নিউইয়র্ক ০৬:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

মৃত্যুঝুঁকিতে বেগম খালেদা জিয়া দেশে চিকিৎসার সুযোগ শেষ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:২৭:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৮০ বার পঠিত

বাংলাদেশ ডেস্ক : বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সুযোগ বাংলাদেশে প্রায় শেষ হয়ে এসছে, তিনি এখন মৃত্য ঝুঁকিতে আছেন বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড। বোর্ডের সদস্যরা তাকে অতিদ্রুত বিদেশে মাল্টিডিসিপ্ল্যানারি সেন্টারে প্রেরণের সুপারিশ করেছেন। গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পক্ষে প্রফেসর ডা. এফএম সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) পেটে পানি জমছে, ফুসফুসে সংক্রামণ, পেটে অল্প অল্প রক্তক্ষরণ হতে থাকে। এবারে হাসপাতালে ভর্তিতে উনাকে চার ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে। বাস্তব অবস্থা অত্যন্ত জটিল ও কঠিন। আমাদের এই মেডিকেল বোর্ড এবং এর সাথে চিকিৎসকসহ সম্পৃক্ত সবাই চব্বিশ ঘন্টা উনাকে নিবিড় পর্যাবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এমন একটা অবস্থায় আমরা উপনীত হয়েছি যে, এখন পরবর্তিতে আমাদের সমস্ত চিকিৎসার অপশনগুলো প্রায় শেষ হয়ে এসছে। আমাদের হাতে কোনো অপশন নেই। যদি আমরা দুই বছর আগে ট্রিপস প্রসিডিউরটা করতে পারতাম তাহলে আজকে উনার পেটে ও বুকে কোনো পানি জমা হতো না, উনার পেটে কোনো রক্তক্ষরণ হতো না।

এফএম সিদ্দিকী বলেন, একটা প্রতিকার যোগ্য অসুস্থতা, যেটা প্রতিকার করার সম্ভব, সেটা করা যাচ্ছে না। একজন রোগী ক্রমশ আস্তে আস্তে আস্তে খারাপ হয়ে যাচ্ছে চিকিৎসক হিসেবে চোখের সামনে এটা আমাদের পক্ষে বিহেভ করা অনেক কঠিন। এখনো সময় শেষ হয়ে যায়নি।

তিনি বলেন, আজকে আমি মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে সর্বসম্মতিভাবে আপনাদের (গণমাধ্যম) মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাতে চাই যে, এখনো সময় আছে যদি ‘ট্রিপস’ করা হয় এবং বিদেশে উন্নত মাল্টিডিসিপ্ল্যানারি সেন্টারে নিয়ে উনার ‘ট্রিপস’ পরবর্তি লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য ব্যবস্থা করা হয় সম্ভবত এখনো আমাদের হাতে অপশন আছে যে, আমরা হয়ত উনার অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারবো।

‘ট্রিপস’ এর বিষয়ে ডা. সিদ্দিকী বলেন, এই ‘ট্রিপস’ প্রসিডিউরটার কথা বলেছি এটা ইমিডিয়েট দরকার। এই ট্রিপস বাংলাদেশে হয় না। এটা হলে উনার বুকে যে পানি আসছে এটা চলে যাবে, রক্তক্ষরণ হবে না। এটা লাইভ সেভিংস প্রসিডিউর। এটি বাংলাদেশে হয় না। লিভার ট্রান্সপ্লান্টও বাংলাদেশে হয় না।

লিভার প্রতিস্থাপন তো বাংলাদেশে করা যায় এখানে আপনারা কেনো করছেন না প্রশ্ন করা হলে মেডিকেল বোর্ডের সদস্য গ্যাস্ট্রোলজির প্রফেসর একেএম মহসিন বলেন, আমাদের এখানে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট হয় না। আমাদের এখানে একটা-দুইটা হয়েছে, বলতে পারেন যে, এক্সপেরিমেন্ট ব্যাসিসে। আমাদের এখানে লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশনের যে সেটআপ সেই সেটা আপ তৈরি হয়নি। যে ম্যানপাওয়ার দরকার তা নেই, আমাদের কোনো সার্জারি নেই।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার ক্রিটিক্যাল অবস্থা। বাংলাদেশে তার ট্রিপস ও লিভার ট্রান্সপারেন্টের করার মতো সেটআপ নেই।

মেডিকেল বোর্ডের প্রধান প্রফেসর ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার এখানে ভর্তি আছেন। এই পর্যন্ত তিনি চারবার ভর্তি হয়েছেন। তার অবস্থার জটিল। ম্যাডামকে কেবিন থেকে সিসিইউতে নেয়া হয়েছে। কেবিন থেকে কখন একজন রোগীকে নেয়া হয় সিসিইউতে? যখন রোগীর অবস্থা ক্রিটিক্যাল থাকে যখন এভরি চান্স অব কলাপস, সার্টেনলি কলাপস।

