নিউইয়র্ক ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

পাশবিকতা রুখতেই ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড : প্রধানমন্ত্রী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:৫৭:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ অক্টোবর ২০২০
  • / ২৬ বার পঠিত

ঢাকা ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পাশবিকতা থেকে নারীদের রক্ষায় আইন সংশোধনের মাধ্যমে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড যুক্ত করা হয়েছে। ধর্ষণ একটা পাশবিকতা, একটা মানুষ পশু হয়ে যায়। যার ফলে আমাদের মেয়েরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সেজন্যই আমরা আইনটি সংশোধন করেছি। ধর্ষণ করলে যাবজ্জীবনের সঙ্গে মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে ক্যাবিনেটে সেই আইন পাস হয়েছে। যেহেতু পার্লামেন্ট সেশন নেই, তাই অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। তিনি বলেন, একটা সময় প্রচুর এসিড নিক্ষেপ হতো। সেটাকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করেছি। যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে সেটা মোকাবেলার মাধ্যমে দূর করাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি’, যোগ করেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসের অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসের মূল অনুষ্ঠানে অংশ নেন। দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সারাবিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, একটা কথা মাথায় রাখতে হবে, আমাদের দেশে ঘূর্ণিঝড় হবে, জলোচ্ছ¡াস হবে, বন্যা হবে, ভূমিকম্প হবে, অগ্নিকান্ড হবে, নদীভাঙন আছে, খরা আছে; এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিনিয়ত আসতে থাকবে। সেগুলো মোকাবেলা করে আমাদের বাঁচতে হবে। সেই কথাটা চিন্তা করে সব সময় পূর্বপ্রস্তুতিও নিতে হবে। আমরা সেটাই করে যাচ্ছি। দুর্যোগ মোকাবেলা করে মানুষকে রক্ষা, জানমাল বাঁচানো, তাদের নিরাপদ রাখা এবং তাদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা- এটাই হচ্ছে বড় কাজ।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ছোট্ট ভূখন্ড। এর মধ্য দিয়ে ৭শ’র বেশি নদী প্রবাহিত। এই জায়গায় দুর্যোগ মোকাবেলা করে জানমাল বাঁচানো, মানুষকে সতর্ক রাখাটাই বড় কাজ। আমাদের ৫৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দুর্যোগ মোকাবেলায় কাজ করছেন। এর মধ্যে মহিলা স্বেচ্ছাসেবকরাও যথেষ্ট ভূমিকা রাখছেন। আমি তাদের অভিনন্দন জানাই।’ কোভিড-১৯-কে আরেকটি দুর্যোগ আখ্যায়িত করেন প্রধানমন্ত্রী। বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে অনেক সময় মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগও মোকাবেলা করতে হয়। তিনি বলেন, ‘এর আগে আপনারা দেখেছেন বিএনপি-জামায়াতের সেই অগ্নিসন্ত্রাস। জীবন্ত মানুষগুলোকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। সেটাও কিন্তু আমরা মোকাবেলা করেছি।’
তিনি বলেন, কোভিডকালীন খাদ্য উৎপাদনে অধিক গুরুত্বারোপ করাতেই দেশে কোনো খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়নি। ‘আমরা সব সময়ই ভেবেছি কীভাবে উৎপাদন বাড়ানো যায়। কারণ ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা সবচেয়ে জরুরি।’ দুর্যোগকালীন মানবিক সহায়তা কার্যক্রম স¤প্রসারিত করতে তার সরকার দ্রæত পদক্ষেপ নিয়ে সারা দেশে বিনামূল্যে খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। ফলে দেশের মানুষ অনাহারে থাকেনি।
