নিউইয়র্ক ০২:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

তফসিল ঘোষণার আগেই ফয়সালা চায় দুই দল

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:০৭:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৪৮ বার পঠিত

বাংলাদেশ ডেস্ক : মাঠ দখলের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। বিএনপি মনে করছে, এই সময়ের মধ্যে সরকারকে ফেলে দিতে হবে। আর আওয়ামী লীগ বলছে এই সময়ে বিএনপিকে তারা মঠেই দাঁড়াতে দেবে না।

সব মিলিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক ধরনের কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে গেছে। আর এই কাউন্ট ডাউন চলবে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত। সামনের এক মাসকে চলমান রাজনীতির সবচেয়ে স্পর্শকাতর সময় বলে মনে করা হচ্ছে। বিএনপি ও তার যুগপৎ আন্দোলনের শরিকেরা মনে করছে, এই এক মাসের মধ্যেই সরকারকে ফেলে দিতে না পারলে সরকার তার পথেই এগিয়ে যাবে। তাদের অধীনে নির্বাচন ঠেকানো যাবে না।

আর সরকারও মনে করছে এই এক মাস বিএনপিকে মোকাবিলা করা গেলে তফসিল ঘোষণার পর আর আন্দোলন থাকবে না। তাই যেকোনো উপায়ে বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে হবে। তবে এখানে যুক্তরাষ্ট্রেরভিসা নীতির একটি বড় ভূমিকা আছে। সরকারের পক্ষে বিরোধীদের ঠেকাতে পুলিশ কী ভূমিকা নেবে তা নিয়ে সরকারি দল আওয়ামী লীগের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। তাই তারা নিজেদের পুরো সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে মাঠে থাকতে চায়। শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে আওয়ামী লীগের কৌশল চূড়ান্ত হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বুধবার বিএনপিকে ৩৬ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই ৩৬ দিন বিএনপিকে দাঁড়াতে দেব না। সব জায়গা বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের দখলে থাকবে। শেখ হাসিনার কর্মীদের দখলে থাকবে।’

আর বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দেশের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যাবে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব থাকবে কি না, গণতান্ত্রিক অধিকার থাকবে কিনা, জনগণ তার প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারবে কি না-সবকিছু নির্ভর করছে আগামী কয়েকটা দিনের ওপর।’ দুই দিন আগে তিনি বলেছেন, ‘সরকার কথা না শুনলে ফয়সালা রাজপথেই হবে।’

খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে চিকিৎসার জন্য সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার যে আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন তাও শেষ হয়ে গেছে। সরকার কোনো সাড়া দেয়নি। বিএনপি নেতারা বলছেন, এখন এসপার-ওসপার আন্দোলন ছাড়া আর কোনো পথ নেই।

৫ অক্টোবর পর্যন্ত বিএনপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচি আছে। তবে নতুন কর্মসূচি এর আগেই দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেন, ‘সরকারের পুতুল নির্বাচন কমিশন যেহেতু একটি পাতানো নির্বাচন করার জন্য নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করবে। তাই তার আগেই আমরা আন্দোলন যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যাবো। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না।’

বিএনপি তার যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে কর্মসূচি নিয়ে আগামী দুই দিন বৈঠক করবে। বৈঠকে যেসব কর্মসূচির প্রস্তাব আসছে সেগুলো নিয়ে সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটি বৈঠক করবে। সেই বৈঠকেই কর্মসূচি চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের পাওয়ার লাইনে অচলাবস্থা সৃষ্টির মতো কর্মসূচি দেব। সরকারের ক্ষমতার উৎস জনগণের যে প্রতিষ্ঠানগুলো এখন দলীয় প্রতিষ্ঠানের মতো কাজ করছে সেগুলোর কাজে একটা অচলাবস্থার সৃষ্টি করতে চাই। এজন্য অবরোধ, ঘেরাও এবং হরতালের মতো কর্মসূচি আমাদের বিবেচনায় আছে।’

