নিউইয়র্ক ০২:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ইন্দো-প্যাসিফিকে ঢাকার বড় ভূমিকা চায় নয়াদিল্লি

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:১৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৫০ বার পঠিত

বাংলাদেশ ডেস্ক : ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতায় বাংলাদেশের জোরালো ভূমিকা চায় ভারত। কারণ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও গতিশীল বাংলাদেশ একটি সাফল্যের গল্প। গতকাল শনিবার ঢাকায় ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর এবং সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপ-উপদেষ্টা পঙ্কজ শরণ ভারতের প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে ওই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সকালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের উপস্থিতিতে সেমিনারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পঙ্কজ শরণ। বিকেলে সমাপনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের উপস্থিতিতে বক্তব্য দেন এম জে আকবর। তাঁদের বক্তব্যে ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বাংলাদেশের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ উঠে আসে। ব্লু ইকোনমি বা সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা তুলে ধরে ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও সাংবাদিক এম জে আকবর বলেন, ‘অস্থিতিশীলতা যুদ্ধের চেয়ে ভয়াবহ।

তাই স্থিতিশীলতা ছাড়া কিছুই হবে না। অভিন্ন প্রেক্ষাপটে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
এম জে আকবর বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, ইন্দো-প্যাসিফিক শুধু হিমালয়ের পাদদেশের ভূমি নয়, এটি সাগরতীরেরও ভূমি। এখানে আত্মসম্মান ও স্বনির্ভরতার ভিত্তিতে অভিন্ন সমৃদ্ধি খুব জরুরি। ’ তিনি বলেন, বাংলাদেশ দুটি স্বাধীনতা অর্জন করেছে। একটি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। এম জে আকবর বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তি বরাবরই চেয়েছে বাংলাদেশকে তাদের অনুগত বা বাধ্য রাখতে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিক্সনের সময়ের উদ্যোগ।

এটি যখন বাস্তবায়িত হয়নি তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
আকবর বলেন, সত্তরের দশকে দুই মেরুর (যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া) বিশ্বের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছিলেন। ‘মুজিব মতবাদ’ ছিল ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়।’ এর মাধ্যমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, বলয়ে টানার পুরনো খেলা এ দেশে চলবে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ তার প্রতিষ্ঠার পরপরই কৌশলগত ক্ষেত্রে স্বকীয়তা দেখিয়েছে। এখন সৌদি আরবসহ আরো কিছু দেশ এটি করার চেষ্টা করছে। বিশ্বে কৌশলগতভাবে স্বতন্ত্র ও স্বকীয়তার প্রবণতা বাড়ছে।

ভারতের সাবেক এই পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার পর যুক্তরাষ্ট্র ভেবেছিল যে রাশিয়া ‘বিচলিত শক্তি’ হয়ে গেছে। পরবর্তী সময়ে ইরাক ও আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রকেও বিচলিত দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া—দুই পরাশক্তিই এখন বিচলিত, ক্লান্ত। তাদের এখন নতুন করে ভাবা উচিত। এম জে আকবর বলেন, নতুন মানচিত্রে চীনারা শুধু ভারত নয়, রাশিয়ার ভূখণ্ডও দাবি করেছে। এ বিষয়ে চীনের মুখপাত্র বলেছেন, এটি সার্বভৌম চীনের মানচিত্র। তিনি বলেন, যাঁরা ১৯৬২ সালের ভারত-চীন যুদ্ধের উদাহরণ দেন, তাঁরা ১৯৬৯ সালের রাশিয়া-চীন যুদ্ধের উদাহরণও টানতে পারেন।

এম জে আকবর বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ মধ্য এশিয়াকে বদলে দিচ্ছে। ‘রাশিয়া দুর্বল’—এমন ধারণা প্রভাব ফেলছে। রাশিয়ার ভেতর কী হচ্ছে তার প্রভাব অন্যত্রও পড়ে। ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্যালান্স অব পাওয়ার বা ক্ষমতার ভারসাম্য অনেক হয়েছে। এখন পাওয়ার অব ব্যালান্স বা ভারসাম্যপূর্ণ ক্ষমতার জন্য একসঙ্গে কাজ করা উচিত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গ্লোবাল সাউথে বাংলাদেশের গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন পঙ্কজ শরণ। তাঁর সেই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সমাপনী অধিবেশনে এম জে আকবর বলেন, গ্লোবাল সাউথ ধারণা এখন পুরনো হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ও ভারত মিলে নতুন সম্পর্ক—নিউ নর্থ গড়ে তুলতে পারে।

