নিউইয়র্ক ০৬:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বাংলাদেশ : এক বছরে ৬ হাজার দুর্ঘটনা : নিহত ৯ হাজার : আহত ১৮ হাজার

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৫৩:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল ২০১৫
  • / ৭৫৮ বার পঠিত

ঢাকা: গত এক বছরে সারাদেশে প্রায় ৬ হাজার দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে প্রায় ৯ হাজার মানুষ। এসব ঘটনায় আহতর সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার। যানবাহনের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এরপর রয়েছে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও বাস। বৃহস্পতিবার ২ এপ্রিল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। দেশের ১০টি জাতীয় ও ৫টি স্থানীয় দৈনিক সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেলসমূহে প্রচারিত সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদসমূহ বছরজুড়ে মনিটরিং করে এ রিপোর্ট প্রকাশ করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল।
রিপোর্টে সমিতির পক্ষ থেকে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ চিহ্নিত ও দুর্ঘটনা রোধের জন্য কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে, গত বছরের জানুয়ারী থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ বছরে ৫ হাজার ৯২৮টি ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। মোট ২৬ হাজার ১১২ জন যাত্রী, চালক ও পরিবহন শ্রমিক এই সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। নিহত হয়েছে ৮ হাজার ৫৮৯ জন। আহত হয়েছে ১৭ হাজার ৫২৩ জন। এর মধ্যে হাত-বা পা হারিয়েছে বা অন্য কোনো অঙ্গ হারিয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়েছে ১ হাজার ৬২৩ জন। এসব দুর্ঘটনার সিংহভাগ পরিবার একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে দরিদ্রের চরম পর্যায়ে নেমে এসেছে। একই সময়ে সরকারি হিসেবে প্রায় ২ হাজার ৩শ’টি সড়ক দুর্ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ সময় ১ হাজার ২৬৬টি বাস, ১ হাজার ৪১৩টি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৭১২টি হিউম্যান হলার। ৩৯০টি কার-জিপ-মাইক্রোবাস, ১ হাজার ২৩১টি অটোরিকশা, ১ হাজার ৪৬৮টি মোটরসাইকেল, ১ হাজার ১৭৩টি ব্যাটারীচালিত রিকশা, ১ হাজার ৬৯টি নছিমন করিমন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এতে ১ হাজার ২৫৬ জন ছাত্র-ছাত্রী, ১৫৬ জন শিক্ষক, ৬৮ জন সাংবাদিক, ৬৩ জন ডাক্তার, ৯০ জন আইনজীবী, ৬৩ জন ইঞ্জিনিয়ার, ২১৫ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য (পুলিশ, সেনা সদস্য, বিজিবি ও আনসার সদস্য), ৯৯১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, ১৪২ জন সরকারি কর্মকর্তা ২ হাজার ২২২ জন নারী ও ১ হাজার ৪৬৯ জন শিশু সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যাণে দেখা গেছে, গত বছর জানুয়ারী মাসে ৫৮৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৮৪২ জন আহত ও ৬১৫ নিহত হয়। এর মধ্যে ৮০টি বাস, ১৪৫টি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৪৮টি হিউম্যান হলার, ১৮টি কার মাইক্রোবাস, ৪৫টি অটোরিকশা, ৪৭টি মোটরসাইকেল, ১৮টি ব্যাটারিচালিত রিকশা, ৬১টি নছিমন করিমন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে ৪৮ জন চালক ও পরিবহন শ্রমিক ৪৩ জন ছাত্র, ৮ জন শিক্ষক, ৩ জন সাংবাদিক, ৮ জন ডাক্তার, ১ জন প্রকৌশলী, ৪৬ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ৯ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, ১৫ জন সরকারি কর্মকর্তা, ৯৮ জন নারী, ৬৯ জন শিশু, ৪১ জন পথচারী সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়। ফেব্রুয়ারী মাসে ৪৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৩৯ জন নিহত ও ১ হাজার ২৭২ জন আহত, মার্চ মাসে ৫৪৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৮ জন নিহত ও ১ হাজার ৭০৬ জন আহত, এপ্রিল মাসে ৫৬৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬০১ জন নিহত ও ১ হাজার ৫৭৬ জন আহত, মে মাসে ৫৭৮টি সড়ক দূর্ঘটনায় ৭৩৮ জন নিহত ও ২ হাজার ৪৬ জন আহত, জুন মাসে ৫০৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৮৯ জন নিহত ও ১ হাজার ৮৩৬ জন আহত, জুলাই মাসে ৪২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০৩ জন নিহত ও ১ হাজার ৩৩২ জন আহত, আগস্ট মাসে ৪৭৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬২ জন নিহত ও ১ হাজার ৬০৬ জন আহত, সেপ্টেম্বর মাসে ৪৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬০২ জন নিহত ও ১ হাজার ৭ জন আহত, অক্টোবর মাসে ৩৯৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১২ জন নিহত ও ১ হাজার ২২৪ আহত, নভেম্বর মাসে ৫০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৮ জন নিহত ও ৯৬৯ জন আহত এবং ডিসেম্বর মাসে ৪৪১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৯৬ জন নিহত ও ১ হাজার ১০৭ জন আহত হয়। এর মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষে ৫৮ ভাগ, খাদে পড়ে ১৮ ভাগ, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১৩ ভাগ অন্যান্য কারণে ১১ ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দুর্ঘটনার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে, ফুটপাত দখল, ওভার টেকিং, ওভার স্পিড ও ওভার লোড। হেলপার দিয়ে গাড়ি চালানো। রাস্তা-ব্রিজের নির্মাণ ত্রুটি। গাড়ির ত্রুটি। যাত্রীদের অসতর্কতা, ট্রাফিক আইন না মানা। সড়কে জেব্রাক্রসিং না থাকা ও জেব্রাক্রসিং গাড়ি চালকের না মানা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল ফোন বা হেড ফোন ব্যবহার করা। সড়ক দূর্ঘটনা রোধে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি ৮ দফা সুপারিশ করেছে। এসব সুপারিশ হচ্ছে, ট্রাফিক আইন ও মোটরযান আইন সম্পর্কে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের, মসজিদ, মন্দির, গির্জায় ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা। টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রসমূহে সড়ক দূর্ঘটনা সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা। জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে হাট-বাজার অপসারণ করা, ফুটপাত দখলমুক্ত করা। রোড সাইন (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন করা। জেব্রাক্রসিং অংকন করা। চালকদের প্রফেশনাল ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা। চালকদের বিশ্রাম ও কর্মবিরতির সুযোগ দেয়া। বিদ্যমান মোটরযান আইন যুগোপযোগী করা এবং গাড়ির ফিটনেস প্রদান পদ্ধতি ডিজিটাল করা। সড়ক দূর্ঘটনায় পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে যারা ছিন্নমূল ও দারিদ্রের কাতারে নেমে যাচ্ছে তাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব সরকারের নেয়া।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার নামে ধারাবাহিক হত্যাকা- আজ মহামারী আকার ধারণ করেছে। ইরাক বা আফগানিস্তানের ভয়াবহ যুদ্ধে যে প্রাণহানি হয়েছে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা পরিস্থিতি তার কোনো অংশে কম নয়।’ তিনি বলেন, ‘পুলিশের কাছে সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ বা মামলা করেও ভুক্তভোগী প্রয়োজনীয় আইনগত সহায়তা পান না। দিন দিন বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। বাড়ছে প্রাণহানির সংখ্যা। বাড়ছে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের সংখ্যা, যা মধ্য আয়ের দেশের যাত্রার পথে প্রতিবন্ধক। মেধাবী ও কর্মক্ষম জনসম্পদ হারিয়ে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। জিডিপিতে যার ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।’ (দৈনিক ইনকিলাব)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

