নিউইয়র্ক ১২:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

পশ্চিমা সমর্থন সরকার পতন আন্দোলনে সাহস জোগাচ্ছে : ফখরুল

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:১৮:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৮৪ বার পঠিত

নো কমেন্টস’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ছবি: বাংলাদেশ জার্নাল

বাংলাদেশ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন সরকার পতনের চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সবাইকে সাহস জোগাচ্ছে বলে মন্তব্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যেতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরাও নির্বাচন চাই। তবে এবার আর যেনতেনভাবে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।

রোববার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে ‘দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দেশীয়-আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা ও এই মুহূর্তে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার এবং ‘নো কমেন্টস’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ক্ষমতাসীনদের প্রতি ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, তোমরা যে যা বলো ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই। আমরা যে যা বলছি, উনি (প্রধানমন্ত্রী) ওনার মতোই ভাবছেন। প্রধানমন্ত্রী জবরদখল করে ক্ষমতায় বসে আছেন।

তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) কাউকে তোয়াক্কা করছে না। তিনি সরকারের বিরুদ্ধে আবারও পাতানো নির্বাচনের পাঁয়তারা করার অভিযোগ তোলেন। আমরা সবাই এবার রাজপথে নেমে গেছি। আমাদের দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে কোনো হতাশা নেই। যারা মাঠে আছে, তাদের মধ্যে হতাশা থাকে না। যুগপৎ আন্দোলন যারা করছি, তাদের মধ্যেও কোনো হতাশা নেই। আমাদের কত নেতাকর্মী জীবন দিচ্ছে। তবুও হতাশা নেই। বিজয় আমাদের হবেই। আমাদের নেত্রী, এই অবস্থায়ও আপস করেননি। নেতাকর্মীরাও আপস করবে না।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, বেআইনিভাবে রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে আছেন, প্রধান সংকট সেখানে। তিনি বলেছেন, যেভাবেই হোক নির্বাচন হবে। আমরাও চাই নির্বাচন হোক। সে নির্বাচনে অবশ্যই জনগণকে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারতে হবে৷ শেখ হাসিনা চাইলেন বিনা ভোটারের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হবেন, এবার সেটা আর হবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০১৪ ও২০১৮ সালে যা করেছেন, সেটা ২০২৪ সালে করতে পারবেন না। এবার মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তাতে সেটা সম্ভব হবে না৷ আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আন্দোলন আরও বেগবান করতে হবে৷ রাজপথে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়েই জনগণের দ্বিতীয় মুক্তি সম্ভব হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য আবদুল মঈন খান সেমিনারের সূচনা বক্তব্যে বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে কার্যত ভোট হয়েছে আগের রাতে৷ এই ঘটনা দুঃখজনক, কলঙ্কময়। বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন৷ এই বইটি বাংলাদেশের ভুয়া নির্বাচন নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সংকলন। এর মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের নামে বাংলাদেশে যে চরম প্রতারণা হচ্ছে, তা তুলে ধরা হয়েছে।

তিনি বলেন, গত নির্বাচনের সময় সরকারি দলের সদস্য ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মনে কোনো লজ্জা বা অপরাধবোধ ছিল না। ভোটের আগের রাতে অহংকারের সঙ্গে প্রশাসনিক শক্তি ব্যবহার করে জালিয়াতি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ আরেকটি নির্বাচনের চেষ্টা করছে, সে কারণে অতীতের অন্যায় নতুন করে তুলে ধরা হচ্ছে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর বলেন, পিটার হাসকে (বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত) ধন্যবাদ জানাই। আমাদের জন্য অবতার হয়ে এসেছেন। উনাকে আরও সাহস দেওয়া দরকার। বাবারে বাঁচা, রক্ষা কর, আছি তোমাদের সঙ্গে। তোমরাও ডেমোক্রেটিক কান্ট্রি (গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র), আমরাও ডেমোক্রেটিক কান্ট্রি।

সেমিনারে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান (মান্না) বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি ও র‍্যাব কর্মকর্তাদের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা বিরোধীদের জন্য আটকে থাকা দরজা খুলে দিয়েছে। সামনে যেতে পারছিলাম না। সেই আটকে থাকা দরজা খুলে দিয়েছে ভিসা নীতি ও র‍্যাব কর্মকর্তাদের নিষেধাজ্ঞা। এই দরজা দিয়ে আমাদের সামনে যেতে হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ওরা (যুক্তরাষ্ট্র) আমাকে চায় না। ওরা না চাইলে কেউ থাকতে পারে না। ফলে আশা তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমেরিকা, ইউরোপকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। এর জবাব আমেরিকা কীভাবে দেবে? আমেরিকা গায়ে পানি লাগাবে না, কিন্তু গোসল করতে চায়।’ পূজার পরে বৃহত্তর আন্দোলন করার ঘোষণা দিয়ে মাহমুদুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক শক্তি সহায়তা করবে, কিন্তু এখানে বেল (ঘণ্টা) আমাদেরই বাজাতে হবে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকতউল্লা বুলু প্রমুখ। সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

