নিউইয়র্ক ১২:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

প্রধান বিচারপতি : সংবিধান সংরক্ষণ করা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:০৪:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ২৮ বার পঠিত

সংবিধানকে সংরক্ষণ করা বিচার বিভাগের সবার পবিত্র দায়িত্ব বলে জানিয়েছেন নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি লিখেছেন, আজ (গতকাল) আমি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়েছি। এই সংবিধান যার হাত ধরে এসেছে সেই নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মধ্য দিয়ে তার প্রতি জানাই আমার অন্তরের অতল গভীর থেকে শ্রদ্ধা। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে পরিদর্শন বইয়ে তিনি এসব কথা লেখেন। এর আগে দুপুর ১টার দিকে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের পরিদর্শন বইয়ে ওবায়দুল হাসান লেখেন, বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির ইতিহাসে অনেক বীর রয়েছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু উচ্চতায় ছিলেন তাদের সবার উপরে। অন্যরা হয়তো তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে শীর্ষে পৌঁছেছিলেন, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বীরত্বগাথা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আমাদের জন্য একটি দেশ এনে দিয়েছিলেন। বিশ্বে প্রতিষ্ঠা করেছেন বাঙালি জাতির একমাত্র রাষ্ট্র বাংলাদেশ। এ সময় বঙ্গবন্ধুকে বিশ্ব মানবতার নেতা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি লেখেন, সারা বিশ্বের শোষিত-বঞ্চিত মানুষের প্রিয় মানুষ ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তাই তিনি একদিকে যেমন বিশ্বের সমগ্র বাঙালি জনগোষ্ঠীর প্রাণের নেতা, অন্যদিকে শোষিত-বঞ্চিত মানুষের নেতা, বিশ্ব মানবতার নেতা।

শ্রদ্ধা জানানোর পর গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের প্রধান বিচারপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের সংবিধান দিয়েছেন। তা রক্ষার দায়িত্ব সব বিচারকের।

এদিকে গতকাল দুপুরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এক মিনিট নিরবতা পালন করেন। পরে তিনি স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইয়ে সই করেন ও নিজের মন্তব্য লেখেন। মন্তব্যে তিনি লেখেন, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলার স্বাধীনতার আন্দোলনে শাহাদতবরণকারী সব শহীদের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী ৩০ লাখ শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। শ্রদ্ধা জানাই দুই লক্ষাধিক মা-বোনের প্রতি। জাতীয় স্মৃতিসৌধে দাঁড়িয়ে প্রতিজ্ঞা করছি, যে মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার মূলনীতিগুলো আমি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে ও ব্যক্তি জীবনে দৃঢ়ভাবে অনুসরণ করব। বীর শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ও এর সুপ্রিম কোর্ট। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে আমি ও সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের পক্ষ থেকে সব শহীদদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা আমরা তোমাদের ভুলবো না। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

এর আগে, বেলা ১১টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রধান বিচারপতিকে শপথবাক্য পাঠ করান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। শপথের আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রয়োজনীয় নথি স্বাক্ষর করেন ওবায়দুল হাসান। এ সময় জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা, মন্ত্রিসভার সদস্য, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, জাতীয় সংসদের উপনেতা, সাবেক প্রধান বিচারপতি, আপিল ও হাইকোর্ট উভয় বিভাগের বিচারপতিরা, জাতীয় সংসদের হুইপ, তিন বাহিনীর প্রধানরা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, অ্যাটর্নি জেনারেল, বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীসহ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে গত ১২ সেপ্টেম্বর ওবায়দুল হাসানকে নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। রীতি অনুযায়ী শপথ নেয়ার মাধ্যমে দায়িত্ব শুরু হলো নবনিযুক্ত এই প্রধান বিচারপতির। সূত্র,ভোরের কাগজ।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

প্রধান বিচারপতি : সংবিধান সংরক্ষণ করা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব

প্রকাশের সময় : ০৪:০৪:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সংবিধানকে সংরক্ষণ করা বিচার বিভাগের সবার পবিত্র দায়িত্ব বলে জানিয়েছেন নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি লিখেছেন, আজ (গতকাল) আমি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়েছি। এই সংবিধান যার হাত ধরে এসেছে সেই নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মধ্য দিয়ে তার প্রতি জানাই আমার অন্তরের অতল গভীর থেকে শ্রদ্ধা। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে পরিদর্শন বইয়ে তিনি এসব কথা লেখেন। এর আগে দুপুর ১টার দিকে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের পরিদর্শন বইয়ে ওবায়দুল হাসান লেখেন, বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির ইতিহাসে অনেক বীর রয়েছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু উচ্চতায় ছিলেন তাদের সবার উপরে। অন্যরা হয়তো তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে শীর্ষে পৌঁছেছিলেন, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বীরত্বগাথা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আমাদের জন্য একটি দেশ এনে দিয়েছিলেন। বিশ্বে প্রতিষ্ঠা করেছেন বাঙালি জাতির একমাত্র রাষ্ট্র বাংলাদেশ। এ সময় বঙ্গবন্ধুকে বিশ্ব মানবতার নেতা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি লেখেন, সারা বিশ্বের শোষিত-বঞ্চিত মানুষের প্রিয় মানুষ ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তাই তিনি একদিকে যেমন বিশ্বের সমগ্র বাঙালি জনগোষ্ঠীর প্রাণের নেতা, অন্যদিকে শোষিত-বঞ্চিত মানুষের নেতা, বিশ্ব মানবতার নেতা।

শ্রদ্ধা জানানোর পর গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের প্রধান বিচারপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের সংবিধান দিয়েছেন। তা রক্ষার দায়িত্ব সব বিচারকের।

এদিকে গতকাল দুপুরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এক মিনিট নিরবতা পালন করেন। পরে তিনি স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইয়ে সই করেন ও নিজের মন্তব্য লেখেন। মন্তব্যে তিনি লেখেন, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলার স্বাধীনতার আন্দোলনে শাহাদতবরণকারী সব শহীদের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী ৩০ লাখ শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। শ্রদ্ধা জানাই দুই লক্ষাধিক মা-বোনের প্রতি। জাতীয় স্মৃতিসৌধে দাঁড়িয়ে প্রতিজ্ঞা করছি, যে মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার মূলনীতিগুলো আমি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে ও ব্যক্তি জীবনে দৃঢ়ভাবে অনুসরণ করব। বীর শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ও এর সুপ্রিম কোর্ট। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে আমি ও সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের পক্ষ থেকে সব শহীদদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা আমরা তোমাদের ভুলবো না। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

এর আগে, বেলা ১১টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রধান বিচারপতিকে শপথবাক্য পাঠ করান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। শপথের আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রয়োজনীয় নথি স্বাক্ষর করেন ওবায়দুল হাসান। এ সময় জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা, মন্ত্রিসভার সদস্য, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, জাতীয় সংসদের উপনেতা, সাবেক প্রধান বিচারপতি, আপিল ও হাইকোর্ট উভয় বিভাগের বিচারপতিরা, জাতীয় সংসদের হুইপ, তিন বাহিনীর প্রধানরা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, অ্যাটর্নি জেনারেল, বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীসহ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে গত ১২ সেপ্টেম্বর ওবায়দুল হাসানকে নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। রীতি অনুযায়ী শপথ নেয়ার মাধ্যমে দায়িত্ব শুরু হলো নবনিযুক্ত এই প্রধান বিচারপতির। সূত্র,ভোরের কাগজ।