নিউইয়র্ক ০৮:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

মুসিবত থেকে রেহাই পাওয়ার রাস্তা খুঁজে বের করতেই হবে

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:৩৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০২৪
  • / ১৮ বার পঠিত

বালা-মুসিবত থেকে বাঁচার জন্য মহান আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করতে বললেন নোবেল বিজয়ী একমাত্র বাংলাদেশী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, এসব থেকে মানুষের রেহাই পাওয়ার রাস্তা খুঁজে বের করতেই হবে।

মঙ্গলবার দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এ হাজিরা দিতে আসেন তিনি। আদালত থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকরা তাকে ঘিরে ধরেন। এ সময় তিনি বলেন, এখন রমজানের দিন। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করুন। আমরা যেন বালা-মুসিবত থেকে বাঁচি। আমাদের ওপর অনেক বালা-মুসিবত। আমার ওপর ব্যক্তিগত বালা-মুসিবত, সহকর্মীদের ওপর এবং দেশের ওপরও। তার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা দোয়া করি। সামনে ঈদ আসছে। খুশির দিন। আমরা যেন সত্যি সত্যি খুশির ঈদ উদযাপন করতে পারি। তার সঙ্গে পহেলা বৈশাখ। আরো খুশি, সবকিছু একসঙ্গে। এর মধ্যে বালা-মুসিবত থেকে কীভাবে উদ্ধার পাবো সবাই মিলে চিন্তা-ভাবনা করি। এককভাবে আমরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত, তেমনি বালা-মুসিবতে সমষ্টিগতভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত। কাজেই এগুলো থেকে অতিক্রম করতে না পারলে আমাদের মুক্তি নাই, রেহাই নাই। মানুষের রেহাই পাওয়ার রাস্তা খুঁজে বের করতে হবে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমরা নিজের মনে কাজ করে যাই, করে যাচ্ছিলাম। কোনো বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব নিয়ে কাজ করি না। কতগুলো অভিজ্ঞতা নিয়ে কাজ করি। সত্য নিয়ে কাজ করি। দেশ-বিদেশের মানুষ বিশ্বাস করছে, যে কারণে তারা উৎসাহিত। মনে হয়েছে এটা মানুষের মঙ্গলের জন্য। সেজন্য দেশ-বিদেশের নেতারা এটা জানতে চায়, বুঝতে চায়। নিজ দেশে প্রয়োগ করতে চায়। এজন্য নানা দেশে যাই, যেতে হয়। নিজের ফূর্তির জন্য যাওয়া তো না, এটা তাদের নেহায়েত আগ্রহে। আমার মাঝে মাঝে দুঃখ হয়, সারা দুনিয়া বাংলাদেশের কাছ থেকে শিখতে চায়। আমাদের গৌরববোধ করতে হয়। তা না করে আমরা এমন কাজ করছি, আমরা যেন পাপের কাজ করে ফেলেছি। এমন অনুভূতি হওয়ার তো কোনো কারণ ছিল না।

তিনি আরো বলেন, আইনের শাসন বলে যে জিনিস সেটা আমরা পাচ্ছি না কোথাও। আমরা এদেশের অংশীদার, আমরা সবাই মিলেই দেশ। আমার অনুরোধ মাহে রমজানের মাসে নিজেদের দিকে তাকিয়ে, নিজ নিজ ভূমিকা পালন করি। আমরা যেটা করতে চাচ্ছিলাম, সেটা করতে পাচ্ছি কি না। না করতে পারলে কীভাবে আমরা প্রতিবাদ জানাব, কীভাবে কথাগুলো শোনাতে পারব, শোনাবার পথ আমরা বের করব। পথ আমাদের বের করতেই হবে। তাছাড়া কোনো উপায় নেই।

এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় নোবেল বিজয়ী একমাত্র বাংলাদেশী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছে আদালত। গতকাল (মঙ্গলবার) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালত শুনানি শেষে এ চার্জশিট গ্রহণ করেন। এ সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে অন্যতম আসামি মো: শাহজাহান আদালতে হাজির না থাকায় আদালত তার জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে আগামী ২ মে। মামলাটি বদলি করে দেয়ায় পরবর্তী শুনানি হবে বিশেষ জজ আদালত-৪ এ।

এর আগে দুপুর পৌনে ১টার দিকে আদালতে আসেন ড. ইউনূসসহ অন্য আসমিরা। চার্জশিটভুক্ত ১৪ আসামি হলেন, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো: শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, অ্যাডভোকেট মো: ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো: কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান ও প্রতিনিধি মো: মাইনুল ইসলাম।

এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। দুদকের অনুমোদিত চার্জশিটে আসামি ছিল ১৩ জন। নতুন করে একজন আসামি যুক্ত হয়েছে। তিনি হলেন গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান।

প্রসঙ্গত: শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে দুদক ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়। সূত্র : দৈনিক ইনকিলাব।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

