গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন : প্রধান আসামিসহ আরো দুইজন গ্রেপ্তার

- প্রকাশের সময় : ০১:২৮:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ অক্টোবর ২০২০
- / ৩৪ বার পঠিত
ঢাকা ডেস্ক: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা ও শ্লীলতাহানি করে ভিডিও ধারণের পর তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামিসহ আরো দুুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তাকৃতরা হলেন প্রধান আসামি বাদল ও অপর আসামি দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার। বাদলকে ঢাকা থেকে এবং দেলোয়ারকে অস্ত্রসহ নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে ওই ঘটনায় এপর্যন্ত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলো।
এর আগে ওই ঘটনায় দুই দফা অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এক আসামিকে রোববার (৪ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় এবং অপর আসামিকে রাত ১১টায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা হলেন ওই ওয়ার্ডের জয়কৃঞ্চপুর গ্রামের খালপাড় এলাকার হারিদন ভূঁইয়া বাড়ির শেখ আহম্মদ দুলালের ছেলে মো. আব্দুর রহিম (২২) ও একই এলাকার মোহর আলী মুন্সি বাড়ির মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে মো. রহমত উল্যাহ (৪১)।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তিন বছর আগে ভুক্তভোগী গৃহবধূর বিয়ে হয়। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস করছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে স্বামীর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল না। গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে স্বামী তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। স্থানীয় দেলোয়ার বিষয়টি জানতে পেরে এলাকার রহিম, বাদল, কালামসহ অন্য সহযোগীদের নিয়ে গৃহবধূর বাড়িতে যান। সেখানে তারা স্বামীসহ ওই গৃহবধূ অনৈতিক কাজ করেছেন বলে অভিযোগ এনে নির্যাতন চালান। গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেন তারা। দেলোয়ারের বিরুদ্ধে মাদক কারবারের অভিযোগ রয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, ওই গৃহবধূ নিজের সম্ভ্রম রক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন; কিন্তু নির্যাতনকারী কয়েকজন যুবক তার পোশাক কেড়ে নিয়ে তার বিরুদ্ধে কিছু বলতে থাকে। এ সময় তিনি হামলাকারীদের ‘বাবা’ ডাকেন এবং তাদের পায়ে ধরেন। কিন্তু এক যুবক কয়েকবার তার মুখমন্ডলে লাথি মারেন এবং পা দিয়ে মুখসহ শরীর মাড়িয়ে দেন। তার শরীরে একটা লাঠি দিয়ে আঘাতও করতে থাকেন। তার নগ্ন ছবি ধারণের চেষ্টা চালান তারা। একজন হাত উচিয়ে তাকে উৎসাহ দেন। আরেকজন তাঁর শরীরের অবশিষ্ট পোশাক টেনে নেন। এ সময় ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেবেন বলে চিৎকার করেন একজন।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর বাবা বলেন, ‘আমি নিরীহ লোক। সন্ত্রাসীদের ভয়ে কোনো কথা বলার সাহস পাই না। আমি শুধু আল্লাহর কাছে বিচার চাই।’
ওই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান একলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভাপ্র্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফিরোজ আলম ভূঁইয়া।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ জানায়, বিষয়টি নজরে এলে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার এ বিষয়ে দ্রæত ব্যবস্থা নিতে থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। পরে রোববার সন্ধ্যায় নির্যাতিত গৃহবধূকে তার বাবার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। থানার ওসি হারুন অর রশিদ চৌধুরী বলেন, বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন জানান, গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে এবং নির্যাতিতার পরিবারকে আইনি সহযোগিতা দিতে জেলা পুলিশের পাঁচটি ইউনিট মাঠে কাজ করছে। (দৈনিক কালের কন্ঠ)