নিউইয়র্ক ০৮:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

মানুষকে আনন্দ দেয়াই ছিল ওর ব্রত

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:১৫:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৩৯ বার পঠিত

মানুষকে আনন্দ দেয়াই যেন ওর ব্রত ছিল। নিজে অসুখী ছিল এটা কখনই প্রকাশ করতে চাইতো না। মানুষকে ভালো রাখবে এটাই ওর ধ্যান-জ্ঞান ছিল। এভাবে কথাগুলো বলছিলেন মৃত্যুর আগে অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করা সারাহ ইসলাম ঐশ্বর্য এর মা স্কুলশিক্ষক শবনম সুলতানা। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো মৃত ব্যক্তির মরণোত্তর কিডনি দান এর মাধ্যমে সারাহ নাম লিখিয়েছেন ইতিহাসে। সারাহ’র মা শবনম সুলতানা বলেন, আমার মেয়ে যে দানশীল, মানবপ্রেমী এটা সবসময়ই বোঝা যেত তার কাজে-কর্মে। যেখানে যেখানে ওকে দরকার সেখানে দৌড়ে যেত। ভলান্টিয়ারের কাজ করতো। কোনো কিছুর বিনিময় চিন্তাটা ও বুঝতেই পারতো না। ওর মধ্যে শুধু প্রেম এবং মানবপ্রেম এটাই ছিল।

সে পশু হোক, ছোট্ট প্রাণী কিংবা মানুষ। বিভিন্ন আন্দোলন, নারী আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে যেত। হাসপাতালে রোগীদের সেবা করেছে। বয়স্ক এক দাদু ছিল ক্যানসার আক্রান্ত। তাকে দেখতে সে ভর্তি অবস্থাতেই খুঁজে বের করেছে। ছোট বাচ্চা পপি হাঁটতে পারতো না। মেরুদণ্ডে সমস্যা ছিল। সে পপিকে নিয়ে হুইলচেয়ারে বসিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে। পপির মন ভালো করতে ১৬ তলায় লিফটে করে দাদুর কাছে নিয়ে যেত। সারাহ্ প্রায়ই অসুস্থ থাকতো। আমি ওকে হাসপাতালে নিয়ে যেতাম। আমি যেহেতু কাজে ব্যস্ত থাকতাম তাই ও আমাকে খুব মিস করতো। যখনই আমায় কাছে পেতো মনে হতো কি যেন একটা পেলো। মায়ের সাহচার্য ও খুব চাইতো। পেশাগত কারণে আমি সারাহকে খুব বেশি সময় দিতে পারিনি। কিন্তু আমি চেষ্টা করতাম ওকে কোয়ালিটি টাইম দিতে। অনেক কথাই বলতো। পরিণতিটা হয়তো ও জানতো। এটা জন্মগত রোগ। কিন্তু ১০ মাস বয়সে টিউবেরাস সেক্লারোসিস নামক খুব জটিল এই রোগটি ধরা পড়ে। এই রোগ ভালো করার কোনো চিকিৎসা এখনও উদ্ভাবন হয়নি। ফলে যন্ত্রণাদায়ক এই রোগের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হতো তাকে।
তারপরও নিজের ভালো লাগার কাজগুলো করতে করতে ঠিকই এগিয়ে যাচ্ছিল। তিনি বলেন, সারাহ বলতো মা আমার ব্রেইনটা তুমি গবেষণার জন্য দিয়ে দিয়ো। আমাকে যখন চিকিৎসকরা বলেন ওর তো ব্রেইন ডেড হয়ে গেছে। ওর আর কিছু করার সুযোগ নেই। তখন আমি মুহূর্ত দেরি করিনি। এক সেকেন্ডর মধ্যে কিডনি দানের কথা জানিয়ে দেই। চিকিৎসকরা ভয়ে ছিল কীভাবে বলি এটা ভেবে। ওনারা দু’-তিনদিন আগে থেকেই ভেবেছিলেন বিষয়টি কীভাবে উপস্থাপন করবেন। আমি বলেছি নিশ্চয়ই নেবেন। পরে আমার বোন চিকিৎসক সেতারা বিনতে কাশেম বলেন, কর্নিয়াও দেয়া যায়। তখন আমি সঙ্গে সঙ্গে লুফে নিয়ে বললাম, আমি আমার মেয়ের কর্নিয়াও দিতে চাই। আমি নিজে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে সন্ধানীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলি। সারাহর মা বলেন, তখন ডা. সজীব বিএসএমএমইউ’তে আইসিইউ’র চিকিৎসক ও কাউন্সিলর। জানালেন সন্ধানীর সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি খুব খুশী হলাম। দু’টো কর্নিয়া এবং কিডনির মাধ্যমে আমার বাচ্চা সারাজীবন বেঁচে থাকবে। মা শবনম বলেন, মেয়ের সঙ্গে শেষ কথা বলার সুযোগ হয়নি। তখন সে তার কষ্ট, ব্যথা-বমি এসব বলেছে। বিএসএমএমইউ’তে ওর অপারেশনটা ভালো হয়েছিল। এরপর একদিন ভালো ছিল। তখন অনেক মজা করেছিল। বলেছিল, সুস্থ হয়ে যদি বাসায় ফিরে যায় তখন এটা করবে ওটা করবে। ওর মাছগুলোকে খাবার দিবে। ছোটখাটো বিষয়গুলো ওর নজর এড়াতো না। ছোট্ট প্রাণী মাছ ওটাকে কীভাবে ভালো রাখা যায় সেক্ষেত্রে ও সচেষ্ট ছিল। শবনম সুলতানা বলেন, এ রকম রোগীরা সাধারণ ৫০-৬০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। আমিও নিশ্চয়ই আশা করতাম আমার বাচ্চা অনেক দিন বাঁচবে। সারাহ’র সহপাঠী মৃত্তিকা সুমন শ্রেয়া বলেন, এক বছর আগে ওর সঙ্গে আমার পরিচয় চারুকলায় কোচিং করতে গিয়ে। ও খুব ভালো ছবি আঁকতো। প্রথম সেমিস্টারে ক্লাস করার পর আর পড়তে পারেনি। অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওর মুখমণ্ডলে, কিডনিতে, ব্রেইনে এবং ফুসফুসে টিউবেরাস সেক্লরোসিস এর কারণে সৃষ্ট টিউমার এর জন্য মাথায় প্রচণ্ড ব্যথা হতো। তখন সহ্য করতে পারতো না। জ্ঞান হারিয়ে ফেলতো। কয়েকদিন আগে ওর অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। কোচিং এ নিয়মিত ক্লাস করতে পারতো না। সম্প্রতি হঠাৎ করে রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাথার টিউমার এর ব্যথা ও সহ্য করতে পারতো না।