তার কথা, ‘আমরা যদি রাজপথে চাপ বাড়াই তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও সরকারের ওপর চাপ বাড়াবে। কারণ তারাও সুষ্ঠু নির্বাচন চান। আমরাও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছি।’

বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জামায়াত ছাড়াও আরও অনেক ইসলামি দলের সঙ্গে তারা কথা বলছেন। যারা যুগপৎ দলের মধ্যে নেই তারাও মাঠে নামবে। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ ইসলামি আন্দোলন অন্যতম। আর হেফাজতে ইসলামের নেতাদের আলাদা আলাদা দল আছে। তারা ওই দলীয় ব্যানারে হেফাজতের নেতা-কর্মীদের নিয়ে মাঠে নামবেন।

বিএনপির একটি সূত্র জানায়, ঢাকা অবরোধের মতো একটি কর্মসূচি থাকতে পারে। ওই কর্মসূচির টার্গেট হবে সারাদেশ থেকে নেতা-কর্মীদের ঢাকায় এনে ঢাকা অচল করে দেওয়া। তবে এই কর্মসূচি আগে প্রকাশ না করে নেতা-কর্মীদের ঢাকায় এনে ঘোষণা করা হতে পারে।

যুগপৎ আন্দোলনের শরিক এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ‘এবারের আন্দোলনে এসপার ওসপার কিছু একটা হবে। আর সেজন্য বিএনপির সঙ্গে আমাদের ধারাবাহিক আলোচনা চলছে। হরতাল, অবরোধ, ঘেরাও সবই বিবেচনায় আছে। ঢাকা অবরোধের কর্মসূচিও আসতে পারে।’

তার কথা, ‘অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়ছে। সরকার দুর্বল হয়ে পড়ছে। আর আমরা কঠিন কর্মসূচি দেব যাতে সরকারের পতন হয়। এবার আর আমাদের গ্রেপ্তারের সময় পাবে না। তারা কীভাবে পালাবে সেই চিন্তা করতে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে চাই। কিন্তু আমাদের ওপর আঘাত এলে এবার প্রতিরোধ করব।’

এদিকে আওয়ামী লীগ নির্বাচন পর্যন্ত তাদের নেতা-কর্মীদের মাঠে থাকার জন্য বলেছে। সহযোগী সংঠনগুলোকেও আলাদা আলাদা দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ মনে করছে, বিএনপির সামনে মাঠে শক্তি প্রদর্শন করলে বিএনপি খুব বেশি এগোতে পারবে না। তারা এরইমধ্যে এমপি এবং আরও যারা প্রার্থী হতে চান তাদের যার যারা এলাকায় যেতে বলেছেন।

আওয়ামী লীগ তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত প্রতিদিনই সারাদেশে শাান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করবে। আর বিএনপি কী কর্মসূচি দেয় তা দেখে পাল্টা কর্মসূচি দেবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ অক্টোবর দেশে ফিরে এলে আরও বিস্তারিত পরিকল্পনা হবে বলে জানান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি কোনো ধরনের সংঘাত করলে মাঠে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। অবরোধ, ঘেরাওয়ের নামে স্বাভাবিক জনজীবন বিঘ্নিত করলে জনগণ তাদের মাঠে দাঁড়াতে দেবে না। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা পর্যন্ত দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে আওয়ামী লীগ রাস্তায় থাকবে। আমরা সামনের নির্বাচন বিঘ্নকারী কোনো কিছু হতে দেব না। মানুষ নির্বাচন চায়।’

তার কথা, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি তো নির্বাচন বন্ধ করার জন্য নয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। আমরা তো তার জন্যই কাজ করছি। তবে তাদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকলে দেশের মানুষ তা মানবে না। অতীতেও মানে নাই।’

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের বাংলা সংস্করণের হয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন হারুন উর রশীদ স্বপন। এই প্রতিবেদনের সব ধরনের দায়ভার ডয়চে ভেলের।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

