নিউইয়র্ক ০৫:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুলিভানের বৈঠক, আলোচনা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৬:৪৯:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩
  • / ২৪২ বার পঠিত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ওয়াশিংটন ডিসিতে সাক্ষাৎ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। গত মঙ্গলবার রাতে ওয়াশিংটনে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানানো হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে সফরে থাকার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৭ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।

তাঁরা ঘণ্টাখানেক আলোচনা করেন বলে সূত্র জানায়। ওই সাক্ষাতের বিষয়ে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস, ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এত দিন কিছু জানায়নি। গত মঙ্গলবার রাতে ওয়াশিংটনে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করতে গিয়ে বলেন, গত সপ্তাহে জ্যাক সুলিভান দক্ষিণ এশীয় দুই নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। একটি বৈঠক হয়েছে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে।

অন্য বৈঠকটি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। ভারতের সঙ্গে বৈঠকে কানাডা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চান ওই সাংবাদিক। তিনি আরো জানতে চান, কানাডা নিয়ে সম্পর্কের বিষয়ে ভারতের ব্যাখ্যায় যুক্তরাষ্ট্র সন্তুষ্ট কি না? পরিস্থিতি শান্ত করতে যুক্তরাষ্ট্র কি কোনো ভূমিকা পালন করতে পারে?

জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগত যোগাযোগবিষয়ক পরিচালক জন কিরবি বলেন, ‘ওই ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। ওই দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলার দায়িত্ব আমরা তাদের ওপরই ছেড়ে দিচ্ছি।

আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। এই অভিযোগগুলো গুরুতর। সেগুলোর পূর্ণ তদন্ত প্রয়োজন। আমরা আগেও বলেছি, তদন্তে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে আমরা ভারতের প্রতি অবশ্যই আহ্বান জানাই।’

এরপর বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেন ওই সাংবাদিক।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন কেমন? গত মাসে প্রেসিডেন্ট বাইডেনও নয়াদিল্লিতে শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেছেন। নির্বাচন ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চান তিনি। জবাবে জন কিরবি বলেন, ‘তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেছেন। জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের গুরুত্ব নিয়েও তাঁরা আলোচনা করেছেন।’

জন কিরবি এখানে ‘তাঁরা’ বলতে শেখ হাসিনা-জো বাইডেন, নাকি শেখ হাসিনা-জ্যাক সুলিভানের আলোচনার প্রসঙ্গে বলেছেন তা স্পষ্ট নয়। প্রথম প্রশ্নে শেখ হাসিনা-জ্যাক সুলিভানের বিষয় থাকলেও জন কিরবি শুধু ভারত প্রসঙ্গে জবাব দিয়েছেন। পরের প্রশ্নটিতে শেখ হাসিনা-জো বাইডেনের নয়াদিল্লির আলোচনার প্রসঙ্গও তোলা হয়। কিন্তু জবাব দেওয়ার সময় জন কিরবি কোন বৈঠকটির কথা বলেছেন তা স্পষ্ট হয়নি।

গত ৯ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সেলফি তোলার ছবি গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন তখন বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জো বাইডেনের সেলফি এবং অত্যন্ত উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ আলাপচারিতার মাধ্যমে ঢাকা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে গভীর সুসম্পর্কের প্রতিফলন ঘটেছে।

মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জনগণকে সুন্দর ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন দিতে তাঁর বিভিন্ন উদ্যোগের কথা যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেন। যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট এ সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রতি অব্যাহতভাবে আহ্বান জানিয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন গত ২৩ মে বাংলাদেশের জন্য ভিসানীতি ঘোষণা করেন। এর ফলে গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়া বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করে তাদের ওপর ভিসা বিধি-নিষেধ আরোপ করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র। গত ২২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, তারা বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের কিছু সদস্যের ওপর ভিসানীতি প্রয়োগ শুরু করেছে। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বলেছে, ভিসা বিধি-নিষেধের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২২ সেপ্টেম্বর রাতে নিউ ইয়র্কে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি প্রয়োগ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ভিসানীতি নিয়ে বাংলাদেশের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রী সেদিন আরো বলেন, ‘নির্বাচন বানচালের চেষ্টা যেন দেশের বাইরে থেকে না হয়। এটি হলে কিন্তু বাংলাদেশের জনগণই তাদের ‘স্যাংশন’ (যারা নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে) দিয়ে দেবে।’

