নিউইয়র্ক ০৬:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

জনপ্রিয় অভিনেতা নাট্যজন আলী যাকের আর নেই

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:৩৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২০
  • / ১৭৪ বার পঠিত

বিনোদন ডেস্ক: বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা নাট্যজন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও প্রবীণ অভিনেতা নাট্যজন আলী যাকের আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি গত কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৭৬ বছর। তিনি স্ত্রী অভিনয়শিল্পী সারা যাকের, ছেলে অভিনেতা ইরেশ যাকের, ছেলের বউ মিম রশিদ, নাতনি নেহা ও মেয়ে শ্রিয়া সর্বজয়াকে রেখে যান।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসংগ্রামী ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের পর দেশে ফিরে আরণ্যক নাট্যদলে যোগ দেন। ১৯৭২ সালের ২১ ফেব্রæয়ারী মুনীর চৌধুরীর কবর নাটকে প্রথম অভিনয়। ওই বছরেরই জুন মাসে নাগরিক নাট্য স¤প্রদায়ে যোগ দেন। তখন থেকে নাগরিকই তাঁর নাটকসংক্রান্ত ঠিকানা।
বাকি ইতিহাস, সৎ মানুষের খোঁজে, দেওয়ান গাজীর কিস্সা, কোপেনিকের ক্যাপটেন, গ্যালিলিও, ম্যাকবেথসহ অনেক মঞ্চসফল নাটকের সঙ্গে নির্দেশনা বা অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত তিনি। বিশ্বখ্যাত মঞ্চনাটক রূপান্তর করেছেন। মঞ্চের পাশাপাশি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেও জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। টেলিভিশনে আজ রবিবার, বহুব্রীহি, তথাপি, পাথর দেয়ালসহ অসংখ্য নাটকে অভিনয় করে তুমুল জনপ্রিয়তা পান। ৫০টির বেশি বেতার নাটক করেছেন। বেশ কিছু চলচ্চিত্রেও করেছেন অভিনয়। টেলিভিশনের জন্য মৌলিক নাটক লিখেছেন। সমসাময়িক বিষয়ে পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখিও করেন। বের হয়েছে বই, যার মধ্যে আছে সেই অরুণোদয় থেকে, নির্মল জ্যোতির জয়সহ বই। একজন শৌখিন ফটোগ্রাফারও তিনি।
বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি গ্রæপের চেয়ারম্যান তিনি। নাগরিক নাট্য স¤প্রদায়ের সভাপতি। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি। যুক্তরাজ্যের রয়াল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির পূর্ণ সদস্য। পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদক এবং মেরিল প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ সহ অনেক পুরস্কার। স্ত্রী স্বনামধন্য অভিনয়শিল্পী সারা যাকের, পুত্র ইরেশ যাকের ও কন্যা শ্রেয়া সর্বজয়াকে নিয়ে ছিলো তাঁর সংসার।
এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এসব তথ্য জানিয়েছেন আলী যাকেরের ছেলে ইরেশ যাকের। তিনি লিখেছেন, ‘চার বছর ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধের পর বাবা আজকে (২৭ নভেম্বর) সকাল ৬:৪০-এ (৬টা ৪০ মিনিটে) চলে গেলেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। উনি যে দোয়া ও ভালোবাসা পেয়েছেন, তার জন্য আমরা হৃদয়ের গভীর থেকে কৃতজ্ঞ। মৃত্যুর দুই দিন আগে বাবার করোনা শনাক্ত হয়। বাবার নামাজে জানাজা আজ বাদ আছর বনানী গোরস্তান মসজিদে পড়া হবে।’
