নিউইয়র্ক ০৮:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ঢাকার আদালতে বিএনপির ৫৫৮ নেতাকর্মীর কারাদণ্ড

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৩৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩
  • / ১৪০ বার পঠিত

বিরোধী নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার করে প্রতিদিন আদালতে তোলা হচ্ছে : আবদুল্লাহ আল বাপ্পী

বাংলাদেশ ডেস্ক : রাজনৈতিক মামলায় গত তিন মাসে ঢাকার আদালতে ৩১ মামলায় বিএনপির ৫৫৮ জন নেতাকর্মীকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। আর গত এক বছরে ২৯টি মামলায় ৩০৪ নেতাকর্মীকে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এসব বিএনপি নেতাকর্মীর বিচারের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধিতে বর্ণিত বিচারিক স্তরসমূহ অনুসরণ করা হয়নি। যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই তড়িঘড়ি করে নেতাদের সাজা প্রদান করা হয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, গতকাল সোমবার পর্যন্ত গত তিন মাসে ৩১টি মামলায় ৫৫৮ জন নেতাকর্মীকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, এসব সাজা দেয়ার বিষয়ে কিছু কিছু বিচারিক আদালত আইন মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ চাপে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে সাজা প্রদান করছে। এ ক্ষেত্রে ফৌজদারি বিচারের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী সমাদ্রিত ‘সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত’ এই নীতি অনুসরণ করা হয়নি। তিনি বলেন, যেনতেন উপায়ে আসামি পক্ষের আইনজীবীদের কোনো প্রকার সুযোগ না দিয়ে রায়গুলো পড়ে শোনানো হচ্ছে।

তবে এ অভিযোগের বিষয়ে রাষ্ট্রের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়া আমাদের আইনে সাজা দেয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, উনারা না জেনে কথা বলছেন। এটা সত্য নয়। সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়া কারো কিরুদ্ধে কোনো প্রকার বিচার করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, কেউ যদি বলে যথাযথ নিয়ম মানা হয়নি, তাহলে সেটা আপিলে বলতে হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, হরতাল অবরোধের কারণে গ্রেফতার করা হচ্ছে সেটা তো হবেই। জানমালের ক্ষতি করলে যারা এর সাথে সম্পৃক্ত তাদের অবশ্যই গ্রেফতার করতে হবে।

বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, গত ২০ নভেম্বর ঢাকার দু’টি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কর্তৃক চারটি মামলায় চার বছর আগে মারা যাওয়া বিএনপির নেতা আবু তাহের দাইয়া, ১০ বছর আগে গুম হওয়া সাজেদুল ইসলাম সুমন এবং আট বছর আগে গুম হওয়া আমিনুল ইসলাম জাকিরসহ ৫৪ নেতাকর্মীকে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

এ ছাড়া, উল্লেখযোগ্য যেসব নেতাকর্মীকে সাজা প্রদান করা হয়েছে তারা হলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান (হাবীব), বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল আলিম (নকি), বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার। এমনকি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগকেও একটি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলায় গত ১৫ নভেম্বর দুই বছরের সাজা প্রদান করা হয়েছে।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানান, আইনজীবী হিসেবে সাজা প্রদানকৃত প্রতিটি মামলা পর্যালোচনায় আমরা দেখতে পেয়েছি, সাজাপ্রাপ্ত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের সংশ্লিষ্টতা নেই। কোনো ফৌজদারি অপরাধ প্রমাণ করতে হয় সাক্ষ্য-প্রমাণের দ্বারা। বেশির ভাগ মামলায় সাক্ষী হিসেবে শুধু পুলিশ সদস্যকে হাজির করিয়ে সাজা প্রদান করা হয়েছে। কোনো নিরপেক্ষ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়নি। বিএনপি নেতৃবৃন্দকে একের পর এক সাজা প্রদানের মাধ্যমে বিচারিক আদালতের প্রতি সরকারের অযাচিত হস্তক্ষেপের যে অভিযোগ আমরা বারংবার করে আসছিলাম তারই প্রমাণ হলো। সংবিধানের দৃষ্টিতে ‘সকল নাগরিক সমান’ এ কথা আর বিএনপি নেতাকর্মীদের জন্য প্রযোজ্য নয়। বিচারের নামে বিরোধী দল নিধনের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে এ রায়গুলো ইতিহাসে স্থান করে নিলো। আমাদের বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থাহীনতার চরম বহিঃপ্রকাশ এ রায়গুলো। সূত্র : নয়া দিগন্ত