এই অঞ্চলে বাংলাদেশের ভূমিকা পালন খুব গুরুত্বপূর্ণ
ভারতের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক উপ-উপদেষ্টা ও ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক ও বাংলাদেশ এই অঞ্চলের অপরিহার্য অংশ। বাংলাদেশ নিজস্ব ইন্দো-প্যাসিফিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে এসেছে। এটি দেখাটাও বেশ আনন্দের। এই অঞ্চলে বাংলাদেশের ভূমিকা পালন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, ‘নিয়ম-নীতিভিত্তিক, নিরাপদ, সমৃদ্ধ বিশ্বব্যবস্থা মূলত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল থেকে শুরু। এই অঞ্চলে বহুমেরুতা না থাকলে আমাদের শান্তি, সম্প্রীতি থাকবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি অঞ্চল গড়তে চাই যেখানে জোরজবরদস্তি, সম্প্রসারণবাদ থাকবে না। এর মাধ্যমে সব রাষ্ট্রের মৌলিক স্বার্থ এগিয়ে যাবে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা কখনো এক পক্ষের লাভ, অন্য পক্ষের ক্ষতি হতে পারে না।’ পঙ্কজ শরণ বলেন, ‘আমাদের সহযোগিতার এমন কাঠামো সৃষ্টি করতে হবে, যা থেকে সবার লাভ হয়। সব উদ্যোগ স্বচ্ছ হতে হবে। কোনো ঋণের ফাঁদ থাকা চলবে না। কানেক্টিভিটি ও সমৃদ্ধি জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও পরস্পরের মৌলিক স্বার্থকে সম্মান করছে, এটি নিশ্চিত করতে হবে।

পঙ্কজ শরণ বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিকে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সমুদ্রের পাশাপাশি প্রথাগত ও অপ্রথাগত সব ধরনের নিরাপত্তাঝুঁকি মোকাবেলায় বাংলাদেশের ভূমিকা দেখতে চাই। সম্মিলিত নিরাপত্তা, সম্মিলিত সমৃদ্ধি ও সম্মিলিত স্থিতিশীলতার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। এখানে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক সহযোগিতার মডেল। ইন্দো-প্যাসিফিক কাউকে বাদ দিয়ে নয়, সবাইকে নিয়ে চলার উদ্যোগ। বিশ্বের সবার দৃষ্টি তাই ইন্দো-প্যাসিফিকের দিকে।’

আরোও পড়ুন । জুলুমবাজ সরকারকে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে

পঙ্কজ শরণ বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশ একটি সাফল্যের গল্প। স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও গতিশীল বাংলাদেশ এই অঞ্চলের অপরিহার্য অংশ—এটি ভারতে, আমাদের কাছে স্পষ্ট।’ তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলে দ্রুত রূপান্তর ঘটছে। এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের মতো অংশীদারদের যুক্ত থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের দ্রুত উন্নতি দুই দেশ এবং পুরো অঞ্চলের জন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে। আমরা বাংলাদেশকে গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর মনে করি।’ সূত্র : কালের কন্ঠ
বেলী/হককথা

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

ইন্দো-প্যাসিফিকে ঢাকার বড় ভূমিকা চায় নয়াদিল্লি

প্রকাশের সময় : ০২:১৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বাংলাদেশ ডেস্ক : ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতায় বাংলাদেশের জোরালো ভূমিকা চায় ভারত। কারণ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও গতিশীল বাংলাদেশ একটি সাফল্যের গল্প। গতকাল শনিবার ঢাকায় ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর এবং সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপ-উপদেষ্টা পঙ্কজ শরণ ভারতের প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে ওই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সকালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের উপস্থিতিতে সেমিনারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পঙ্কজ শরণ। বিকেলে সমাপনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের উপস্থিতিতে বক্তব্য দেন এম জে আকবর। তাঁদের বক্তব্যে ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বাংলাদেশের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ উঠে আসে। ব্লু ইকোনমি বা সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা তুলে ধরে ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও সাংবাদিক এম জে আকবর বলেন, ‘অস্থিতিশীলতা যুদ্ধের চেয়ে ভয়াবহ।

তাই স্থিতিশীলতা ছাড়া কিছুই হবে না। অভিন্ন প্রেক্ষাপটে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
এম জে আকবর বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, ইন্দো-প্যাসিফিক শুধু হিমালয়ের পাদদেশের ভূমি নয়, এটি সাগরতীরেরও ভূমি। এখানে আত্মসম্মান ও স্বনির্ভরতার ভিত্তিতে অভিন্ন সমৃদ্ধি খুব জরুরি। ’ তিনি বলেন, বাংলাদেশ দুটি স্বাধীনতা অর্জন করেছে। একটি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। এম জে আকবর বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তি বরাবরই চেয়েছে বাংলাদেশকে তাদের অনুগত বা বাধ্য রাখতে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিক্সনের সময়ের উদ্যোগ।

এটি যখন বাস্তবায়িত হয়নি তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
আকবর বলেন, সত্তরের দশকে দুই মেরুর (যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া) বিশ্বের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছিলেন। ‘মুজিব মতবাদ’ ছিল ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়।’ এর মাধ্যমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, বলয়ে টানার পুরনো খেলা এ দেশে চলবে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ তার প্রতিষ্ঠার পরপরই কৌশলগত ক্ষেত্রে স্বকীয়তা দেখিয়েছে। এখন সৌদি আরবসহ আরো কিছু দেশ এটি করার চেষ্টা করছে। বিশ্বে কৌশলগতভাবে স্বতন্ত্র ও স্বকীয়তার প্রবণতা বাড়ছে।