যারা নিষেধাজ্ঞা দেবে, তাদের বিরুদ্ধে আমরাও নিষেধাজ্ঞা দেব : মোমেন

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে গতকাল বুধবার ঢাকায় ফিরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেছেন, গত মাসে দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরেও যুক্তরাষ্ট্র কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। বাংলাদেশও চায়।

এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, বাইডেনের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়নি। বাইডেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন।

ভিসানীতি প্রসঙ্গে মোমেন বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সবাইকে ভিসা দেয় না, বাংলাদেশও দেয় না। ভিসানীতি বাংলাদেশেরও আছে। বাংলাদেশের ওপর যারা নিষেধাজ্ঞা দেবে, তাদের বিরুদ্ধে আমরাও নিষেধাজ্ঞা দেব।’

কবে, কী ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ নিষেধাজ্ঞা দেবে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা আমাদের ওপর স্যাংশন দেবে, তাদের ওপর স্যাংশন দিতে পারি। পারি না? নিশ্চয়ই পারি। প্রয়োজনে প্রস্তুতি নেব। অবশ্যই আমরা স্যাংশন দেব। এগুলো সময়মতো জানবেন।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা নির্বাচনে আসবে না যুক্তরাষ্ট্র তাদের পক্ষে নেই। তিনি অভিযোগ করেন, ‘মূলত বিদেশিরা (তাদের পণ্য) বিক্রি করতে আসে। নানা চাপ দেয়, যাতে তাদের বিক্রি বাড়ে।’ এ সময় নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক আসার বিষয়ে প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিদেশমুখিতা কেন আপনাদের, নিজেদের ওপর আত্মবিশ্বাস নেই? শেখ হাসিনার আত্মবিশ্বাস আছে।’ সূত্র,কালের কন্ঠ।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুলিভানের বৈঠক, আলোচনা

প্রকাশের সময় : ০৬:৪৯:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ওয়াশিংটন ডিসিতে সাক্ষাৎ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। গত মঙ্গলবার রাতে ওয়াশিংটনে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানানো হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে সফরে থাকার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৭ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।

তাঁরা ঘণ্টাখানেক আলোচনা করেন বলে সূত্র জানায়। ওই সাক্ষাতের বিষয়ে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস, ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এত দিন কিছু জানায়নি। গত মঙ্গলবার রাতে ওয়াশিংটনে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করতে গিয়ে বলেন, গত সপ্তাহে জ্যাক সুলিভান দক্ষিণ এশীয় দুই নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। একটি বৈঠক হয়েছে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে।

অন্য বৈঠকটি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। ভারতের সঙ্গে বৈঠকে কানাডা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চান ওই সাংবাদিক। তিনি আরো জানতে চান, কানাডা নিয়ে সম্পর্কের বিষয়ে ভারতের ব্যাখ্যায় যুক্তরাষ্ট্র সন্তুষ্ট কি না? পরিস্থিতি শান্ত করতে যুক্তরাষ্ট্র কি কোনো ভূমিকা পালন করতে পারে?

জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগত যোগাযোগবিষয়ক পরিচালক জন কিরবি বলেন, ‘ওই ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। ওই দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলার দায়িত্ব আমরা তাদের ওপরই ছেড়ে দিচ্ছি।

আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। এই অভিযোগগুলো গুরুতর। সেগুলোর পূর্ণ তদন্ত প্রয়োজন। আমরা আগেও বলেছি, তদন্তে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে আমরা ভারতের প্রতি অবশ্যই আহ্বান জানাই।’

এরপর বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেন ওই সাংবাদিক।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন কেমন? গত মাসে প্রেসিডেন্ট বাইডেনও নয়াদিল্লিতে শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেছেন। নির্বাচন ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চান তিনি। জবাবে জন কিরবি বলেন, ‘তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেছেন। জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের গুরুত্ব নিয়েও তাঁরা আলোচনা করেছেন।’

