ঢাকা: আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারী নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বড় রাজাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মোশাররফ হোসেন এবং মা ফজিলাতুন্নেসা। মোশাররফ হোসেন কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহপাঠী ছিলেন। সরকারি চাকরি ছেড়ে এক সময় শিক্ষকতার পেশায় যোগ দেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বসুরহাট সরকারি এএইচসি হাইস্কুল থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে তিনি মেধাতালিকায় স্থান পান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। স্ত্রী ইসরাতুন্নেসা একজন আইনজীবী। কোনো সন্তান নেই এই দম্পতির।
কলেজ জীবন থেকেই রাজনীতিতে যুক্ত হন ওবায়দুল কাদের। ১৯৬৬ সালের ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তিনি। ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। পরে একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি মুজিব বাহিনীর কোম্পানীগঞ্জ থানার কমান্ডার ছিলেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের নারকীয় ঘটনার পর ওবায়দুল কাদের কারাবরণ করেন। আড়াই বছর তিনি কারাগারে অন্তরীণ ছিলেন। কারাগারে থাকা অবস্থাতেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। পরপর দু’বার এ পদে ছিলেন তিনি।
১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৫ আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তারপর সরকারের যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন। ২০০০ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সংস্কৃতি ও শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ২০০২ সালে তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৯ সাল পর্যন্ত এ পদে ছিলেন তিনি। এ পদে থাকার সময়ই তিনি এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৯ মার্চ গ্রেফতার হন। ১৭ মাস ২৬ দিন কারাগারে ছিলেন তিনি। এর আগে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন তিনি। পরের কাউন্সিলের দলের সর্বোচ্চ ফোরাম প্রেসিডিয়ামে ঠাঁই পান তিনি।
২০১১ সালের ৫ ডিসেম্বর যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ওবায়দুল কাদের। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নোয়াখালী-৫ আসন থেকে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১২ জানুয়ারী দ্বিতীয়বারের মতো সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী হন তিনি। মাঝে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকতাও করেন। ছাত্রজীবন শেষ করে তিনি দৈনিক বাংলার বাণীর সহকারী সম্পাদক ছিলেন দীর্ঘ সময়। তিনি এ পর্যন্ত ৯টি বই লিখেছেন।