নিউইয়র্ক ০৮:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

এই আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ না

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:০৮:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৩
  • / ১৬০ বার পঠিত

বাংলাদেশ ডেস্ক : বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা তিক্ত। নির্বাচন সব নাগরিকের কাছে উৎসবের হওয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশে নির্বাচন মানে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু নির্যাতন। তিনি বলেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনের পরও অষ্টম সংশোধনী আজও বিদ্যমান। সেটি হচ্ছে রাষ্ট্রধর্ম। এ রাষ্ট্রধর্ম আজকে আমাদের রাষ্ট্রীয় সংখ্যালঘুতে পরিণত করেছে। আমরা পাকিস্তান আমলেও রাষ্ট্রীয় সংখ্যালঘু ছিলাম। এ সংখ্যালঘুর দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণের জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। কিন্তু দেশ স্বাধীনের এত বছর পরও আমাদের বলতে হচ্ছে রাষ্ট্রশক্তি ও রাজনৈতিক শক্তি আমাদের ধর্র্মীয় সংখ্যালঘুত্ব ও অসহায়ত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এটা আমাদের জন্য দুঃখের, দুর্ভাগ্যের এবং লজ্জার। মানবজমিন-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, যেখানে বাঙালি পরিচয় নিয়ে আমাকে এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল সেখানে কোন পরিস্থিতিতে একজন বাঙালি অসহায়ত্বের পরিচয় দিতে গিয়ে সংখ্যালঘু শব্দটি ব্যবহার করছেন তা আমাদের বুঝতে হবে।

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের পর থেকে আমরা রাষ্ট্রের নিপীড়নের শিকার হতে থাকলাম। ১৯৮৮ সালে যখন এরশাদবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে তখন এ আন্দোলনকে নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করার জন্য সেদিনের স্বৈরাচারী সরকার রাষ্ট্রীয় সাম্প্রদায়িকতা চাপিয়ে দিয়েছিলেন এ দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর। বিশেষ করে চট্টগ্রাম এবং ঢাকায়। যেটি ছিল রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর সংঘাত চাপিয়ে দেয়ার প্রথম ঘটনা। এর আগে রাজনৈতিক সাম্প্রদায়িকতা থাকলে রাষ্ট্রীয় সাম্প্রদায়িকতা ছিল না। তখন রাষ্ট্র নীরব ছিল। এরপর তিনজোটের রূপরেখার আলোকে নতুন সরকার এলে আমরা আশা করছিলাম অতীতের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। কিন্তু ঘটেছে।

তিনি বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সবচেয়ে বড় সাম্প্রদায়িক নির্যাতন আমরা দেখলাম। এ সময়ে প্রায় ২৮ হাজার ঘটনা আমরা চিহ্নিত করেছিলাম। তখন এমন একটি ভয়ের সংস্কৃতি চালু করা হয়েছিল যে ভুক্তভোগীরা মামলা করার সাহস পেতো না কিংবা থানা মামলা নিতো না। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর আমরা হাইকোর্টে একটা রিট করেছিলাম। যে রিটের আলোকে আমরা সাহাবুদ্দিন কমিশন পাই। ওই কমিশনকে আমাদের বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, সুলতানা কামালের নেতৃত্বে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, শাহরিয়ার কবিরের নেতৃত্বাধীন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ বিভিন্ন সংগঠন হাজার হাজার তথ্য-উপাত্ত দেয়। সাহবুদ্দিন কমিশন হাজার পাঁচেক তথ্য উপাত্ত বিচার বিশ্লেষণ করে সুপারিশসহ একটি রিপোর্ট তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনকে দিয়েছিলেন। এরপর আমরাও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সাহাবুদ্দিন কমিশনের রিপোর্টের আলোকে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিলাম। তিনি আমাদের আশ্বস্তও করেছিলেন। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় ১৩ বছরে এসেও আজ পর্যন্ত সেটি আলোর মুখ দেখেনি। তার মানে বিএনপি সরকারের পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে।

বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের এ শীর্ষ নেতা আরও বলেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়নি এটা ঠিক। কিন্তু ২০১১ সালে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেবের যুদ্ধাপরাধের মামলা শুরু হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত যতগুলো ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন-নিপীড়ন এবং মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে তার একটিরও বিচার হয়নি। আমরা দেখেছি ২০২১ সালের ঘটনার পর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন আমি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি। কিন্তু কোথায় কী? তারপরও টানা ২৭ দিন ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।

তিনি বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য যে, কোনো কোনো ঘটনায় দুর্বৃত্ত ধরা পড়ে কিন্তু পুলিশ প্রশাসন বলে তারা পাগল। দুর্বৃত্তের ডিফেন্সের আগেই পুলিশ প্রশাসন পাগল বলে চালিয়ে দিচ্ছে। আমরা কুমিল্লার ইকবালের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা দেখেছি। ইকবালকে আদালত সাজা দিয়েছে দেড় বছরের। তাও বলা হয়েছে- রায়ের আগে যতদিন জেলে ছিল তা কাটা যাবে। তখন দেখা যায় রায়ের সঙ্গে সঙ্গে সে খালাস পেয়ে গেছে। অথচ যারা ভিকটিম তাদের বছরের পর বছর কারাগারে কাটাতে হচ্ছে। অন্যায়ভাবে কারাগারে রেখে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে তাদের।

এ সময় সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পদোন্নতির প্রসঙ্গ টেনে রানা দাশগুপ্ত বলেন, একটা বিষয় ঠিক যে আজকে নিয়োগ পদোন্নতি ও জনপ্রতিনিধিত্বশীল জায়গায় পদায়নসহ বিভিন্ন জায়গায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা নিয়োগ পাচ্ছে। যেটা ধর্মীয় বেড়াজালের কারণে আগে হতো না। সেখান থেকে রাষ্ট্র বেরিয়ে আসছে। যার কারণে আজকে বিভিন্ন চেয়ারে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দেখা যায়।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র চাইলেও অনেকে ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বের হয়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিক হিসেবে দেখছে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের দলীয় লোকজনের মধ্যেও অনেকে সেই মানসকিতা থেকে বের হতে পারছে না। এ জন্য আমরা বলি সরকারের মধ্যে পাকিস্তান আছে। প্রশাসনে সাম্প্রদায়িকতা আছে।

এ সময় ‘সরকার চাইলে পূজায় হামলা হবে না’ এমন বক্তব্যেরও ব্যাখ্যা দেন তিনি। বলেন, ২০২১ সালে পূজার আগে অনেক জায়গায় হামলা হয়েছে। কিন্তু ২০২২ সালে পূজা শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়েছে। সে নিরিখেই আমি কথাটি বলেছি। এখানে সরকার মানে কোনো দল না। সরকার মানে প্রশাসন। যেখানে অবজ্ঞা, অবহেলা, হেয় না করে ও নাগরিকদের ধর্মীয়ভাবে বিবেচনা না করে নাগরিক হিসেবে সমদৃষ্টিতে দেখা হবে। তখন এসব ঘটনা ঘটবে না।

রানা দাশগুপ্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের সহিংসতা পরবর্তী একটি ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, দুর্বৃত্তদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের মধ্যেও সাম্প্রদায়িক শক্তি ঢুকেছে। কিন্তু ওসব ঘটনায় আওয়ামী লীগ কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে বলে আমরা দেখি না।

তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালে যখন দেশ ভাগ হয় তখন আমাদের মনে হতো রাষ্ট্র আর কিছু কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক কিন্তু বাকি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সবাই বাঙালি। তখন আমাদের হতাশা ছিল না বরং আশার জায়গা ছিল। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশের ৫২ বছর পর এসে আজকে আমি বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশটা দেখছি না। যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে সেখান থেকে আজকের বাংলাদেশ যোজন যোজন দূরে। যারা ভারতে অবস্থান নিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে তাদের একটি অংশকে দেখলাম ভারতবিরোধী ও হিন্দুবিরোধী অবস্থান নিতে। মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশের হাতে মুক্তিযুদ্ধটাকে পরাজিত হতে দেখেছি। আজও কিন্তু আমরা দেখছি মুক্তিযুদ্ধের একাংশ জয় বাংলা স্লোগান দেয়, অন্য অংশ বাংলাদেশ জিন্দাবাদ স্লোগান দেয়।