তিনি গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘আমরা লবণাক্ততা সহনশীল ধান উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি। এখন সারা বছরই নানা ধরনের সবজি পাওয়া যাচ্ছে। এটাও কিন্তু গবেষণার ফসল। বিদেশি অনেক ফলও বাংলাদেশে উৎপাদন হচ্ছে। প্রচুর মাছ, বিশেষ করে মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে আমরা বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছি।’ প্রধানমন্ত্রী এ সময় কোভিডের পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবেলায় সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ২৪ লাখ মানুষকে আমরা আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাই। কীভাবে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়, বাংলাদেশ সে পথ দেখাচ্ছে।’
তিনি বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা পৃথিবীর প্রথম সারির দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিগত কয়েক বছরে আমরা প্রথাগত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা থেকে বেরিয়ে এসে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ঝুঁকি সহনশীলতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে আসছি। আমরা সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (এনইওসি) প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেছি।
দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকার সারা দেশে, বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ‘ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে আমাদের দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিনিয়ত আসবে। এগুলো মোকাবেলা করেই আমাদের বাঁচতে হবে। সেজন্য আমাদের প্রস্তুতিও আছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ঢাকায় ‘গেøাবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন’র সভায় জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন দুর্যোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশের সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বিশ্ব অভিযোজন কেন্দ্র- ঢাকা অফিস’ স্থাপনের ঘোষণা দেন। গত মাসে গেøাবাল অ্যাডাপটেশন সেন্টারের কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। এবার বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরাম-সিভিএফ’র নেতৃত্বের জন্য নির্বাচিত হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে জিজিটাল পদ্ধতিতে বিনামূল্যে ১৭ হাজার ৫টি দুর্যোগসহনীয় গৃহ প্রদান এবং ১৮ হাজার ৫০৫ জন নারীকর্মী সংবলিত ‘ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)’র নতুন একটি মহিলা ইউনিটও উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে তার পক্ষে প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৪২ জন পুরুষ এবং ৪২ জন নারীর মাঝে পদক বিতরণ করেন। দুর্যোগসহনীয় ঘর পেয়েছেন তাদের পক্ষে সাভার উপজেলার বেদেনি নুরুন্নাহার এবং গাইবান্ধার মো. রিয়াজুল হক এবং মহিলা সিপিপি কাশফিয়া তালুকদারও নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো এনামুর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবি তাজুল ইসলাম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিদেশি কূটনীতিক ও মিশন প্রধান, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরাসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা এতে উপস্থিত ছিলেন। (দৈনিক যুগান্তর)

