নাইকো মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিলেন কানাডার দুই পুলিশ, খালেদা জিয়াকে নিয়ে কিছু বলেননি তারা

- প্রকাশের সময় : ০৬:০১:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ নভেম্বর ২০২৩
- / ১১০ বার পঠিত
বাংলাদেশ ডেস্ক : নাইকো দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্য দিলেন কানাডিয়ান রয়েল পুলিশের দুই সদস্য কেভিন ডুগান ও লয়েড শোয়েপ। তাদের জেরা গতকাল শেষ হয়েছে। সোমবার সাক্ষ্য শেষে ওই দিন লয়েড শোয়েপের জেরাও শেষ করেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে কানাডা অ্যান্ড রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের সদস্য কেভিন ডুগানের জেরা শেষ হয়েছে। তাকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। তবে দুদক কানাডা অ্যান্ড রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের সদস্য লয়েড শোয়েপের পুনরায় সাক্ষ্য নেয়ার জন্য আবেদন করেছেন। আগামীকাল ২রা নভেম্বর এ বিষয়ে শুনানি ও পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। কানাডিয়ান দুই পুলিশ সদস্য কেউই খালেদা জিয়াকে অভিযুক্ত করে বক্তব্য না দেয়ায় তাদের কাউকেই জেরা করেননি খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী। দুদকের পক্ষে ছিলেন এডভোকেট খুরশীদ আলম খান ও এডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল। অপরদিকে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন এডভোকেট আমিনুল ইসলাম, ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, এডভোকেট জাকির হোসেন ভূঁইয়া।
তাদেরকে সহযোগিতা করেন এডভোকেট আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া। পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এডভোকেট আমিনুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে কানাডিয়ান রয়েল পুলিশের সদস্য লয়েড শোয়েপের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। তবে কেভিন ডুগানের সাক্ষ্যগ্রহণ হলেও জেরা শেষ হয়নি। আদালত ডুগানের জেরার জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য ছিল। জবানবন্দিতে খালেদা জিয়াকে অভিযুক্ত করে তারা আদালতে কিছু বলেননি। যেহেতু খালেদা জিয়ার বিষয়ে তিনি আদালতে কোনো বক্তব্য দেননি, তাই তাকে আমরা জেরা করিনি।
গত ১৭ই সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) একজন এবং কানাডিয়ান রয়েল মাউন্টেড পুলিশের দুজনকে অনুমতি দেন আদালত। তারা হলেন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের অবসরপ্রাপ্ত সুপারভাইজরি স্পেশাল এজেন্ট ডেবরা লাপরিবট্ট গ্রিফিথ, কানাডা অ্যান্ড রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের সদস্য কেবিন দুগ্গান ও লয়েড শোয়েপ।
২০০৭ সালের ৯ই ডিসেম্বর দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকো’র সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করা হয়। এরপর ২০১৮ সালের ৫ই মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হয়। ২০২৩ সালের ১৯শে মার্চ কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন।
মামলার অন্য সাত আসামি হলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্র্যাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকো’র দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
সূত্র : মানবজমিন
হককথা/নাছরিন