তিনি বলেন, ম্যাডামের হৃদরোগ আছে, একটা রিং লাগানো আছে, দুইটা ব্লক আছে, যখন পানি বের করা হয় তখন চান্স অব কল্যাপস। সেই পানি বের করার জন্য উনাকে সিসিইউতে নিতে হয়েছে। এটা বাস্তবতা।

বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরে প্রফেসর এফএম সিদ্দিকী বলেন, আপনারা দেখতে পারছেন আগে ভর্তি হতেন বাসায় যেতে পারতেন, এরপর ভর্তি হয়ে একটু বেশি সময় থেকেছেন আর এখন ভর্তি হয়ে তিনি বাসায় যেতে পারছেন না। এর থেকে আপনারা বুঝতে পারেন ম্যাডামের অবস্থাটা কোন পর্যায়ে।

প্রফেসর ডা. নুরুদ্দিন আহমেদ বলেন, উনার অনেকগুলো রোগ আছে। তার মধ্যে উনি লিভার সিরোসিসের কারণে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন। লিভার সিরোসিসের অনেক জটিলতা আছে এর মধ্যে যেমন পেটে রক্তক্ষরণ হয়েছে এগুলো লিভার সিরোসিসের কারণে হয়েছে। উনার পেটে পানি আসা সেটাও লিভার সিরোসিসের আরেকটি জটিলতা, বুকে পানি আসা আরেকটি মারাত্মক জটিলতা। এবং পেটের পানির কারণে ইনফেকশন হওয়া সেটাও মারাত্মক জটিলতা লিভার সিরোসিসের কারণে। যেখানে মৃত্যু ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। আল্লাহর রহমতে আমরা চিকিৎসকরা আমাদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব হয়েছে যার কারণে উনি হয়ত এই যাত্রা সেইভ হয়ে গেছেন। কিন্তু পেটের মধ্যে, বুকের মধ্যে যতক্ষণ পানি থাকবে ততক্ষণ মারাত্মক ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একটা পর্যায়ে কোনো ঔষধে কাজ করবে না। এই রকম অবস্থায় চলে যেতে পারে। সেই অবস্থায় মৃত্যু ঝুঁকি অনেক বেড়ে গেছে। এখন উনার (খালেদা জিয়া) পেটের পানি ও বুকের পানি সরানোর জন্য আমরা যেটা করছি দেখেছেন আপনারা তাকে সিসিইউতে নিয়েছি কয়েকবার।

তিনি বলেন, এই অবস্থায় কতদিন আমরা কি করব? জবাব হচ্ছে, আমাদের হাতে আর কোনো চিকিৎসা নেই যে এই মুহুর্তে, সেটি হলো বারে বারে পানি বের করা এবং যেসব এন্টিবায়োটিক আছে সেগুলো দিয়ে চিকিৎসা করা। কিন্তু আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি এই এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে করতে সেগুলো রেজিটেন্স ডেভেলপ করে যাচ্ছে। অনেক উচ্চমাত্রার এন্টিবায়োটিকও উনার মধ্যে কাজ করছে না। এটি একটি বড় রকমের ঝুঁকি। তাতে উনার জন্য চিকিৎসার সুযোগ দেশে নয়, বিদেশে আছে। সেখানে উন্নত সেন্টারে নিয়ে ট্রিপস করলে উনার বুকে ও পেটে পানি জমা বন্ধ হতে পারে। এটা না করা গেলে এখানে যেকোনো মুহুর্তে উনার মৃত্য ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি।

গত ৯ আগস্ট থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। লিভার জটিলতার কারণে অবস্থার অবণতি হলে তাকে কয়েক দফা ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট(সিসিইউ)তে নিতে হয়েছে। এরকম পরিস্থিতির মধ্যে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর তার পরিবারের পক্ষ থেকে ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে। মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশ(খালেদা জিয়াকে দ্রুত বিদেশী পাঠানো জরুরী) সহ সেই আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে আবেদনটি নাকচ করে দেয় সরকার।

সংবাদ সম্মেলন প্রফেসর এসএমএ জাফর, প্রফেসর শামসুল আরেফিন, প্রফেসর এজেডএম জাহিদ হোসেন, ডা. জাফর ইকবাল, ডা. আহসানুল আমিন, ডা. জিয়াউল হক, ডা. আতিকুর রহমান, ডা. আল মামুন, ডা. রফিকুল ইসলাম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : দৈনিক ইনকিলাব

