বাংলাদেশ অন্ধকারে দায় নেবে না ভারত
- প্রকাশের সময় : ১২:৩৬:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০১৪
- / ১১১৫ বার পঠিত
জাতীয় গ্রিডে সমস্যার কারণে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে অন্ধকারে ডুবে যায় গোটা বাংলাদেশ। ঢাকার সব গুরুত্বপূর্ণ অফিস এমনবি হাসপাতালেও বন্ধ হয়ে যায় কাজকর্ম। বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে রাজধানীজুড়ে শুরু হয়েছে পানির জন্য হাহাকার। আর এর জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতকে দায়ি করা হলেও দায় নেবে না দেশটি। তাদের দাবি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে।
বিকেলে ভারতের পাওয়ার গ্রিড করপোরেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (অপারেশন্স) আরপি শাসমল দেশটির সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘আমাদের দিকে সব ঠিকঠাক রয়েছে। বাংলাদেশের সাব-স্টেশনে কোনো সমস্যার কারণেই তারা বিদ্যুৎ নিতে পারেনি।’
তবে পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (পিডিবি) গণসংযোগ সেলের পরিচালক সাইফুল ইসলাম বাংলামেইলকে বলেন, ‘ভারত থেকে আনা বিদ্যুৎ সঞ্চালনে সমস্যা দেখা দেয়ায় সারাদেশ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে দেশের পাওয়ার স্টেশনগুলো একসঙ্গে বন্ধ হয়ে যায়।’
বাংলামেইলকে একই তথ্য নিশ্চিত করেন পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল-বেরুনি।
বাংলাদেশ-ভারত বিদ্যুৎ সঞ্চালন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন জানান, হঠাৎ করেই ১১টা ২৭ মিনিট ২৮ সেকেন্ডের সময় ভেড়ামারাস্থ সাবস্টেশনে টেকনিক্যাল ক্রটি দেখা দেয়। এসময় লাইন বিকল হয়ে পড়ে। এসময় সারাদেশের সব বিদ্যুৎকেন্দ্রও একযোগে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে জাতীয় গ্রিডলাইন ফেল করে দেখা দেয় চরম বিদ্যুৎ বিপর্যয়।
জানা যায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বহরমপুর সাবস্টেশন থেকে আমদানি করা ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা সাবস্টেশন থেকে নিয়ন্ত্রণ ও সরবরাহ করা হয় জাতীয় গ্রিডে। ভারতের সাবস্টেশনে থেকে আসা দুটির একটা লাইন ‘বসে’ (টিপ) যাওয়ার কারণেই বাংলাদেশে সমস্যা দেখা দেয়। জাতীয় গ্রিডে একটা লাইন থেকে সারা দেশে সরবরাহ করা হয় বলেই একটা আমদানি লাইনের সমস্যা পুরো সিস্টেমেই প্রভাব ফেলে। তবে এতে ভারতে কোনো সমস্যা হয়নি।
এদিকে গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ভারতের সরকারি খাত থেকে আমদানি করা বিদ্যুৎ দেশের জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন শুরু হয়। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা গ্রিড উপকেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে আসে। পরে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ আমদানি পাঁচশ’ মেগাওয়াটে পৌঁছায়।
২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় বিদ্যুৎ আমদানির ব্যাপারে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা হয়। পরে এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে ২৫ বছরের চুক্তি হয়।
এই আমদানি চুক্তি কার্যকরী করতে বাংলাদেশের ভেড়ামারা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুরে সুইচ স্টেশন স্থাপন করা হয়। একইসাথে দুই দেশের জাতীয় গ্রিড লাইনের সংযোগের জন্য বসানো হয় ৯৮ কি.মি. সঞ্চালন লাইন।
এদিকে বিদ্যুতের এ সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত একে অপরকে দুষলেও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলছেন অন্য কথা। তিনি দাবি করেন, নাটোরের সভা টেলিভিশন সম্প্রচার আটকাতেই সরকার দেশের সর্বত্র বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।