সম্প্রতি ওর মাথায় সার্জারির জন্য অপেক্ষা করছিল। এরপর ওকে দেখতে হাসপাতালে যখন যাই তখন লাইফ সাপোর্টে ছিল। চিকিৎসকরা জানান- ওর আর ফেরার সম্ভাবনা নেই। জানা গেছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে সারাহ্ই প্রথম মরণোত্তর কিডনি দাতা। কিডনি প্রতিস্থাপন যেহেতু একটি জটিল প্রক্রিয়া। যাদেরকে কিডনি এবং কর্নিয়া দেয়া হয়েছে তারা এখন পর্যন্ত ভালো আছেন। কর্নিয়া দু’টো সাথে সাথে একজন নারী এবং পুরুষকে দেয়া হয়েছে। তাদের একজনের বয়স ৫৬ আরেক জনের বয়স ৩০। কিডনি যাদের দেয়া হয়েছে তারা দু’জনই নারী। তাদের একজনের বয়স ৩৪ এবং ৩৭ বছর। দু’টি কিডনির মধ্যে বাম কিডনি ৩৪ বছর বয়সী শামীমা আক্তারের দেহে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিডনি অপারেশন থিয়েটারে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। একই সঙ্গে ডান কিডনিটি মিরপুরের কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগী হাসিনার দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। সব মিলিয়ে ছয় ঘণ্টা সময় লেগেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এ ছাড়া কিডনি দু’টি প্রতিস্থাপনের পর দু’টি কর্নিয়া সংরক্ষিত করা হয়। দু’টি কর্নিয়ার একটি বিএসএমএমইউতে অন্যটি সন্ধানী আই হাসপাতালে প্রতিস্থাপন করা হয়। সুজন মিয়া (৩০) ও ফেরদৌসী আক্তার (৫৬) নামে দু’জন দু’টি কর্নিয়া পেয়েছেন। অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি এবং হলি ক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর সারাহ ভর্তি হয়েছিল ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের ইউডা’তে (ফাইনআর্টস) চারুকলা বিভাগে। সারাহ’র মা পেশাগতভাবে শিশু একাডেমির ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ কোর্স এর একজন শিক্ষক। এছাড়া রাপা প্লাজায় প্রধানমন্ত্রী জয়িতা ফুডকোর্ট নামে একটি ক্যাফে রয়েছে তার। দুই ছেলে মেয়ের মধ্যে সারাহ ছিল বড়। ছোট ছেলে রিয়াসাদ ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছুক। সূত্র : মানবজমিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