বাংলাদেশ : এক বছরে ৬ হাজার দুর্ঘটনা : নিহত ৯ হাজার : আহত ১৮ হাজার

প্রকাশের সময় : ০৪:৫৩:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল ২০১৫

ঢাকা: গত এক বছরে সারাদেশে প্রায় ৬ হাজার দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে প্রায় ৯ হাজার মানুষ। এসব ঘটনায় আহতর সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার। যানবাহনের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এরপর রয়েছে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও বাস। বৃহস্পতিবার ২ এপ্রিল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। দেশের ১০টি জাতীয় ও ৫টি স্থানীয় দৈনিক সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেলসমূহে প্রচারিত সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদসমূহ বছরজুড়ে মনিটরিং করে এ রিপোর্ট প্রকাশ করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল।
রিপোর্টে সমিতির পক্ষ থেকে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ চিহ্নিত ও দুর্ঘটনা রোধের জন্য কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে, গত বছরের জানুয়ারী থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ বছরে ৫ হাজার ৯২৮টি ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। মোট ২৬ হাজার ১১২ জন যাত্রী, চালক ও পরিবহন শ্রমিক এই সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। নিহত হয়েছে ৮ হাজার ৫৮৯ জন। আহত হয়েছে ১৭ হাজার ৫২৩ জন। এর মধ্যে হাত-বা পা হারিয়েছে বা অন্য কোনো অঙ্গ হারিয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়েছে ১ হাজার ৬২৩ জন। এসব দুর্ঘটনার সিংহভাগ পরিবার একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে দরিদ্রের চরম পর্যায়ে নেমে এসেছে। একই সময়ে সরকারি হিসেবে প্রায় ২ হাজার ৩শ’টি সড়ক দুর্ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ সময় ১ হাজার ২৬৬টি বাস, ১ হাজার ৪১৩টি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৭১২টি হিউম্যান হলার। ৩৯০টি কার-জিপ-মাইক্রোবাস, ১ হাজার ২৩১টি অটোরিকশা, ১ হাজার ৪৬৮টি মোটরসাইকেল, ১ হাজার ১৭৩টি ব্যাটারীচালিত রিকশা, ১ হাজার ৬৯টি নছিমন করিমন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এতে ১ হাজার ২৫৬ জন ছাত্র-ছাত্রী, ১৫৬ জন শিক্ষক, ৬৮ জন সাংবাদিক, ৬৩ জন ডাক্তার, ৯০ জন আইনজীবী, ৬৩ জন ইঞ্জিনিয়ার, ২১৫ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য (পুলিশ, সেনা সদস্য, বিজিবি ও আনসার সদস্য), ৯৯১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, ১৪২ জন সরকারি কর্মকর্তা ২ হাজার ২২২ জন নারী ও ১ হাজার ৪৬৯ জন শিশু সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যাণে দেখা গেছে, গত বছর জানুয়ারী মাসে ৫৮৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৮৪২ জন আহত ও ৬১৫ নিহত হয়। এর মধ্যে ৮০টি বাস, ১৪৫টি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৪৮টি হিউম্যান হলার, ১৮টি কার মাইক্রোবাস, ৪৫টি অটোরিকশা, ৪৭টি মোটরসাইকেল, ১৮টি ব্যাটারিচালিত রিকশা, ৬১টি নছিমন করিমন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে ৪৮ জন চালক ও পরিবহন শ্রমিক ৪৩ জন ছাত্র, ৮ জন শিক্ষক, ৩ জন সাংবাদিক, ৮ জন ডাক্তার, ১ জন প্রকৌশলী, ৪৬ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ৯ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, ১৫ জন সরকারি কর্মকর্তা, ৯৮ জন নারী, ৬৯ জন শিশু, ৪১ জন পথচারী সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়। ফেব্রুয়ারী মাসে ৪৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৩৯ জন নিহত ও ১ হাজার ২৭২ জন আহত, মার্চ মাসে ৫৪৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৮ জন নিহত ও ১ হাজার ৭০৬ জন আহত, এপ্রিল মাসে ৫৬৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬০১ জন নিহত ও ১ হাজার ৫৭৬ জন আহত, মে মাসে ৫৭৮টি সড়ক দূর্ঘটনায় ৭৩৮ জন নিহত ও ২ হাজার ৪৬ জন আহত, জুন মাসে ৫০৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৮৯ জন নিহত ও ১ হাজার ৮৩৬ জন আহত, জুলাই মাসে ৪২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০৩ জন নিহত ও ১ হাজার ৩৩২ জন আহত, আগস্ট মাসে ৪৭৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬২ জন নিহত ও ১ হাজার ৬০৬ জন আহত, সেপ্টেম্বর মাসে ৪৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬০২ জন নিহত ও ১ হাজার ৭ জন আহত, অক্টোবর মাসে ৩৯৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১২ জন নিহত ও ১ হাজার ২২৪ আহত, নভেম্বর মাসে ৫০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৮ জন নিহত ও ৯৬৯ জন আহত এবং ডিসেম্বর মাসে ৪৪১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৯৬ জন নিহত ও ১ হাজার ১০৭ জন আহত হয়। এর মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষে ৫৮ ভাগ, খাদে পড়ে ১৮ ভাগ, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১৩ ভাগ অন্যান্য কারণে ১১ ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দুর্ঘটনার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে, ফুটপাত দখল, ওভার টেকিং, ওভার স্পিড ও ওভার লোড। হেলপার দিয়ে গাড়ি চালানো। রাস্তা-ব্রিজের নির্মাণ ত্রুটি। গাড়ির ত্রুটি। যাত্রীদের অসতর্কতা, ট্রাফিক আইন না মানা। সড়কে জেব্রাক্রসিং না থাকা ও জেব্রাক্রসিং গাড়ি চালকের না মানা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল ফোন বা হেড ফোন ব্যবহার করা। সড়ক দূর্ঘটনা রোধে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি ৮ দফা সুপারিশ করেছে। এসব সুপারিশ হচ্ছে, ট্রাফিক আইন ও মোটরযান আইন সম্পর্কে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের, মসজিদ, মন্দির, গির্জায় ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা। টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রসমূহে সড়ক দূর্ঘটনা সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা। জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে হাট-বাজার অপসারণ করা, ফুটপাত দখলমুক্ত করা। রোড সাইন (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন করা। জেব্রাক্রসিং অংকন করা। চালকদের প্রফেশনাল ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা। চালকদের বিশ্রাম ও কর্মবিরতির সুযোগ দেয়া। বিদ্যমান মোটরযান আইন যুগোপযোগী করা এবং গাড়ির ফিটনেস প্রদান পদ্ধতি ডিজিটাল করা। সড়ক দূর্ঘটনায় পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে যারা ছিন্নমূল ও দারিদ্রের কাতারে নেমে যাচ্ছে তাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব সরকারের নেয়া।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার নামে ধারাবাহিক হত্যাকা- আজ মহামারী আকার ধারণ করেছে। ইরাক বা আফগানিস্তানের ভয়াবহ যুদ্ধে যে প্রাণহানি হয়েছে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা পরিস্থিতি তার কোনো অংশে কম নয়।’ তিনি বলেন, ‘পুলিশের কাছে সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ বা মামলা করেও ভুক্তভোগী প্রয়োজনীয় আইনগত সহায়তা পান না। দিন দিন বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। বাড়ছে প্রাণহানির সংখ্যা। বাড়ছে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের সংখ্যা, যা মধ্য আয়ের দেশের যাত্রার পথে প্রতিবন্ধক। মেধাবী ও কর্মক্ষম জনসম্পদ হারিয়ে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। জিডিপিতে যার ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।’ (দৈনিক ইনকিলাব)