রানা দাশগুপ্ত উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালের পর থেকে ক্ষমতায় থাকা বিভিন্ন দল ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অবজ্ঞা করেছেন আর সংখ্যাগুরুদের পক্ষে কাজ করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, একাত্তরের আওয়ামী লীগ আজ আর সেই আওয়ামী লীগে নেই। বঙ্গবন্ধুকন্যা ক্ষমতায় আছেন, তার প্রতি আমাদের আস্থা আছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে এ আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ নয়। এই আওয়ামী লীগে খন্দকার মোশতাক আছে, প্রশাসনে পাকিস্তান আছে, তৃণমূলে সাম্প্রদায়িকতা আছে। এর মধ্যে চলছে আজকের বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পথে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। যেটা হওয়ার কথা নয়। অথচ এ গণতন্ত্রের জন্য পাকিস্তানের প্রথম ২৪ বছর বাঙালি লড়াই করেছে। কবি শামসুর রাহমানের ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’ কবিতার মতো বলতে চাই ‘তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা/ সকিনা বিবির কপাল ভাঙলো/ সিঁথির সিঁদুর মুছে গেল হরিদাসীর।’- স্বাধীনতা এসেও আজকে স্বাধীনতা মনে হয় অনেক দূরে।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর দালাল। কিন্তু আজকের আওয়ামী লীগের দালাল হতে পারি না। কারণ এ আওয়ামী লীগ একাত্তরের আওয়ামী লীগে নেই। এই আওয়ামী লীগে একাত্তরের বাংলাদেশকে ধারণ করে না। আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সত্যিকার অর্থে বিশ্বাস করলে আওয়ামী লীগকে আওয়ামী মুসলিম লীগের দিকে নিয়ে যাবেন না। আওয়ামী লীগকে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগেই রেখে চলেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর জয়গান গাই। আর আমরা যদি আওয়ামী লীগকে আওয়ামী মুসলিম লীগের দিকে নিয়ে যাই তাহলে হয়তো আমরা বঙ্গবন্ধুকে সামনে রেখে অনেক কথাই বলবো কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ভাবমূর্তিকে রক্ষা করতে পারবো না। এটা হবে জাতির জন্য বড় লজ্জা, হতাশার। তারপরও আমরা আশাবাদী হতে চাই। কারণ প্রধানমন্ত্রীর ওপর আমাদের আস্থা আছে। কারণ তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা।

তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলে সাম্প্রদায়িক সরকার তার সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও রাষ্ট্রকাঠামোকে টিকিয়ে রাখার জন্য ভারত, হিন্দু এবং কাশ্মীর এজেন্ডাকে সামনে রেখে দেখাতেন হিন্দুরা ভারতের দালাল এবং পাকিস্তানের শত্রু। পাকিস্তানের ২৫ বছর এটিই কিন্তু প্রচার হয়েছে। ৭৫’র পর বিপ্লবের প্রচারপত্রে দেখা যায় হিন্দু এবং ভারতকে সমার্থক করে একই স্লোগান ব্যবহার করতে।
তিনি আরও বলেন, এক সময় গর্ব করে বলতাম বাংলাদেশে এমন কোনো পরিবার নেই যেখানে একজন আওয়ামী লীগ নেই। কিন্তু আজকে আমরা দেখি বাংলাদেশে এমন কোনো পরিবার নেই যেখানে একজন হেফাজত-জামায়াত নেই। মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর অনেক ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগার শোক জানিয়েছে। সেটি যেভাবে জানিয়েছে তা জামায়াতের মতো। এটি আস্থা ও বিশ্বাসের কোনো জায়গায় আমরা খুঁজে পাই? এখানে আমরা হতাশ।

