রাজধানীর সড়কে দিন-রাত থেমে থেমে যানজট
- প্রকাশের সময় : ০৩:২৫:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪
- / ৮২ বার পঠিত
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে যাচ্ছে। রমজান মাসের নতুন সময়ে বেশিরভাগ মানুষেরই অফিস ছুটি হয়েছে। ঘটনাস্থল রাজধানীর বাড্ডা এলাকা। রামপুরা পার হতেই সড়কে গাড়ির চাপ হঠাৎ বেড়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন ঘরমুখো মানুষেরা। থেমে থেমে বাড্ডার গাড়ির জট ছিল নতুন বাজার পর্যন্ত। তখন দুপুর আড়াইটা। গুলিস্থান থেকে জিরো পয়েন্টমুখী বিভিন্ন ধরনের গাড়ির লম্বা সারি তৈরি হয়েছে।
যানজটে বাসের সংখ্যাই বেশি। তবে ওই সময়ে পল্টন ও কাকড়াইল এলাকা তুলনামূলক কিছুটা যানজট কমছিল। তবে কিছুক্ষণ পরেই সড়কে গাড়ির চাপ অল্প সময়ের মধ্যে কয়েকগুণ বেড়ে যায়। গাড়ির চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিকের দায়িত্বরতদের।
বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে মধ্য বাড্ডায় ভিক্টর ক্ল্যাসিক বাসের যাত্রী মো. রফিকুলের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি বংশাল থেকে এই বাসে উঠেছি। পুরো রাস্তায় সমান যানজট ছিল না। শুরুতে রাস্তা অনেকটা খালি ছিল। কিন্তু সাড়ে তিনটার পর রাস্তায় হঠাৎ অনেক জ্যাম বেড়ে যায়।’
পাশে থাকা আরেক যাত্রী জুলহাস হোসেন বলেন, ‘রোজার সময় তো এমনই হবে। অল্প কিছুদিন সন্ধ্যায় রাস্তা খালি থাকবে। তারপর তো শুরু হবে মার্কেটের চাপ। বিকেলের যানজট রাত ১১টায়ও কমবে না।’ সরেজমিনে ঢাকার ফুলবাড়িয়া, শান্তি নগর, মৌচাক, মালিবাগ, রামপুরা, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, মহাখালী, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, বনানী ও নর্দা এলাকা ঘুরে প্রায় একই রকম দৃশ্য দেখা গেছে। জানতে চাইলে ঢাকা মহানগরের ট্রাফিক পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান বলেন, ‘নির্দিষ্ট কিছু সময়ে সড়কে ট্রাফিকের চাপ বেড়ে যাচ্ছে। সামনের কিছুদিন সড়কে যান চলাচলের মাত্রা আরো বাড়তে পারে। সবকিছু খেয়াল রেখে আমরা ট্রাফিক ব্যবস্থা সমন্বয় করার কাজ করে যাচ্ছি।’
এদিকে কাজলা থেকে যাত্রাবাড়ী মোড় পর্যন্ত নিয়মিতই যানজট থাকে। প্রায়ই এই যানজট মৃধাবাড়ী পেরিয়ে যায়। মূলত ট্রাফিক সংকেতের অব্যবস্থাপনা এবং সড়কের দুইপাশে অবৈধ গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে এই অঞ্চলে যানজট বেশি হয়। অপরদিকে গোলাপবাগ সিগন্যালের গাড়ি মানিকনগরের কাছাকাছি চলে যায়।
স্থানীয়রা বলছেন, মেরুল বাড্ডা এলাকায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় চালু হওয়ার পর থেকে এই সড়কে যানজট বেড়েছে। আবার রামপুরা থেকে ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত এক লেনের সড়ক। যানজটের কারণে স্টাফ কোয়ার্টার থেকে রামপুরা পর্যন্ত যেতে সময় লেগে যায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা। এই সড়কটি সরু, ভারী যানবাহন চলাচলের উপযুক্ত নয়। অথচ এই সড়ক দিয়ে চলছে পণ্যবাহী ট্রাক, কার্গো, লরি। দিনে থেমে থেমে জ্যাম থাকলেও রাতে এই চিত্র ভিন্ন। রাত যত বাড়ে এই সড়কে যানজট ততই বৃদ্ধি পায়। সড়কটি প্রায়ই দুর্ঘটনা ও যানবাহন বিকল হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন গণমাধ্যমকর্মী নাহিদ হাসান। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি নিয়মিত ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টার থেকে গণপরিবহনে বসুন্ধরায় যাতায়াত করি। দুপুর ১টায় স্টাফ কোয়ার্টার থেকে বাসে সোয়া এক ঘণ্টা থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে বসুন্ধরা পর্যন্ত যেতে পারি। তবে মাঝেমধ্যে এই সড়কে দুর্ঘটনা, যানবাহন বিকল হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। তখন দুই থেকে তিন ঘণ্টাও লেগে যায়। আবার রাত ১০টায় বসুন্ধরা থেকে বাসে উঠলে স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত পৌঁছতে ২ ঘণ্টার অধিক সময় লেগে যায়। কখনো কখনো তিন ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হয় না।’ সূত্র : কালের কণ্ঠ।