তফসিল ঘোষণার আগেই ফয়সালা চায় দুই দল

প্রকাশের সময় : ০৯:০৭:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বাংলাদেশ ডেস্ক : মাঠ দখলের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। বিএনপি মনে করছে, এই সময়ের মধ্যে সরকারকে ফেলে দিতে হবে। আর আওয়ামী লীগ বলছে এই সময়ে বিএনপিকে তারা মঠেই দাঁড়াতে দেবে না।

সব মিলিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক ধরনের কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে গেছে। আর এই কাউন্ট ডাউন চলবে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত। সামনের এক মাসকে চলমান রাজনীতির সবচেয়ে স্পর্শকাতর সময় বলে মনে করা হচ্ছে। বিএনপি ও তার যুগপৎ আন্দোলনের শরিকেরা মনে করছে, এই এক মাসের মধ্যেই সরকারকে ফেলে দিতে না পারলে সরকার তার পথেই এগিয়ে যাবে। তাদের অধীনে নির্বাচন ঠেকানো যাবে না।

আর সরকারও মনে করছে এই এক মাস বিএনপিকে মোকাবিলা করা গেলে তফসিল ঘোষণার পর আর আন্দোলন থাকবে না। তাই যেকোনো উপায়ে বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে হবে। তবে এখানে যুক্তরাষ্ট্রেরভিসা নীতির একটি বড় ভূমিকা আছে। সরকারের পক্ষে বিরোধীদের ঠেকাতে পুলিশ কী ভূমিকা নেবে তা নিয়ে সরকারি দল আওয়ামী লীগের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। তাই তারা নিজেদের পুরো সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে মাঠে থাকতে চায়। শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে আওয়ামী লীগের কৌশল চূড়ান্ত হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বুধবার বিএনপিকে ৩৬ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই ৩৬ দিন বিএনপিকে দাঁড়াতে দেব না। সব জায়গা বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের দখলে থাকবে। শেখ হাসিনার কর্মীদের দখলে থাকবে।’

আর বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দেশের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যাবে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব থাকবে কি না, গণতান্ত্রিক অধিকার থাকবে কিনা, জনগণ তার প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারবে কি না-সবকিছু নির্ভর করছে আগামী কয়েকটা দিনের ওপর।’ দুই দিন আগে তিনি বলেছেন, ‘সরকার কথা না শুনলে ফয়সালা রাজপথেই হবে।’

খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে চিকিৎসার জন্য সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার যে আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন তাও শেষ হয়ে গেছে। সরকার কোনো সাড়া দেয়নি। বিএনপি নেতারা বলছেন, এখন এসপার-ওসপার আন্দোলন ছাড়া আর কোনো পথ নেই।

৫ অক্টোবর পর্যন্ত বিএনপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচি আছে। তবে নতুন কর্মসূচি এর আগেই দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেন, ‘সরকারের পুতুল নির্বাচন কমিশন যেহেতু একটি পাতানো নির্বাচন করার জন্য নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করবে। তাই তার আগেই আমরা আন্দোলন যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যাবো। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না।’

বিএনপি তার যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে কর্মসূচি নিয়ে আগামী দুই দিন বৈঠক করবে। বৈঠকে যেসব কর্মসূচির প্রস্তাব আসছে সেগুলো নিয়ে সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটি বৈঠক করবে। সেই বৈঠকেই কর্মসূচি চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের পাওয়ার লাইনে অচলাবস্থা সৃষ্টির মতো কর্মসূচি দেব। সরকারের ক্ষমতার উৎস জনগণের যে প্রতিষ্ঠানগুলো এখন দলীয় প্রতিষ্ঠানের মতো কাজ করছে সেগুলোর কাজে একটা অচলাবস্থার সৃষ্টি করতে চাই। এজন্য অবরোধ, ঘেরাও এবং হরতালের মতো কর্মসূচি আমাদের বিবেচনায় আছে।’