মানুষকে আনন্দ দেয়াই ছিল ওর ব্রত

প্রকাশের সময় : ০৪:১৫:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৩

মানুষকে আনন্দ দেয়াই যেন ওর ব্রত ছিল। নিজে অসুখী ছিল এটা কখনই প্রকাশ করতে চাইতো না। মানুষকে ভালো রাখবে এটাই ওর ধ্যান-জ্ঞান ছিল। এভাবে কথাগুলো বলছিলেন মৃত্যুর আগে অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করা সারাহ ইসলাম ঐশ্বর্য এর মা স্কুলশিক্ষক শবনম সুলতানা। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো মৃত ব্যক্তির মরণোত্তর কিডনি দান এর মাধ্যমে সারাহ নাম লিখিয়েছেন ইতিহাসে। সারাহ’র মা শবনম সুলতানা বলেন, আমার মেয়ে যে দানশীল, মানবপ্রেমী এটা সবসময়ই বোঝা যেত তার কাজে-কর্মে। যেখানে যেখানে ওকে দরকার সেখানে দৌড়ে যেত। ভলান্টিয়ারের কাজ করতো। কোনো কিছুর বিনিময় চিন্তাটা ও বুঝতেই পারতো না। ওর মধ্যে শুধু প্রেম এবং মানবপ্রেম এটাই ছিল।

সে পশু হোক, ছোট্ট প্রাণী কিংবা মানুষ। বিভিন্ন আন্দোলন, নারী আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে যেত। হাসপাতালে রোগীদের সেবা করেছে। বয়স্ক এক দাদু ছিল ক্যানসার আক্রান্ত। তাকে দেখতে সে ভর্তি অবস্থাতেই খুঁজে বের করেছে। ছোট বাচ্চা পপি হাঁটতে পারতো না। মেরুদণ্ডে সমস্যা ছিল। সে পপিকে নিয়ে হুইলচেয়ারে বসিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে। পপির মন ভালো করতে ১৬ তলায় লিফটে করে দাদুর কাছে নিয়ে যেত। সারাহ্ প্রায়ই অসুস্থ থাকতো। আমি ওকে হাসপাতালে নিয়ে যেতাম। আমি যেহেতু কাজে ব্যস্ত থাকতাম তাই ও আমাকে খুব মিস করতো। যখনই আমায় কাছে পেতো মনে হতো কি যেন একটা পেলো। মায়ের সাহচার্য ও খুব চাইতো। পেশাগত কারণে আমি সারাহকে খুব বেশি সময় দিতে পারিনি। কিন্তু আমি চেষ্টা করতাম ওকে কোয়ালিটি টাইম দিতে। অনেক কথাই বলতো। পরিণতিটা হয়তো ও জানতো। এটা জন্মগত রোগ। কিন্তু ১০ মাস বয়সে টিউবেরাস সেক্লারোসিস নামক খুব জটিল এই রোগটি ধরা পড়ে। এই রোগ ভালো করার কোনো চিকিৎসা এখনও উদ্ভাবন হয়নি। ফলে যন্ত্রণাদায়ক এই রোগের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হতো তাকে।
তারপরও নিজের ভালো লাগার কাজগুলো করতে করতে ঠিকই এগিয়ে যাচ্ছিল। তিনি বলেন, সারাহ বলতো মা আমার ব্রেইনটা তুমি গবেষণার জন্য দিয়ে দিয়ো। আমাকে যখন চিকিৎসকরা বলেন ওর তো ব্রেইন ডেড হয়ে গেছে। ওর আর কিছু করার সুযোগ নেই। তখন আমি মুহূর্ত দেরি করিনি। এক সেকেন্ডর মধ্যে কিডনি দানের কথা জানিয়ে দেই। চিকিৎসকরা ভয়ে ছিল কীভাবে বলি এটা ভেবে। ওনারা দু’-তিনদিন আগে থেকেই ভেবেছিলেন বিষয়টি কীভাবে উপস্থাপন করবেন। আমি বলেছি নিশ্চয়ই নেবেন। পরে আমার বোন চিকিৎসক সেতারা বিনতে কাশেম বলেন, কর্নিয়াও দেয়া যায়। তখন আমি সঙ্গে সঙ্গে লুফে নিয়ে বললাম, আমি আমার মেয়ের কর্নিয়াও দিতে চাই। আমি নিজে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে সন্ধানীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলি। সারাহর মা বলেন, তখন ডা. সজীব বিএসএমএমইউ’তে আইসিইউ’র চিকিৎসক ও কাউন্সিলর। জানালেন সন্ধানীর সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি খুব খুশী হলাম। দু’টো কর্নিয়া এবং কিডনির মাধ্যমে আমার বাচ্চা সারাজীবন বেঁচে থাকবে। মা শবনম বলেন, মেয়ের সঙ্গে শেষ কথা বলার সুযোগ হয়নি। তখন সে তার কষ্ট, ব্যথা-বমি এসব বলেছে। বিএসএমএমইউ’তে ওর অপারেশনটা ভালো হয়েছিল। এরপর একদিন ভালো ছিল। তখন অনেক মজা করেছিল। বলেছিল, সুস্থ হয়ে যদি বাসায় ফিরে যায় তখন এটা করবে ওটা করবে। ওর মাছগুলোকে খাবার দিবে। ছোটখাটো বিষয়গুলো ওর নজর এড়াতো না। ছোট্ট প্রাণী মাছ ওটাকে কীভাবে ভালো রাখা যায় সেক্ষেত্রে ও সচেষ্ট ছিল। শবনম সুলতানা বলেন, এ রকম রোগীরা সাধারণ ৫০-৬০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। আমিও নিশ্চয়ই আশা করতাম আমার বাচ্চা অনেক দিন বাঁচবে। সারাহ’র সহপাঠী মৃত্তিকা সুমন শ্রেয়া বলেন, এক বছর আগে ওর সঙ্গে আমার পরিচয় চারুকলায় কোচিং করতে গিয়ে। ও খুব ভালো ছবি আঁকতো। প্রথম সেমিস্টারে ক্লাস করার পর আর পড়তে পারেনি। অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওর মুখমণ্ডলে, কিডনিতে, ব্রেইনে এবং ফুসফুসে টিউবেরাস সেক্লরোসিস এর কারণে সৃষ্ট টিউমার এর জন্য মাথায় প্রচণ্ড ব্যথা হতো। তখন সহ্য করতে পারতো না। জ্ঞান হারিয়ে ফেলতো। কয়েকদিন আগে ওর অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। কোচিং এ নিয়মিত ক্লাস করতে পারতো না। সম্প্রতি হঠাৎ করে রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাথার টিউমার এর ব্যথা ও সহ্য করতে পারতো না।

