পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবী : এমপি নয়, কুয়েতের বাসিন্দা হিসেবে পাপুল গ্রেপ্তার হয়েছেন!

- প্রকাশের সময় : ০৩:৪২:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুলাই ২০২০
- / ৫০ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক: মানবপাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের দায়ে কুয়েতে সিআইডি’র হাতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশী সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল বিষয়ে এখনও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো তথ্য পায়নি বলে দাবি করেছেন মন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। এমপি পাপুল আটকাদেশের এক মাসে (গত ৬ জুন কুয়েত সিটির বাসা থেকে ধরে নিয়ে টানা ৯ দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর এখন তিনি জেলহাতে) কুয়েতে তোলপাড় হয়ে গেলেও দেশটির সরকার এখনও ঢাকাকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। লকডাউনের কারণে কুয়েতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে না-কি কেউ ফোনই ধরেন না দূতাবাসের এমন রিপোর্ট পাওয়ার পর ঢাকায় কুয়েত মিশনে যোগাযোগ করা হয়েছিল জানিয়ে মন্ত্রী মোমেন বলেন, আমরা ঢাকাস্থ কুয়েতের রাষ্ট্রদূতের কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছি, কিন্তু এক সপ্তাহ হয়ে গেছে তিনিও রেসপন্স করেননি। লক্ষীপুর-২ আসনের এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল এমপি হিসেবে নয়, কুয়েতের নাগরিক এবং সে দেশের ব্যবসায়ী হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছেন এমন দাবিও করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সোমবার (৬ জুলাই) নিজ দপ্তরে একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি পাপুলকান্ড সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। ওই সাক্ষাৎকারের অংশ বিশেষ (ভিডিও ক্লিপ) মন্ত্রণালয়ের তরফে মঙ্গলবার অন্য গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সরবরাহ করা হয়। যার একাধিক ভিডিও ক্লিপ বা বার্তা পেয়েছে মানবজমিন। সেখানে মন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, এমপি পাপুল কুয়েতে সরকারি পাসপোর্ট (কূটনৈতিক পাসপোর্ট) নিয়ে যাননি।
কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল
কুয়েতে তিনি ৩০ বছর ধরে ব্যবসা করেন। সেখানকার কোম্পানির সিইও এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সে দেশের লোকাল রেসিডেন্ট বা নাগরিকত্ব পাওয়া বাংলাদেশের এ সংসদ সদস্যকে তারা সে দেশের একজন ব্যবসায়ী হিসেবে গ্রেপ্তার করেছে। মানবপাচারের ঘটনায় সরকার কাউকে ছাড় দেবে না জানিয়ে মন্ত্রী মোমেন বলেন, ‘আমরা মানবপাচার ও অর্থপাচার বন্ধ করতে কত চেষ্টা চালাচ্ছি। এ সময় একজন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে কুয়েতে অভিযোগ এসেছে। বিষয়টা অত্যন্ত দুঃখজনক। কুয়েতের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লক্ষীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম (পাপুল) এর বিরুদ্ধে মানবপাচার ও অর্থপাচারের অভিযোগ করা হয়েছে। তবে সে দেশের সরকার আমাদের অফিসিয়ালি কিছু জানায়নি। ওই দেশের সরকার যদি আমাদের এ সংসদ সদস্যের বিষয়ে জানায় তবে আমরা আমাদের দেশে নিয়ম অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেবো। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব ব্যাপারে অর্থাৎ মানবপাচার ও অর্থপাচারের বিষয়ে জিরো টলারেন্সে নীতি মেনে চলেন। সে যে দলেরই হোক না কেন, নিজের দলের হলেও তাকে শাস্তি পেতে হবে। মন্ত্রী বলেন, পাপুলের বিষয়ে কুয়েতের পত্রপত্রিকা এবং ঢাকায় যে খবরা-খবর প্রচারিত হয়েছে তা আমলে নিয়ে দুদক তার স্ত্রী, কন্যাসহ পরিবারের সংশ্লিষ্টদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবে মন্ত্রী মোমেন এ-ও জানিয়েছেন, এমপি পাপুল বা তার দলবল চাইলে তাকে কনস্যুলার সার্ভিস (আইনগত সহায়তা) দেবে সরকার। বিদেশে বাংলাদেশের যে কোনো নাগরিককে (দল-মত, পদ-পদবি যাই হোক) এটা দেয়া হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি। উল্লেখ্য, পাপুলকান্ড বিষয়ে গত ফেব্রæয়ারীতে যখন কুয়েতের দৈনিক আল-কাবাস ও আরব টাইমস প্রথম রিপোর্ট করেছিল এবং ঢাকায় মানবজমিনসহ বিভিন্ন সংবাদপত্র ট্রান্সলেশন ছেপেছিল তখন দূতাবাসের উদ্ধৃতি দিয়ে মন্ত্রী এটাকে ‘ফেক নিউজ’ বলে দাবি করেছিলেন।
রাষ্ট্রদূতের সম্পৃক্ততার অভিযোগ প্রসঙ্গ-
এদিকে কয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এসএম আবুল কালামের সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তার নিয়োগের চুক্তির মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে। এ মাসেই তার মেয়াদ শেষে তিনি চলে আসবেন। নতুন রাষ্ট্রদূত কে হবেন তাও আমরা চূড়ান্ত করে ফেলেছি।’
তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, পত্রপত্রিকায় আসছে, অনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাওয়া গেলে অবশ্যই তা তদন্ত করে দেখা হবে। যদি দেখা যায় তার সত্যিই তার সম্পৃক্ততা আছে তবে এটি গর্হিত কাজ হবে। এ জন্য নিশ্চয়ই তারও শান্তি হবে। (দৈনিক মানবজমিন)