বিএনপির ঘুরে দাঁড়ানোর কাউন্সিল : পরিসর বাড়বে, সাংগঠনিক কাঠামোতে পরিবর্তন, যোগ দিচ্ছেন চার বিদেশি অতিথি
- প্রকাশের সময় : ০৭:৪১:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ মার্চ ২০১৬
- / ৬৯১ বার পঠিত
ঢাকা: ঘুরে দাঁড়ানোর কাউন্সিল বিএনপির। ওয়ান-ইলেভেনের জরুরি আমলে সৃষ্ট বিপর্যয়ের মধ্যে এখনো ঘুরপাক খাচ্ছে দলটির রাজনীতি। উত্তরণের চেয়ে উল্টো সে বিপর্যয় জটিলতর হয়ে ওঠেছে বর্তমান সরকারের কঠোর মনোভাব ও বৈশ্বিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে। ফলে দেশের রাজনৈতিক স্রোতধারায় প্রতিকূল পরিস্থিতি ঠেলে চলছে বিএনপি। সরকার ও প্রশাসনের নির্যাতনে-নিপীড়নে ঝিমিয়ে পড়া দলটি এবার কাউন্সিলের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে চায়। তাই নানামুখী প্রতিকূলতা এড়িয়ে কৌশলে কাউন্সিল সফল করার সব রকমের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে দলটির তরফে। এবারের কাউন্সিলের প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘দুর্নীতি দুঃশাসন হবেই শেষ, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ’। বিএনপির সকল অঙ্গ-সংগঠনের প্রতিপাদ্যগুলোও বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় পরিবর্তনের ইঙ্গিতময় শ্লোগান বেছে নিয়েছে যুবদল, মুক্তিযোদ্ধা দল, মহিলা দল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও জাসাস। প্রতিপাদ্যগুলো বিশ্লেষণ করলেও দেখা যায়, বিএনপি নিজেদের ঘুরে দাঁড়ানো ও দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনাকে আসন্ন কাউন্সিলে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে।
সম্প্রতি এক আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম বলেছেন, কাউন্সিলের পর বিএনপি আবার সরকারকে হটানোর আন্দোলনে নামতে চায়। কাউন্সিলের পর বিএনপি মাঠে নামতে চায় দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে। অন্যদিকে দেশ গঠনের ইঙ্গিত রয়েছে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল, শ্রমিক দল, ছাত্রদল, তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দল, ওলামা দলের তাদের শ্লোগানে। বিএনপিকে অল্প সময়ের মধ্যে দেশে জনপ্রিয়তা দিয়েছিল জিয়াউর রহমানের ক্যারিশমেটিক নেতৃত্ব ও সততা। খালেদা জিয়ার আপসহীন মনোভাব দলকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি রাষ্ট্রক্ষমতায় এনেছে তিনবার। বর্তমান বিপর্যয় কাটিয়ে আগামী দিনে আরও শক্তিশালী বিএনপি গড়ার প্রত্যয়ে আয়োজন করা হচ্ছে এবারের কাউন্সিল। বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা বলেছেন, বিএনপির রাজনৈতিক দর্শন প্রচার ও আন্দোলনের পক্ষে জনমত গঠন, বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত আসবে এবারের কাউন্সিলে। রাজনীতিতে আদর্শিক চর্চার অনুপস্থিতির কারণে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায়ও বিএনপি চরম অবহেলা ও উদাসীনতা দেখিয়েছে সেটা কাটিয়ে ওঠার নির্দেশনা থাকবে। দলের নেতাদের মধ্যে আদর্শিক চর্চা বাড়ানোর ওপর দেয়া হবে জোর। বিশেষ করে বর্তমান বৈশ্বিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনায় নানা পরিবর্তন আসবে দলের নীতিগত অবস্থানে। এদিকে দেশে ভারসাম্যপূর্ণ রাজনীতি দেখতে চায় এমন জনগণের মধ্যেও বিএনপির এই কাউন্সিল তৈরি করেছে আগ্রহ। নানা কারণে বর্তমান রাজনৈতিক স্রোতধারায় কিছুটা পিছিয়ে পড়া বিএনপি ঘুরে দাঁড়িয়ে দেশের মধ্যে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক চর্চায় ভারসাম্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অবস্থান সৃষ্টি করবে এ প্রত্যাশা তাদের।