বিএনপি’র বর্তমান আন্দোলন প্রসঙ্গ টেনে রানা দাশগুপ্ত বলেন, এটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনেরই অংশ। অতীতে বিএনপিকে যেভাবে আমরা দেখেছি বর্তমান আন্দোলনে বিএনপিকে আমরা সেই জায়গায় দেখছি না। এটা অবশ্যই বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক দিক। ভবিষ্যতে কী করবে এটা তখন মূল্যায়নের ব্যাপার। বিএনপি আগে ভারত এবং হিন্দুকে সমার্থক করে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতো। অতিসম্প্রতি রাজনীতিতে আমরা কিন্তু সেটি লক্ষ্য করিনি। তাদের ঘোষিত ৩২টি দফার একটা জায়গায় তারা বলেছে ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার এই মূলনীতির ভিত্তিতে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কার করবেন। ইতিবাচক দিক হওয়ার পরও এটাকে আমরা আস্থায় নিতে পারছি না। কারণ যখন আমরা ৭৫’র পরবর্তী সময়ে তাকাই জিয়াউর রহমান ক্ষমতার গিয়ে কীভাবে সংবিধান সংশোধন করেছেন যে, এটা কি আবার পঞ্চদশ সংশোধনীতে যে ইতিবাচক সংশোধন আনা হয়েছে তা আবার ’৭৫ পরবর্তী সংশোধনীর দিকে যাবে কিনা! তিনি বলেন, আজকে বিএনপি বলুক যে তারা ’৭৫ পরবর্তী যে সংশোধনীগুলো এনেছে, যে নির্যাতন নিপীড়ন করেছে তার জন্য তারা জাতির কাছে ক্ষমা চাইছে। তাহলে আমরা বিশ্বাস করতে পারবো যে তারাও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনীতিটা প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে। সূত্র : মানবজমিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

এই আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ না

প্রকাশের সময় : ০৫:০৮:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৩

বাংলাদেশ ডেস্ক : বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা তিক্ত। নির্বাচন সব নাগরিকের কাছে উৎসবের হওয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশে নির্বাচন মানে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু নির্যাতন। তিনি বলেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনের পরও অষ্টম সংশোধনী আজও বিদ্যমান। সেটি হচ্ছে রাষ্ট্রধর্ম। এ রাষ্ট্রধর্ম আজকে আমাদের রাষ্ট্রীয় সংখ্যালঘুতে পরিণত করেছে। আমরা পাকিস্তান আমলেও রাষ্ট্রীয় সংখ্যালঘু ছিলাম। এ সংখ্যালঘুর দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণের জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। কিন্তু দেশ স্বাধীনের এত বছর পরও আমাদের বলতে হচ্ছে রাষ্ট্রশক্তি ও রাজনৈতিক শক্তি আমাদের ধর্র্মীয় সংখ্যালঘুত্ব ও অসহায়ত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এটা আমাদের জন্য দুঃখের, দুর্ভাগ্যের এবং লজ্জার। মানবজমিন-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, যেখানে বাঙালি পরিচয় নিয়ে আমাকে এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল সেখানে কোন পরিস্থিতিতে একজন বাঙালি অসহায়ত্বের পরিচয় দিতে গিয়ে সংখ্যালঘু শব্দটি ব্যবহার করছেন তা আমাদের বুঝতে হবে।