আলী যাকের বার্ধক্য ও হার্টের সমস্যাসহ কিছু শারীরিক জটিলতা নিয়ে গত ১৭ নভেম্বর ঢাকার শ্যামলীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আলী যাকেরকে। সেখানে তাঁকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।
দাফন সম্পন্ন
এদিকে বরেণ্য অভিনেতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকেরের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে সকাল ১১টায় আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণে তাঁর মরদেহ নেওয়া হয়। সেখান থেকে নেওয়া হয় বনানীতে। জানাজা শেষে আসরের নামাজের পর বনানী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
পারিবারিকভাবে জানানো হয়, মৃত্যুর দুই দিন আগে আলী যাকেরের করোনা শনাক্ত হয়। এ কারণে শহীদ মিনারে শেষ শ্রদ্ধার আয়োজন করা হয়নি। শুক্রবার আসরের নামাজের পর বনানী কবরস্থানের মসজিদে জানাজা পড়ানো হয়। তারপর বনানী কবরস্থানে আলী যাকেরকে দাফন করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি আলী যাকেরকে শেষ শশ্রদ্ধার জন্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণে নেওয়া হলে করোনা সতর্কতা অবলম্বন করে, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁর কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন অঙ্গনের মানুষ। প্রিয়জন, সহশিল্পীকে শ্রদ্ধা জানাতে এ সময় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, মামুনুর রশীদ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী, মফিদুল হক, নাসির উদ্দীন ইউসুফ প্রমুখ। এছাড়াও আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরিবারের পক্ষে তাঁর মরদেহের পাশে তাঁর স্ত্রী সারা যাকের, ছেলে নাট্যাভিনেতা ইরেশ যাকের, মেয়ে শ্রিয়া সর্বজয়া উপস্থিত ছিলেন। সারাক্ষণ কফিনের পাশে ছিলেন সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এখানে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ছিল আলী যাকেরের মরদেহ। সেখান থেকে নেওয়া হয় বনানী, তাঁর কর্মস্থল এশিয়াটিকে।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান
বরেণ্য অভিনেতা আলী যাকেরের প্রতি ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয়েছে। এ সময় বন্ধু, স্বজন ও সহকর্মীরা অশ্রæচোখে তাঁকে শেষ বিদায় জানিয়েছেন। সেখান থেকে বনানীর উদ্দেশে শেষযাত্রা করা হয়। জানাজা শেষে বিকেলে বনানী কবরস্থানের সবুজ মাটিতে শেষ নিদ্রা হবে তাঁর। শুক্রবার সকাল ১১টার পর তাঁর মরদেহ শেরেবাংলা নগরের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি এ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম ট্রাস্টি ছিলেন।
জাদুঘর প্রাঙ্গণে আলী যাকেরের কফিন জাতীয় পতাকায় মুড়ে দেন জাদুঘরের ট্রাস্টিরা। সেখানে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন স্ত্রী সারা যাকের, ছেলে ইরেশ যাকের এবং আলী যাকেরের অভিনয়জীবনের বন্ধু সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। আলী যাকেরের মেয়ে শ্রিয়া সর্বজয়া এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে একাত্তরের শব্দসৈনিক এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানিয়ে দেওয়া হয় গার্ড অব অনার।
এরপর একে একে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টিরা, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট, ছায়ানট, থিয়েটার, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

