নিউইয়র্ক ০৭:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

রাষ্ট্রপতি হলে কী কী সুবিধা পাওয়া যায়

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:০২:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৩৯ বার পঠিত

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন মো. সাহাবুদ্দিন। আগামী ২৩ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বঙ্গভবনের বাসিন্দা হবেন সাবেক দুদক কমিশনার সাহাবুদ্দিন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি কী কী সুবিধা পাবেন তা বাংলাদেশের সংবিধান এবং দ্য প্রেসিডেন্টস (রেমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) সংশোধন অ্যাক্টে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির বেতন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। সর্বশেষ ২০১৬ সালের সংশোধিত আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে মাসের বেতন হিসাবে এ পরিমাণ অর্থ দেয়ার বিধান করা হয়েছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের খাবার, আবাসন, চিকিৎসা, পানি, বিদ্যুৎ, গাসসহ সেবা খাতের সব ধরনের ব্যয় রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ব্যয় করা হয়।

এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবার এবং কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অতিথিরা পানীয় ও তামাকজাত পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বিনা শুল্কে কিনতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি অবসরে গেলেও আইন অনুযায়ী ব্যক্তিগত স্টাফসহ অবসর সুবিধা পাবেন। রাষ্ট্রপতির বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি আইন প্রণয়ন করা হয় ১৯৭৫ সালে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালে ১৯৭৫ সালের ১২ জুলাই জাতীয় সংসদে বাংলাদেশের দ্য প্রেসিডেন্টস (রেমুনারেশেন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) ১৯৭৫ পাস হয়। এরপর ১০ বার আইনটি সংশোধন করা হয়।

আইনটির প্রণয়নের সময়ে (১৯৭৫ সালে) রাষ্ট্রপতির বেতন নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ হাজার ৫০০ টাকা। এরপর ১৯৮৭ সালে আড়াই হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা, ১৯৯২ সালে ১৫ হাজার টাকা, ১৯৯৮ সালে ২৩ হাজার টাকা, ২০০৫ সালে ৩৩ হাজার ৪০০ টাকা, ২০০৯ সালে ৬১ হাজার ২০০ টাকা এবং সর্বশেষ ২০১৬ সালে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। সর্বশেষ সংশোধিত দ্য প্রেসিডেন্টস (রেমুনারেশেন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) আইন-২০১৬ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির বেতন সম্পূর্ণ আয়করমুক্ত। রাষ্ট্রপতির মাসে আড়াই হাজার টাকা ছুটিভাতা পাবেন। এই টাকাও আয়করমুক্ত।

রাষ্ট্রপতির আবাসনের সজ্জিতকরণ ও মেরামতের পুরোটাই সরকার বহন করে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনের বাইরে নিজের বাড়ি বা অন্য কোনো বাড়িতে অবস্থান করতে চাইলেও সেই ব্যয় সরকারের। রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের খাবার খরচ সরকার বহন করে। এ ক্ষেত্রে বাবুর্চি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সব ব্যয়ভার সরকারের। আইনে পরিবারের সদস্য বলতে স্ত্রী/স্বামী, সন্তান, পিতা-মাতা ও অবিবাহিত ভাইবোনকে বোঝানো হয়েছে, যারা তার ওপর নির্ভরশীল।

রাষ্ট্রপতির সরকারি আবাসস্থলের টেলিফোন, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ সব ধরনের সেবা খাতের ব্যয় সরকার বহন করে। এসব বিল করের আওতায় আসবে না। রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের উপযুক্ত ও প্রয়োজনীয় যানবাহন সরকার নিশ্চিত করবে। রাষ্ট্রপতির সব ধরনের সফর ও সফরকালীন অবস্থানের ব্যয়ও সরকার দেবে। পরিবহনের জ্বালানি সরকার বহন করবে এবং জ্বালানি হবে করের আওতামুক্ত। রাষ্ট্রপতি ভ্রমণের ক্ষেত্রে রেলওয়, বিমান ও নৌযানে সর্বোচ্চ সুবিধার আসন পাবেন। বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রে তার বার্ষিক ২৭ লাখ টাকা বিমা কাভারেজ সরকার দেবে।

