জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর আর নেই

- প্রকাশের সময় : ১১:৫৪:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ জুলাই ২০২০
- / ৫২ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক: না ফেরার দেশে চলে গেলেন দেশের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। সোমবার (৬ জুলাই) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা ১৩ মিনিটের দিকে রাজশাহী মহানগরীর মহিষবাথান এলাকায় তার বোন ডা. শিখা বিশ্বাসের বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বøাড ক্যান্সারে ভুগছিলেন। তার মৃত্যুতে শোকাহত দেশবাসী আর প্রবাসী বাংলাদেশী। শোকাহত প্রবাসী নিউইয়র্কবাসী বাংলাদেশীসহ উত্তর আমেরিকাবাসী বাংলাদেশী। অসংখ্য জনপ্রিয় গানের এই বরেন্য শিল্পী আটবারের চলচ্চিত্র পুরষ্কার সহ দেশে-বিদেশে অনেক পুরষ্কার অর্জন করেছেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক পুত্র ও এক কন্যা রেখে যান। তাঁর পুত্র-কন্যা অষ্ট্রেলিয়ায় লেখাপড়া করছেন।
জানা যায়, সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা শেষে গত ১১ জুন রাতে বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফেরেন এন্ড্রু কিশোর। এরপর থেকে রাজশাহীতে বোনোর বাসায় থাকছিলেন। তার দেখভাল করছিলেন বোনজামাই চিকিৎসক ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস। তবে গত কয়েকদিন ধরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। দেয়া হয় অক্সিজেন সাপোর্ট। স্ত্রী লিপিকা ছাড়া আর কারো সাথে সাক্ষাত করতে দেয়া হয়নি। ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস সোমবার দুপুরে গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য দেন।
এর অগে তার স্ত্রী লিপিকা এক ফেসবুক স্ট্যাসাসে এন্ড্রু কিশোরের শারীরিক অবস্থার কথা উল্লেখ করে লিখেছিলেন, ‘এখন কিশোর কোনো কথা বলে না। চুপচাপ চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকে। আমি বলি কি ভাব, বলে কিছু না, পুরানো কথা মনে পড়ে আর ঈশ্বরকে বলি আমাকে তাড়াতাড়ি নিয়ে যাও, বেশি কষ্ট দিও না। ক্যান্সারের শেষ ধাপে খুব যন্ত্রণাদায়ক। এন্ড্রু কিশোরের জন্য সবাই প্রাণ খুলে দোয়া করবেন, যেন কম কষ্ট পায় এবং একটু শান্তিতে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে যেতে পারে।’
বøাড ক্যান্সার নিয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। ডাক্তারদের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি চিকিৎসার বাইরে চলে যাওয়ায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর তার ইচ্ছে মতো গত ১১ জুন রাতে বিশেষ ফ্লাইটে তাকে ঢাকায় আনা হয়। এরপর তাকে ঢাকা থেকে রাজশাহী নিয়ে যাওয়া হয়। তার শেষ ইচ্ছে ছিলো দেশের মাটিতেই তার যেনো মৃত্যু হয়।
রাজশাহীর সন্তান এন্ড্রু কিশোর ১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রে ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ গানের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক যাত্রা শুরু করেন। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। বাংলাদেশের গানের জগতে তাকে প্লেব্যাক স¤্রাট বলা হয়। তার জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে- ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যেখানে’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’, ‘ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘পড়ে না চোখের পলক’, ‘পদ্মপাতার পানি’, ‘ওগো বিদেশিনী’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘আমি চিরকাল প্রেমের কাঙ্গাল’ প্রভৃতি।