরকে অনেকেই এখন বলছে রুশপুর।

মাত্র সাত বছর আগেও সন্ধ্যা হলেই যেখানে কালো গভীর রাতের নিকশতা-নীরবতা নেমে আসত, সেই এলাকা এখন দিনে-রাতে সমানতালে কর্মচঞ্চলতায় মুখরিত। প্রায় সাড়ে ৫ হাজার রাশিয়ান-বেলারুশিয়ানসহ বিদেশি নাগরিকের পদচারণায় বদলে গেছে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র। পদ্মা নদীর তীরের ঝোপ-জঙ্গলে পূর্ণ জনশূন্য জমিতে বিদেশের আদলে গড়ে উঠেছে দৃষ্টিনন্দন আবাসিক ভবন, ঝলমলে শপিংমল, রেস্টুরেন্ট, রিসোর্টসহ অসংখ্য দোকানপাট।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যে বয়ে এনেছে অভূতপূর্ব উন্নয়ন। রূপপুরের মানুষ কখনো ভাবেনি যে, বিদেশি কোনো ভাষা শিখে বিদেশিদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হবে। স্থানীয়রা যোগাযোগ, ভ্রমণ, বাণিজ্য বা সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য রাশিয়ান ভাষা শিখেছে। রাশিয়ান সংস্কৃতির একটি নতুন ক্ষেত্র আবির্ভূত হয়েছে পুরো এলাকায়। রাশিয়ানদের আকৃষ্ট করতে বাজারের দোকানের সাইনবোর্ড ইংরেজির পাশাপাশি রাশিয়ান ভাষায় লেখা রয়েছে। স্থানীয় রিকশাচালকেরাও চলনসই কিছু কিছু রুশ ভাষা শিখেছেন। যেন বাংলার বুকে জন্ম নিয়েছে একখণ্ড রাশিয়া।

শুধু রূপপুর নয়, পার্শ্ববর্তী পাকশী, সাহাপুর ও ঈশ্বরদীতেও এসেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া। বদলে গেছে এই অঞ্চলের জীবনযাত্রা। বিদেশি সংস্কৃতির ছোঁয়া লেগেছে স্থানীয়দের জীবনে। ফল ও সবজি বিক্রেতা থেকে শুরু করে বেশির ভাগ ব্যবসায়ী ও কর্মচারী শিখেছেন রাশিয়ান ভাষা। পাশাপাশি মোবাইল ফোনের ভাষা কনভার্টার অ্যাপসের মাধ্যমেও চলছে কথাবার্তা ও ভাববিনিময়। নতুনহাট এলাকায় ধুলোবালু, জরাজীর্ণ ঘরবাড়ি ও ছোট ছোট দোকানপাট এখন আর নেই। বাণিজ্যিক ভবন, স্কুল, সুউচ্চ ভবন, আন্তর্জাতিক মানের হোটেল-রেস্তোরাঁ, আধুনিক শপিংমল, সুপারশপ, তারকা হোটেল, সুইমিং পুল, রিসোর্ট বিভিন্ন নান্দনিক কর্মকাণ্ডে ভরপুর। উন্নতমানের হাসপাতালও নির্মাণ করা হয়েছে। ভাগ্য বদলের পাশাপাশি বদলে গেছে তাদের সামাজিক চিত্র। হোটেল, রিসোর্ট, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

গ্রিন সিটি-সংলগ্ন প্রকল্পের সাইট অফিসের ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুস জানান, প্রকল্পে প্রায় ২৫ হাজার দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী ও শ্রমিক কাজ করছেন। এর মধ্যে রাশিয়া, বেলারুশ, ইউক্রেন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মী রয়েছেন।

সুমি/হককথা

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

রূপপুর যেন এক টুকরো রাশিয়া

প্রকাশের সময় : ১১:০৫:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ মে ২০২৩