জনপ্রিয় অভিনেতা নাট্যজন আলী যাকের আর নেই

প্রকাশের সময় : ১২:৩৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২০

বিনোদন ডেস্ক: বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা নাট্যজন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও প্রবীণ অভিনেতা নাট্যজন আলী যাকের আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি গত কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৭৬ বছর। তিনি স্ত্রী অভিনয়শিল্পী সারা যাকের, ছেলে অভিনেতা ইরেশ যাকের, ছেলের বউ মিম রশিদ, নাতনি নেহা ও মেয়ে শ্রিয়া সর্বজয়াকে রেখে যান।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসংগ্রামী ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের পর দেশে ফিরে আরণ্যক নাট্যদলে যোগ দেন। ১৯৭২ সালের ২১ ফেব্রæয়ারী মুনীর চৌধুরীর কবর নাটকে প্রথম অভিনয়। ওই বছরেরই জুন মাসে নাগরিক নাট্য স¤প্রদায়ে যোগ দেন। তখন থেকে নাগরিকই তাঁর নাটকসংক্রান্ত ঠিকানা।
বাকি ইতিহাস, সৎ মানুষের খোঁজে, দেওয়ান গাজীর কিস্সা, কোপেনিকের ক্যাপটেন, গ্যালিলিও, ম্যাকবেথসহ অনেক মঞ্চসফল নাটকের সঙ্গে নির্দেশনা বা অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত তিনি। বিশ্বখ্যাত মঞ্চনাটক রূপান্তর করেছেন। মঞ্চের পাশাপাশি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেও জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। টেলিভিশনে আজ রবিবার, বহুব্রীহি, তথাপি, পাথর দেয়ালসহ অসংখ্য নাটকে অভিনয় করে তুমুল জনপ্রিয়তা পান। ৫০টির বেশি বেতার নাটক করেছেন। বেশ কিছু চলচ্চিত্রেও করেছেন অভিনয়। টেলিভিশনের জন্য মৌলিক নাটক লিখেছেন। সমসাময়িক বিষয়ে পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখিও করেন। বের হয়েছে বই, যার মধ্যে আছে সেই অরুণোদয় থেকে, নির্মল জ্যোতির জয়সহ বই। একজন শৌখিন ফটোগ্রাফারও তিনি।
বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি গ্রæপের চেয়ারম্যান তিনি। নাগরিক নাট্য স¤প্রদায়ের সভাপতি। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি। যুক্তরাজ্যের রয়াল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির পূর্ণ সদস্য। পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদক এবং মেরিল প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ সহ অনেক পুরস্কার। স্ত্রী স্বনামধন্য অভিনয়শিল্পী সারা যাকের, পুত্র ইরেশ যাকের ও কন্যা শ্রেয়া সর্বজয়াকে নিয়ে ছিলো তাঁর সংসার।
এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এসব তথ্য জানিয়েছেন আলী যাকেরের ছেলে ইরেশ যাকের। তিনি লিখেছেন, ‘চার বছর ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধের পর বাবা আজকে (২৭ নভেম্বর) সকাল ৬:৪০-এ (৬টা ৪০ মিনিটে) চলে গেলেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। উনি যে দোয়া ও ভালোবাসা পেয়েছেন, তার জন্য আমরা হৃদয়ের গভীর থেকে কৃতজ্ঞ। মৃত্যুর দুই দিন আগে বাবার করোনা শনাক্ত হয়। বাবার নামাজে জানাজা আজ বাদ আছর বনানী গোরস্তান মসজিদে পড়া হবে।’
আলী যাকের বার্ধক্য ও হার্টের সমস্যাসহ কিছু শারীরিক জটিলতা নিয়ে গত ১৭ নভেম্বর ঢাকার শ্যামলীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আলী যাকেরকে। সেখানে তাঁকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।
দাফন সম্পন্ন
এদিকে বরেণ্য অভিনেতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকেরের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে সকাল ১১টায় আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণে তাঁর মরদেহ নেওয়া হয়। সেখান থেকে নেওয়া হয় বনানীতে। জানাজা শেষে আসরের নামাজের পর বনানী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
পারিবারিকভাবে জানানো হয়, মৃত্যুর দুই দিন আগে আলী যাকেরের করোনা শনাক্ত হয়। এ কারণে শহীদ মিনারে শেষ শ্রদ্ধার আয়োজন করা হয়নি। শুক্রবার আসরের নামাজের পর বনানী কবরস্থানের মসজিদে জানাজা পড়ানো হয়। তারপর বনানী কবরস্থানে আলী যাকেরকে দাফন করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি আলী যাকেরকে শেষ শশ্রদ্ধার জন্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণে নেওয়া হলে করোনা সতর্কতা অবলম্বন করে, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁর কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন অঙ্গনের মানুষ। প্রিয়জন, সহশিল্পীকে শ্রদ্ধা জানাতে এ সময় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, মামুনুর রশীদ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী, মফিদুল হক, নাসির উদ্দীন ইউসুফ প্রমুখ। এছাড়াও আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরিবারের পক্ষে তাঁর মরদেহের পাশে তাঁর স্ত্রী সারা যাকের, ছেলে নাট্যাভিনেতা ইরেশ যাকের, মেয়ে শ্রিয়া সর্বজয়া উপস্থিত ছিলেন। সারাক্ষণ কফিনের পাশে ছিলেন সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এখানে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ছিল আলী যাকেরের মরদেহ। সেখান থেকে নেওয়া হয় বনানী, তাঁর কর্মস্থল এশিয়াটিকে।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান
বরেণ্য অভিনেতা আলী যাকেরের প্রতি ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয়েছে। এ সময় বন্ধু, স্বজন ও সহকর্মীরা অশ্রæচোখে তাঁকে শেষ বিদায় জানিয়েছেন। সেখান থেকে বনানীর উদ্দেশে শেষযাত্রা করা হয়। জানাজা শেষে বিকেলে বনানী কবরস্থানের সবুজ মাটিতে শেষ নিদ্রা হবে তাঁর। শুক্রবার সকাল ১১টার পর তাঁর মরদেহ শেরেবাংলা নগরের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি এ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম ট্রাস্টি ছিলেন।
জাদুঘর প্রাঙ্গণে আলী যাকেরের কফিন জাতীয় পতাকায় মুড়ে দেন জাদুঘরের ট্রাস্টিরা। সেখানে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন স্ত্রী সারা যাকের, ছেলে ইরেশ যাকের এবং আলী যাকেরের অভিনয়জীবনের বন্ধু সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। আলী যাকেরের মেয়ে শ্রিয়া সর্বজয়া এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে একাত্তরের শব্দসৈনিক এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানিয়ে দেওয়া হয় গার্ড অব অনার।
এরপর একে একে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টিরা, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট, ছায়ানট, থিয়েটার, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।