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের পর থেকে আমরা রাষ্ট্রের নিপীড়নের শিকার হতে থাকলাম। ১৯৮৮ সালে যখন এরশাদবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে তখন এ আন্দোলনকে নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করার জন্য সেদিনের স্বৈরাচারী সরকার রাষ্ট্রীয় সাম্প্রদায়িকতা চাপিয়ে দিয়েছিলেন এ দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর। বিশেষ করে চট্টগ্রাম এবং ঢাকায়। যেটি ছিল রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর সংঘাত চাপিয়ে দেয়ার প্রথম ঘটনা। এর আগে রাজনৈতিক সাম্প্রদায়িকতা থাকলে রাষ্ট্রীয় সাম্প্রদায়িকতা ছিল না। তখন রাষ্ট্র নীরব ছিল। এরপর তিনজোটের রূপরেখার আলোকে নতুন সরকার এলে আমরা আশা করছিলাম অতীতের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। কিন্তু ঘটেছে।

তিনি বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সবচেয়ে বড় সাম্প্রদায়িক নির্যাতন আমরা দেখলাম। এ সময়ে প্রায় ২৮ হাজার ঘটনা আমরা চিহ্নিত করেছিলাম। তখন এমন একটি ভয়ের সংস্কৃতি চালু করা হয়েছিল যে ভুক্তভোগীরা মামলা করার সাহস পেতো না কিংবা থানা মামলা নিতো না। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর আমরা হাইকোর্টে একটা রিট করেছিলাম। যে রিটের আলোকে আমরা সাহাবুদ্দিন কমিশন পাই। ওই কমিশনকে আমাদের বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, সুলতানা কামালের নেতৃত্বে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, শাহরিয়ার কবিরের নেতৃত্বাধীন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ বিভিন্ন সংগঠন হাজার হাজার তথ্য-উপাত্ত দেয়। সাহবুদ্দিন কমিশন হাজার পাঁচেক তথ্য উপাত্ত বিচার বিশ্লেষণ করে সুপারিশসহ একটি রিপোর্ট তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনকে দিয়েছিলেন। এরপর আমরাও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সাহাবুদ্দিন কমিশনের রিপোর্টের আলোকে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিলাম। তিনি আমাদের আশ্বস্তও করেছিলেন। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় ১৩ বছরে এসেও আজ পর্যন্ত সেটি আলোর মুখ দেখেনি। তার মানে বিএনপি সরকারের পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে।

বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের এ শীর্ষ নেতা আরও বলেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়নি এটা ঠিক। কিন্তু ২০১১ সালে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেবের যুদ্ধাপরাধের মামলা শুরু হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত যতগুলো ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন-নিপীড়ন এবং মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে তার একটিরও বিচার হয়নি। আমরা দেখেছি ২০২১ সালের ঘটনার পর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন আমি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি। কিন্তু কোথায় কী? তারপরও টানা ২৭ দিন ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।

তিনি বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য যে, কোনো কোনো ঘটনায় দুর্বৃত্ত ধরা পড়ে কিন্তু পুলিশ প্রশাসন বলে তারা পাগল। দুর্বৃত্তের ডিফেন্সের আগেই পুলিশ প্রশাসন পাগল বলে চালিয়ে দিচ্ছে। আমরা কুমিল্লার ইকবালের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা দেখেছি। ইকবালকে আদালত সাজা দিয়েছে দেড় বছরের। তাও বলা হয়েছে- রায়ের আগে যতদিন জেলে ছিল তা কাটা যাবে। তখন দেখা যায় রায়ের সঙ্গে সঙ্গে সে খালাস পেয়ে গেছে। অথচ যারা ভিকটিম তাদের বছরের পর বছর কারাগারে কাটাতে হচ্ছে। অন্যায়ভাবে কারাগারে রেখে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে তাদের।

এ সময় সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পদোন্নতির প্রসঙ্গ টেনে রানা দাশগুপ্ত বলেন, একটা বিষয় ঠিক যে আজকে নিয়োগ পদোন্নতি ও জনপ্রতিনিধিত্বশীল জায়গায় পদায়নসহ বিভিন্ন জায়গায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা নিয়োগ পাচ্ছে। যেটা ধর্মীয় বেড়াজালের কারণে আগে হতো না। সেখান থেকে রাষ্ট্র বেরিয়ে আসছে। যার কারণে আজকে বিভিন্ন চেয়ারে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দেখা যায়।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র চাইলেও অনেকে ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বের হয়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিক হিসেবে দেখছে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের দলীয় লোকজনের মধ্যেও অনেকে সেই মানসকিতা থেকে বের হতে পারছে না। এ জন্য আমরা বলি সরকারের মধ্যে পাকিস্তান আছে। প্রশাসনে সাম্প্রদায়িকতা আছে।