ভারতের সাবেক এই পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার পর যুক্তরাষ্ট্র ভেবেছিল যে রাশিয়া ‘বিচলিত শক্তি’ হয়ে গেছে। পরবর্তী সময়ে ইরাক ও আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রকেও বিচলিত দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া—দুই পরাশক্তিই এখন বিচলিত, ক্লান্ত। তাদের এখন নতুন করে ভাবা উচিত। এম জে আকবর বলেন, নতুন মানচিত্রে চীনারা শুধু ভারত নয়, রাশিয়ার ভূখণ্ডও দাবি করেছে। এ বিষয়ে চীনের মুখপাত্র বলেছেন, এটি সার্বভৌম চীনের মানচিত্র। তিনি বলেন, যাঁরা ১৯৬২ সালের ভারত-চীন যুদ্ধের উদাহরণ দেন, তাঁরা ১৯৬৯ সালের রাশিয়া-চীন যুদ্ধের উদাহরণও টানতে পারেন।

এম জে আকবর বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ মধ্য এশিয়াকে বদলে দিচ্ছে। ‘রাশিয়া দুর্বল’—এমন ধারণা প্রভাব ফেলছে। রাশিয়ার ভেতর কী হচ্ছে তার প্রভাব অন্যত্রও পড়ে। ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্যালান্স অব পাওয়ার বা ক্ষমতার ভারসাম্য অনেক হয়েছে। এখন পাওয়ার অব ব্যালান্স বা ভারসাম্যপূর্ণ ক্ষমতার জন্য একসঙ্গে কাজ করা উচিত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গ্লোবাল সাউথে বাংলাদেশের গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন পঙ্কজ শরণ। তাঁর সেই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সমাপনী অধিবেশনে এম জে আকবর বলেন, গ্লোবাল সাউথ ধারণা এখন পুরনো হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ও ভারত মিলে নতুন সম্পর্ক—নিউ নর্থ গড়ে তুলতে পারে।

এই অঞ্চলে বাংলাদেশের ভূমিকা পালন খুব গুরুত্বপূর্ণ
ভারতের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক উপ-উপদেষ্টা ও ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক ও বাংলাদেশ এই অঞ্চলের অপরিহার্য অংশ। বাংলাদেশ নিজস্ব ইন্দো-প্যাসিফিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে এসেছে। এটি দেখাটাও বেশ আনন্দের। এই অঞ্চলে বাংলাদেশের ভূমিকা পালন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, ‘নিয়ম-নীতিভিত্তিক, নিরাপদ, সমৃদ্ধ বিশ্বব্যবস্থা মূলত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল থেকে শুরু। এই অঞ্চলে বহুমেরুতা না থাকলে আমাদের শান্তি, সম্প্রীতি থাকবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি অঞ্চল গড়তে চাই যেখানে জোরজবরদস্তি, সম্প্রসারণবাদ থাকবে না। এর মাধ্যমে সব রাষ্ট্রের মৌলিক স্বার্থ এগিয়ে যাবে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা কখনো এক পক্ষের লাভ, অন্য পক্ষের ক্ষতি হতে পারে না।’ পঙ্কজ শরণ বলেন, ‘আমাদের সহযোগিতার এমন কাঠামো সৃষ্টি করতে হবে, যা থেকে সবার লাভ হয়। সব উদ্যোগ স্বচ্ছ হতে হবে। কোনো ঋণের ফাঁদ থাকা চলবে না। কানেক্টিভিটি ও সমৃদ্ধি জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও পরস্পরের মৌলিক স্বার্থকে সম্মান করছে, এটি নিশ্চিত করতে হবে।

পঙ্কজ শরণ বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিকে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সমুদ্রের পাশাপাশি প্রথাগত ও অপ্রথাগত সব ধরনের নিরাপত্তাঝুঁকি মোকাবেলায় বাংলাদেশের ভূমিকা দেখতে চাই। সম্মিলিত নিরাপত্তা, সম্মিলিত সমৃদ্ধি ও সম্মিলিত স্থিতিশীলতার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। এখানে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক সহযোগিতার মডেল। ইন্দো-প্যাসিফিক কাউকে বাদ দিয়ে নয়, সবাইকে নিয়ে চলার উদ্যোগ। বিশ্বের সবার দৃষ্টি তাই ইন্দো-প্যাসিফিকের দিকে।’

আরোও পড়ুন । জুলুমবাজ সরকারকে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে

পঙ্কজ শরণ বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশ একটি সাফল্যের গল্প। স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও গতিশীল বাংলাদেশ এই অঞ্চলের অপরিহার্য অংশ—এটি ভারতে, আমাদের কাছে স্পষ্ট।’ তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলে দ্রুত রূপান্তর ঘটছে। এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের মতো অংশীদারদের যুক্ত থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের দ্রুত উন্নতি দুই দেশ এবং পুরো অঞ্চলের জন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে। আমরা বাংলাদেশকে গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর মনে করি।’ সূত্র : কালের কন্ঠ
বেলী/হককথা