বাংলাদেশ ডেস্ক : পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত রাশিয়ানদের পদচারণায় বদলে গেছে ঈশ্বরদী উপজেলার প্রত্যন্ত রূপপুর গ্রাম। ‘বন্ধু’ হয়েছে কমন ভাষা। বাঙালি ও রাশিয়ানরা এখন একে অপরকে ‘বন্ধু’ বলেই সম্বোধন করছে। রূপপুরকে অনেকেই এখন বলছে রুশপুর।

মাত্র সাত বছর আগেও সন্ধ্যা হলেই যেখানে কালো গভীর রাতের নিকশতা-নীরবতা নেমে আসত, সেই এলাকা এখন দিনে-রাতে সমানতালে কর্মচঞ্চলতায় মুখরিত। প্রায় সাড়ে ৫ হাজার রাশিয়ান-বেলারুশিয়ানসহ বিদেশি নাগরিকের পদচারণায় বদলে গেছে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র। পদ্মা নদীর তীরের ঝোপ-জঙ্গলে পূর্ণ জনশূন্য জমিতে বিদেশের আদলে গড়ে উঠেছে দৃষ্টিনন্দন আবাসিক ভবন, ঝলমলে শপিংমল, রেস্টুরেন্ট, রিসোর্টসহ অসংখ্য দোকানপাট।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যে বয়ে এনেছে অভূতপূর্ব উন্নয়ন। রূপপুরের মানুষ কখনো ভাবেনি যে, বিদেশি কোনো ভাষা শিখে বিদেশিদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হবে। স্থানীয়রা যোগাযোগ, ভ্রমণ, বাণিজ্য বা সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য রাশিয়ান ভাষা শিখেছে। রাশিয়ান সংস্কৃতির একটি নতুন ক্ষেত্র আবির্ভূত হয়েছে পুরো এলাকায়। রাশিয়ানদের আকৃষ্ট করতে বাজারের দোকানের সাইনবোর্ড ইংরেজির পাশাপাশি রাশিয়ান ভাষায় লেখা রয়েছে। স্থানীয় রিকশাচালকেরাও চলনসই কিছু কিছু রুশ ভাষা শিখেছেন। যেন বাংলার বুকে জন্ম নিয়েছে একখণ্ড রাশিয়া।

শুধু রূপপুর নয়, পার্শ্ববর্তী পাকশী, সাহাপুর ও ঈশ্বরদীতেও এসেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া। বদলে গেছে এই অঞ্চলের জীবনযাত্রা। বিদেশি সংস্কৃতির ছোঁয়া লেগেছে স্থানীয়দের জীবনে। ফল ও সবজি বিক্রেতা থেকে শুরু করে বেশির ভাগ ব্যবসায়ী ও কর্মচারী শিখেছেন রাশিয়ান ভাষা। পাশাপাশি মোবাইল ফোনের ভাষা কনভার্টার অ্যাপসের মাধ্যমেও চলছে কথাবার্তা ও ভাববিনিময়। নতুনহাট এলাকায় ধুলোবালু, জরাজীর্ণ ঘরবাড়ি ও ছোট ছোট দোকানপাট এখন আর নেই। বাণিজ্যিক ভবন, স্কুল, সুউচ্চ ভবন, আন্তর্জাতিক মানের হোটেল-রেস্তোরাঁ, আধুনিক শপিংমল, সুপারশপ, তারকা হোটেল, সুইমিং পুল, রিসোর্ট বিভিন্ন নান্দনিক কর্মকাণ্ডে ভরপুর। উন্নতমানের হাসপাতালও নির্মাণ করা হয়েছে। ভাগ্য বদলের পাশাপাশি বদলে গেছে তাদের সামাজিক চিত্র। হোটেল, রিসোর্ট, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

গ্রিন সিটি-সংলগ্ন প্রকল্পের সাইট অফিসের ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুস জানান, প্রকল্পে প্রায় ২৫ হাজার দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী ও শ্রমিক কাজ করছেন। এর মধ্যে রাশিয়া, বেলারুশ, ইউক্রেন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মী রয়েছেন।

সুমি/হককথা