এ সময় ‘সরকার চাইলে পূজায় হামলা হবে না’ এমন বক্তব্যেরও ব্যাখ্যা দেন তিনি। বলেন, ২০২১ সালে পূজার আগে অনেক জায়গায় হামলা হয়েছে। কিন্তু ২০২২ সালে পূজা শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়েছে। সে নিরিখেই আমি কথাটি বলেছি। এখানে সরকার মানে কোনো দল না। সরকার মানে প্রশাসন। যেখানে অবজ্ঞা, অবহেলা, হেয় না করে ও নাগরিকদের ধর্মীয়ভাবে বিবেচনা না করে নাগরিক হিসেবে সমদৃষ্টিতে দেখা হবে। তখন এসব ঘটনা ঘটবে না।

রানা দাশগুপ্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের সহিংসতা পরবর্তী একটি ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, দুর্বৃত্তদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের মধ্যেও সাম্প্রদায়িক শক্তি ঢুকেছে। কিন্তু ওসব ঘটনায় আওয়ামী লীগ কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে বলে আমরা দেখি না।

তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালে যখন দেশ ভাগ হয় তখন আমাদের মনে হতো রাষ্ট্র আর কিছু কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক কিন্তু বাকি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সবাই বাঙালি। তখন আমাদের হতাশা ছিল না বরং আশার জায়গা ছিল। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশের ৫২ বছর পর এসে আজকে আমি বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশটা দেখছি না। যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে সেখান থেকে আজকের বাংলাদেশ যোজন যোজন দূরে। যারা ভারতে অবস্থান নিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে তাদের একটি অংশকে দেখলাম ভারতবিরোধী ও হিন্দুবিরোধী অবস্থান নিতে। মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশের হাতে মুক্তিযুদ্ধটাকে পরাজিত হতে দেখেছি। আজও কিন্তু আমরা দেখছি মুক্তিযুদ্ধের একাংশ জয় বাংলা স্লোগান দেয়, অন্য অংশ বাংলাদেশ জিন্দাবাদ স্লোগান দেয়।

রানা দাশগুপ্ত উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালের পর থেকে ক্ষমতায় থাকা বিভিন্ন দল ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অবজ্ঞা করেছেন আর সংখ্যাগুরুদের পক্ষে কাজ করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, একাত্তরের আওয়ামী লীগ আজ আর সেই আওয়ামী লীগে নেই। বঙ্গবন্ধুকন্যা ক্ষমতায় আছেন, তার প্রতি আমাদের আস্থা আছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে এ আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ নয়। এই আওয়ামী লীগে খন্দকার মোশতাক আছে, প্রশাসনে পাকিস্তান আছে, তৃণমূলে সাম্প্রদায়িকতা আছে। এর মধ্যে চলছে আজকের বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পথে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। যেটা হওয়ার কথা নয়। অথচ এ গণতন্ত্রের জন্য পাকিস্তানের প্রথম ২৪ বছর বাঙালি লড়াই করেছে। কবি শামসুর রাহমানের ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’ কবিতার মতো বলতে চাই ‘তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা/ সকিনা বিবির কপাল ভাঙলো/ সিঁথির সিঁদুর মুছে গেল হরিদাসীর।’- স্বাধীনতা এসেও আজকে স্বাধীনতা মনে হয় অনেক দূরে।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর দালাল। কিন্তু আজকের আওয়ামী লীগের দালাল হতে পারি না। কারণ এ আওয়ামী লীগ একাত্তরের আওয়ামী লীগে নেই। এই আওয়ামী লীগে একাত্তরের বাংলাদেশকে ধারণ করে না। আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সত্যিকার অর্থে বিশ্বাস করলে আওয়ামী লীগকে আওয়ামী মুসলিম লীগের দিকে নিয়ে যাবেন না। আওয়ামী লীগকে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগেই রেখে চলেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর জয়গান গাই। আর আমরা যদি আওয়ামী লীগকে আওয়ামী মুসলিম লীগের দিকে নিয়ে যাই তাহলে হয়তো আমরা বঙ্গবন্ধুকে সামনে রেখে অনেক কথাই বলবো কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ভাবমূর্তিকে রক্ষা করতে পারবো না। এটা হবে জাতির জন্য বড় লজ্জা, হতাশার। তারপরও আমরা আশাবাদী হতে চাই। কারণ প্রধানমন্ত্রীর ওপর আমাদের আস্থা আছে। কারণ তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা।

তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলে সাম্প্রদায়িক সরকার তার সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও রাষ্ট্রকাঠামোকে টিকিয়ে রাখার জন্য ভারত, হিন্দু এবং কাশ্মীর এজেন্ডাকে সামনে রেখে দেখাতেন হিন্দুরা ভারতের দালাল এবং পাকিস্তানের শত্রু। পাকিস্তানের ২৫ বছর এটিই কিন্তু প্রচার হয়েছে। ৭৫’র পর বিপ্লবের প্রচারপত্রে দেখা যায় হিন্দু এবং ভারতকে সমার্থক করে একই স্লোগান ব্যবহার করতে।
তিনি আরও বলেন, এক সময় গর্ব করে বলতাম বাংলাদেশে এমন কোনো পরিবার নেই যেখানে একজন আওয়ামী লীগ নেই। কিন্তু আজকে আমরা দেখি বাংলাদেশে এমন কোনো পরিবার নেই যেখানে একজন হেফাজত-জামায়াত নেই। মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর অনেক ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগার শোক জানিয়েছে। সেটি যেভাবে জানিয়েছে তা জামায়াতের মতো। এটি আস্থা ও বিশ্বাসের কোনো জায়গায় আমরা খুঁজে পাই? এখানে আমরা হতাশ।

বিএনপি’র বর্তমান আন্দোলন প্রসঙ্গ টেনে রানা দাশগুপ্ত বলেন, এটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনেরই অংশ। অতীতে বিএনপিকে যেভাবে আমরা দেখেছি বর্তমান আন্দোলনে বিএনপিকে আমরা সেই জায়গায় দেখছি না। এটা অবশ্যই বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক দিক। ভবিষ্যতে কী করবে এটা তখন মূল্যায়নের ব্যাপার। বিএনপি আগে ভারত এবং হিন্দুকে সমার্থক করে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতো। অতিসম্প্রতি রাজনীতিতে আমরা কিন্তু সেটি লক্ষ্য করিনি। তাদের ঘোষিত ৩২টি দফার একটা জায়গায় তারা বলেছে ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার এই মূলনীতির ভিত্তিতে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কার করবেন। ইতিবাচক দিক হওয়ার পরও এটাকে আমরা আস্থায় নিতে পারছি না। কারণ যখন আমরা ৭৫’র পরবর্তী সময়ে তাকাই জিয়াউর রহমান ক্ষমতার গিয়ে কীভাবে সংবিধান সংশোধন করেছেন যে, এটা কি আবার পঞ্চদশ সংশোধনীতে যে ইতিবাচক সংশোধন আনা হয়েছে তা আবার ’৭৫ পরবর্তী সংশোধনীর দিকে যাবে কিনা! তিনি বলেন, আজকে বিএনপি বলুক যে তারা ’৭৫ পরবর্তী যে সংশোধনীগুলো এনেছে, যে নির্যাতন নিপীড়ন করেছে তার জন্য তারা জাতির কাছে ক্ষমা চাইছে। তাহলে আমরা বিশ্বাস করতে পারবো যে তারাও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনীতিটা প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে। সূত্র : মানবজমিন