রাষ্ট্রপতি বা তার পরিবারের সদস্য এবং সরকারি-বেসরকারি অতিথিদের জন্য ব্যবহৃত তামাকজাত পণ্যের ওপর কোনো কর আরোপ করা যাবে না। এসব ব্যক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে উৎপাদিত পানীয় ট্যাক্সের আওতমুক্ত থাকবে। রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনে তার প্রয়োজনীয় সব ধরনের অর্থও সরকার বহন করবে। সরকারি কাজে বিদেশ সফরের সময়ে তার সব ধরনের খরচ সরকার দেবে।

আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি আপ্যায়নের সুবিধা পান। বঙ্গভবনে দেশি-বিদেশি অতিথি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার, ইফতার পার্টি, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, বুদ্ধপূর্ণিমা, দুর্গাপূজা, বড়দিন, পয়লা বৈশাখ, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে আমন্ত্রিতদের আপ্যায়ন বাবদ ব্যয় সরকারের নির্ধারিত এ খাত হতে বহন করা হয়। রাষ্ট্রপতি কোনো দেশি-বিদেশি অতিথিদের আপ্যায়ন করলে বা তাদের কোনো ধরনের উপহার দিলে তার ব্যয়ও সরকারি খাত থেকে করা হয়। আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের আবাসস্থলেও সাধারণ চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া দেশের হাসপাতালগুলোতে সরকারি খরচে এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারবেন।

রাষ্ট্রপতি বছরে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যয়ের জন্য স্বেচ্ছাধীন তহবিল পান। সরকারের নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে এটি ব্যয় করবেন রাষ্ট্রপতি। স্বেচ্ছাধীন তহবিলের অর্থ হতে দরিদ্র, অসচ্ছল, অসহায় এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। বাস্তব অবস্থা ও চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এবং প্রয়োজনের নিরিখে এ খাতে বরাদ্দ রেখে দেশের সমস্যাগ্রস্ত দরিদ্র ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রপতির এ খাতের ব্যয়ের ক্ষেত্রে কোনো সরকারি অডিট হবে না। সূত্রঃ দৈনিক বাংলা

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

রাষ্ট্রপতি হলে কী কী সুবিধা পাওয়া যায়

প্রকাশের সময় : ০১:০২:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন মো. সাহাবুদ্দিন। আগামী ২৩ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বঙ্গভবনের বাসিন্দা হবেন সাবেক দুদক কমিশনার সাহাবুদ্দিন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি কী কী সুবিধা পাবেন তা বাংলাদেশের সংবিধান এবং দ্য প্রেসিডেন্টস (রেমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) সংশোধন অ্যাক্টে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির বেতন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। সর্বশেষ ২০১৬ সালের সংশোধিত আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে মাসের বেতন হিসাবে এ পরিমাণ অর্থ দেয়ার বিধান করা হয়েছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের খাবার, আবাসন, চিকিৎসা, পানি, বিদ্যুৎ, গাসসহ সেবা খাতের সব ধরনের ব্যয় রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ব্যয় করা হয়।

এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবার এবং কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অতিথিরা পানীয় ও তামাকজাত পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বিনা শুল্কে কিনতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি অবসরে গেলেও আইন অনুযায়ী ব্যক্তিগত স্টাফসহ অবসর সুবিধা পাবেন। রাষ্ট্রপতির বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি আইন প্রণয়ন করা হয় ১৯৭৫ সালে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালে ১৯৭৫ সালের ১২ জুলাই জাতীয় সংসদে বাংলাদেশের দ্য প্রেসিডেন্টস (রেমুনারেশেন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) ১৯৭৫ পাস হয়। এরপর ১০ বার আইনটি সংশোধন করা হয়।

আইনটির প্রণয়নের সময়ে (১৯৭৫ সালে) রাষ্ট্রপতির বেতন নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ হাজার ৫০০ টাকা। এরপর ১৯৮৭ সালে আড়াই হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা, ১৯৯২ সালে ১৫ হাজার টাকা, ১৯৯৮ সালে ২৩ হাজার টাকা, ২০০৫ সালে ৩৩ হাজার ৪০০ টাকা, ২০০৯ সালে ৬১ হাজার ২০০ টাকা এবং সর্বশেষ ২০১৬ সালে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। সর্বশেষ সংশোধিত দ্য প্রেসিডেন্টস (রেমুনারেশেন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) আইন-২০১৬ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির বেতন সম্পূর্ণ আয়করমুক্ত। রাষ্ট্রপতির মাসে আড়াই হাজার টাকা ছুটিভাতা পাবেন। এই টাকাও আয়করমুক্ত।