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্ম ১৯ জানুয়ারি। তার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপির মূলভিত্তি ১৯ দফা। নীতি-নির্ধারক ফোরামের সদস্য সংখ্যা ১৯। আর এই ১৯ সংখ্যাটিকে শুভ ধরেই ষষ্ঠ কাউন্সিলের আয়োজন করা হয়েছে ১৯ মার্চ। সাংগঠনিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। গঠনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে আনা হয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের প্রস্তাব। বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে প্রস্তাবগুলো প্রাথমিক অনুমোদন পাওয়ার পর আজকের কাউন্সিলের রুদ্ধদ্বার পর্বে অনুমোদন পাবে সেগুলো। পরিবর্তনগুলোর কয়েকটি বিএনপির রাজনীতির জন্য একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে হতে পারে। বিশেষ করে ‘এক নেতা এক পদ নীতি।’ দীর্ঘদিন ধরে দলের কেন্দ্রীয় ও মাঝারি সারির এক একজন নেতা আঁকড়ে রেখেছিলেন ২ থেকে ৫টি পদ। এটাই হয়ে ওঠেছিল রেওয়াজ। যা একদিকে নতুন নেতৃত্ব বিকাশে প্রতিবন্ধক অন্যদিকে গ্রুপিং কোন্দলের সৃষ্টি করে দলে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সাংগঠনিক কর্মকান্ড ও আন্দোলন কর্মসূচিতে। তৃণমূল নেতাকর্মীদের অব্যাহত দাবির মুখে অবশেষে ‘এক নেতা এক পদ’ নীতিতে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। এর মাধ্যমে জেলা পর্যায়ের কয়েকশ’ নেতার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের পথ খুলে যাবে।
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর রমনা গ্রিনে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠন করেন। তার মৃত্যুর পর ১৯৮৪ সালে তার সহধর্মিণী খালেদা জিয়া বিএনপির হাল ধরার পর থেকে টানা ৩২ বছর বিএনপির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন তিনি। ইতিমধ্যে নতুন মেয়াদের জন্যও তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। এবারের কাউন্সিলে চেয়ারপারসনের পাশাপাশি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়েছে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদ। যা ওই পদের নেতৃত্বকে আরও মর্যাদা দেবে। বিএনপি এখন বিরোধী দলের রাজনীতি করছে। ফলে বেশি সংখ্যক নেতাকে পদায়নের মাধ্যমে ঐক্য ধরে রাখার লক্ষ্যে জাতীয় নির্বাহী কমিটির পরিসর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক, সহ-সাংগঠনিক ও বিভিন্ন সম্পাদকীয় পদের সংখ্যা বাড়ানোর কারণে একই সঙ্গে নেতৃত্ব ও জবাবদিহিতার আওতায় আসছেন অনেক নেতা।
দলের আন্তর্জাতিক সম্পাদকদের মহাদেশ বা অঞ্চলভিত্তিক দায়িত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। এতে বিদেশে বিএনপির প্রবাস শাখাগুলো সক্রিয় ভূমিকা রাখার পাশাপাশি লবিংয়ে জোর দিতে পারবে। এক সময় বিএনপি ছিল নানামতের আদর্শে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল থেকে আসা নেতাকর্মীদের একটি প্লাটফর্ম। কিন্তু জাতীয়তাবাদী আর্দশের কর্মী হিসেবে যারা রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছেন তাদের অনেকেই এখন প্রবীণ। দলের গ্রুপিং-কোন্দল ও বিশ্বাস-অবিশ্বাসের ঘটনাপরম্পরায় জাতীয়তাবাদী আদর্শের কর্মী হিসেবে রাজনীতি শুরু করা নেতাদের নেতৃত্বের সামনে আনার দাবিটি তৃণমূলের দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে শারীরিকভাবে সমর্থ তরুণদের ব্যাপারে এ দাবি ছিল জোরালো। সাম্প্রতিক একাধিক মতবিনিময় সভায় খোদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও এ ব্যাপারে তার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘বয়স্ক নেতারা দলের জন্য অনেক অবদান রেখেছেন। তারা এবার উপদেষ্টার আসনে বসবেন। ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের অনেকেই এখন দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের যোগ্য। এবার তারা সামনে আসবেন।’ নতুন কমিটি গঠনে এ নীতি অবলম্বন করা হলে অঙ্গসংগঠনগুলোর হতাশাগ্রস্ত সাবেক নেতাদের মধ্যে ফিরে আসার সম্ভাবনা দেখছেন বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। ওয়ান-ইলেভেনের জরুরি আমলে শুরু হওয়া রাজনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যেই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে বিএনপির রাজনীতি। নেতৃত্ব নির্বাচনের ভুল স্বীকার করে দলের সিনিয়র নেতারাই নানা সময়ে বক্তব্য দিয়েছেন। স্বচ্ছ ও ত্যাগি নেতাদের সামনে আনার একটি আলোচনা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বিষয়টির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সিনিয়র নেতাদের জানিয়েছেন, প্রয়োজনে সময় নিয়ে কমিটি গঠন করা হবে। বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা জানিয়েছেন, এবারের কাউন্সিলে বিএনপির গঠনতন্ত্রে বেশ কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনা হবে। বিষয় ও মন্ত্রণালয়ভিত্তিক কমিটিগুলোর মধ্যে থাকছে- পররাষ্ট্র, আইনশৃঙ্খলা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি, যোগাযোগ, সুশাসন, পানি, পরিবেশ ও বন, বিদ্যুৎ ও খনিজসম্পদ, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি, স্থানীয় সরকার ও সমবায়, প্রতিরক্ষা, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ, নির্বাচন কমিশন, উপজাতি ও সংখ্যালঘু এবং নারী বিষয়ক। প্রতিটি কমিটিতে নির্বাহী কমিটির সম্পাদক মর্যাদার একজন করে সম্পাদক থাকবেন। বিষয়ভিত্তিক কমিটিতে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতাদের প্রাধান্য থাকবে। গুলশান কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের পাশাপাশি কমিউনিকেশন নামে পৃথক একটি বিভাগ থাকবে। কমিউনিকেশন বিভাগের অধীনে থাকবে ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও সোশ্যাল মিডিয়া। দলের গঠনতন্ত্র ও নির্বাচন কমিশনের বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী ২০১৩ সালেই বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে সে কাউন্সিলের প্রস্তুতিও নিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু সরকার ও প্রশাসনের প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। যার প্রমাণ হিসেবে এবারের কাউন্সিলে বিএনপি ব্যবহার করছে ২০১৩ সালে তৈরি করা লোগোসহ টিশার্ট। এবারের কাউন্সিল নিয়েও কম প্রতিবন্ধকতা পার হতে হয়নি বিএনপিকে।
কাউন্সিলের ভেন্যুর জন্য তিনটি স্থানের অনুমতি চেয়েছিল দলটি। কিন্তু সে অনুমতি পেয়েছে একেবারেই শেষ মুহূর্তে। বিএনপির কাউন্সিলের জন্য প্রয়োজনীয় স্থানের তুলনায় অনুমতি পাওয়া ভেন্যুর পরিসর অনেক ছোট। ভেন্যুর অনুমতি জটিলতার কারণে পর্যাপ্ত সময় হাতে রেখে দাওয়াত দিতে পারেনি বিদেশী অতিথিদের। অনুমতি ও নিরাপত্তাজনিত নানা শঙ্কার মধ্যেও ঠান্ডা মাথায় কাউন্সিল আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছে দলটির নেতারা। এছাড়া কাউন্সিলকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে স্থগিত করা হয়েছে দলের জেলা কমিটির পুনর্গঠনের উদ্যোগ। এমনকি প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনের প্রচারণায়ও জোর দেয়নি তারা। কাউন্সিলকে বিএনপি এতটাই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে যে, কাউন্সিল আয়োজন সফল করতে সরকারের সার্বিক সহযোগিতা চাইতেও দ্বিধা করেন দলটি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্র ও অধিকার ফিরিয়ে আনতে এবং দেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে নি:সন্দেহে একটা ইতিবাচক ভূমিকা পালন রাখবে কাউন্সিল। এটাই আমাদের প্রত্যাশা। কাউন্সিল সফল করতে সরকার সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবে এ প্রত্যাশা করছি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আরও বলেছেন, কাউন্সিল নিয়ে সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এ কাউন্সিলের মাধ্যমেই আবার জেগে উঠবে নেতাকর্মীরা। তাছাড়া এ কাউন্সিল দেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে- সে ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত। শুক্রবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ বলেছেন, বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল একটি যুগান্তকারী রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে ইতিহাসে স্থান পাবে। এই কাউন্সিলের পর বিএনপি আরও এক ধাপ শক্তিশালী সংগঠন হয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
বিএনপির কাউন্সিলে যোগ দেবেন ৪ বিদেশী অতিথি: বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে যোগ দেবেন ৪ বিদেশী অতিথি। এর মধ্যে দু’জন হলেন বৃটিশ এমপি। বাকি দুজন হলেন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো সিটির অলডারম্যান ও ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা। এই চার বিদেশী ডেলিগেট কাউন্সিলে যোগ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিএনপি। এছাড়া ঢাকায় বিভিন্ন দূতাবাসে নিযুক্ত সর্বাধিক সংখ্যক বিদেশী কূটনীতিক কাউন্সিলে অংশ নেবে বলে জানিয়েছে দলটি। তবে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চীন থেকে কতজন অতিথি যোগ দেবেন তা নিশ্চিত করতে পারেনি দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। কাউন্সিল প্রস্তুতির আন্তর্জাতিক উপ কমিটির আহ্বায়ক শফিক রেহমান বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে দুজন এমপি কাউন্সিলে যোগ দেবেন। এর মধ্যে একজন হলেন- বৃটিশ স্বতন্ত্র এমপি মি. সায়মন ড্যানজাক। তিনি বুধবার (১৬ মার্চ) বিকালেই ঢাকায় পৌঁছেছেন। আরেকজন হলেন- লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির এমপি ফিলিপ বেনিয়ন। তিনি শনিবার ভোরে ঢাকায় এসে পৌঁছাবেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুজন অতিথি কাউন্সিলে অংশ নেবেন। তারা হলেন- শিকাগো সিটির অলডারম্যান মি. যোসেফ মোর ও ডেমোক্রেটির পার্টির নেতা বারবারা মোর। তারা দু’জনই রাতে ঢাকায় পৌঁছান। শিকাগোতে একটি রাস্তার নাম ‘জিয়াউর রহমান ওয়ে’ করা হয়েছিল অলডারম্যান যোসেফ মোরের উদ্যোগেই। ভারত কিংবা চীন থেকে কোন অতিথি আসবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কোন তথ্য নেই। তবে শুনেছি- ভারতের কয়েকজন এমপি ভিসা পাননি। এছাড়া সময়মতো কাউন্সিলের ভেন্যুর অনুমতি না পাওয়ায় বিদেশী অতিথিদের যথাসময়ে আমন্ত্রণ জানাতে পারিনি। সময় স্বল্পতার জন্য অনেক অতিথি আসতে পারেননি বলে আমাদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। ৬ বৃটিশ এমপির ভিসা না পাওয়ার বিষয়ে প্রবীণ এই সাংবাদিক বলেন, এই বিষয়টি সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।
কাউন্সিলে অংশ নিতে পারছেন না মির্জা আব্বাস: দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে অংশ নিতে পারছেন না স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। কারাগারে আটককৃত এই নেতার জামিন হলেও শেষ পর্যন্ত তা স্থগিত হওয়ায় তিনি কাউন্সিলে অংশ নিতে পারছেন না। তবে কাউন্সিলকে সফল করার লক্ষ্যে মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস বেশ কিছুদিন থেকেই পুরোদমে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজনৈতিক মামলায় আটকৃত মির্জা আব্বাস গত সপ্তাহে জামিন পেলেও হঠাৎ করে তা স্থগিত হওয়ার খবরে নেতাকর্মীদের মধ্যে নানা রকম গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে জামিন স্থগিতের কারণ নিয়ে। ৫ম জাতীয় কাউন্সিলে মির্জা আব্বাস ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। পরে তার অনুপস্থিতিতে যার দায়িত্ব পালন করেন স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।(দৈনিক মানবজমিন)