জন কিরবি এখানে ‘তাঁরা’ বলতে শেখ হাসিনা-জো বাইডেন, নাকি শেখ হাসিনা-জ্যাক সুলিভানের আলোচনার প্রসঙ্গে বলেছেন তা স্পষ্ট নয়। প্রথম প্রশ্নে শেখ হাসিনা-জ্যাক সুলিভানের বিষয় থাকলেও জন কিরবি শুধু ভারত প্রসঙ্গে জবাব দিয়েছেন। পরের প্রশ্নটিতে শেখ হাসিনা-জো বাইডেনের নয়াদিল্লির আলোচনার প্রসঙ্গও তোলা হয়। কিন্তু জবাব দেওয়ার সময় জন কিরবি কোন বৈঠকটির কথা বলেছেন তা স্পষ্ট হয়নি।

গত ৯ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সেলফি তোলার ছবি গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন তখন বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জো বাইডেনের সেলফি এবং অত্যন্ত উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ আলাপচারিতার মাধ্যমে ঢাকা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে গভীর সুসম্পর্কের প্রতিফলন ঘটেছে।

মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জনগণকে সুন্দর ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন দিতে তাঁর বিভিন্ন উদ্যোগের কথা যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেন। যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট এ সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রতি অব্যাহতভাবে আহ্বান জানিয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন গত ২৩ মে বাংলাদেশের জন্য ভিসানীতি ঘোষণা করেন। এর ফলে গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়া বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করে তাদের ওপর ভিসা বিধি-নিষেধ আরোপ করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র। গত ২২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, তারা বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের কিছু সদস্যের ওপর ভিসানীতি প্রয়োগ শুরু করেছে। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বলেছে, ভিসা বিধি-নিষেধের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২২ সেপ্টেম্বর রাতে নিউ ইয়র্কে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি প্রয়োগ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ভিসানীতি নিয়ে বাংলাদেশের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রী সেদিন আরো বলেন, ‘নির্বাচন বানচালের চেষ্টা যেন দেশের বাইরে থেকে না হয়। এটি হলে কিন্তু বাংলাদেশের জনগণই তাদের ‘স্যাংশন’ (যারা নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে) দিয়ে দেবে।’

যারা নিষেধাজ্ঞা দেবে, তাদের বিরুদ্ধে আমরাও নিষেধাজ্ঞা দেব : মোমেন

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে গতকাল বুধবার ঢাকায় ফিরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেছেন, গত মাসে দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরেও যুক্তরাষ্ট্র কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। বাংলাদেশও চায়।

এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, বাইডেনের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়নি। বাইডেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন।

ভিসানীতি প্রসঙ্গে মোমেন বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সবাইকে ভিসা দেয় না, বাংলাদেশও দেয় না। ভিসানীতি বাংলাদেশেরও আছে। বাংলাদেশের ওপর যারা নিষেধাজ্ঞা দেবে, তাদের বিরুদ্ধে আমরাও নিষেধাজ্ঞা দেব।’

কবে, কী ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ নিষেধাজ্ঞা দেবে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা আমাদের ওপর স্যাংশন দেবে, তাদের ওপর স্যাংশন দিতে পারি। পারি না? নিশ্চয়ই পারি। প্রয়োজনে প্রস্তুতি নেব। অবশ্যই আমরা স্যাংশন দেব। এগুলো সময়মতো জানবেন।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা নির্বাচনে আসবে না যুক্তরাষ্ট্র তাদের পক্ষে নেই। তিনি অভিযোগ করেন, ‘মূলত বিদেশিরা (তাদের পণ্য) বিক্রি করতে আসে। নানা চাপ দেয়, যাতে তাদের বিক্রি বাড়ে।’ এ সময় নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক আসার বিষয়ে প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিদেশমুখিতা কেন আপনাদের, নিজেদের ওপর আত্মবিশ্বাস নেই? শেখ হাসিনার আত্মবিশ্বাস আছে।’ সূত্র,কালের কন্ঠ।