মুসিবত থেকে রেহাই পাওয়ার রাস্তা খুঁজে বের করতেই হবে

প্রকাশের সময় : ০২:৩৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০২৪

বালা-মুসিবত থেকে বাঁচার জন্য মহান আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করতে বললেন নোবেল বিজয়ী একমাত্র বাংলাদেশী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, এসব থেকে মানুষের রেহাই পাওয়ার রাস্তা খুঁজে বের করতেই হবে।

মঙ্গলবার দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এ হাজিরা দিতে আসেন তিনি। আদালত থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকরা তাকে ঘিরে ধরেন। এ সময় তিনি বলেন, এখন রমজানের দিন। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করুন। আমরা যেন বালা-মুসিবত থেকে বাঁচি। আমাদের ওপর অনেক বালা-মুসিবত। আমার ওপর ব্যক্তিগত বালা-মুসিবত, সহকর্মীদের ওপর এবং দেশের ওপরও। তার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা দোয়া করি। সামনে ঈদ আসছে। খুশির দিন। আমরা যেন সত্যি সত্যি খুশির ঈদ উদযাপন করতে পারি। তার সঙ্গে পহেলা বৈশাখ। আরো খুশি, সবকিছু একসঙ্গে। এর মধ্যে বালা-মুসিবত থেকে কীভাবে উদ্ধার পাবো সবাই মিলে চিন্তা-ভাবনা করি। এককভাবে আমরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত, তেমনি বালা-মুসিবতে সমষ্টিগতভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত। কাজেই এগুলো থেকে অতিক্রম করতে না পারলে আমাদের মুক্তি নাই, রেহাই নাই। মানুষের রেহাই পাওয়ার রাস্তা খুঁজে বের করতে হবে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমরা নিজের মনে কাজ করে যাই, করে যাচ্ছিলাম। কোনো বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব নিয়ে কাজ করি না। কতগুলো অভিজ্ঞতা নিয়ে কাজ করি। সত্য নিয়ে কাজ করি। দেশ-বিদেশের মানুষ বিশ্বাস করছে, যে কারণে তারা উৎসাহিত। মনে হয়েছে এটা মানুষের মঙ্গলের জন্য। সেজন্য দেশ-বিদেশের নেতারা এটা জানতে চায়, বুঝতে চায়। নিজ দেশে প্রয়োগ করতে চায়। এজন্য নানা দেশে যাই, যেতে হয়। নিজের ফূর্তির জন্য যাওয়া তো না, এটা তাদের নেহায়েত আগ্রহে। আমার মাঝে মাঝে দুঃখ হয়, সারা দুনিয়া বাংলাদেশের কাছ থেকে শিখতে চায়। আমাদের গৌরববোধ করতে হয়। তা না করে আমরা এমন কাজ করছি, আমরা যেন পাপের কাজ করে ফেলেছি। এমন অনুভূতি হওয়ার তো কোনো কারণ ছিল না।

তিনি আরো বলেন, আইনের শাসন বলে যে জিনিস সেটা আমরা পাচ্ছি না কোথাও। আমরা এদেশের অংশীদার, আমরা সবাই মিলেই দেশ। আমার অনুরোধ মাহে রমজানের মাসে নিজেদের দিকে তাকিয়ে, নিজ নিজ ভূমিকা পালন করি। আমরা যেটা করতে চাচ্ছিলাম, সেটা করতে পাচ্ছি কি না। না করতে পারলে কীভাবে আমরা প্রতিবাদ জানাব, কীভাবে কথাগুলো শোনাতে পারব, শোনাবার পথ আমরা বের করব। পথ আমাদের বের করতেই হবে। তাছাড়া কোনো উপায় নেই।

এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় নোবেল বিজয়ী একমাত্র বাংলাদেশী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছে আদালত। গতকাল (মঙ্গলবার) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালত শুনানি শেষে এ চার্জশিট গ্রহণ করেন। এ সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে অন্যতম আসামি মো: শাহজাহান আদালতে হাজির না থাকায় আদালত তার জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে আগামী ২ মে। মামলাটি বদলি করে দেয়ায় পরবর্তী শুনানি হবে বিশেষ জজ আদালত-৪ এ।

এর আগে দুপুর পৌনে ১টার দিকে আদালতে আসেন ড. ইউনূসসহ অন্য আসমিরা। চার্জশিটভুক্ত ১৪ আসামি হলেন, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো: শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, অ্যাডভোকেট মো: ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো: কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান ও প্রতিনিধি মো: মাইনুল ইসলাম।

এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। দুদকের অনুমোদিত চার্জশিটে আসামি ছিল ১৩ জন। নতুন করে একজন আসামি যুক্ত হয়েছে। তিনি হলেন গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান।

প্রসঙ্গত: শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে দুদক ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়। সূত্র : দৈনিক ইনকিলাব।