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

ঢাকার আদালতে বিএনপির ৫৫৮ নেতাকর্মীর কারাদণ্ড

প্রকাশের সময় : ০৪:৩৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩

বাংলাদেশ ডেস্ক : রাজনৈতিক মামলায় গত তিন মাসে ঢাকার আদালতে ৩১ মামলায় বিএনপির ৫৫৮ জন নেতাকর্মীকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। আর গত এক বছরে ২৯টি মামলায় ৩০৪ নেতাকর্মীকে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এসব বিএনপি নেতাকর্মীর বিচারের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধিতে বর্ণিত বিচারিক স্তরসমূহ অনুসরণ করা হয়নি। যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই তড়িঘড়ি করে নেতাদের সাজা প্রদান করা হয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, গতকাল সোমবার পর্যন্ত গত তিন মাসে ৩১টি মামলায় ৫৫৮ জন নেতাকর্মীকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, এসব সাজা দেয়ার বিষয়ে কিছু কিছু বিচারিক আদালত আইন মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ চাপে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে সাজা প্রদান করছে। এ ক্ষেত্রে ফৌজদারি বিচারের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী সমাদ্রিত ‘সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত’ এই নীতি অনুসরণ করা হয়নি। তিনি বলেন, যেনতেন উপায়ে আসামি পক্ষের আইনজীবীদের কোনো প্রকার সুযোগ না দিয়ে রায়গুলো পড়ে শোনানো হচ্ছে।

তবে এ অভিযোগের বিষয়ে রাষ্ট্রের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়া আমাদের আইনে সাজা দেয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, উনারা না জেনে কথা বলছেন। এটা সত্য নয়। সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়া কারো কিরুদ্ধে কোনো প্রকার বিচার করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, কেউ যদি বলে যথাযথ নিয়ম মানা হয়নি, তাহলে সেটা আপিলে বলতে হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, হরতাল অবরোধের কারণে গ্রেফতার করা হচ্ছে সেটা তো হবেই। জানমালের ক্ষতি করলে যারা এর সাথে সম্পৃক্ত তাদের অবশ্যই গ্রেফতার করতে হবে।

বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, গত ২০ নভেম্বর ঢাকার দু’টি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কর্তৃক চারটি মামলায় চার বছর আগে মারা যাওয়া বিএনপির নেতা আবু তাহের দাইয়া, ১০ বছর আগে গুম হওয়া সাজেদুল ইসলাম সুমন এবং আট বছর আগে গুম হওয়া আমিনুল ইসলাম জাকিরসহ ৫৪ নেতাকর্মীকে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

এ ছাড়া, উল্লেখযোগ্য যেসব নেতাকর্মীকে সাজা প্রদান করা হয়েছে তারা হলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান (হাবীব), বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল আলিম (নকি), বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার। এমনকি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগকেও একটি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলায় গত ১৫ নভেম্বর দুই বছরের সাজা প্রদান করা হয়েছে।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানান, আইনজীবী হিসেবে সাজা প্রদানকৃত প্রতিটি মামলা পর্যালোচনায় আমরা দেখতে পেয়েছি, সাজাপ্রাপ্ত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের সংশ্লিষ্টতা নেই। কোনো ফৌজদারি অপরাধ প্রমাণ করতে হয় সাক্ষ্য-প্রমাণের দ্বারা। বেশির ভাগ মামলায় সাক্ষী হিসেবে শুধু পুলিশ সদস্যকে হাজির করিয়ে সাজা প্রদান করা হয়েছে। কোনো নিরপেক্ষ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়নি। বিএনপি নেতৃবৃন্দকে একের পর এক সাজা প্রদানের মাধ্যমে বিচারিক আদালতের প্রতি সরকারের অযাচিত হস্তক্ষেপের যে অভিযোগ আমরা বারংবার করে আসছিলাম তারই প্রমাণ হলো। সংবিধানের দৃষ্টিতে ‘সকল নাগরিক সমান’ এ কথা আর বিএনপি নেতাকর্মীদের জন্য প্রযোজ্য নয়। বিচারের নামে বিরোধী দল নিধনের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে এ রায়গুলো ইতিহাসে স্থান করে নিলো। আমাদের বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থাহীনতার চরম বহিঃপ্রকাশ এ রায়গুলো। সূত্র : নয়া দিগন্ত

হককথা/নাছরিন