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

পাশবিকতা রুখতেই ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০১:৫৭:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ অক্টোবর ২০২০

ঢাকা ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পাশবিকতা থেকে নারীদের রক্ষায় আইন সংশোধনের মাধ্যমে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড যুক্ত করা হয়েছে। ধর্ষণ একটা পাশবিকতা, একটা মানুষ পশু হয়ে যায়। যার ফলে আমাদের মেয়েরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সেজন্যই আমরা আইনটি সংশোধন করেছি। ধর্ষণ করলে যাবজ্জীবনের সঙ্গে মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে ক্যাবিনেটে সেই আইন পাস হয়েছে। যেহেতু পার্লামেন্ট সেশন নেই, তাই অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। তিনি বলেন, একটা সময় প্রচুর এসিড নিক্ষেপ হতো। সেটাকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করেছি। যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে সেটা মোকাবেলার মাধ্যমে দূর করাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি’, যোগ করেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসের অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসের মূল অনুষ্ঠানে অংশ নেন। দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সারাবিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, একটা কথা মাথায় রাখতে হবে, আমাদের দেশে ঘূর্ণিঝড় হবে, জলোচ্ছ¡াস হবে, বন্যা হবে, ভূমিকম্প হবে, অগ্নিকান্ড হবে, নদীভাঙন আছে, খরা আছে; এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিনিয়ত আসতে থাকবে। সেগুলো মোকাবেলা করে আমাদের বাঁচতে হবে। সেই কথাটা চিন্তা করে সব সময় পূর্বপ্রস্তুতিও নিতে হবে। আমরা সেটাই করে যাচ্ছি। দুর্যোগ মোকাবেলা করে মানুষকে রক্ষা, জানমাল বাঁচানো, তাদের নিরাপদ রাখা এবং তাদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা- এটাই হচ্ছে বড় কাজ।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ছোট্ট ভূখন্ড। এর মধ্য দিয়ে ৭শ’র বেশি নদী প্রবাহিত। এই জায়গায় দুর্যোগ মোকাবেলা করে জানমাল বাঁচানো, মানুষকে সতর্ক রাখাটাই বড় কাজ। আমাদের ৫৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দুর্যোগ মোকাবেলায় কাজ করছেন। এর মধ্যে মহিলা স্বেচ্ছাসেবকরাও যথেষ্ট ভূমিকা রাখছেন। আমি তাদের অভিনন্দন জানাই।’ কোভিড-১৯-কে আরেকটি দুর্যোগ আখ্যায়িত করেন প্রধানমন্ত্রী। বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে অনেক সময় মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগও মোকাবেলা করতে হয়। তিনি বলেন, ‘এর আগে আপনারা দেখেছেন বিএনপি-জামায়াতের সেই অগ্নিসন্ত্রাস। জীবন্ত মানুষগুলোকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। সেটাও কিন্তু আমরা মোকাবেলা করেছি।’
তিনি বলেন, কোভিডকালীন খাদ্য উৎপাদনে অধিক গুরুত্বারোপ করাতেই দেশে কোনো খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়নি। ‘আমরা সব সময়ই ভেবেছি কীভাবে উৎপাদন বাড়ানো যায়। কারণ ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা সবচেয়ে জরুরি।’ দুর্যোগকালীন মানবিক সহায়তা কার্যক্রম স¤প্রসারিত করতে তার সরকার দ্রæত পদক্ষেপ নিয়ে সারা দেশে বিনামূল্যে খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। ফলে দেশের মানুষ অনাহারে থাকেনি।
তিনি গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘আমরা লবণাক্ততা সহনশীল ধান উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি। এখন সারা বছরই নানা ধরনের সবজি পাওয়া যাচ্ছে। এটাও কিন্তু গবেষণার ফসল। বিদেশি অনেক ফলও বাংলাদেশে উৎপাদন হচ্ছে। প্রচুর মাছ, বিশেষ করে মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে আমরা বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছি।’ প্রধানমন্ত্রী এ সময় কোভিডের পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবেলায় সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ২৪ লাখ মানুষকে আমরা আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাই। কীভাবে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়, বাংলাদেশ সে পথ দেখাচ্ছে।’
তিনি বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা পৃথিবীর প্রথম সারির দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিগত কয়েক বছরে আমরা প্রথাগত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা থেকে বেরিয়ে এসে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ঝুঁকি সহনশীলতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে আসছি। আমরা সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (এনইওসি) প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেছি।
দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকার সারা দেশে, বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ‘ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে আমাদের দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিনিয়ত আসবে। এগুলো মোকাবেলা করেই আমাদের বাঁচতে হবে। সেজন্য আমাদের প্রস্তুতিও আছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ঢাকায় ‘গেøাবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন’র সভায় জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন দুর্যোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশের সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বিশ্ব অভিযোজন কেন্দ্র- ঢাকা অফিস’ স্থাপনের ঘোষণা দেন। গত মাসে গেøাবাল অ্যাডাপটেশন সেন্টারের কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। এবার বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরাম-সিভিএফ’র নেতৃত্বের জন্য নির্বাচিত হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে জিজিটাল পদ্ধতিতে বিনামূল্যে ১৭ হাজার ৫টি দুর্যোগসহনীয় গৃহ প্রদান এবং ১৮ হাজার ৫০৫ জন নারীকর্মী সংবলিত ‘ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)’র নতুন একটি মহিলা ইউনিটও উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে তার পক্ষে প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৪২ জন পুরুষ এবং ৪২ জন নারীর মাঝে পদক বিতরণ করেন। দুর্যোগসহনীয় ঘর পেয়েছেন তাদের পক্ষে সাভার উপজেলার বেদেনি নুরুন্নাহার এবং গাইবান্ধার মো. রিয়াজুল হক এবং মহিলা সিপিপি কাশফিয়া তালুকদারও নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো এনামুর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবি তাজুল ইসলাম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিদেশি কূটনীতিক ও মিশন প্রধান, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরাসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা এতে উপস্থিত ছিলেন। (দৈনিক যুগান্তর)