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

মৃত্যুঝুঁকিতে বেগম খালেদা জিয়া দেশে চিকিৎসার সুযোগ শেষ

প্রকাশের সময় : ০৭:২৭:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর ২০২৩

বাংলাদেশ ডেস্ক : বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সুযোগ বাংলাদেশে প্রায় শেষ হয়ে এসছে, তিনি এখন মৃত্য ঝুঁকিতে আছেন বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড। বোর্ডের সদস্যরা তাকে অতিদ্রুত বিদেশে মাল্টিডিসিপ্ল্যানারি সেন্টারে প্রেরণের সুপারিশ করেছেন। গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পক্ষে প্রফেসর ডা. এফএম সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) পেটে পানি জমছে, ফুসফুসে সংক্রামণ, পেটে অল্প অল্প রক্তক্ষরণ হতে থাকে। এবারে হাসপাতালে ভর্তিতে উনাকে চার ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে। বাস্তব অবস্থা অত্যন্ত জটিল ও কঠিন। আমাদের এই মেডিকেল বোর্ড এবং এর সাথে চিকিৎসকসহ সম্পৃক্ত সবাই চব্বিশ ঘন্টা উনাকে নিবিড় পর্যাবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এমন একটা অবস্থায় আমরা উপনীত হয়েছি যে, এখন পরবর্তিতে আমাদের সমস্ত চিকিৎসার অপশনগুলো প্রায় শেষ হয়ে এসছে। আমাদের হাতে কোনো অপশন নেই। যদি আমরা দুই বছর আগে ট্রিপস প্রসিডিউরটা করতে পারতাম তাহলে আজকে উনার পেটে ও বুকে কোনো পানি জমা হতো না, উনার পেটে কোনো রক্তক্ষরণ হতো না।

এফএম সিদ্দিকী বলেন, একটা প্রতিকার যোগ্য অসুস্থতা, যেটা প্রতিকার করার সম্ভব, সেটা করা যাচ্ছে না। একজন রোগী ক্রমশ আস্তে আস্তে আস্তে খারাপ হয়ে যাচ্ছে চিকিৎসক হিসেবে চোখের সামনে এটা আমাদের পক্ষে বিহেভ করা অনেক কঠিন। এখনো সময় শেষ হয়ে যায়নি।

তিনি বলেন, আজকে আমি মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে সর্বসম্মতিভাবে আপনাদের (গণমাধ্যম) মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাতে চাই যে, এখনো সময় আছে যদি ‘ট্রিপস’ করা হয় এবং বিদেশে উন্নত মাল্টিডিসিপ্ল্যানারি সেন্টারে নিয়ে উনার ‘ট্রিপস’ পরবর্তি লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য ব্যবস্থা করা হয় সম্ভবত এখনো আমাদের হাতে অপশন আছে যে, আমরা হয়ত উনার অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারবো।

‘ট্রিপস’ এর বিষয়ে ডা. সিদ্দিকী বলেন, এই ‘ট্রিপস’ প্রসিডিউরটার কথা বলেছি এটা ইমিডিয়েট দরকার। এই ট্রিপস বাংলাদেশে হয় না। এটা হলে উনার বুকে যে পানি আসছে এটা চলে যাবে, রক্তক্ষরণ হবে না। এটা লাইভ সেভিংস প্রসিডিউর। এটি বাংলাদেশে হয় না। লিভার ট্রান্সপ্লান্টও বাংলাদেশে হয় না।

লিভার প্রতিস্থাপন তো বাংলাদেশে করা যায় এখানে আপনারা কেনো করছেন না প্রশ্ন করা হলে মেডিকেল বোর্ডের সদস্য গ্যাস্ট্রোলজির প্রফেসর একেএম মহসিন বলেন, আমাদের এখানে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট হয় না। আমাদের এখানে একটা-দুইটা হয়েছে, বলতে পারেন যে, এক্সপেরিমেন্ট ব্যাসিসে। আমাদের এখানে লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশনের যে সেটআপ সেই সেটা আপ তৈরি হয়নি। যে ম্যানপাওয়ার দরকার তা নেই, আমাদের কোনো সার্জারি নেই।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার ক্রিটিক্যাল অবস্থা। বাংলাদেশে তার ট্রিপস ও লিভার ট্রান্সপারেন্টের করার মতো সেটআপ নেই।

মেডিকেল বোর্ডের প্রধান প্রফেসর ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার এখানে ভর্তি আছেন। এই পর্যন্ত তিনি চারবার ভর্তি হয়েছেন। তার অবস্থার জটিল। ম্যাডামকে কেবিন থেকে সিসিইউতে নেয়া হয়েছে। কেবিন থেকে কখন একজন রোগীকে নেয়া হয় সিসিইউতে? যখন রোগীর অবস্থা ক্রিটিক্যাল থাকে যখন এভরি চান্স অব কলাপস, সার্টেনলি কলাপস।