সম্প্রতি ওর মাথায় সার্জারির জন্য অপেক্ষা করছিল। এরপর ওকে দেখতে হাসপাতালে যখন যাই তখন লাইফ সাপোর্টে ছিল। চিকিৎসকরা জানান- ওর আর ফেরার সম্ভাবনা নেই। জানা গেছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে সারাহ্ই প্রথম মরণোত্তর কিডনি দাতা। কিডনি প্রতিস্থাপন যেহেতু একটি জটিল প্রক্রিয়া। যাদেরকে কিডনি এবং কর্নিয়া দেয়া হয়েছে তারা এখন পর্যন্ত ভালো আছেন। কর্নিয়া দু’টো সাথে সাথে একজন নারী এবং পুরুষকে দেয়া হয়েছে। তাদের একজনের বয়স ৫৬ আরেক জনের বয়স ৩০। কিডনি যাদের দেয়া হয়েছে তারা দু’জনই নারী। তাদের একজনের বয়স ৩৪ এবং ৩৭ বছর। দু’টি কিডনির মধ্যে বাম কিডনি ৩৪ বছর বয়সী শামীমা আক্তারের দেহে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিডনি অপারেশন থিয়েটারে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। একই সঙ্গে ডান কিডনিটি মিরপুরের কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগী হাসিনার দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। সব মিলিয়ে ছয় ঘণ্টা সময় লেগেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এ ছাড়া কিডনি দু’টি প্রতিস্থাপনের পর দু’টি কর্নিয়া সংরক্ষিত করা হয়। দু’টি কর্নিয়ার একটি বিএসএমএমইউতে অন্যটি সন্ধানী আই হাসপাতালে প্রতিস্থাপন করা হয়। সুজন মিয়া (৩০) ও ফেরদৌসী আক্তার (৫৬) নামে দু’জন দু’টি কর্নিয়া পেয়েছেন। অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি এবং হলি ক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর সারাহ ভর্তি হয়েছিল ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের ইউডা’তে (ফাইনআর্টস) চারুকলা বিভাগে। সারাহ’র মা পেশাগতভাবে শিশু একাডেমির ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ কোর্স এর একজন শিক্ষক। এছাড়া রাপা প্লাজায় প্রধানমন্ত্রী জয়িতা ফুডকোর্ট নামে একটি ক্যাফে রয়েছে তার। দুই ছেলে মেয়ের মধ্যে সারাহ ছিল বড়। ছোট ছেলে রিয়াসাদ ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছুক। সূত্র : মানবজমিন