তার কথা, ‘আমরা যদি রাজপথে চাপ বাড়াই তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও সরকারের ওপর চাপ বাড়াবে। কারণ তারাও সুষ্ঠু নির্বাচন চান। আমরাও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছি।’

বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জামায়াত ছাড়াও আরও অনেক ইসলামি দলের সঙ্গে তারা কথা বলছেন। যারা যুগপৎ দলের মধ্যে নেই তারাও মাঠে নামবে। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ ইসলামি আন্দোলন অন্যতম। আর হেফাজতে ইসলামের নেতাদের আলাদা আলাদা দল আছে। তারা ওই দলীয় ব্যানারে হেফাজতের নেতা-কর্মীদের নিয়ে মাঠে নামবেন।

বিএনপির একটি সূত্র জানায়, ঢাকা অবরোধের মতো একটি কর্মসূচি থাকতে পারে। ওই কর্মসূচির টার্গেট হবে সারাদেশ থেকে নেতা-কর্মীদের ঢাকায় এনে ঢাকা অচল করে দেওয়া। তবে এই কর্মসূচি আগে প্রকাশ না করে নেতা-কর্মীদের ঢাকায় এনে ঘোষণা করা হতে পারে।

যুগপৎ আন্দোলনের শরিক এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ‘এবারের আন্দোলনে এসপার ওসপার কিছু একটা হবে। আর সেজন্য বিএনপির সঙ্গে আমাদের ধারাবাহিক আলোচনা চলছে। হরতাল, অবরোধ, ঘেরাও সবই বিবেচনায় আছে। ঢাকা অবরোধের কর্মসূচিও আসতে পারে।’

তার কথা, ‘অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়ছে। সরকার দুর্বল হয়ে পড়ছে। আর আমরা কঠিন কর্মসূচি দেব যাতে সরকারের পতন হয়। এবার আর আমাদের গ্রেপ্তারের সময় পাবে না। তারা কীভাবে পালাবে সেই চিন্তা করতে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে চাই। কিন্তু আমাদের ওপর আঘাত এলে এবার প্রতিরোধ করব।’

এদিকে আওয়ামী লীগ নির্বাচন পর্যন্ত তাদের নেতা-কর্মীদের মাঠে থাকার জন্য বলেছে। সহযোগী সংঠনগুলোকেও আলাদা আলাদা দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ মনে করছে, বিএনপির সামনে মাঠে শক্তি প্রদর্শন করলে বিএনপি খুব বেশি এগোতে পারবে না। তারা এরইমধ্যে এমপি এবং আরও যারা প্রার্থী হতে চান তাদের যার যারা এলাকায় যেতে বলেছেন।

আওয়ামী লীগ তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত প্রতিদিনই সারাদেশে শাান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করবে। আর বিএনপি কী কর্মসূচি দেয় তা দেখে পাল্টা কর্মসূচি দেবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ অক্টোবর দেশে ফিরে এলে আরও বিস্তারিত পরিকল্পনা হবে বলে জানান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি কোনো ধরনের সংঘাত করলে মাঠে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। অবরোধ, ঘেরাওয়ের নামে স্বাভাবিক জনজীবন বিঘ্নিত করলে জনগণ তাদের মাঠে দাঁড়াতে দেবে না। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা পর্যন্ত দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে আওয়ামী লীগ রাস্তায় থাকবে। আমরা সামনের নির্বাচন বিঘ্নকারী কোনো কিছু হতে দেব না। মানুষ নির্বাচন চায়।’

তার কথা, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি তো নির্বাচন বন্ধ করার জন্য নয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। আমরা তো তার জন্যই কাজ করছি। তবে তাদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকলে দেশের মানুষ তা মানবে না। অতীতেও মানে নাই।’

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের বাংলা সংস্করণের হয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন হারুন উর রশীদ স্বপন। এই প্রতিবেদনের সব ধরনের দায়ভার ডয়চে ভেলের।