বাইডেনের সঙ্গে ‘সেলফি’ প্রসঙ্গে যা বললেন ফখরুল
- প্রকাশের সময় : ১২:৩৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ৭৪ বার পঠিত
বাংলাদেশ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে শেখ হাসিনার ‘সেলফি’ এই সরকারকে রক্ষা করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তোলা সেলফি প্রসঙ্গ টেনে আজ রবিবার দুপুরে এক আলোচনাসভায় বিএনপির মহাসচিব এই মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এত ব্যানক্রাফট, এত দেউলিয়া, এত নিঃস্ব হয়ে গেছেন আপনারা যে বাইডেনের সঙ্গে একটা সেলফি তুলে এখন ঢাকঢোল পেটাচ্ছেন- আহা আমরা জিতে গেছি। জেতাবে তো বাংলাদেশের মানুষ ভোটের মাধ্যমে।
সেই ভোটটা ঠিকমতো হওয়ার ব্যবস্থা করেন। তা না হলে কোনো বাইডেনেই আপনাদের রক্ষা করতে পারবে না, সেলফিও রক্ষা করতে পারবে না। খুব পরিষ্কার কথা।’ তিনি আরো বলেন, ‘ভারতে গিয়ে যে সমস্ত কথা-বার্তা বলেছেন, যেখানেই যান, বাইডেনের যত ছবি দেখাতে চান। যদি জনগণ ভোট দিতে না পারে তাহলে তারা কখনো আপনাদেরকে ক্ষমা করবে না, আপনারা ক্ষমতায় টিকেও থাকতে পারবেন না। আমাদের এই জাতির দুর্ভাগ্য কী জানেন? আমরা বেসিক জায়গায় কেউ যাই না, সেলফির মতো ইস্যুতে যাই। ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন নাকি, ফখরুল এখন কী বলবেন? আমি বলি, এখন আমার পরামর্শটা আপনি নেবেন। সেলফির এই ছবিটা বাঁধিয়ে ওইটা গলার মধ্যে ঝুলিয়ে ঘুরে বেড়ান।
এটা আপনাদেরকে যথেষ্ট সাহায্য করবে, বোঝানোর চেষ্টা করুন, আমেরিকার বাইডেন আমাদের সাথে আছেন।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আপনার প্রধানমন্ত্রী কয়েক দিন আগে কী বলেছেন? তিনি বললেন যে আমেরিকা এখন বলছে যে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ নাকি তাদেরকে নিয়ে দেওয়ার জন্য। যেহেতু এই দ্বীপ দিচ্ছেন না সে জন্য নাকি আমেরিকা তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়। প্রধানমন্ত্রী নিজে প্রেস কনফারেন্সে বলেছেন। এখন এই সেলফি দেখে কী বুঝব আমরা, আপনারা সেন্ট মার্টিন দ্বীপ দিয়ে দিয়েছেন?’ তিনি বলেন, ‘এটা যুক্তরাষ্ট্র।
র্যাবের ওপর স্যাংশন উঠে যায়নি সেলফির জন্য, ভিসানীতির পরিবর্তন হয়নি, তার জন্য আবার নতুন ডেমোক্রেসি কনভেনশন ডেকে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সুতরাং ভেবে-চিন্তে কথা বলবেন। কথাগুলো আপনারা বলেন, ভেবে-চিন্তে বলেন না।’ বাইডেন বা আমেরিকা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খুব পরিষ্কার করে বলেছেন, তারা বাংলাদেশে একটা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। তারা বলেছেন, আমরা এখানে একটা সকল দলের অংশগ্রহণে ভালো নির্বাচন দেখতে চাই, যেটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এটা শুধু আমেরিকা নয়, সমগ্র গণতান্ত্রিক বিশ্ব বলছে। আমরা এটাকে গুরুত্ব দিই। তার অর্থ এই নয় যে আমরা শুধু ওটাকেই গুরুত্ব দিই।’
আমরা আমাদের জনগণের মতামতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনগণ পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছে- যথেষ্ট হয়েছে, অনেক লুট করেছ, অনেক নির্যাতন করেছ, অনেক নিপীড়ন করেছ, অনেক ধ্বংস করেছ, মানুষ হত্যা করেছ, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিনাদোষে আটক করে আজকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছ, তারেক রহমানকে সাজানো মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসিত করে রেখেছ- দয়া করে এখন বিদায় হও। তা না হলে দেশের সকল রাজনৈতিক দল এক হয়েছে- তারা পরিষ্কার ভাষায় বলেছে, পদত্যাগ করুন, সংসদ বিলুপ্ত করুন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদ এই আলোচনাসভার আয়োজন করে। ২০০৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম সাইফুর রহমান মারা যান। দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি তৈরি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনীতির সফল বাস্তবায়নে এম সাইফুর রহমানের নানা সৃজনশীল পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদের সভাপতি প্রয়াত সাইফুর রহমানের ছেলে এম নাসের রহমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব সিলেট মহানগরের সভাপতি এম কাইয়ুম চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনাসভায় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার, সাখাওয়াত হোসেন জীবন বক্তব্য দেন। সূত্র : কালের কণ্ঠ
বেলী/হককথা