রাষ্ট্রপতির আবাসনের সজ্জিতকরণ ও মেরামতের পুরোটাই সরকার বহন করে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনের বাইরে নিজের বাড়ি বা অন্য কোনো বাড়িতে অবস্থান করতে চাইলেও সেই ব্যয় সরকারের। রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের খাবার খরচ সরকার বহন করে। এ ক্ষেত্রে বাবুর্চি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সব ব্যয়ভার সরকারের। আইনে পরিবারের সদস্য বলতে স্ত্রী/স্বামী, সন্তান, পিতা-মাতা ও অবিবাহিত ভাইবোনকে বোঝানো হয়েছে, যারা তার ওপর নির্ভরশীল।

রাষ্ট্রপতির সরকারি আবাসস্থলের টেলিফোন, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ সব ধরনের সেবা খাতের ব্যয় সরকার বহন করে। এসব বিল করের আওতায় আসবে না। রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের উপযুক্ত ও প্রয়োজনীয় যানবাহন সরকার নিশ্চিত করবে। রাষ্ট্রপতির সব ধরনের সফর ও সফরকালীন অবস্থানের ব্যয়ও সরকার দেবে। পরিবহনের জ্বালানি সরকার বহন করবে এবং জ্বালানি হবে করের আওতামুক্ত। রাষ্ট্রপতি ভ্রমণের ক্ষেত্রে রেলওয়, বিমান ও নৌযানে সর্বোচ্চ সুবিধার আসন পাবেন। বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রে তার বার্ষিক ২৭ লাখ টাকা বিমা কাভারেজ সরকার দেবে।

রাষ্ট্রপতি বা তার পরিবারের সদস্য এবং সরকারি-বেসরকারি অতিথিদের জন্য ব্যবহৃত তামাকজাত পণ্যের ওপর কোনো কর আরোপ করা যাবে না। এসব ব্যক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে উৎপাদিত পানীয় ট্যাক্সের আওতমুক্ত থাকবে। রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনে তার প্রয়োজনীয় সব ধরনের অর্থও সরকার বহন করবে। সরকারি কাজে বিদেশ সফরের সময়ে তার সব ধরনের খরচ সরকার দেবে।

আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি আপ্যায়নের সুবিধা পান। বঙ্গভবনে দেশি-বিদেশি অতিথি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার, ইফতার পার্টি, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, বুদ্ধপূর্ণিমা, দুর্গাপূজা, বড়দিন, পয়লা বৈশাখ, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে আমন্ত্রিতদের আপ্যায়ন বাবদ ব্যয় সরকারের নির্ধারিত এ খাত হতে বহন করা হয়। রাষ্ট্রপতি কোনো দেশি-বিদেশি অতিথিদের আপ্যায়ন করলে বা তাদের কোনো ধরনের উপহার দিলে তার ব্যয়ও সরকারি খাত থেকে করা হয়। আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের আবাসস্থলেও সাধারণ চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া দেশের হাসপাতালগুলোতে সরকারি খরচে এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারবেন।

রাষ্ট্রপতি বছরে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যয়ের জন্য স্বেচ্ছাধীন তহবিল পান। সরকারের নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে এটি ব্যয় করবেন রাষ্ট্রপতি। স্বেচ্ছাধীন তহবিলের অর্থ হতে দরিদ্র, অসচ্ছল, অসহায় এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। বাস্তব অবস্থা ও চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এবং প্রয়োজনের নিরিখে এ খাতে বরাদ্দ রেখে দেশের সমস্যাগ্রস্ত দরিদ্র ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রপতির এ খাতের ব্যয়ের ক্ষেত্রে কোনো সরকারি অডিট হবে না। সূত্রঃ দৈনিক বাংলা