তিনি বলেন, ম্যাডামের হৃদরোগ আছে, একটা রিং লাগানো আছে, দুইটা ব্লক আছে, যখন পানি বের করা হয় তখন চান্স অব কল্যাপস। সেই পানি বের করার জন্য উনাকে সিসিইউতে নিতে হয়েছে। এটা বাস্তবতা।

বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরে প্রফেসর এফএম সিদ্দিকী বলেন, আপনারা দেখতে পারছেন আগে ভর্তি হতেন বাসায় যেতে পারতেন, এরপর ভর্তি হয়ে একটু বেশি সময় থেকেছেন আর এখন ভর্তি হয়ে তিনি বাসায় যেতে পারছেন না। এর থেকে আপনারা বুঝতে পারেন ম্যাডামের অবস্থাটা কোন পর্যায়ে।

প্রফেসর ডা. নুরুদ্দিন আহমেদ বলেন, উনার অনেকগুলো রোগ আছে। তার মধ্যে উনি লিভার সিরোসিসের কারণে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন। লিভার সিরোসিসের অনেক জটিলতা আছে এর মধ্যে যেমন পেটে রক্তক্ষরণ হয়েছে এগুলো লিভার সিরোসিসের কারণে হয়েছে। উনার পেটে পানি আসা সেটাও লিভার সিরোসিসের আরেকটি জটিলতা, বুকে পানি আসা আরেকটি মারাত্মক জটিলতা। এবং পেটের পানির কারণে ইনফেকশন হওয়া সেটাও মারাত্মক জটিলতা লিভার সিরোসিসের কারণে। যেখানে মৃত্যু ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। আল্লাহর রহমতে আমরা চিকিৎসকরা আমাদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব হয়েছে যার কারণে উনি হয়ত এই যাত্রা সেইভ হয়ে গেছেন। কিন্তু পেটের মধ্যে, বুকের মধ্যে যতক্ষণ পানি থাকবে ততক্ষণ মারাত্মক ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একটা পর্যায়ে কোনো ঔষধে কাজ করবে না। এই রকম অবস্থায় চলে যেতে পারে। সেই অবস্থায় মৃত্যু ঝুঁকি অনেক বেড়ে গেছে। এখন উনার (খালেদা জিয়া) পেটের পানি ও বুকের পানি সরানোর জন্য আমরা যেটা করছি দেখেছেন আপনারা তাকে সিসিইউতে নিয়েছি কয়েকবার।

তিনি বলেন, এই অবস্থায় কতদিন আমরা কি করব? জবাব হচ্ছে, আমাদের হাতে আর কোনো চিকিৎসা নেই যে এই মুহুর্তে, সেটি হলো বারে বারে পানি বের করা এবং যেসব এন্টিবায়োটিক আছে সেগুলো দিয়ে চিকিৎসা করা। কিন্তু আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি এই এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে করতে সেগুলো রেজিটেন্স ডেভেলপ করে যাচ্ছে। অনেক উচ্চমাত্রার এন্টিবায়োটিকও উনার মধ্যে কাজ করছে না। এটি একটি বড় রকমের ঝুঁকি। তাতে উনার জন্য চিকিৎসার সুযোগ দেশে নয়, বিদেশে আছে। সেখানে উন্নত সেন্টারে নিয়ে ট্রিপস করলে উনার বুকে ও পেটে পানি জমা বন্ধ হতে পারে। এটা না করা গেলে এখানে যেকোনো মুহুর্তে উনার মৃত্য ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি।

গত ৯ আগস্ট থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। লিভার জটিলতার কারণে অবস্থার অবণতি হলে তাকে কয়েক দফা ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট(সিসিইউ)তে নিতে হয়েছে। এরকম পরিস্থিতির মধ্যে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর তার পরিবারের পক্ষ থেকে ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে। মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশ(খালেদা জিয়াকে দ্রুত বিদেশী পাঠানো জরুরী) সহ সেই আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে আবেদনটি নাকচ করে দেয় সরকার।

সংবাদ সম্মেলন প্রফেসর এসএমএ জাফর, প্রফেসর শামসুল আরেফিন, প্রফেসর এজেডএম জাহিদ হোসেন, ডা. জাফর ইকবাল, ডা. আহসানুল আমিন, ডা. জিয়াউল হক, ডা. আতিকুর রহমান, ডা. আল মামুন, ডা. রফিকুল ইসলাম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : দৈনিক ইনকিলাব