ঢাকা ডেস্ক: তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন নিয়ে ৪২ জনের বিবৃতির খসড়া বিএনপির তৈরি। রোববার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রগতিশীল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-প্রগতিশীল ন্যাপ (ভাসানী) আয়োজিত মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ১৪০তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় রাষ্ট্রপতির কাছে ৪২ নাগরিকের পাঠানো চিঠি প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন। গত শনিবার ঐ চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, তারা সবাই বিএনপি ঘরানার হিসেবে পরিচিত। তাদের কেউ কেউ বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদেও আছেন এবং তারা প্রতিনিয়ত নানাভাবে সরকারের বিরুদ্ধে বলে আসছেন। ব্যতিক্রমটা হচ্ছে শনিবার ৪২ জন একসঙ্গে হয়েছেন। অবশ্য বিবৃতিটা বিএনপি অফিস থেকে ড্রাফট করে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তারা বিএনপিরই প্রতিধ্বনি করেছেন।’ নির্বাচন কমিশন নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই সেটি নিয়ে আলোচনা হতেই পারে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু যে ভাষায় তারা বিবৃতি দিয়েছেন এবং মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে নেবার চেষ্টা চালিয়েছেন, সেটি বুদ্ধিজীবীদের বুদ্ধিদীপ্ত মনে হয়নি বরং বিএনপির ড্রাফট করা বিবৃতিই মনে হয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা একটি বহুমাত্রিক সমাজে বসবাস করি, এখানে বিতর্ক থাকবে, সমালোচনা থাকবে, কিন্তু বিতর্ক-সমালোচনা এমন হওয়া উচিত, যা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই দায়িত্বে থাকলে সমালোচনা হবে। কিন্তু যেভাবে অন্ধের মতো সমালোচনা বিএনপি করছে, সেটা যদি বেশি বেশি শিক্ষিত মানুষগুলোও করেন, তাহলে মানুষ মনে করতে পারে এই শিক্ষিত মানুষগুলো হঠাৎ অশিক্ষিতের মতো কথা কেন বলছেন! সেই প্রশ্ন মানুষের মনে থেকে যায়।’ এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরে মন্ত্রী ইত্তেফাককে বলেন, ‘সুশীল সমাজ নিজেদের অবস্থান থেকে বক্তব্য দেবে। তাদের বিএনপির হয়ে তোতা পাখির মতো বক্তব্য দেওয়ার দরকার নাই।’
অনুষ্ঠানে বিএনপির শনিবারের সংবাদ সম্মেলন সম্পর্কে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এ পরিপ্রেক্ষিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবসহ বিএনপিকে অনুরোধ জানাব যে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিষোদগার না করে নিজের ঘরটা একটু সামলান। যারা নিজের নেতাদের সম্মান করতে পারে না, নিজের ঘরটাই সামলাতে পারে না, তারা দেশ সামলাবে কীভাবে!’
বক্তব্যের শুরুতেই আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে আওয়ামী মুসলিম লীগের (পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ) প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মওলানা ভাসানী কখনো ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেন নাই, আজীবন দেশ ও মানুষের সেবায় রাজনীতির মহান ব্রত পালন করেছেন।’
প্রগতিশীল ন্যাপ (ভাসানী)-এর কেন্দ্রীয় আহŸায়ক পরশ ভাসানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, গণআজাদী লীগের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মোহাম্মদ সরওয়ার হোসাইন, প্রগতিশীল ন্যাপ (ভাসানী) কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব মোহাম্মদ আলী কিসমত, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা, যুবলীগ কেন্দ্রীয় সদস্য মানিক লাল ঘোষ প্রমুখ। (দৈনিক ইত্তেফাক)