টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে চাঞ্চল্যকর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহম্মেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সরকার-দলীয় এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তার তিন ভাইকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ। সোমবার (১৬ জানুয়ারী) জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খানের সভাপতিত্বে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বহিষ্কৃত অপর তিন ভাই হলেন- শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র শহিদুর রহমান খান মুক্তি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা এবং টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও আওয়ামী লীগের সদস্য জাহিদুর রহমান খান কাকন।
সভা শেষে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যায় এমপি আমানুর ও তার ভাইদের নামে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া কারাগারে আটক অবস্থায় এমপি রানা ঘাটাইলের ছাত্রলীগ নেতা আবু সাঈদকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই খুনি চক্রের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সভার কার্যবিবরণী কেন্দ্রে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি। বহিষ্কারের পর স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নিহত ফারুক আহম্মদের স্ত্রী নাহার আহম্মেদ। এ সময় তিনি স্বামীর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এদিকে এমপি রানা ও তার তিন সহোদরকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়ায় আনন্দ মিছিল করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম লেবুর নেতৃত্বে মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারী বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী, মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহম্মেদকে হত্যা করে শহরের কলেজপাড়ায় তার বাসার সামনে ফেলে রাখা হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাহার আহম্মেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্তের পর এমপি আমানুর রহমান খান রানাসহ চার ভাইয়ের নাম উঠে আসে। পরে এমপি রানাকে প্রধান আসামি করা হয়। রানা ও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এ মামলায় বর্তমানে এমপি রানা জেলহাজতে রয়েছেন। (মানবজমিন)