পশ্চিমা সমর্থন সরকার পতন আন্দোলনে সাহস জোগাচ্ছে : ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৮:১৮:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৩

বাংলাদেশ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন সরকার পতনের চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সবাইকে সাহস জোগাচ্ছে বলে মন্তব্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যেতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরাও নির্বাচন চাই। তবে এবার আর যেনতেনভাবে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।

রোববার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে ‘দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দেশীয়-আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা ও এই মুহূর্তে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার এবং ‘নো কমেন্টস’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ক্ষমতাসীনদের প্রতি ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, তোমরা যে যা বলো ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই। আমরা যে যা বলছি, উনি (প্রধানমন্ত্রী) ওনার মতোই ভাবছেন। প্রধানমন্ত্রী জবরদখল করে ক্ষমতায় বসে আছেন।

তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) কাউকে তোয়াক্কা করছে না। তিনি সরকারের বিরুদ্ধে আবারও পাতানো নির্বাচনের পাঁয়তারা করার অভিযোগ তোলেন। আমরা সবাই এবার রাজপথে নেমে গেছি। আমাদের দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে কোনো হতাশা নেই। যারা মাঠে আছে, তাদের মধ্যে হতাশা থাকে না। যুগপৎ আন্দোলন যারা করছি, তাদের মধ্যেও কোনো হতাশা নেই। আমাদের কত নেতাকর্মী জীবন দিচ্ছে। তবুও হতাশা নেই। বিজয় আমাদের হবেই। আমাদের নেত্রী, এই অবস্থায়ও আপস করেননি। নেতাকর্মীরাও আপস করবে না।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, বেআইনিভাবে রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে আছেন, প্রধান সংকট সেখানে। তিনি বলেছেন, যেভাবেই হোক নির্বাচন হবে। আমরাও চাই নির্বাচন হোক। সে নির্বাচনে অবশ্যই জনগণকে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারতে হবে৷ শেখ হাসিনা চাইলেন বিনা ভোটারের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হবেন, এবার সেটা আর হবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০১৪ ও২০১৮ সালে যা করেছেন, সেটা ২০২৪ সালে করতে পারবেন না। এবার মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তাতে সেটা সম্ভব হবে না৷ আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আন্দোলন আরও বেগবান করতে হবে৷ রাজপথে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়েই জনগণের দ্বিতীয় মুক্তি সম্ভব হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য আবদুল মঈন খান সেমিনারের সূচনা বক্তব্যে বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে কার্যত ভোট হয়েছে আগের রাতে৷ এই ঘটনা দুঃখজনক, কলঙ্কময়। বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন৷ এই বইটি বাংলাদেশের ভুয়া নির্বাচন নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সংকলন। এর মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের নামে বাংলাদেশে যে চরম প্রতারণা হচ্ছে, তা তুলে ধরা হয়েছে।

তিনি বলেন, গত নির্বাচনের সময় সরকারি দলের সদস্য ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মনে কোনো লজ্জা বা অপরাধবোধ ছিল না। ভোটের আগের রাতে অহংকারের সঙ্গে প্রশাসনিক শক্তি ব্যবহার করে জালিয়াতি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ আরেকটি নির্বাচনের চেষ্টা করছে, সে কারণে অতীতের অন্যায় নতুন করে তুলে ধরা হচ্ছে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর বলেন, পিটার হাসকে (বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত) ধন্যবাদ জানাই। আমাদের জন্য অবতার হয়ে এসেছেন। উনাকে আরও সাহস দেওয়া দরকার। বাবারে বাঁচা, রক্ষা কর, আছি তোমাদের সঙ্গে। তোমরাও ডেমোক্রেটিক কান্ট্রি (গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র), আমরাও ডেমোক্রেটিক কান্ট্রি।

সেমিনারে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান (মান্না) বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি ও র‍্যাব কর্মকর্তাদের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা বিরোধীদের জন্য আটকে থাকা দরজা খুলে দিয়েছে। সামনে যেতে পারছিলাম না। সেই আটকে থাকা দরজা খুলে দিয়েছে ভিসা নীতি ও র‍্যাব কর্মকর্তাদের নিষেধাজ্ঞা। এই দরজা দিয়ে আমাদের সামনে যেতে হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ওরা (যুক্তরাষ্ট্র) আমাকে চায় না। ওরা না চাইলে কেউ থাকতে পারে না। ফলে আশা তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমেরিকা, ইউরোপকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। এর জবাব আমেরিকা কীভাবে দেবে? আমেরিকা গায়ে পানি লাগাবে না, কিন্তু গোসল করতে চায়।’ পূজার পরে বৃহত্তর আন্দোলন করার ঘোষণা দিয়ে মাহমুদুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক শক্তি সহায়তা করবে, কিন্তু এখানে বেল (ঘণ্টা) আমাদেরই বাজাতে হবে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকতউল্লা বুলু প্রমুখ। সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল